নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শিক্ষক, লেখালেখি, সম্পাদনা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশ কে ভালবাসি। দেশের জন্য, মানুষের জন্য সামান্য হলেও কিছু করতে চাই।

মা, মাটি ও মানুষকে ভালবাসি। ভালবাসতে চাই।

বিএইচ মাহিনী

I am a social worker.

বিএইচ মাহিনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মজলুমের আর্তনাদ ও জালিমের পরিণাম

০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ৮:৩১

যে ব্যক্তি জুলুম নির্যাতনের শিকার হন তিনিই মজলুম। মজলুম বা নির্যাতিত মানুষ আল্লাহর নিকটবর্তী। জুলুম অর্থ অত্যাচার। এর দ্বারা ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, স্রষ্টা ও সৃষ্টির অধিকারে হস্তক্ষেপকে বুঝায়। জুলুম বা অত্যাচারের প্রভাবে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে অশান্তিময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তাফসিরকারদের ভাষায়, জুলুম হলো ন্যায়নীতির বিরদ্ধাচরণ করে হকদারের হক নষ্ট করা, যা অনুপযুক্ত ব্যক্তিকে দেয়া এবং মতা ও শক্তির অপব্যবহার করা। এ জুলুমকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত, হুকুকুল্লাহের ব্যাপারে জুলুম করা। এ প্রকারের জুলুমের মধ্যে শিরক ও কুফুরি হলো সর্বাপেক্ষা বড়। আল্লাহপাক সোবহানাহু তায়ালা এরশাদ করেন, ‘যারা আমার নির্দেশনগুলো অমান্য করে, কুফুরি জীবনযাপন করে আমি অতিসত্বর তাদের দোজখের আগুনে নিক্ষেপ করবো’ (আল কুরআন)।
দ্বিতীয়ত, হুকুকুল ইবাদের ব্যাপারে জুলুম করা অর্থাৎ ন্যায়নীতি বর্জন করে ক্ষমতা ও শক্তির অসদ্ব্যবহার করা। এ ধরনের জুলুমকারীদের ওপরে পৃথিবীতে অবশ্যই আল্লাহর গজব নাজিল হয়।
আল্লাহপাক বান্দার অন্তরকে তাঁকে স্মরণ করার এবং তাঁর সম্পর্কে চিন্তা গবেষণা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। যে ব্যক্তি এর ব্যতিক্রম করবে তাহলে সে তার নিজের ওপর জুলুম করল। সৎ কর্ম যেমনিভাবে কিয়ামতের দিন আলোকরূপে মুমিনদের চতুর্দিকে দৌড়াদোড়ি করতে পারবে, অনুরূপভাবে জুলুম জালিমদের চতুর্দিকে বেষ্টন করে থাকবে। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা: বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তির দ্বারা কোনো ঈমানদার ভাইয়ের মান-ইজ্জত নষ্ট হয় অথবা কোনোভাবে নির্যাতিত হয়, তবে সে যেন ওই দিন আসার আগেই তার কাছ থেকে মা চেয়ে নেয়, যার প্রতি জুলুম করা হয়েছে। যেদিন তার কাছে কোনো দিনার বা দিরহাম থাকবে না। যদি নেক আমল থাকে তাহলে অত্যাচারের পরিমাণ মতো আমল দেয়া হবে। আর যদি নেক আমল না থাকে তাহলে অত্যাচারিত ব্যক্তির পাপকে এনে তার ওপর চাপিয়ে দেয়া হবে’ (বুখারি শরিফ)।
