নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শিক্ষক, লেখালেখি, সম্পাদনা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশ কে ভালবাসি। দেশের জন্য, মানুষের জন্য সামান্য হলেও কিছু করতে চাই।

মা, মাটি ও মানুষকে ভালবাসি। ভালবাসতে চাই।

বিএইচ মাহিনী

I am a social worker.

বিএইচ মাহিনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুরআন ও হাদীসের আলোকে আল্লাহ ও মহানবী’র(স.) নামে কটূক্তি ও মুরতাদের শাস্তি

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:০৫

আল্লাহ তাআলা মানুষের সৃষ্টিকর্তা। ইসলাম তাঁর মনোনীত একমাত্র দ্বীন। মানুষের জন্য তিনি এই দ্বীন নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এ-ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন বা ধর্ম মানুষের কাছ থেকে তিনি গ্রহণ করবেন না। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآَخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
‘যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীনের অনুসরণ করবে, তার পক্ষ থেকে তা কখনোই গ্রহণ করা হবে না। আর পরকালে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।’ (আলে ইমরান ৩ : ৮৫)
যারা ইসলাম ব্যতীত অন্য কিছুর অনুসারী, তাদেরকে ইসলামের প্রতি আহবান করা হবে, কিন্তু ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন- لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ قَدْ تَبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ
দ্বীন(গ্রহণ)-এর বিষয়ে কোনো জবরদস্তি নেই। হেদায়েতের পথ গোমরাহী থেকে পৃথকরূপে স্পষ্ট হয়ে গেছে। (বাকারা ২ : ২৫৬)
আর যারা আল্লাহর আহবানে সাড়া দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছে, তারা পরিপূর্ণরূপে ইসলাম অনুসরণে বাধ্য। তারা তো ইসলাম গ্রহণ করেছেই আল্লাহর ইবাদতের জন্য, তাঁর বিধান মানার জন্য। ইরশাদ হয়েছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ
‘তোমরা যারা ঈমান এনেছ, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (বাকারা ২ : ২০৮)
মুসলমান ইসলামের অনুশাসন মানতে বাধ্য বলেই গুনাহ করলে দুনিয়া ও আখেরাতে বিভিন্ন শাস্তি তার উপর আপতিত হয়। দুনিয়াতে কোনো গুনাহের শাস্তি বন্দিত্ব, কোনোটার শাস্তি বেত্রাঘাত, হস্তকর্তন ও মৃত্যুদন্ড ইত্যাদি। সবচে বড় গুনাহ হল মুসলিম থেকে অমুসলিম হয়ে যাওয়া। একেই বলে ‘মুরতাদ’ হওয়া। ‘মুরতাদ’ শব্দের শাব্দিক অর্থ বিমুখ হয়েছে বা ফিরে গিয়েছে এমন। এর মূল মর্ম হল, ইসলাম ত্যাগ করা, ইসলামের কোনো মৌলিক আকিদা বা বিধানকে মানতে অস্বীকার করা, কিংবা তার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করা অথবা ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ের অবমাননা করা, যা অন্তরের ভক্তিশূন্যতা ও শ্রদ্ধাহীনতার আলামত বহন করে। এককথায় ঈমান বিনষ্টকারী যে কোনো কুফরী-শিরকী আকিদা বা বিশ্বাস পোষণ করা, অথবা এ জাতীয় কোনো কথা বা কাজে লিপ্ত হওয়ার নামই হল ‘ইরতিদাদ’ বা মুরতাদ হওয়া।
