নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শিক্ষক, লেখালেখি, সম্পাদনা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশ কে ভালবাসি। দেশের জন্য, মানুষের জন্য সামান্য হলেও কিছু করতে চাই।

মা, মাটি ও মানুষকে ভালবাসি। ভালবাসতে চাই।

বিএইচ মাহিনী

I am a social worker.

বিএইচ মাহিনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এইচআইভি এইডস : ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মে এর প্রতিকার (পর্ব-২)

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:১২

গত পর্বে আমরা এইচআইভি-এইডস নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ এ শিরোনামের ২য় বা শেষ পর্বে আমরা দেখবো পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মে এ ব্যাপারে কী বলা হয়েছে।
লজ্জা না করে চিকিৎসকের সরণাপন্ন হওয়া
অনেকেই যৌন রোগে আক্রান্ত হলে বিশেষভাবে এইচআইভি এবং এইডসে আক্রান্ত হলে লজ্জায় তা প্রকাশ না করে লুকিয়ে রাখেন। এতে তার ক্ষতির পরিমাণ শুধু বৃদ্ধিই পেতে থাকে। প্রয়োজনীয় বিষয়ে জানার ক্ষেত্রে লজ্জা-শরম করা ইসলামের শিক্ষা নয়। উম্মু সালমা (রা.) বলেন, হযরত আবু তালহার (রা.) স্ত্রী উম্মু সুলাইম একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা সত্যের ব্যাপারে কোন লজ্জা করেন না। (আমার প্রশ্ন হলো) নারীর যদি স্বপ্ন দোষ হয়, তাহলে গোসল করা ফরজ কি না? রাসূল (সা.) জবাবে বললেন, হ্যাঁ, যদি সে পানি দেখতে পায়।’ (সহীহ তিরমিযি)
এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঘৃণা না করে সেবা শুশ্রƒষা করা:
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন - ‘গুনাহ থেকে তওবাকারী ব্যক্তির কোন গুনাহ নেই।’ রাসূল (সা.) আরও বলেছেন- ‘ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, অসুস্থকে দেখতে যাও এবং কেউ অন্যায়ভাবে অবরুদ্ধ হলে তাকে মুক্ত কর।’ (সহীহ বুখারী, ৪৯৫৪)। হযরত ছাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন- ‘কোন মুসলিম যতক্ষন কোন মুসলিম ভাইয়ের সেবা শুশ্রষায় রত থাকে, ততক্ষণ সে জান্নাতের নেয়ামত রাজিতে অবস্থান করতে থাকে। প্রশ্ন করা হলো, জান্নাতের নিয়ামত রাজি কী? তিনি বললেন, এটি হলো জান্নাতের ফলসমূহ।’ (সহীহ মুসলিম, ৪৬৬০) রাসূল (সা.) বলেছেন- ‘এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের ৬টি অধিকার রয়েছে ঃ রোগাক্রান্ত হলে সেবা করা, মারা গেলে জানাযায় উপস্থিত হওয়া, আহ্বানে সাড়া দেয়া, সাক্ষাতে সালাম দেওয়া, হাঁচি দিলে জবাব দেওয়া এবং অন্যের উপস্থিতি-অনুপস্থিতিতে তার জন্য উপদেশ প্রদান করা।’ (সহীহ তিরিমিযি, ২৬৬১) রাসূল (সা.) বলেছেন- ‘পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়া করো, তাহলে আকাশবাসী তোমাদের প্রতি দয়া করবে।’ আল্লাহ তা’আলা বলেন- ‘তোমরা এমন ফিতনাকে ভয় কর যা বিশেষভাবে তোমাদের মধ্যে যারা যালিম কেবল তাদেরই ক্লিষ্ট করবে না এবং জেনে রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।’
মহানবী (স.) বলেছেন- ‘আল্লাহর সীমা রেখার উপরে অবস্থানকারী এবং এর ভেতরে পতিত ব্যক্তির উপমা হলো ঐ জাতির মতো যারা একটি নৌকায় আরোহন করল। তাদের কেউ কেউ উপর তলায় অবস্থান গ্রহণ করল আর কেউ কেউ নীচ তলায় অবস্থান গ্রহণ করল। নীচের তলায় অবস্থানকারীরা পানি প্রয়োজনে উপর তলার লোকদের নিকট যেত, একদা তারা (নীচ তলার লোকেরা) বলল, আমরা যদি আমাদের তলায় ছিদ্র করি তাহলে আমাদের উপরের কষ্ট দেয়া দরকার হবে না; এমতাবস্থায় যদি উপর তলার মানুষ বাধা না দেয়, তাহলে তারা সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে। আর যদি তাদের বাধা দেয়, তাহলে সকলেই মুক্তি পাবে।’ (সহীহ বুখারী, ২৩১৩)

