![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.ছবিরুল ইসলাম হাওলাদারের বিরুদ্ধে একাধিক প্রবন্ধ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। স¤প্রতি অধ্যাপক পদে পদোন্নতির লাভের জন্য আবেদন পত্রের সাথে তিনি যে প্রবন্ধগুলো তার বলে উলে¬খ করেছেন তার ৫টিই তিনি বিভিন্ন লেখকের প্রবন্ধ জালিয়াতি করে নিজের নামে ছাপিয়েছেন বলে মারাতœক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি ইতোপূর্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনেও তিনি নিজের প্রবন্ধ সম্পর্কে মিথ্যে তথ্য প্রদান ও প্রকাশ করিয়েছেন। আর এ নকল প্রবন্ধগুলো নিজের বলে দেখিয়ে তিনি এক বছরের রেয়াত সহ প্রফেসর পদে পদোন্নতির জন্য আবেদন করেছেন। প্রবন্ধগুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদ গবেষণা পত্রিকার (২০০০-২০০১) ৬ষ্ট সংখ্যায় “রেনেসার অগ্রপথিক, আরবী নাট্যকার- তাওফীক আল-হাকীম ও তাঁর সাহিত্য কর্ম : একটি মূল্যায়ন” শিরোনামে প্রকাশিত একই বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর এ. কে. এম. শামসুল আলমের প্রবন্ধটির শিরোনাম ও সামান্য কিছু শব্দ পরিবর্তন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকার ৪৫ বর্ষ ৩য় সংখ্যায় (জানুয়ারী-মার্চ ২০০৬) নিজের নামে প্রকাশ করেন। অন্যদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকার ৩৮ বর্ষ ৪র্থ সংখ্যায় (এপ্রিল-জুন ১৯৯৯) “আরবী কবিতায় ইসলামী ভাবধারা” শিরোনামে মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খানের প্রকাশিত প্রবন্ধটি তিনি রাবির কলা অনুষদ গবেষণা পত্রিকার ১৪তম সংখ্যায় (২০০৮-২০০৯) “আরবী কবিতায় ইসলামী ভাবধারা : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ” শিরোনামে প্রকাশ করেন। এছাড়াও তিনি ঢাবি আরবী বিভাগের মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খানের “আহমাদ শাওকী ও তাঁর কবিতায় ইসলামী ভাবধারা” এবং একই বিভাগের মুহাম্মদ রেজাউল করিমের “আরবী নাটকের উৎপত্তি ও বিকাশ” শীর্ষক দু’টি মাস্টার্স (১৯৯১-৯২শিক্ষাবর্ষ) গবেষনাপত্র হতে হুবহু নকল করে যথাক্রমে “আহমাদ শাওকীর কবিতায় ইসলামী চিন্তাধারা : একটি পর্যালোচনা” এবং “আরবী সাহিত্যে নাটকের ক্রমবিকাশ : প্রসঙ্গ সিরিয়া ও লেবানন” নামে দুটি প্রবন্ধ নিজের বলে ছাপান। প্রথমটি রাবি কলা অনুষদ পত্রিকার (২০০৭-২০০৮) ত্রয়োদশ সংখ্যায় এবং অপরটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টাডিজ জার্নালে (ভলিউম: ৩৪, ২০০৬) ছাপানো হয়েছে। এ প্রবন্ধগুলোর শিরোনামে শাব্দিক কিছু পরিবর্তন আনা হলেও ভিতরের বেশির ভাগ প্যারাই হুবহু নকল করা হয়েছে। উপরোলি¬খিত প্রবন্ধগুলো নকল করে ছাপানো হলেও অপরের প্রবন্ধ নিজের বলে চালানোর মত জঘন্য মিথ্যাচার ও প্রতারণার আশ্রয়ও তিনি নিয়েছিলেন। ইসলামিক ইউনিভার্সিটি স্টাডিজ জার্নালে (ভলিউম-৮, সংখ্যা-২, জুন ২০০০) প্রকাশিত মোঃ গোলাম মাওলার ‘হযরত হাসান বসরী (রহ সমাজ ও ব্যক্তি উন্নয়নে তাঁর অবদান” শীর্ষক প্রবন্ধটি তিনি তার নিজের বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বার্ষিক প্রতিবেদনে (১৯৯৯-২০০০) প্রকাশ করান।
উলে¬খ্য যে, ইতোপূর্বে তার পি.এইচ.ডি থিসিস নিয়েও এ রকম অভিযোগ উত্থাপিত হলেও তিনি তা চাপা দিতে সক্ষম হন। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা আরো জোরালো হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক ড. ছবিরের একাডেমিক এবং পেশাগত জীবন নানা দূর্নীতি ও পংকীলতায় পরিপূর্ণ। ইতোপূর্বে ২০০৪ সালে রাবি হতে কোন প্রকার ছুটি ছাড়াই প্রায় এক বছর তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি করেন, যা বিশ্ববিদ্যালয় বিধি মোতাবেক সম্পূর্ণ বেআইনি। পরবর্তীতে বিষয়টি রাজশাহীতে জানাজানি হলে তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি বিভাগের কার্যক্রম হতে তাকে বাদ দিলেও উর্দ্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তিনি তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল-এর ফাইল গায়েব করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে বিভাগ কর্তৃক অবাঞ্ছিত ঘোষিত হন বলেও জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে ইনকিলাব সহ জাতীয় দৈনিকসমূহে রিপোর্টও প্রকাশিত হয়। এছাড়া তার বিভাগের একাধিক বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে ড. ছবির প্রয়োজনীয় ক্লাস গ্রহণ দুরে থাক কোন কোন বর্ষে একদিনও ক্লাস না নিয়ে দিব্যি চাকুরী করে যাচ্ছেন।
