নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শিক্ষক, লেখালেখি, সম্পাদনা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশ কে ভালবাসি। দেশের জন্য, মানুষের জন্য সামান্য হলেও কিছু করতে চাই।

মা, মাটি ও মানুষকে ভালবাসি। ভালবাসতে চাই।

বিএইচ মাহিনী

I am a social worker.

বিএইচ মাহিনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন মুমিনের ইমান বা বিশ্বাস ভঙ্গ হয় যেসব কারনে (২য় পর্ব)

১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ১০:১০

অন্তর থেকে ইমান বা মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস বের হওয়ার-
৪র্থ কারণ হলো, এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, রাসুল মুহাম্মাদ স. এর নির্দেশিত হিদায়াত তথা শারী‘য়াত থেকে অন্য পথ বা ধর্ম অধিক পূর্ণাঙ্গ ও পরিপূর্ণ। অথবা রাসুলের স. অনুসৃত ও নির্দেশিত বিধান (হুকুম-আহ্কাম ও নিয়ম-নীতি) থেকে অন্য কারো বিধান অধিক উত্তম মনে করা। মোটকথা, রাসুল স. এর বিধান থেকে অন্য কোন বিধানকে বেশি প্রধান্য ও মর্যাদা দেয়া ইমান ভঙ্গ ও বিনষ্টের অন্যতম কারণ। তাই প্রত্যেক মুসলমানের এই বিশ্বাস পোষণ করা ওয়াজিব যে, রাসুল স. এর যাবতীয় কথা-বার্তা, কাজ-কর্ম ও সম্মতি হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহি তথা এক প্রকার প্রত্যাদেশ।
মহাগ্রন্থ আলকুরআনে এসেছে- ‘এবং তিনি (মুহাম্মাদ) প্রবৃত্তির তাড়নায় (মনগড়া) কোনো কথা বলেন না। কুরআন হলো ওহি, যা প্রত্যাদেশ হিসেবে নাযিল করা হয়।’ এ কারণেই ছালাফে সালিহীনরা কুরআন এবং সুন্নাহ দু’টোকেই ওহি বলে আখ্যায়িত করতেন। সকল মুজতাহিদগণ এ বিষয়ে একমত যে, রাসুলর সুন্নাহ হলো এক প্রকার ওহি। তাই রাসুলের স. সুন্নাতকে অস্বীকার বা প্রত্যাখ্যান করা, কুরআনকে অস্বীকার বা প্রত্যাখ্যান করার নামান্তর এবং সুন্নাহ বিরোধিতা করার অর্থ হলো কুরআনে কারিমের বিরোধিতা করা। একথা মনে রাখতে হবে, রাসুলের স. সুন্নাহ হলো মানব জাতির জন্য সর্বোত্তম হিদায়াত তথা পথ প্রদর্শক। যেমন- হযরত জাবির রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল স. ইরশাদ করেছেন-‘সর্বোত্তম বাণী হলো আল্লাহর কিতাব আর সর্বোত্তম হিদায়াত (পথ নির্দেশ) হলো মুহাম্মাদ স.এর হিদায়াত।’ আল্লাহ তায়ালা সুরা মায়িদার মধ্যে মহানবীর স. দীনকে পূর্ণতা দিয়েছেন এভাবে- ‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নেয়ামত úূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘রাসুল তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা কিছু থেকে তিনি নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকো।’ এর দ্বারা বুঝা যায় মহানবী স. শুধু একজন নবীই ছিলেন না, বরং তাকে আল্লাহ তায়ালা শরিয়ত প্রনেতা হিসেবে প্রেরণ করেন।
(৫) শারিয়তে ইসলামিয়্যাহ্র কোন বিষয়ের প্রতি ঘৃণা বা বিদ্বেষ পোষণ করা ঃ
শরিয়তের কোনো বিষয়ের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ পোষণ করলেও ঈমান ও ইসলান বিনষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ যে ব্যক্তি মুহাম্মদ স. এর আনীত শারি‘য়তের এবং তাঁর নির্দেশিত হিদায়াতের কোন কিছুর প্রতি ঘৃণা বা বিদ্বেষ পোষণ করবে, তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে এবং সে কাফির হয়ে যাবে, যদিও সে অসন্তুষ্টচিত্তে রাছূলের স. প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে এবং আল্লাহ প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী ‘আমল করে থাকে। এর প্রমাণ হলো আল্লাহর এ বাণী - ‘এটা এজন্য যে, আল্লাহ যা অবর্তীণ করেছেন তারা তা পছন্দ করে না, সুতরাং আল্লাহ তায়ালা তাদের কর্ম নিষ্ফল করে দেবেন।’
