![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a social worker.
বৃক্ষছায়ায় ভরবে দেশ : আমার সোনার বাংলাদেশ
--প্রভাষক বি.এইচ.মাহিনী
বাংলাদেশ। আমার প্রিয় মাতৃভূমি। আমার জন্মভূমি। রক্ত ও ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত এ দেশটি বিশ্ব দরবারে ‘সবুজ দেশ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করুক এ প্রত্যাশা যেন সবার মধ্যে জাগ্রত হয়। তাই দেশপ্রেমিক বাঙালী হিসেবে জাতীয় বৃক্ষ রোপণ অভিযানে অংশ নিয়ে পুরো বর্ষা মৌসুমে গাছে গাছে ভরে তুলি আমাদের প্রিয় স্বদেশ; বাংলাদেশ। বিশ্বে বাংলাদেশ পরিচিতি লাভ করুক ‘সবুজ দেশ’ হিসেবে। কেননা, বৃক্ষই জীবন, বৃক্ষই অর্থের আকর।
অতীব দুঃখের বিষয় হলো, বর্তমান বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ খুবই অপ্রতুল! বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক! সরকারি হিসাবে, দেশে মোট ভূমির ১৭.৫০ শতাংশ (প্রায়) বনভূমি রয়েছে। আর ‘এফএও’ এবং পরিবেশবাদী বে-সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মতে বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ ১০ শতাংশ (প্রায়)। অথচ বাংলাদেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বনভূমির পরিমাণ ২৫ শতাংশে উন্নীত করা আশু প্রয়োজন বলে মনে করেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা। সুতরাং মাতৃভূমিকে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে হলে বৃক্ষকর্তন ও বন উজাড়ের মানসিকতাকে পরিহার করে বেশি বেশি বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই।
দেখুন, আমাদের চারপাশে রয়েছে সবুজ ঘাস ও লতাগুল্মের বিস্তৃত সমাহার। চোখজুড়ানো সবুজ বিছানার চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি ছোট, মাঝারি ও আকাশচুম্বী বৃক্ষরাজি। রয়েছে বাগবাগিচার অসামান্য বিস্তৃতি। এসব গাছপালা আর বাগবাগিচা ছুঁঁয়ে আসা বাতাস থেকে আমরা পাই বিশুদ্ধতার ছোঁয়া সমৃদ্ধ প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের সরবরাহ।
একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়, জমিন এত সবুজ, এত এত ঘন উদ্যানে সুশোভিত আমাদের এ পৃথিবী; যা মূলত ছিল পতিত, ঠাঠা মাটি; অনুর্বর ভূমি। এমনকি জমিনে যে ফসল ফলে তার বীজটাও থাকে নির্জীব-শুষ্ক। কৃষক জমিতে শুষ্ক বীজ বপন করেন। অথচ কতই না আশ্চর্য উপায়ে এ শুষ্ক বীজ অঙ্কুরিত হয়ে সুবজ চারায় পরিণত হয়। কোমল চারাগাছে নির্দিষ্ট সময়ে আসে ছড়ায় ছড়ায় শস্যদানা, যা মানবজাতিসহ সব প্রাণীর জন্য খাদ্যখাবারের জোগান দেয়। এর থেকেই জোগান দেওয়া হয় সব জীবের খাদ্যোপকরণ। এ সবই সৃষ্টিকর্তার অসীম অনুগ্রহ ও অবারিত দান বৈ-কী?
এসব প্রাকৃতিক উপাদান, বিশেষ করে বৃক্ষ, তরু, লতাগুল্ম ও ঘাসÑ এগুলো সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে পৃথিবীবাসীর জন্য অমূল্য দান। অনেক বড় অনুগ্রহ। অতুলনীয় অনুকম্পা। সবচেয়ে গুরুত্বের কথা হলো, উদ্যান ও বন-বনানী মানুষের শ্বাস-নিশ্বাসের জোগান দেয়। গাছগাছালি মানুষের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করে। এগুলোর মাধ্যমেই আমরা অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারি। সুতরাং উদ্ভিদই মানুষের সবচেয়ে উপকারী বন্ধু। কারণ গাছপালা ও বনলতা আছে বিধায়ই অক্সিজেনের সরবরাহ বাকি আছে। আর অক্সিজেন আছে বলেই মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছে। গাছের মাধ্যমে পরিবেশেরও ভারসাম্য রক্ষা হয়। প্রত্যেক ভূখ-ে নির্দিষ্ট পরিমাণ উদ্ভিদ না থাকলে সে দেশের পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
বিভিন্ন ধর্মে বিশেষত ইসলামে তাই গাছগাছালির প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রাসুল স. বৃক্ষরোপণে অত্যধিক তাকিদ প্রদান করেছেন। আনাস র. থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক স. বলেন, ‘যদি কারও হাতে রোপণ করার কোনো চারা থাকে, এ অবস্থায় কেয়ামত এসেও যায় এবং রোপণ করার সময় পাওয়া যায়, তাহলে তা রোপণ করা ব্যতীত সে যেন দাঁড়িয়ে না থাকে।’
অন্য এক হাদিসে রাসুল স. বৃক্ষরোপণকে সদকায়ে জারিয়াহ বা ধারাবাহিক পুণ্যের আমল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। মুসয়াব বিন আনাস র. বলেন, রাসুল স. এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যায়-জুলুম না করে কিছু নির্মাণ করল অথবা কোনো চারা রোপণ করল, যতদিন পর্যন্ত আল্লাহর সৃষ্টি তা থেকে উপকৃত হবে, ততদিন পর্যন্ত রোপণকারী সওয়াব পেতে থাকবে।’
তাই আমাদের বেশি বেশি গাছ লাগানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। একটি গাছ কাটার আগে কম করে হলেও ১০টি গাছ লাগানো চাই। এতে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন ঠিক থাকবে, তেমনি আমরা সদকায়ে জারিয়ার সওয়াবও পেতে থাকব। (ইন-শা-আল্লাহ)
প্রভাষক বি এইচ মাহিনী
পরীক্ষক -ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা
প্রভাষক-গাজীপুর রউফিয়া কামিল মাদরাসা, অভয়নগর, যশোর।
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সম্পাদক : ভৈরব সংস্কৃতি কেন্দ্র ও সিংগাড়ী আঞ্চলিক গণ-গ্রন্থাগার
২৫-০৭-১৮
©somewhere in net ltd.