এছাড়াও আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.মো. ছবিরুল ইসলাম হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ক্লাস না নিয়ে কোর্স শেষ করা, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের প্রতি দুর্ব্যবহার করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে শ্রেণী কক্ষে ছাত্রীর বোরকার নেকাব খুলতে বাধ্য করারও অভিযোগ রয়েছে যা বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্রে আরও জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের শিক্ষক ড. মো. ছবিরুল হাওলাদার প্রভাব খাটিয়ে ১৯৯৭ সালে অক্টোবর মাসে আরবী বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। তৎকালীন সরকারের শিল্পমন্ত্রীর খুব কাছের লোক হওয়ার কারণে কোন যোগ্যতা না দেখে আটজন সকল শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকারকারী প্রার্থী থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ড. হাওলাদার আরবী বিভাগে নিয়োগ পান। কিন্ত তার চেয়ে অধিক যোগ্যতা সম্পন্নদের বাদ দিয়ে তাকে নিয়োগ দেওয়ায় তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি ড. হাওলাদারের বিভাগে যোগদানের ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষন করেন। ফলে তিনি বিভাগে যোগদান না করে রেজিষ্টার অফিসে যোগদান করেন। এটাই রাবির ইতিহাসে প্রথম বিভাগে যোগদান না করে রেজিষ্ট্রার অফিসে যোগদান এবং বেতন ভাতা উত্তোলন। নিয়োগ পাওয়ার তিন মাস পর তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে তিনি বিভাগে যোগদান করেন। বিভাগে যোগদানের পর ড. হাওলাদার নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হন না বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, তিনি নির্ধারিত সময়ে কোন কোর্সের ক্লাস শেষ করতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী একশ নম্বরের কোর্সের জন্য ৪০ টি ক্লাস নেওয়ার কথা থাকলেও ড. হাওলাদার ৫/৭ টির বেশী ক্লাস নেন না। এছাড়াও ক্লাসে কোন ছাত্রী বোরকার মুখের নেকাব পরে কথা বললে তিনি তাকে নেকাব খুলতে বাধ্য করান বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। ড. ছবিরুল হাওলাদার ১৯৯৭ সালে শুরুর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের এমফিল ফাইল গায়েব করেন পরে ধরা পড়লে তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ সচেতন মহল মনে করেন শধু উল্লিখিত ৫টি প্রবন্ধই নয় তার আবেদনের সাথে সংযুক্ত অন্য প্রবন্ধ গুলি এমনকি তার পিÑএইচ.ডি অভিসন্দর্ভ ও ভুয়া এবং নকল। এ ব্যাপারে যথাযথ ভাবে তদন্ত করে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ। নইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাবমূতি যেমন ক্ষুন্ন হবে তেমনি উল্লিখিত গবেষণা পত্রিকা সমুহের মান নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিতে পারে।
এ ব্যাপারে ড. ছবিরুল ইসলাম হাওয়াদারের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি এখন ব্যস্ত আছেন, পরে যোগাযোগ করবেন, বাহিরে আছেন, বিভাগে ফিরে ফোন দেবেন বলে জানান। পরে তাকে একাধিক বার মোবাইলে ফোন দেয়া হলেও তিনি তা ধরেন নি।
এ ব্যাপারে রাবি উপাচার্য প্রফেসর ড.আব্দুস সোবহানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ড.ছবিরুল হাওলাদারের বিরুদ্ধে কোন প্রবন্ধ জালিয়াতির অভিযোগ আমার জানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর এ ব্যাপারে দরাকরি করে। এ ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না বলে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তাছাড়া এটিকে সামান্য বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি এ ব্যাপারে উপাচার্য কে ফোন না দিয়ে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। #
২| ২২ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৫৪
নোয়াখালীর জাহিদুর রহমান বলেছেন: শিক্ষকরা যদি এ রকম কর্ম করেন তাহলে জাতি যাবে কোথায়?
৩| ২২ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:০৭
আসাদ /পারেভজ বলেছেন: আমাদের পাটিজান সাংঘাতিক আপায় তো শুধু একদিকে দেখেন.....ছিবিরের ওনারা তো.....
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:১৯
কানা-বাবা বলেছেন: ছিবিরের শিক্ষকদের নিয়ে কিছু লেখেনতো দেখি কেমন আপনার মুরোদ।