যে সকল কারণে ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে যায় এর বিভিন্ন কারণের মধ্য হতে নিম্নে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হলো।
১. আল্লাহ তাআলার শানে বেয়াদবি করা। (যেমন কোনো প্রতিকৃতির সামনে মাথা নত করা, মাজার তওয়াফ (জিয়ারত) করা, উপায়-উপকরণের উর্ধ্বের বিষয়ে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কাউকে শরিক করা, আল্লাহ ছাড়া কাউকে রিযিকদাতা, ফসলদাতা, সন্তানদাতা ইত্যাদি মনে করা।)
২. ইসলামের শিআর তথা প্রতীকসমূহের অবমাননা করা। এগুলো নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা বা কৌতুক করা।
ইসলামের মৌলিক শিআর (প্রতীক) হল; কুরআন মাজীদ, রাসূলুল্লাহ (স.) ও তাঁর সাহাবীগণ; বিভিন্ন ইবাদত যথা-নামায, রোযা, হজ্ব-যাকাত, দোয়া-দরূদ; বিভিন্ন ফযীলতপূর্ণ স্থান যথা-মসজিদে নববী, কা’বা শরীফ, মসজিদে আকসা এবং পৃথিবীর সকল মসজিদ ইত্যাদি। এগুলোর অবমাননা যেমন, মসজিদকে গোয়ালঘর বলা, কোরআন মাজীদকে আবর্জনায় ছুঁড়ে ফেলা, নবীজীকে যুদ্ধবাজ, নারীলোভী, হিং¯্র, অমানুষ বলা, তাঁর নামের অবমাননা করা ইত্যাদি।
৩. ইসলামের কোনো বিধান, ইসলামের সঙ্গে সম্পর্কিত সাধারণ কোনো বিষয়, নবীজীর কোনো সুন্নত, এমনকি প্রমাণিত কোনো মুস্তাহাব আমল ইত্যাদির প্রতি অবজ্ঞাসূচক বাক্য ব্যবহার করা অথবা অবজ্ঞা-প্রকাশক কোনো আচরণ করা। যেমন কুকুরের মাথায় টুপি পরানো, বোরকাকে বেশ্যার পোশাক বলা ইত্যাদি।
৪. জরুরিয়াতে দ্বীন তথা সর্বজনবিদিত অকাট্য দ্বীনী বিষয়সমূহের কোনো একটি অস্বীকার করা, অপছন্দ করা, বা তার অপব্যাখ্যা করা, অথবা তার উপর আপত্তি তোলা কিংবা তা সংস্কারযোগ্য বলে মনে করা। যেমন খতমে নবুওত অস্বীকার করা, চুরির শাস্তির উপর আপত্তি করা ইত্যাদি।
৫. ইসলাম ত্যাগ করে অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করা কিংবা কোনো ধর্মই না মানা। যেমন আল্লাহকে বিশ্বাস না করা, প্রকৃতিবাদী হওয়া, খৃস্টান বা তাদের ভাষায় ‘ঈসায়ী মুসলমান’ হওয়া ইত্যাদি।
আল্লাহ পাক বলেন-
وَمَنْ يَرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُولَئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالْآَخِرَةِ وَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
‘আর তোমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজের ধর্ম থেকে ফিরে যায়। আর সে অবিশ্বাসী অবস্থায় মারা যায়, তাহলে দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের সকল নেক আমল বরবাদ হয়ে যাবে। এই লোকেরাই হল জাহান্নামের অধিবাসী, তারা চিরকাল সেখানে থাকবে। (বাকারা : ২১৭)
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
