![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a social worker.
সিয়াম বা রোজা মহান আল্লার তায়ালার পক্ষ থেকে তার বান্দার জন্য এক বিশেষ নেয়ামত। আর এ নেয়ামতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করাই প্রধান কর্তব্য। কিন্তু সিয়ামের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন রয়েছে। যা নি¤œরূপ : আসুন জানা যাক পবিত্র রমজানের কতিপয় মাসআলা-মাসায়েল।
*নিয়ত : নিয়ত ছাড়া কোনো ইবাদতই শুদ্ধ হয় না। তাই প্রত্যেকটি ইবাদত বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়ত করা অপরিহার্য। রাসূল (সা.) এর হাদীস এ কথার প্রমাণ বহন করে। রোজা বিশুদ্ধ হওয়ার জন্যও নিয়ত অন্যতম শর্ত। নিয়ত ব্যতীত রোজা শুদ্ধ হবে না। নিয়ত ব্যতীত পুরোদিন পানাহার থেকে বিরত থাকাকে রোজা বলা হবে না। তবে হ্যাঁ, নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়। বরং মনে মনে রোজা রাখার ইচ্ছা করলেও চলবে। ‘রমজানের রোজা ও নির্দিষ্ট মান্নতের রোজার নিয়ত সাহরী খাওয়ার সময় করা জরুরি নয়, বরং দ্বি-প্রহরের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময় করলেই চলবে। এর পরে করলে রোজা হবে না। আর রমজানের কাজা, কাফ্ফারা ও অনির্দিষ্ট মান্নতের রোজার নিয়ত সুবহে সাদিকের পূর্বেই করতে হবে। পরে করলে হবে না। (ফাতওয়ায়ে আলমগীরী- পৃষ্ঠা- ১৯৬)
*সাহরি সংক্রান্ত বিধান :
রোজা রাখার জন্য সাহরি খাওয়া মুস্তাহাব, জরুরি নয়। তাই সাহরি খাওয়া ব্যতীত কেবল নিয়ত করে নিলেও রোজা হয়ে যাবে। (ফাত্ওয়ায়ে দারুল উলূম-পৃষ্ঠা-৪৯৬)। সাহরির সময় মাইকে প্রয়োজন পরিমাণ ডাকাডাকি করা ও সাহরির সময় বলে দেয়া জায়েজ আছে। কিন্তু ডাকাডাকিতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত হামদ, নাত, গজল ও জিকির ইত্যাদি করে ব্যক্তিগত ইবাদতে বিঘœ সৃষ্টি করা, রুগ্ন ও অসুস্থ ব্যক্তিদের ঘুম ও আরামে বিঘœ সৃষ্টি করা মোটেই ঠিক নয়। সাহরির সময় শেষ হওয়ার সীমা আজান নয়। সুবহে সাদিক (ফজরের ওয়াক্ত আসা) এর পূর্ব পর্যন্ত। তাই চাই আজান হোক বা না হোক। এর পরে রোজা নষ্টের কোনো কারণ পাওয়া গেলে রোজা হবে না। (সূরা বাকারা-আয়াত-১৮৭)। কোনো ব্যক্তি এই ভেবে সাহরি খাচ্ছিল যে সময় এখনো বাকী রয়েছে, কিন্তু পরে জানতে পারল যে, সময় আসলে শেষ হয়ে গিয়েছিল, তাহলে তার ঐ রোজা কাজা করতে হবে কাফ্ফারা দিতে হবে না। (আলমগীরী- পৃষ্ঠা-১৯৪)
রোজা হওয়া না হওয়া বিষয়ে : ভুলবশত পানাহার এবং স্ত্রী সহবাসের দ্বারা রোজা নষ্ট হয় না। (আলমগীরী- পৃ: ১০৩) ভুলবশত পানাহার করার পর রোজা ভেঙ্গে গেছে মনে করে পুনরায় কিছু পানাহার করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং তার কাজা করতে হবে। মুখে আসা বমি ইচ্ছাকৃতভাবে পুনরায় গিলে ফেললে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং তার কাজা করতে হবে। (আলমগীরী-১০৪) চোখে সুরমা, শরীর ও মাথায় তৈল ব্যবহার করলে, সুগন্ধী ফুলের ঘ্রাণ নিলে, কানে পানি প্রবেশ করলে, অনিচ্ছাকৃত বমি হলে, স্বপ্নদোষ হলে, রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। আলমগীরী-১০৪)
পর্ণগ্রাফি বা কোনো মহিলাকে দেখা অথবা তাকে নিয়ে মনে মনে কুচিন্তা করার কারণে বীর্য স্খলন হলে রোজা নষ্ট হবে না। তবে এর দরুন গুনাহগার হবে। রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন, আলিঙ্গন, করমর্দন করার কারণে বীর্য স্খলন ঘটলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং তার কাজা করতে হবে।
*আধুনিক সমস্যা শরয়ী সমাধান : রোজা অবস্থায় চোখে ড্রপ ব্যবহার করা যাবে, এতে রোজা ভাঙবে না। যদিও তার স্বাদ গলায় অনুভূত হয়। (তিরমিযী শরীফ-হাদীস-৭২৬) রোজা অবস্থায় ইন্জেকশন, গোশত বা রগ যেখানেই পুশ করা হোক, এতে রোজা ভাঙ্গবে না। তবে রোজা থাকার কারণে শরীরের যে স্বাভাবিক দুর্বলতা, দেখা দেয় তা দূর করার উদ্দেশ্যে গ্লুকোজ ইনজেকশন বা স্যালাইন গ্রহণ করা মাকরূহ।
রোজা অবস্থায় নাকে ড্রপ ব্যবহার করলে যেহেতু তা কণ্ঠনালীতে পৌঁছে যায় তাই রোজা ভেঙ্গে যাবে। আর কানে ড্রপ ব্যবহার করলে রোজা ভাঙবে না, তবে যদি কারো কানের পর্দা ছিদ্র থাকে তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
*ভেজাইনাল সাপোজিটরি/অয়েন্টমেন্ট এর ব্যবহার : ভেজাইনাল সাপোজিটরি/ অয়েন্টমেন্ট- এগুলো মাসিকের রাস্তায় বা রাস্তার ভিতরে লাগানো বা প্রবেশ করানো হয় যা সেস্থান থেকেই কার্যকারিতা প্রকাশ করে, পেটে যায় না। অতএব, এগুলো ব্যবহার করলে রোজা নষ্ট হবে না। মুফতি রফী উসমানী দা.বা. তাঁর কিতাব যাবিতুল মুফাত্তিরাতের ৩৪ নং পৃষ্ঠায় বিস্তারিত আলোচনার পর এরুপ মত ব্যক্ত করেছেন।
©somewhere in net ltd.