এইচআইভি এবং এইডস প্রতিরোধে হিন্দু ধর্মের অনুশাসন

আমরা জানি, কাম, ক্রোধ, মোহ, মদ ও মাৎসর্ষ- এই ষড়রিপুর অন্যতম বা প্রধানতম রিপু কামই হচ্ছে এইডস এর প্রধান কারণ। সুতরাং কামকে দমন করতে হবে। হিন্দু ধর্ম (সনাতন ধর্ম) ভারসাম্যময় জীবন যাপনের কথা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বলে এসেছে।
হিন্দু ধর্মে পাঁচটি মহাপাপের কথা বলা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ‘পরদার গমন’ অর্থাৎ পরস্ত্রীর সঙ্গে যৌন মিলন অন্যতম। এ মহাপাপে লিপ্ত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। মৃত্যুর পরে বিভীষিকাময় নরকে গমন ও কষ্টভোগ করতে হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। হিন্দু ধর্মের যে দশটি প্রধান লক্ষনের কথা বলা হয়েছে তা হলো ঃ
ধৃতিক্ষমা দমোহস্তে¥য়ংশৌচমিন্দ্রিয়নিগ্রহঃ
ধীবির্দ্যা সত্যমক্রোধঃদশকৌ ধর্মস্যলক্ষণম্
অর্থাৎ- ধৈর্য, ক্ষমা, দম, অস্তে¥য় (চুরি না করা), শুচিতা (দেহ ও মোনের পবিত্রতা), ইন্দ্রিয় দমন, প্রজ্ঞা, বিদ্য, সত্য ও অক্রোধ-এই দশটি হচ্ছে হিন্দু ধর্মের প্রধান লক্ষণ। এই দশটির মধ্যে ধৈর্য, দম, শুচিতা, ইন্দ্রিয় দমন এই চারটি সরাসরি কামের সঙ্গে জড়িত।
ধর্মের অন্যতম প্রধান পালনীয় বিষয় হচ্ছে আত্মসংযম এবং ইশ্বরের কাছে আত্মসমর্পণ।

এইচআইভি এবং এইডস প্রতিরোধে খ্রীষ্ট ধর্মের অনুশাসন

মানব যৌন জীবন ও নৈতিকতা প্রসঙ্গে পবিত্র বাইবেলের কিছু সমাধান বাণী ঃ-
নব সন্ধিতে জোর আহ্বান করে বলা হয়েছে, ‘তোমরা অনৈতিকতা থেকে দূরে থাক’ (১ করি ৬:১৮)। মহান প্রভ’ যীশু খ্রীষ্ট বলেছেন, ‘মানুষের অন্তর থেকেই বেরিয়ে আসে এমন-সব মন্দ অভিপ্রায়, যার ফলে ঘটে নরহত্যা, ব্যভিচার, অবৈধ সংসর্গ’ (মথি ১৫:১৯, মার্ক ৭:২১)। মঙ্গল বানী প্রচারক সাধু পৌলও বলেছেন, ‘ব্যভিচার, অশুচিতা, উচ্ছৃঙ্খলতা মানুষের নি¤œতর স্বভাবের কাজ’ (গালাতিয় ৫:১৯)।
পরমেশ্বর সকল ব্যভিচারী ও দুশ্চরিত্রদের বিচার করবেনই করবেন (র্হিরু ১৩:৪)। যারা দুশ্চরিত্র, ব্যভিচারী বা সমকামী তারা কেউই ঐশরাজ্যের অধিকারী হবে না (১ করি ৬:৯)
পবিত্র বাইবেলে আরও লেখা আছে, তুমি একজন পুরুষের সাথে নারীর মত শয়ন করবে না (লেবীয় ১৮:২২); পুরুষ বেশ্যা বমনযোগ্য (২ বিবরণ ২৩:১৮); সমকামীরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেনা (১ করি ৬:৯)।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.