![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a social worker.
লাল সবুজের বিজয়
--প্রভাষক বি.এইচ.মাহিনী*
বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রানপুরুষ, মহান স্বাধীনতার স্থপতি বাঙলী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্র্র্র্তৃক ৭মার্চে স্বাধীনতা ঘোষণার পর সুদীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাঙ্গালির শ্রেষ্ঠ অর্জন একটি লাল সবুজের পতাকা ও স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ। শুধুমাত্র পাকিস্তান আমলের ২৩ বছরের নয়। হাজার বছরের আন্দোলন সংগ্রমের ফসল এই স্বাধীন বাংলাদেশ। আর এই স্বাধীন ভূখন্ড প্রতিষ্ঠার জন্য মাস্টার দা সূর্যসেন, প্রীতিলতা, ক্ষুদিরাম বসু, শের-ই- বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোরাওয়ার্দী, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সহ জানা অজানা শত সহ¯্র নেতা শত শত বছরের মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা ও আজকের বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিক। পঞ্চাশের দশকেই তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয় এবং বাঙ্গালীদের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করা বঙ্গবন্ধুর মূল লক্ষ হয়ে উঠে। পাকিস্তান থেকে বাঙ্গালিদের বের করে এনে বাঙ্গালি জাতীয়তায় পূর্ব পাকিস্তানে একটি আলাদা দেশ প্রতিষ্ঠা করাই যেন বঙ্গবন্ধুর ব্রতী হয়ে উঠে। অবশেষে বাঙ্গালীর জনপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১-এ বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। আমাদের স্বাধীনতা ও আজকের লাল সবুজের পতাকাধারী বাংলাদেশের সাথে বঙ্গবন্ধু শব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তাইতো তাঁকে বাংলাদেশের স্থপতি বলা হয়। কারণ বঙ্গবন্ধুর মত আর কেউ কখনো এমন করে ভাবেনি বা ভাবতে পারেনি যে-বাঙ্গালীর জন্য একটি স্বাধীন-সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের প্রয়োজন। আর তা বাস্তবায়নের জন্য পুরো জীবনটাই উৎসর্গ করেছিলেন তিনি।
স্বাধীনতার পূর্বের নির্বাচনগুলোতে আমরা (বাঙালিরা) সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করেও আমাদের ন্যায্য অধিকার পাইনি। ’৭০ এর নির্বাচন পরবর্তী ইতিহাস আমাদের সকলের জানা। বঙ্গবন্ধুর ভাবনা ছিল বাঙ্গালীদের জন্য একটি আলাদা আবাসভূমি হবে। সেখানকার মানুষ হবে অসাম্প্রদায়িক, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, সমাজতান্ত্রিক এবং সমাজতান্ত্রিক সাম্যের ভিত্তিতে বিকাশ ও বিস্তৃত হবে অর্থনীতি, গণতান্ত্রিকতা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি ও কল্যাণে নির্মিত হবে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। এই ভাবনার আলোকেই বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় একটি অবশ্যম্ভাবী স্বাধীনতার কথা জানান। এবং তিনি সুস্পষ্ট ভাবে জনসভায় বলেছিলেন “ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইন-শা-আল্লাহ। সব শেষে তিনি ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’’ এ ঐতিহাসিক ভাষণকে তাই আজ ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ব সভায় আমাদের তথা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। দিয়েছে সম্মান, গৌরব ও নতুন পরিচিতি।
তাঁর এ ঘোষণার পর ২৫ মার্চের দিবাগত রাতে তদানিন্তন ইপিআরের ওয়ারলেসে ‘স্বাধীনতার ঘোষণা’ বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনার একটি অংশ ছিল বলে প্রতিয়মান হয়। তাঁর অনুপস্থিতে কি ভাবে আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালিত হবে তার পরিকল্পনাও পূর্বে তিনি দিয়েছিলেন। শুরু হল মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙ্গালীরা বিজয়ের পতাকা উড়াল দেশে। বিশ্ব জানতে পারল রক্তস্নাত একটি নতুন রাষ্ট্রের অভ্যূদয়ের কথা। লাল-সবুজ পতাকার আবর্তে জন্ম নিল একটি স্বাধীন দেশ-‘বাংলাদেশ’।
*লেখক-নির্বাহী সম্পাদক-সিংগাড়ী আঞ্চলিক গণগ্রন্থাগার ও ভৈরব সংস্কৃতি কেন্দ্র, অভয়নগর, যশোর।
০১৭ ৩৫-১৭ ৬২ ৮৬
©somewhere in net ltd.