নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিং দাদা

ভিন্ন কিছু চিন্তা করি। লেখালেখি করার ইচ্ছা থাকলেও অতটা প্রতিভা নেই। আমি একজন প্রতিভা বিহীন মানুষ।

8801922332801

কি

8801922332801 › বিস্তারিত পোস্টঃ

অর্থ পাচার হচ্ছে আমদানির আড়ালে!

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:২৮

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের মূল্য অনেকটাই কমে এসেছে। কমেছে টাকার বিপরীতে ডলারের মান। সরকারি-বেসরকারি ঋণ চাহিদাও সেভাবে নেই। তার পরও বেড়েছে আমদানি ব্যয়। অথচ বাড়েনি কাস্টম ও কর থেকে সরকারের আয়। বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ, আমদানির আড়ালে পাচার হয়ে যাচ্ছে অর্থ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে আমদানি (সিঅ্যান্ডএফ) ব্যয় ছিল ১০ হাজার ৯৫৯ মিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ২১৪ মিলিয়ন ডলার। উল্লিখিত সময়ে আমদানি ব্যয় বেড়েছে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

আবার গত অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে আমদানি শুল্ক আদায় হয় ৫ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে আমদানি বাড়লেও শুল্ক আয় কমেছে ১ শতাংশের কিছু বেশি।

একই সময়ে আমদানি পণ্যের ওপর সম্পূরক কর আদায়ও কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে সম্পূরক কর আদায় হয় ১ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা নেমে আসে ১ হাজার ৮২৭ কোটি টাকায়।

অথচ গত অর্থবছরের (জুলাই-অক্টোবর) তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ভোজ্যতেল আমদানি বেড়েছে ৬৩ শতাংশ, তুলা ২৩ ও কয়লা ২২৩ শতাংশ।

ব্যাংক ও শুল্ক কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানি বাড়লে কাস্টমসে সরকারের আয় বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। এতে প্রতীয়মান, আমদানির আড়ালে অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে। চট্টগ্রামের কয়েকজন ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও রাজধানীর বড় কয়েকটি করপোরেট গ্রুপ মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির নামে দেশের বাইরে অর্থ রেখে দিচ্ছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাসান জামান বলেন, ‘শুল্ক ও করমুক্ত খাদ্য আমদানি বেড়েছে। এ কারণে সরকারের আয়ে ঋণাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। তবে আমদানির সঙ্গে অন্য সূচকগুলো সমন্বয় না করায় আমরাও চিন্তিত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে তথ্যের সমন্বয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। তবে চেষ্টা করা হবে, যেন আমদানির নামে অর্থ পাচার না হয়।’

২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রতি ডলার ৮১ টাকা ৫৪ পয়সায় লেনদেন হলেও বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৭৭ টাকা ৭৫ পয়সায়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দামও নিম্নমুখী। গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মালয়েশিয়ায় পাম অয়েলের দাম টনপ্রতি ৯৬৬ ডলার থাকলেও চলতি অর্থবছরে তা নেমে এসেছে ৭৬৫ ডলারে। একই সময়ে তুলার আমদানি মূল্যও কমেছে ১০ শতাংশ। চাল-গমসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের মূল্যও এ সময়ে কমেছে। একই সঙ্গে অপরিশোধিত ও পরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। এসব কারণে আমদানি ব্যয় কমে আসা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সাধারণত দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করলে বেসরকারি খাতে স্বাভাবিকভাবেই ঋণপ্রবাহ বেড়ে যায়। এতে আমদানিও বাড়ে। এছাড়া সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের সঙ্গেও আমদানি ব্যয়ের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ঋণপ্রবাহ থেকে শুরু করে এডিপি বাস্তবায়ন— সবই রয়েছে উল্টো পথে।

গত অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ২০ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে শিল্পঋণ বিতরণ হয় ৯ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ শিল্পঋণ বিতরণ কমেছে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ।

একই চিত্র এডিপি বাস্তবায়নেও। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ; পাঁচ বছরের মধ্যে যা সর্বনিম্ন। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ১ হাজার ২৮৩টি প্রকল্পের বিপরীতে ৬৫ হাজার ৮৭২ কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট ঘোষণা করা হলেও গত পাঁচ মাসে ব্যয় করা গেছে মাত্র ১১ হাজার ২৯২ কোটি টাকা। এর আগে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। ওই সময় অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ব্যয় হয় মাত্র ১৬ শতাংশ। গত অর্থবছরেও এ সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ২৫ শতাংশ।

এসব বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমদানি বাড়লে ঋণপ্রবাহ ও শিল্পঋণ বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তা বাড়ছে না। বিশ্বব্যাপী আমদানির নামে অর্থ পাচার হয়। বাংলাদেশেও তা-ই হচ্ছে কিনা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তা খতিয়ে দেখা উচিত। বিশেষ করে বিনা শুল্কে যেসব পণ্য আমাদানি হয়, সেগুলোর বিষয়ে খোঁজ নেয়া প্রয়োজন। নির্বাচনী বছরে অনেকেই এসব সুযোগ নিয়ে থাকে। এসব নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। তবে কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতিসহ অনেক খাদ্যপণ্য আমদানিতে কোনো শুল্ক-কর নেই। এ কারণেও সরকারের আয় কমে যেতে পারে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.