![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
◘নামঃ বেলাল হোসাইন বিদ্যা ◘জন্ম তারিখঃ ২৩ সেপ্টেম্বর ◘জন্মস্থানঃ খুলনা বিভাগের অন্তর্গত বাগেরহাট জেলার বাগেরহাট সদরের দক্ষিন সরুই এর মিঠাপুকুর পাড় সংলগ্ন নানু বাড়িতে। ◘বর্তমান ঠিকানা/স্থায়ী ঠিকানাঃ বাগেরহাটের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পশ্চিম-দক্ষিনে অবস্থিত খানজাহান পল্লী। ◘পরিবারঃ বাবা ব্যবসায়ী, মা গৃহিনী। বড় বোন শিক্ষিকা (ইন্সট্রাকটর), ছোট বোন শিক্ষার্থী।
মেয়েটির সাথে শেষ কবে দেখা হয়েছিলো!
এখন শত চেষ্টাতেও মনে করতে পারি না,
সে দিনটির বছর-মাস-তারিখ।
এতটুকুই শুধু মনে পরে,
দিনটি মঙ্গলবার ছিলো।
আমার সব থেকে অপছন্দের দিন।
অলুক্ষুনে দিনটিও বলা যেতে পারে।
জীবনে প্রথম বারের মতো,
দিনটির প্রতি এতটা ভালোবাসা জন্মেছিলো।
এখন অবশ্য সেই ভালোবাসাটুকু নেই।
তবে, মঙ্গলবার আছে।
যেমনটি আগেও ছিলো।
হয়তো সামনের দিনগুলিতেও,
এ অলুক্ষুণে দিনটিকে বয়ে বেড়াতে হবে,
বুকে জমে থাকা পুরনো সে ব্যথা নিয়ে।
সবুজ রঙের মাঝে যে সৌন্দর্য,
সে সৌন্দর্য কখনো উপভোগ করা হয়নি।
মন দিয়ে দেখা হয়নি সে সৌন্দর্যের সৌন্দর্য!
সেদিন দেখলাম।
মন ভরে দেখলাম।
ছিমছাম সবুজ শাড়িটির উপর পাথুরে কাজ।
সাদা পাথরগুলো থেকে সবুজাভ আলো ঠিকরে পড়ছিলো।
রোদ ঝলমলে আধো দুপুরে,
সমস্ত কায়োমন আটকে ছিলো শাড়িটির উপর।
মুখ তুলে তাকানোর সাহসটি হয়নি।
পায়ের উপর চোখ আটকে আছে।
মেহেদীর রঙে সেজেছে তুলির আঁচড়ে আঁকা সে পা।
নিঁখুত ভাবে শৈল্পিক রূপ দেয়া হয়েছে নখগুলোকে।
পায়ের কারুকাজ খচিত নুপূর দুটোও বেশ সুন্দর!
সব কিছুতে কেন জানি এক মাধুর্য মিশে আছে।
মৃদু এক হাঁচির শব্দে সম্বিত ফিরতেই,
বুঝতে পেলাম সবুজ শাড়ির মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছি।
কোথা থেকে শুরু করব!
গলায় জড়িয়ে আছে কাঠ খোদাইয়ের,
স্বল্প মূল্যের এক ছড়া মালা।
সবুজ পাথর বসানো তাতে।
নাকের উপর জমে আছে,
শিশির বিন্দুর মতো বিন্দু বিন্দু ঘাম।
নাকের বা পাশে সোনালী রঙা নাক ফুল।
একটা নোলক পরলে বুঝি আরো বেশি সুন্দর লাগতো!
গোলাপী রাঙা ঠোঁটে মৃদু কম্পন।
লজ্জা আর সংঙ্কা মেশানো সে কম্পন!
মুখের কোথাও কোন প্রশাধনী নেই।
বাতাসে দোল খাচ্ছে এলো চুলগুলো।
কয়েকগোছা বেয়াড়া চুল এসে চোখ আর মুখে পরছে।
নিঁপুনভাবে কখনো বা’ হাত
কখনো ডান হাত দিয়ে চুলগুলো সরিয়ে রাখছে।
দু’হাত জুড়ে সবুজ রঙের চুড়ি।
খুব সম্ভব কাঁচের চুড়ি!
বেশ লাগচে ও হাতে।
শাড়ির সাথে মিল রেখে দু’কানে ঝুলে আছে,
সুন্দর দু’গাছি বালা।
মাঝে মাঝে আলোর ঝিলিক পরছে বালা থেকে।
খুব বেশি দাম নয় হয়তো!
তবু সুন্দর লাগছে।
বেশ লাগছিল মেয়েটিকে।
এক অন্যরকম সুন্দর!
প্রেমে পরলে নাকি পুরুষের চোখে,
কুৎসিত কালো অন্ধকারও
আলো ছড়ায় রোদ ঝলমলে দিনের মতোই।
গ্রীষ্ণের কাঁঠফাটা রোদও নাকি,
বসন্তের মতো মনে হয়।
শরীর অবশ হয়ে আসে।
ক্ষুধা বোধ হয়।
নিজেকে বড় হালকা মনে হতে থাকে।
এই বুঝি বাতাসের সাথে ভেসে যাবে!
এমন আরো কত অনুভূতি পুরুষের।
হ্যা, আমিও প্রেমে পরেছিলাম।
সবুজ শাড়ি পরা মেয়েটির প্রেমে পরেছিলাম।
সবুজ কানের দুল, কাঠের খোদাই করা মালা;
গোলাপি ঠোঁট, শৈল্পিক নখ, মেহেদী রাঙা পা;
পায়ের নুপূর, নাকের উপরে জমে থাকা বিন্দু বিন্দু ঘাম;
সোনালী রঙা নাক ফুল, এলো কেশ, সবুজাভ চুড়ি।
প্রেমে পরেছিলাম!
সবকিছুর প্রেমে পরেছিলাম।
মেয়েটির মৃদু কোমল স্বরে মোহ ভাঙলো।
কোথাও জানো দেখেছি আপনায়!
বেশ চেনা চেনা লাগছে।
আচ্ছা আমার স্বামীর সাথে নয়তো?
জীবনে প্রথমবার এতটা চমকে উঠেছিলাম।
ভূমিকম্প বয়ে যাচ্ছে শরীরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে।
চোখ জুড়ে ঘোর অন্ধকার।
মনে হচ্ছিল, এই বুঝি জ্ঞান হারাতে হলো!
অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম।
বিড়বিড় করে মেয়েটির থেকেও মৃদু স্বরে বলেছিলাম-
আমি এ শহরের কেউ নই।
ভালো থাকবেন।
কোন উত্তরের অপেক্ষা না করে,
হন হন করে গন্তব্যের উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করলাম।
একটি বারের জন্যও আর পিছর ফিরে তাকানো হয়নি।
পিছন ফিরে তাকালে হয়তো দেখতে পেতাম,
মৃদু কম্পনের ও ঠোঁটে পরিহাসের হাসি খেলা করছে।
সবুজ রঙে বিতৃষ্ণা জমে গেছে আমার।
পৃথিবীতে সবুজ বলে কোন রঙ নেই।
পৃথিবীর বুকে কোন মঙ্গলবার নেই।
পুরুষের ‘প্রেম’ বলে কিছু নেই।
আমার কোন অতীত নেই।
আজ আবার দেখা হলো মেয়েটির সাথে।
পরনে সেই সবুজ রঙের শাড়ি।
©somewhere in net ltd.