![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a social worker.
বি.এইচ.মাহিনী : আবহমান কাল ধরে আমাদের গ্রামাঞ্চলের প্রায় পঁচাশিভাগ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি পেশায় জড়িত। কৃষি কাজের মাধ্যমে নির্বাহ হয় তাদের জীবন-জিবিকা। সভ্যতার ক্রম-বিকাশের ফলে যান্ত্রিক প্রযুক্তির এ যুগে কৃষিতেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। বিলুপ্ত হয়েছে কৃষিতে ব্যবহৃত বহু প্রচীন উপকরণ। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কৃষকের ধানের গোলা ছাড়াও রয়েছে প্রাচীন চাষাবাদের জন্য ব্যবহৃত লাঙ্গল-জোয়াল, আচড়া-নিড়ানি, মাথার টোপর এমনকি কৃষকের হালের গরুর দেখা পাওয়াও ভার। আগেকার দিনে প্রতিটি কৃষি পরিবারেই ছিল একটি করে ধানের গোলা। যেটা আজ বিলুপ্ত প্রায়। কৃষকেরা তাদের সারা বছরের খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় ধান সংরক্ষণ করে রাখতো এসকল ধাণের গোলায়। কথিত ছিল যে, মাঠ ভরা ফসল আর গোলা ভরা ধান, কৃষকের মুখে হাসি গান আর গান। কিন্তু যান্ত্রিক প্রযুক্তির এ যুগে এসে কৃষকেরা বিভিন্ন ধরণের ফসল উৎপাদন করলেও নেই তাদের মুখে সেই হাসি। অনুসন্ধানে জানা যায়, তৎকালীন আমলে কৃষকেরা যে ধান উৎপাদন করতো তা দিয়ে তাদের পরিবারের ভরণ-পোষণ মেটানো সম্ভব হতো। কিন্তু বর্তমানে এসে তারা যে ফসল উৎপাদন করে তার সিংহভাগই চলে যায় উৎপাদন ব্যয়ে। ফলে মজুদ তো দূরের কথা তাদের বাৎসরিক ব্যয় মিটানোই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ভৈরব উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তৎকালীন সময়ে বাজার ব্যবস্থার প্রসারতা তথা যাতায়াতের যথেষ্ট সুবিধা না থাকার কারণে তারা পর্যায়ক্রমে সারাবছর ধরে প্রয়োজন অনুযায়ী ধান বিক্রি করতো। তাই সংরক্ষণের প্রয়োজনে ধানের গোলার আবশ্যকতা ছিল। বর্তমানে বাজার ব্যবস্থা কৃষকের দ্বার প্রান্তে আসায় তারা ধান মজুদ না করে মাড়াইয়ের সাথে সাথে বিক্রি করে দেয়। তাছাড়া বেশিরভাগ ধানই ফসল উঠার সাথে সাথেই চলে যায় বিভিন্ন চাউলের আড়ৎ বা চাতানে। যার ফলে বিলুপ্তি হয়েছে ধানের গোলা। তাই একথা বলা চলে কৃষকের ধানের গোলা এখন শুধুই অতীতের স্মৃতি।
©somewhere in net ltd.