![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a social worker.
: কথায় বলে ‘পুরাতন চালে ভাতে বাড়ে’। ঠিক তাই, পুরানো সব কৃর্তী, ঐতিহ্য ও প্রাচীন নিদর্শনগুলো মানুষকে নিয়ে যায় হারানো দিনের স্মৃহি মনে করিয়ে দিতে। এমন অসংখ্য স্মৃতিময় প্রাচীন নিদর্শনের একটি হলো অভয়নগর পুরাতন থানা ভবন। এক সময় এ থানা ভবন ছিল অভয়নগরের একমাত্র প্রশাসনিক কেন্দ্র। আইন শৃংঙ্খলা রক্ষায় এ থানা ভবন যথাসাধ্য ভূমিকা পালন করতো। এক কথায় প্রশাসনের মূল কেন্দ্র বিন্দু ছিল অভয়নগর থানা ভবন। পুরাতন এ থানাভবন অভয়নগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ই মার্চ অভয়নগর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ভিক্টোরিয়ান নির্মান শৈলি ও কারুকার্যে ভৈরব নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত অভয়নগর থানার পুরাতন ভবনটি এখনও সগৌরবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় ভবনটির দরজা জানালা ভেঙে গেছে। ছাদে লতা পাতা ঘাস জন্মেছে। মেঝেতে ইতস্তত ময়লা আর ঘাসে চারিদিক ভর্তি। তবে ভিতরে ঢুকলে বোঝা যায় একটু সংস্কার করলে এটি এখনও ব্যবহার করা সম্ভব। বাহির থেকে দেখলে মনে হয় মহারাণী ভিক্টোরিয়ার দেশের কোনো ভবন। সামনে ও পিছনে বড় বড় বৃক্ষ দাঁড়িয়ে রয়েছে, স্মরণ করিয়ে দিতে পুরানো ইতিহাস। নিচতলায় অফিস, অফিসের পাশে কয়েদখানা, আর একটু ভিতরে অস্ত্রাগার। অস্ত্রাগার ও কয়েদখানার মোটা মোটা লোহার রড়, শক্ত দরজা, ভারী পাল্লা এখনও মনে ভয়ের শিহরণ তুলে। কত মানুষের যুগের দুঃখ-কষ্ট আর হাসি-বেদনার স্মৃতি আটকে লোহার গারদে আছড়ে পড়েছিল-কে দেবে তার হিসাব? ঐতিহ্যময় এ থানাভবনটির দোতালায় উঠলে বোঝা যায় অনেক লোক এটি দেখতে আসেন। দেয়ালের ক্যালিগ্রাফি, আঁকিবুকি, ছড়া ও অজানা কারও উদ্দেশ্যে ছুড়ে দেয়া প্রেমময় বানী বাংলাদেশের রোমিও পর্যটকদের বৈশিষ্ট্য বলে মনে হয়। অযতœ আর অবহেলায় থানাভবনটি দিন দিন ক্ষয়ে যাচ্ছে। পুরাতন থানা ভবনরেন পাশে বাঘুটিয়া ইউনিয়ন (ভাটপাড়া) পুলিশ ফাঁড়ি ভবন। তাই পুরানো ভবনটি এখনো অনেকটা অক্ষত থাকতে পেরেছে। ফাঁড়ি না থাকলে হয়তো এতো দিন লুটপাঠ হয়ে যেত ভবনটির ইট, পাথর বা মূল্যবান সব সম্পদ। এটি আমাদের একটি প্রাচীন ঐতিহ্য ও নিদর্শন। যেটি দেখলে বুকটা ভরে ওঠে গর্বে। থানা ভবনটির সংস্কার বিষয়ে অভয়নগর থানা পুলিশের কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘এটির সংস্কারে পুলিশের কোনো কিছু করার নেই। তবে আমি প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বার্তাটি পাঠিয়ে দিব। উপজেলা কর্মকর্তা সিফাত মেহনাজ এ ব্যাপারে বলেন ‘এটি যদিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে না, তারপরও আমি বিষয়টি ঊর্ধতন মহলের নজরে আনার চেষ্টা করবো। এটি সংস্কারের দায়িত্ব কার? জানতে চাইলে তিনি জানান এটি যেহেতু ভাটপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের সম্পত্তি সুতরাং তারাই এটা সংস্কারে কাজ করবে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুল হক মোল্যা জানান, এটি সংস্কার হওয়া দরকার। সংস্কার হলে ১১ শিব মন্দিরের পাশাপাশি মানুষ এ থানা ভবনটিও দেখতে আসবে। তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
©somewhere in net ltd.