![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a social worker.
আজকাল অনেকে শবে বরাত বিদয়াত মনে করে ইবাদত পালন থেক বিরত থাকতে চান। আসলে এটা করা কী ঠিক হবে। 'তালাশ' টিম নিয়ে ঘুরে আসি এবিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে।
বিদয়াত অর্থ নতুন উদ্ভাবন। যা ইসলামি যুগে ছিল না এমন। তাই যদি হয় তবে, রাসুলের যুগে তো পাকা দালানের মসজিদ (বহুতল) ছিল না। তবে কি এখন দালানের মসজিদে নামাজ পড়া বিদয়াত হবে?
তাই শবে বরাত রাসুলের স. যুগে ছিল না বা এখনো সৌদিআরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে পালন হয়না তাই এটাকে বিদয়াত বলে ইবাদত পালন থেকে বিরত থাকাটা কি উচিৎ হবে?
এ রাতে আমাদের করণীয় কী বা কেমন হওয়া উচিত, আল্লামা ইবনে রজব (রহ.) (মৃ. ৭৯৫ হি.) এর ভাষায়, ‘মোমিনের কর্তব্য এই যে, এ রাতে খালেস দিলে তওবা করে জিকির, দোয়া ও ইস্তেগফারের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। যতেœর সঙ্গে নফল নামাজ পড়বে। কেননা কখন মৃত্যু এসে যায় বলা যায় না। তাই কল্যাণের মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই তার মূল্যায়ন করা জরুরি।
আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহপাক অর্ধশাবানের রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি (বিশেষভাবে) দৃষ্টিপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ : ১/৪৪৫)। সুতরাং কেউ যদি সারা রাত নফল নামাজ পড়ে; কিন্তু তার অন্তরকে শিরক ও বিদ্বেষ পোষণ করা থেকে মুক্ত না করে তাহলে সে ক্ষমার অন্তর্ভুক্ত হবে না।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন শাবানের ১৫ তারিখের রাত আসে তখন তোমরা রাতে ইবাদত করো এবং দিনে রোজা রাখ। কেননা আল্লাহপাক এ রাতে সূর্যাস্তের পরই বান্দার প্রতি বিশেষভাবে মনোনিবেশ করেন এবং সাধারণ ঘোষণা হয় যে, কে আছ ক্ষমাপ্রার্থী! আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছ রিজিকপ্রার্থী! আমি তাকে রিজিক দেব। কে আছ বিপদগ্রস্ত! আমি তাকে বিপদ থেকে মুক্তি দেব। এভাবে পূর্ণ রাত ঘোষণা হতে থাকে এমনকি সকাল হয়ে যায়।’ (ইবনে মাজাহ : ১/২৫৩)। এ ধরনের ঘোষণা যদিও প্রতি রাতেই হয়ে থাকে, তবে তা রাতের এক-তৃতীয়াংশের পর। আর এ রাতে সূর্যাস্তের পরই শুরু হয়ে যায়।
এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে আরও কিছু বর্ণনা বিদ্যমান রয়েছে। তাই এ রাতে একাকী ইবাদতের গুরুত্ব প্রমাণিত হয়। আল্লামা শারম্বুলালি লিখেছেন, ‘এ রাতে ইবাদতের উদ্দেশ্য হলো, রাতের বড় একটি অংশ নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার এবং দরুদ শরিফ ইত্যাদির মধ্যে অতিবাহিত করা। তবে অধিকাংশ ফকিহের ঐকমত্যে, এ রাতে মসজিদের মধ্যে গুরুত্বের সঙ্গে সমষ্টিগতভাবে একত্রিত হয়ে ইবাদত করা মাকরুহ। হিজাজ এবং মদিনার ফকিহরা তো বেদাতই বলে থাকেন।’ (মারাকিল ফালাহ : ২১৯)। এজন্য ঘরে নফল ইবাদত করা অতি উত্তম। (তিরমিজি : ১/১০২, ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/৭৭)।
আজকাল কিছু বন্ধু কারও কারও কথা শুনে কিংবা কোনো কোনো লেখা দেখে সংশয়ে পড়েন যে, আদৌ ১৫ শাবানের রাতের কোনো ফজিলত বা বিশেষত্ব আছে কিনা। বাস্তব কথা হলো, শাবানের পুরো মাসটাই ফজিলতপূর্ণ এবং বরকতময়। নবীজি (সা.) এ মাসের বরকত কামনা করে দোয়া করতেন। রমজান মাসের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে এ মাসে তিনি বেশি বেশি রোজা রাখতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) রমজান ছাড়া কখনও পূর্ণ কোনো মাস রোজা রাখতে আমি দেখিনি। আর শাবান মাসে তিনি যেভাবে অধিকহারে রোজা রাখতেন, বছরের অন্য কোনো মাসে এমনটা করতেন না।’ (বোখারি : ১৬৮৬, মুসলিম : ১৯৫৬)।
©somewhere in net ltd.