‘প্রকৃতপক্ষে যারা তাদের সামনে হেদায়েত পরিস্ফুট হওয়ার পরও মুরতাদ হয়ে যায়, (আসলে) শয়তান তাদেরকে ফুসলিয়েছে এবং অমূলক আশা দিয়েছে। এসব এজন্য যে, যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিষয়কে অপছন্দ করে, তাদেরকে (সেই কাফেরদেরকে) তারা (মুরতাদ-মুনাফিকেরা) বলে, কিছু কিছু বিষয়ে আমরা তোমাদের কথাও মানবো। (স্মরণ রাখা উচিত) আল্লাহ তাদের গুপ্ত কথা সম্পর্কে অবগত। ফেরেশতারা যখন এদের চেহারায় এবং পিছন দিক থেকে আঘাত করতে করতে এদের জান কবজ করবে, তখন এদের কী দশা হবে! এসব (শাস্তি) এজন্য যে, তারা এমন মতবাদ বেছে নিয়েছে, যা আল্লাহ তাআলাকে নারাজ করে এবং তারা তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন পছন্দ করে না। তাই আল্লাহ তাদের আমলগুলো বরবাদ করেছেন। (সুরা মুহাম্মাদ : ২৫-২৮)
মুরতাদ দুই প্রকারের হয়ে থাকে : এক. যে নিজের ইরতিদাদের (ধর্মত্যাগের) ঘোষণা দিয়েছে।
দুই. যে ইরতিদাদ-মূলক (ধর্মত্যাগমূলক) কোনো আকিদা-বিশ্বাস পোষণ করে অথবা অনুরূপ কাজ-কর্মের সঙ্গে জড়িত থেকেও নিজেকে কথা বা কাজে মুসলমান বলে দাবী করছে। দ্বিতীয় প্রকারের মুরতাদকে যিন্দীক, মুলহিদ ও মুনাফিক ইত্যাদি বলা হয়।
স্বঘোষিত মুরতাদ হোক আর মুনাফিকজাতীয় মুরতাদ হোক, উভয় প্রকার মুরতাদের ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম হল, যদি আদালতে এদের ইরতিদাদ প্রমাণ হয়ে যায়, তাহলে তার বিষয়ে শরীয়ত মোতাবেক ফয়সলা হবে ‘মুরতাদের দুনিয়াবী শাস্তি মৃত্যুদন্ড।’
বিচার পদ্ধতি : বিচারকের জন্য নিয়ম হল, মুরতাদকে প্রথমে তওবা করার সুযোগ দিবে। তওবা করলে তো ভালো। অন্যথায় নির্ধারিত শাস্তি প্রয়োগ করবে।
দুনিয়াতে এই ক্রোধ ও গজব এবং লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা যারা শিরক করে মুরতাদ হয়ে গেছে শুধু তাদের জন্যই নয়, বরং সব ধরনের মুরতাদের জন্য। ইরশাদ হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার পর তার কুফরীতে লিপ্ত হয় -অবশ্য সে নয়, যাকে কুফুরীর জন্য বাধ্য করা হয়েছে, কিন্তু তার অন্তর ঈমানের উপর প্রশান্ত রয়েছে, বরং সেই ব্যক্তি, যে সহৃদয়ে কুফুরী মেনে নিয়েছে, এরূপ ব্যক্তির উপর আল্লাহর গজব এবং তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। (সুরা নাহল : ১০৬)
এদের শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন-
لَئِنْ لَمْ يَنْتَهِ الْمُنَافِقُونَ وَالَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ وَالْمُرْجِفُونَ فِي الْمَدِينَةِ لَنُغْرِيَنَّكَ بِهِمْ ثُمَّ لَا يُجَاوِرُونَكَ فِيهَا إِلَّا قَلِيلًا  مَلْعُونِينَ أَيْنَمَا ثُقِفُوا أُخِذُوا وَقُتِّلُوا تَقْتِيلًا  سُنَّةَ اللَّهِ فِي الَّذِينَ خَلَوْا مِنْ قَبْلُ وَلَنْ تَجِدَ لِسُنَّةِ اللَّهِ تَبْدِيلًا
‘মুনাফিকরা, যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তারা এবং মদীনাতে ভয়ংকর সংবাদ রটনাকারীরা যদি নিবৃত্ত না হয়, তাহলে অবশ্যই আমি আপনাকে তাদের বিরুদ্ধে প্রবল করে দিব। আর তখন তারা আপনার প্রতিবেশী হিসাবে সেখানে বেশি দিন টিকতে পারবে না। তাও থাকবে অভিশপ্ত অবস্থায়, যেখানেই এমন লোককে পাওয়া যাবে, ধরে ধরে একে একে হত্যা করে ফেলা হবে। আল্লাহ তাআলার এ নিয়ম পূর্ববর্তী লোকদের জন্যও বলবৎ ছিল। আল্লাহর নিয়মে কোনো দিন আপনি কোনো ব্যত্যয় খুজে পাবেন না।’ (সুরা আহযাব : ৬০-৬২)
