![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সব সময় নিজের ইচ্ছা কে প্রাধান্য দেই। আমি স্বাধীনতা চাই, স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চাই। স্বাধীন ভাবে উড়তে চাই, স্বাধীন ভাবে ঘুরতে চাই। হোঁচট খেয়ে পড়তে চাই, সেখান থেকে শিখতে চাই।
আজীবন শোষণমুক্তির লড়াই সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ কমরেড অনিল মুখার্জি ১৯১২ সালের ১০ অক্টোবর মুন্সিগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে স্মরণ করছি।
অনিল মুখার্জি একজন ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী ও শ্রমিক নেতা ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও বটে। ১৯৩০ সালে কলেজের ছাত্র থাকাবস্থায় কংগ্রেসের আইন অমান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেই আন্দোলনেই প্রথম গ্রেফতার হন এবং ব্রিটিশ সরকার প্রথমে তাঁকে মেদিনীপুর ও হিজলি জেলে আটক করে রাখে। পরে অনিল মুখার্জিকে আন্দামান জেলে নির্বাসিত করা হয়।
১৯৩৩ সালে আন্দামান সেলুলার জেলে বন্দিরা অনশন শুরু করেন। এ সময় বিপ্লবী অনিল মুখার্জিসহ অন্যান্য বন্দিরা অনশনের সিদ্ধান্ত নেন। অনশন অবস্থায় তিনজন বিপ্লবীকে জোর করে খাওয়াতে গিয়ে হত্যা করে জেল কর্তৃপক্ষ। এদিকে ৩ জনের মৃত্যুর খবর বাংলায় ছড়িয়ে পড়লে প্রবল আন্দোলন গড়ে ওঠে জেলের ভিতরে ও বাইরে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাহাত্মা গান্ধীসহ অনেক দেশবরেণ্য নেতাই বিপ্লবীদের অনশন থামানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। একটানা ৪৬ দিন অনশন করার পর বিপ্লবীদের দাবি মেনে নেয় কর্তৃপক্ষ।
একই সালে অনিল মুখার্জিসহ ৩২ জন বিপ্লবী জেলখানায় কমিউনিস্ট কনসলিডেশন গড়ে তোলেন। জেলখানায় এটিই ছিল কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম শাখা। ১৯৩৭ সালের ২৫ জুলাই আন্দামান জেলের বন্দীরা পুনরায় তিন দফা দাবিতে অনশন শুরু করেন। করা। একটানা ৩৭ দিন অনশন -আন্দোলনের এক পর্যায়ে বন্দীরা দেশে ফেরার নিশ্চিত প্রতিশ্রুতি আদায় করেন।
১৯৩৮ সালে অনিল মুখার্জি মুক্তি পেয়ে সরাসরি কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। প্রফুল্ল চক্রবর্তী ও বঙ্কিম চক্রবর্তীর সাথে কাজ করেন নারায়ণগঞ্জ শ্রমিকদের মধ্যে। ১৯৪৬ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ সুতাকল শ্রমিকদের ঐতিহাসিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দান করেন।
১৯৩৯ সালে ঢাকায় প্রগতি লেখক সংঘের শাখা গড়ে ওঠে। রণেশ দাশগুপ্ত, সত্যেন সেন, সোমেন চন্দ্র প্রমুখের সাথে অনিল মুখার্জি সেই সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রাখেন।
১৯৩৮সালে জেল থেকে বেরুনোর পর অনিল মুখার্জি হাত দেন তাঁর বিখ্যাত বই' সাম্যবাদের ভূমিকা' লেখার কাজে। ১৯৭০ সালে 'সাম্যবাদের ভূমিকা' ও 'শ্রমিক আন্দোলনের হাতেখড়ি' বই দু'টির প্রকাশ্য সংস্করণ প্রকাশিত হয়।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এদেশে কমিউনিস্ট পার্টি আবার নিষিদ্ধ হয়। কিছুদিন পর আবার গ্রেফতার হন অনিল মুখার্জি। এবার পাকিস্তানের কারাগার থেকে বের হন ১৯৫৫ সালে। ১৯৫৫ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সতের বছর তিনি একটানা আত্মগোপনে কাটিয়েছেন।
১৯৫৬ সালে পার্টির তৃতীয় সম্মেলনে তিনি কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৮ সালে অনিল মুখার্জি প্রথমবার মস্কো সফর করেন। সেখানে বিশ্বের পঁচাত্তরটি দেশের পার্টির মহাসম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পার্টির অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। সেসময় তিনি কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র 'মুক্তিযুদ্ধ'-এ লিখতেন 'স্বাধীন বাংলাদেশের সংগ্রামের পটভূমি'।
যুদ্ধ শেষে স্বাধীন দেশে ফিরে এসে তিনি আবার ঝাপিয়ে পড়েন দেশ পুনর্গঠনের কাজে। পাশাপাশি পার্টিকে গড়ে তোলার কাজে নেমে পড়েন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় ও ১৯৮০ সালে পার্টির তৃতীয় সম্মেলনে অনিল মুখার্জি সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন।
আজীবন সংগ্রামী এই মানুষটি ১৯৮২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৩২
কমরেড নীল বলেছেন: লাল সালাম