যেমন- (ক) আল্লাহ তায়ালার নির্দেশানুসারে চোরের হাত কাটা, বিবাহিত ব্যাভিচারীকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করা ইত্যাদি, আল্লাহর এসব বিধানকে আধুনিক সভ্যতার পরিপন্থি মনে করা কিংবা এসব বিধানকে অন্যায়, অমানবিক, অজ্ঞতা ও বর্বরতার প্রতীক হিসাবে চিহিৃত করা। এমন বিশ্বাস অন্তরে পয়দা হলে তার ইমান বিনষ্ট হয়ে যাবে। এমনিভাবে একাধিক বিবাহের শার‘য়ী বিধানকে কুরুচিপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করা। একজন পুরুষ সাক্ষীর মুকাবেলায় দু’জন মহিলা সাক্ষীর বিধানকে নারীদের অবমূল্যায়ন, তাদের প্রতি অবিচার ও হীনমন্যতার পরিচায়ক বলা কিংবা কুরআন ও সুন্নাহতে বর্ণিত গায়িবী (অদৃশ্য) কোন খবরকে যুক্তি, বাস্তবতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের পরিপন্থি বলে আখ্যায়িত করা ইত্যাদি।
(খ) ইসলামের কোন বিধানকে নির্দ্ধিধায় সন্তুষ্টচিত্তে মেনে না নেয়া, বরং এ বিষয়ে অন্তরে সংকোচ বোধ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন-‘কিন্তু না, আপনার প্রতিপালকের শপথ! তারা মু’মিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচারভার আপনার উপর অপর্ণ না করে, অতঃপর আপনার দেয়া সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাদের মনে কোন দ্বিধা থাকে এবং সর্বান্তকরণে উহা মেনে না নেয়।’
(গ) কোন সাহীহ হাদীসকে অস্বীকার করা। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন-
রাসুল তোমাদের যা প্রদান করেন, তোমরা তা গ্রহণ কর এবং যা হতে তোমাদের নিষেধ করেন তা হতে বিরত থাক।’
(৬) দ্বীনে ইসলামের কোন বিষয়কে নিয়ে কিংবা আল্লাহর ওয়া‘দাকৃত ‘আযাব-গযব, নেয়ামাত, দান বা পুরস্কার নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা ঈমান ও ইসলাম বিনষ্টের অন্যতম কারণ। অর্থাৎ যদি কেউ আল্লাহকে নিয়ে, তাঁর কোন ফিরিশতাকে নিয়ে, কোন নবি-রাসুলকে (স) নিয়ে কিংবা কুরআনে কারীমের কোন আয়াতকে নিয়ে অথবা দ্বীনে ইসলামের ফরয তথা অবশ্য করণীয় বা বর্জনীয় কোন বিষয়কে নিয়ে, কিংবা সঠিক ও অকাট্যভাবে দ্বীন হিসাবে প্রমাণিত কোন বিষয়কে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ, ঠাট্টা-তামাশা করে, অথবা দ্বীনে ইসলামের কোন বিষয়কে গালী-গালাজ, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বা এতদসম্পর্কে মর্যাদাহানীকর কিছু বলে, তাহলে তার ঈমান ও ইসলাম বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং সে ইসলাম বহির্ভূত ও কাফির বলে গণ্য হবে। এর প্রমাণ স্বরুপ আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘(হে রাসুল) আপনি বলুন! তোমরা কি ঠাট্টা-তামাশা করছিলে আল্লাহ ও তাঁর আয়াতগুলো এবং তাঁর রাসুল সম্বন্ধে? এখন আর ‘উযর পেশ করো না। তোমরা ঈমান আনার পর কুফরি করলে।’
যারা আল্লাহ্র দ্বীন ও তাঁর আয়াত নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করে, আল্লাহ ৭ তাদেরকে লাঞ্ছনাকর শাস্তি দানের ওয়া‘দা দিয়েছেন। আর ক্বোরআনে কারীমে লাঞ্ছনাকর শাস্তি (‘আযাবে মুহীন) প্রদানের কথা শুধুমাত্র কাফির-মুশরিকদের ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-‘যখন সে আমার কোন আয়াত অবগত হয়, তখন সেটাকে ঠাট্টারূপে গ্রহণ করে। এদের জন্যই রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। এমনিভাবে কেউ যদি কোন নেক্কার, আল্লাহওয়ালা লোকের সাথে তাঁর নেককারী তথা দ্বীনদারীর কারণে কিংবা কোন ‘আলিমে দ্বীনের সাথে তাঁর ‘ইলমে দ্বীনের কারণে ঠাট্রা-বিদ্রূপ করে, তা হলে সে কাফির ও ইসলাম পরিত্যাগকারী মুরতাদ বলে গণ্য হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.