নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শিক্ষক, লেখালেখি, সম্পাদনা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশ কে ভালবাসি। দেশের জন্য, মানুষের জন্য সামান্য হলেও কিছু করতে চাই।

মা, মাটি ও মানুষকে ভালবাসি। ভালবাসতে চাই।

বিএইচ মাহিনী

I am a social worker.

বিএইচ মাহিনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

নৈতিক মূল্যবোধ বিকাশে মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ---বি.এইচ.মাহিনী

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৮

স্বাধীনতা মানুষের মৌলিক ও মানবিক অধিকার। আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস মাত্র ৪৫-৫০ বছরের নয়। এ ইতিহাসের শুরু হয়েছিল ১৮৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনাতার সূর্য অস্তমিত হয়ে পরাধীনতার শৃঙ্খলে উপনিবেশিক শাসনে বন্দি হয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে। তখন ভরতীয় উপমহাদেশ তথা আমার প্রিয় বাংলাদেশ প্রথম পরাধীনতার কবলে পড়ে। বাংলায় শুরু হয় গভর্ণর শাসন। ইংরেজ লর্ড ক্লাইভ বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশ শাসন করতে থাকে। বাংলার কৃষক-শ্রমিকের ঘাম ঝরানো উপার্জিত শস্য ভান্ডারে গোলা ভরত ইংরেজ ও তাদের দোসরদের। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলায় নীল চাষ শুরু করে। বাঙালী সর্বদা অত্যন্ত স্বাধীনতা প্রবণ। এক পর্যায়ে শুরু হয় বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন। আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্র হতে থাকে। আন্দোলন চলার মধ্যে বাংলার প্রভাবশালী নেতা সুভাষ চন্দ্র বসু গুম হয়। আজও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি । ফাঁসিতে ঝুলানো হয় নাবালক ক্ষুদিরাম বসুর মত স্বাধীনতাকামী অসংখ্য মানুষকে। বৃটিশ বিরোধী এ আন্দোলনে বাংলার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, ইলা মিত্রসহ প্রথিতযশা মানুষেরা একে একে যুক্ত হয়। আন্দোলন দাবনলের মতো ছড়িয়ে পড়তে থাকে দিকে দিকে। এমতাবস্থায় ১৯৪৭ সালে বৃটিশরা এ দেশ ছাড়তে বাধ্য হলো কিন্তু পরিতাপের বিষয় বাংলাদেশ স্বাধীন হলো না। বাংলাকে দু’ভাগ করে পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত করা হলো। ইংরেজদের ন্যায় শুরু হলো পাকিস্তানী খান সেনাদের শাসন। সেটিকে শাসন বললে ভুল হবে প্রকারন্তরে তা ছিল শোষণ। তাদের শোষণ থেকে রেহাই পাইনি এ দেশের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-বনিতা কেউই। পাকিরা এদেশের মানুষকে মানুষ মনে করতো না। মনে করতো তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক। এ দেশের ব্যবসায় তাদের পকেট ভরতো। বাংলাকে তারা ব্যবসাক্ষেত্র মনে করত। তৎকালিন পূর্ব বাংলায় উৎপাদিত ফসল, পাটজাত দ্রব্য, কাগজসহ বিভিন্ন পণ্য চলে যেত পাকিস্তানে। আমাদের উৎপাদিত পণ্য পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে আবার বেশি দামে এই বাংলায় বিক্রি করা হতো। বাংলার মানুষের খাদ্য, পণ্য, শিক্ষা, চাকুরির অধিকার হরণ করলো তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। একনকি আমাদেও মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত শুরু করল তারা। তৎকালীন ছাত্র আন্দোলনে কঠিন বাঁধার মুখে ভাষা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৫২সালে বাংলা ভাষা রক্ষা পেল। ভাষা আন্দোলনে সফলতা পেয়ে শুরু হলো বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম অর্থাৎ স্বাধিকার আন্দোলন। কৃষক-শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের নেতা মাও: আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের স্ব-অধিকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু করলেন। এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পেশাজীবী, শ্রমজীবী, কৃষক, মজুদ, সরকারী কর্মচারী, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলো তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে। ৭মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিলেন। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, লক্ষ লক্ষ মানুষের শাহাদাৎ ও অসংখ্য নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীন হলো আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। বাংলাদেশ নামক একটি দেশ বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নব উদ্যোমে যাত্রা শুরু করল। বাংলাদেশের মানুষ ফিরে পেল তাদের হারানো অধিকার। গঠিত হলো সরকার। রচিত হলো সংবিধান। সুরক্ষা করা পেলো মানুষের অধিকার। তবে তা আবারো বাঁধা প্রাপ্ত হলো জাতির জনকের অনুপস্থিতিতে। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ নিভে গেল সেই প্রদীপ, যে প্রদীপের আলোয় স্বাধীনতার সূর্য দেখেছিল বাংলাদেশ। শুরু হয় সেনা শাসন। তৎকালীন শাসক ও সেনা শাসকেরা গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করে জনগণের মতামত গ্রহণ না করে নিজের ইচ্ছায় দেশ চালানো শুরু করলেন। তারা বৃটিশ, পাকিস্তানের ভাবধারায় দেশকে শাসন করতে শুরু করলেন। জনগণের প্রতিনিধির কোন মূল্য থাকল না। গণতন্ত্রকে পদদলিত করে একদলীয় শাসন শুরু হল। বাংঙালীরা আন্দোলন করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়লেও থেমে থাকেনি। ১৯৯০ সালে স্বৈরশাসক এরশাদের একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে বাংলার জনগণ সংগ্রাম করে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে সকল ধর্মের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করলো। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হলো। নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায়ন হয়ে একনায়কের মতো আচরণ শুরু করলো। মনে হলো যেন পাক প্রেতাত্তারা শাসক দলের উপর ভর করেছে। শুরু হলো বিরোধী শিবিরে নিপীড়ন-নির্যাতন। ২০০৬ সালে আ’লীগ ও বিরোধী জোটের তীব্র সরকার বিরোধী আন্দোলনের মুখে আবারও এক নায়ক সেনা সমর্থিত সরকার প্রতিষ্ঠা হলো। শুরু হলো রাজনৈতিক সংস্কারের নামে রাজনীতি বিতাড়ন। যাই হোক ২০০৮ এর ডিসেম্বরে হলো সাধরণ নির্বাচন। বিজয়ী দল ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রের প্রায় সকল দ্বার রুদ্ধ করে দেশ পরিচালনা করছেন। তবে বর্তমান সরকার উন্নয়নের ধারা অব্যহত রেখে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং সাহসীকতার সাথে যুদ্ধাপরাধীর বিচার করছে। এসকল কারণে সরকারকে সাধুবাদ জানানো যায়। সত্যকে সত্য বলা মিথ্যাকে মিথ্যা এটাই নীতি নৈতিকতা। রাষ্ট্রযন্ত্র যদি প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করে তবে রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র থাকে না। একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। সকল সেক্টরে নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা দরকার বিশেষ করে পুলিশ ও জন প্রশাসন সেক্টরে। সকল ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারলে বাংলার মানুষ পাবে তার হারিয়ে যাওয়া অধিকার। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও নৈতিক মূল্যবোধ এই তিনটি বিষয় যদি সমাজে ও রাষ্ট্রে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে সু-শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। মানুষ পায় তার অধিকার। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও নৈতিক মূল্যবোধ রাষ্ট্র, সমাজ ও প্রশাসনে আছে কি?
বি.এইচ.মাহিনী
প্রভাষক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.