অন্য হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সা: বর্ণনা করেছেন, ‘তোমরা কি জানো গরিব কে? সাহাবায়ে কেরাম রা: বললেন, আমাদের মাঝে যার টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত নেই সেই গরিব।’ রাসূলুল্লাহ সা: বলেনÑ ‘আমার উম্মতের মধ্যে কিয়ামত দিবসে ওই ব্যক্তি বেশি গরিব হবে, যিনি দুনিয়া থেকে, নামাজ, রোজা ও জাকাত আদায় করে (বিপুল পরিমাণ সাওয়াব নিয়ে) আসবে। আর সাথে ওই সব বিষয়ের লোকদের নিয়ে আসবে, সে যাকে গালি দিয়েছে, মিথ্যা অপবাদ রটিয়েছে, অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ খেয়েছে, কাউকে হত্যা করেছে, কারো ইজ্জত সম্মান ও অধিকার নষ্ট করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে। কিয়ামতে এমন ব্যক্তিদের তার (নামাজ রোজা ও জাকাতের) নেক আমলগুলো দিয়ে দেয়া হবে। যখন নেক আমলগুলো দিতে দিতে শেষ হয়ে যাবে, তখন অত্যাচারিত বা পাওনাদারের পাপগুলো এনে তার ওপর ঢেলে দেয়া হবে। অতঃপর অত্যাচারীকে দোজখে নিক্ষেপ করা হবে’ (মুসলিম শরিফ)।
হজরত আবু যার জুনদুব ইবনে জুনাদা রা: থেকে বর্ণিত, নবী করিম সা: বর্ণনা করেছেনÑ ‘আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে আমার বান্দারা, আমি জুলুম করা নিজের জন্য হারাম করেছি এবং তোমাদের পরস্পরের জন্যও তা হারাম করে দিয়েছি। সুতরাং তোমরা একে অপরকে জুলুম করো না। আমি তোমাদের সব আমল সংরক্ষণ করে রাখি’ (হাদিসে কুদসি)। আল্লাহর রাসূল সা: আরো বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা বলেন, জালিমদের বলে দাও, তারা যেন আমাকে স্মরণ না করে। কেননা যে আমাকে স্মরণ করে, আমিও তাকে স্মরণ করি এবং তাদের (জালিম) আমার স্মরণ করা হলো এই, আমি তাদের লানত করি’ (হাদিসে কুদসি)।
মহান আল্লাহপাক আরো বলেন, ‘আমার ইজ্জত ও মাহাত্ম্যের কসম, আমি অবশ্যই জালিমদের কাছ থেকে দুনিয়া ও আখিরাতে প্রতিশোধ নেবো এবং আমি অবশ্যই প্রতিশোধ নেবো সে ব্যক্তির কাছ থেকে, যিনি কোনো মজলুমকে দেখল এবং তাকে সাহায্য করতে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তা করল না’ (হাদিসে কুদসি)।
অপর দিকে, হাসিদে কুদসিতে বর্ণিত হজরত মূসা আ: বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক, আপনার কাছে কোন বান্দাহ বেশি মর্যাদাবান?’ তিনি বললেন, ‘যে ক্ষমতাশালী হয়েও ক্ষমা বা মাফ করে দেয়।’ মাফ করাটা মহান আল্লাহ তায়ালার কুদরতির নির্দেশন, নবী রাসূলদের সুন্নত, রাসূল আল্লাহ ওয়ালা বান্দাদের ভূষণ। তা ছাড়া কোনো মজলুমের দোয়া আল্লাহপাক ফিরিয়ে দেন না, মজলুম বান্দা যখন আল্লাহ তায়ালার দরবারে আবেগে-আপ্লুত হয়ে আন্তরিকতার সাথে কাকুতি-মিনতি সহকারে দোয়া করে, তখন আল্লাহ তায়ালা সেই দোয়া অবশ্যই কবুল করে নেন। সে যদিও কাফের, ফাজের বান্দা হয়। রাসূলে পাক সা: এরশাদ করেছেনÑ ‘তোমরা মজলুমের বদ দোয়া থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে। কারণ মজলুমের দোয়া এবং আল্লাহ পাকের মধ্যে কোনো পর্দা থাকে না।’
আল্লাহ তায়ালা মজলুমের ফরিয়াদ (বদদোয়া) কবুল করুন। আমিন।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.