‘উল্লেখিত আয়াতে মুরতাদ-মুনাফিকের দুটি অপতৎপরতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং তা থেকে বিরত না হলে শাস্তি লাঞ্ছনা এবং মৃত্যুদন্ড বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আয়াতের শেষ অংশ থেকে এ-কথাও স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, পূর্ববর্তী নবীগণের শরীয়তেও মুরতাদের শাস্তি ছিল মৃত্যুদন্ড।’ (মাআরিফুল কুরআন, মুফতী শফী ৭ : ২৩৪-২৩৫)
বিদ্রোহের শাস্তি কেবল মৃত্যুদন্ড
এখানে স্মরণ রাখতে হবে যে, মুরতাদ (প্রকাশ্য মুরতাদ অথবা মুনাফেক মুরতাদ দুজনই) আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারী মুহারিব। ইসলাম ও মুসলমানকে অপমানকারী বিশ্বাসঘাতক। আল্লাহর জমিনে শান্তি বিনষ্টকারী প্রতারক। সকল মুহারিব ও ফেৎনাবাজ দুষ্কৃতিকারীর শাস্তি প্রসঙ্গে কোরআন মাজীদের ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَنْ يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ مِنْ خِلَافٍ أَوْ يُنْفَوْا مِنَ الْأَرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الْآَخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ
‘যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে দুশমনিতে লিপ্ত হয় এবং পৃথিবীতে অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টির পাঁয়তারা করে, তাদের শাস্তি কেবল মৃত্যুদন্ড, শূলিবিদ্ধ করে হত্যা কিংবা হাত পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা অথবা নির্বাসিত করা (কারাগারে নিক্ষেপ করা)। এ তো হল তাদের পার্থিব অপমান। আর পরকালেও তাদের জন্য অপেক্ষা করছে মর্মন্তুদ শাস্তি। (সুরা মায়েদা : ৩৩)
হাদীসে নববীতে মুরতাদের শাস্তি-প্রসঙ্গ
হাদীস ইসলামী শরীয়তের স্বয়ংসম্পূর্ণ দলিল এবং কুরআনের তাফসীর। এখন আমরা সহীহ হাদীস ও আছারে সাহাবার আলোকে মুরতাদের শাস্তির বিষয়ে শরীয়তের নির্দেশনা তুলে ধরবো।
১. ইকরিমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী রা. এর নিকট কয়েকজন মুরতাদ-যিন্দীককে ধরে আনা হল। তিনি তাদের পুড়েয়ে ফেলার নির্দেশ দিলেন। এ-খবর ইবনে আববাস রা এর নিকট পৌছলে তিনি বললেন, আমি হলে পুড়িয়ে হত্যা করার আদেশ দিতাম না। কেননা রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহ পাকের শাস্তি দানের বস্তু (আগুন) দ্বারা শাস্তি দিও না।’ আমি বরং এদেরকে হত্যা করতাম। কেননা আল্লাহর রাসুল বলেছেন, ‘যে নিজের দ্বীন পরিবর্তন করবে, তাকে হত্যা করে ফেলবে।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৯২২, জামে তিরমিযী, হাদীস ১৪৫৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৩৫১, মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৮৭১)
প্রসিদ্ধ হাদীসে এসেছে-
২. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে কারীম (স.) বলেছেন, যে মুসলমান সাক্ষ্য দেয়, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই আর আমি আল্লাহর রাসূল, তিন কারণের কোনো একটি ব্যতীত তার রক্ত প্রবাহিত করা হালাল নয় : অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা, বিবাহিত ব্যক্তি যেনা করা, ইসলাম ত্যাগ করে উম্মত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৮৭৮, জামে তিরমিযী, হাদীস ১৪০২, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৮৭০৪, বায়হাকী ৮:১৯৪ ইত্যাদি)
মুরতাদের শাস্তি প্রসঙ্গে উম্মতের ইজমা
হাদীসে নববী যেমন শরীয়তের স্বয়ংসম্পূর্ণ দলিল, ইজমাও তেমনি পৃথক একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ দলিল। অর্থাৎ শরীয়তের কোনো বিষয়ে যদি উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়, তাহলে ঐ বিষয়ে সরাসরি কুরআন ও হাদীসের কোনো বক্তব্য না থাকলেও শুধু ইজমার ভিত্তিতে সেটা শরীয়তের অকাট্য বিধানরূপে পরিগণিত হয়।
মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড-এর উপর উম্মতের ইজমা রয়েছে। কোনো দ্বীনী বিষয়ে যুগের মুজতাহিদ আলেমগনের মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হওয়াকে ইজমা বলে। এখানে ইজমার কিছু দলিল তুলে ধরা হচ্ছে।
ইমাম তিরমিযী (মৃত্যু ২৭৯- হি.) তার জামে তিরমিযীর ১৪৫৮ নম্বর হাদীস-من بدل دينه فاقتلوه অর্থাৎ যে তার দ্বীন পরিবর্তন করবে, তাকে হত্যা করে ফেলবে-এর অধীনে লিখেছেন, والعمل على هذا عند أهل العلم في المرتد
অর্থাৎ মুরতাদের শাস্তির বিষয়ে ইলমের সকল ধারক-বাহকের নিকট এটাই অনুসৃত বিধান।
ইবনে আরাবী (মৃত্যু ৫৪৩ হি.) ইমাম তিরমিযীর উপরোক্ত বক্তব্যের প্রসঙ্গে লিখেছেন-لا خلاف في أن المرتد يقتل.
অর্থাৎ মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড-এ ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই।-আরিযাতুল আহওয়াযী ৬/২৪৩
ইবনু আব্দিল বার (মৃত্যু ৪৬৩ হি.) লিখেছেন, অর্থাৎ ‘যে তার দ্বীন ত্যাগ করে তাকে হত্যা করা বৈধ হয়ে যাবে এবং তার শিরশ্ছেদ করা হবে। মুরতাদের এ শাস্তির বিষয়ে পুরো উম্মতের সুপ্রতিষ্ঠিত ইজমা তথা মতৈক্য রয়েছে।’ আততামহীদ ৫/৩০৬
মুরতাদের মৃত্যুদন্ডের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে ইবনুল কায়্যিম আলজাওযিয়্যাহ (মৃত্যু ৭৫১ হি.) লিখেছেন, ‘মৃত্যুদন্ড হলো সর্বোচ্চ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি। সর্বোচ্চ অপরাধ যেমন, মানুষ হত্যা, দ্বীনের বিষয়ে কটূক্তি করা বা দ্বীন ত্যাগ করার মাধ্যমে দ্বীনের উপর আঘাত হানা ইত্যাদি।’
ইরতিদাদের অপরাধে মৃত্যুদন্ড দেওয়া খুবই যুক্তিসঙ্গত। কারণ সমাজে মুরতাদের অবস্থান সংঘাত-সহিংসতা ও আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণ হয়ে থাকে। এমন ব্যক্তির বেঁচে থাকার মাঝে কোনো মঙ্গলের আশা করা যায় না। একে বাঁচিয়ে রাখা বরং অনেক বড় নির্বুদ্ধিতা। (ইলামুল মুওয়াক্যিঈন ২/৮৪)
সংকলক-সাংবাদিক বি.এইচ.মাহিনী
প্রভাষক-গাজীপুর রউফিয়া কামিল মাদরাসা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.