নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ না। আমি কেউ হতে চাই না কখনো। আমি চাই, আমার কোন নাম না থাকুক, বয়স-গোত্র-দেশ কিচ্ছু না থাকুক...

বিপ্লবের সাগর

আমি সব সময় নিজের ইচ্ছা কে প্রাধান্য দেই। আমি স্বাধীনতা চাই, স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চাই। স্বাধীন ভাবে উড়তে চাই, স্বাধীন ভাবে ঘুরতে চাই। হোঁচট খেয়ে পড়তে চাই, সেখান থেকে শিখতে চাই।

বিপ্লবের সাগর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জয়তু ইলা মিত্র

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:২১



ইলা মিত্রের জন্ম ১৯২৫ সালের ১৮ অক্টোবর। ১৯৪৬-৫০ সাল পর্যন্ত রাজশাহীর নবাবগঞ্জ অঞ্চলে তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন ইলা মিত্র। কৃষক জমির মালিক নয়, তাই উত্‍পাদিত ফসলের অর্ধেক দিতে হতো জোতদারদের হাতে। এ ব্যবস্থাকে বলা হতো ‘আধিয়ারী’। জোতদারি ও জমিদারি প্রথা ক্ষুদ্র কৃষকদের শোষণের সুযোগ করে দেয়। খাজনা আদায়ের জন্য জোতদাররা এদেরকে দাসের মতো ব্যবহার করে। চালাত নিপিড়ন, নির্যাতন। অনেক সময় খাজনা না দিলে কৃষকদের মেয়ে-বউ ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে মৃত্যুমুখে ছেড়ে দিত। খাজনা পরিশোধ করার জন্য কৃষকেরা গ্রামীণ মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হতো। যার ফলে কৃষকরা সর্বস্বান্ত হয়ে আধিয়ার আর ক্ষেত মজুরে পরিনত হয়। এই শোষণ কৃষকের মনে বিক্ষোভের জন্ম দেয়। যার ফলে ১৯৩৬ সালে গঠিত হয় ‘সর্ব ভারতীয় কৃষক পার্টি থেকে রমেন্দ্র মিত্র ও ইলা মিত্রকে সরাসরি মাঠ পর্যায়ে কৃষক সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে তেভাগা আন্দোলনকে জোরদার করতে বলা হয়। ১৯৪৭ সালে মুসলিম লীগ সরকার কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ করে। ইলা মিত্র ও রমেন্দ্র মিত্র নাচোলের চণ্ডীপুর গ্রামে আত্মগোপন করেন। আত্মগোপন অবস্থায় তাঁরা চণ্ডীপুর গ্রামে এক শক্তিশালী কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৪৮ সাল। ইলা মিত্র অন্তঃসত্ত্বা। সন্তান প্রসবের জন্য তিনি গোপনে কলকাতায় যান। পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এক মাস বয়সের ছেলেকে শাশুড়ির কাছে রামচন্দ্রপুর হাটে রেখে তিনি আবার ফিরে আসেন নাচোলে। ১৯৪৯ সালে তাঁদের নেতৃত্বে হাজার হাজার ভূমিহীন কৃষক সংগঠিত হয়। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে জোতদার, মহাজনদের দল। ওই বছর কৃষকের ধান জোতদারদের না দিয়ে সরাসরি কৃষক সমিতির উঠোনে তোলা হয়। ফলে সংঘর্ষ বাধে। নাচোলে সাঁওতাল ও ভূমিহীনদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে এক শক্তিশালী তীরন্দাজ ও লাঠিয়াল বাহিনী। এই বাহিনীর প্রধান ছিলেন মাতলা মাঝি। এভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ইলা মিত্র ও রমেন্দ্র মিত্র। ১৯৫০ সালে জোতদার ও ভূমি মালিকেরা নাচোলের ভিতর এবং আশেপাশে তেভাগা কার্যকর করতে বাধ্য হল। সরকারের পুলিশ বাহিনী গ্রামে গ্রামে অভিযান চালিয়ে আন্দোলন দমনের চেষ্টা করে। ১৯৫০ সালের ৫ জানুয়ারি পুলিশ বাহিনী চণ্ডীপুর গ্রামে আসে। গ্রামবাসী সংগঠিত হয়ে পুলিশ বাহিনীকে পাল্টা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে উত্তেজিত গ্রামবাসী ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও পাঁচ জন পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যা করে। এই ঘটনার দু’দিন পর ৭ জানুয়ারি শুরু হলো পুলিশের প্রতিশোধ। দুই হাজার সেনা রেলওয়ে স্টেশনের কাছে উপস্থিত হয়ে অভিযান শুরু করে। বারোটি গ্রাম ঘেরাও করে তছনছ করে। ঘরবাড়ি ধ্বংস করে। গুলি চালিয়ে হত্যা করে অসংখ্য গ্রামবাসীকে। নারীদের ধর্ষণ করে। শিশুদের চালায় যৌন নির্যাতন। আন্দোলনকারী নেতা-কর্মীরা যে যার মতো আত্মগোপনে চলে যায়। ইলা মিত্র ৭ জানুয়ারি সাঁওতাল বেশ ধারণ করে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ভারত সীমানা পার হওয়ার সময় তিনিশ আরো অনেক নেতা-কর্মী রোহনপুর রেলওয়ে স্টেশনে ধরা পড়ে যান। পুলিশ তাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। এই অত্যাচারে ইলা মিত্রর সাথীদের মধ্যে আনুমানিক ৮০/৯০ জন মারা যায়। নারী জাগরণ ও কৃষক আন্দোলনের এই কিংবদন্তি নেত্রী ২০০২ সালের ১৩ অক্টোবর তিনি মারা যান।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কৃষক নেত্রী কমরেড ইলা মিত্রকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়

২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

রাতুল_শাহ বলেছেন: উনার সম্পর্কে অনেক বই পড়েছি।
উনাকে নিয়ে একটি সিনেমা নির্মিত হয়েছে।
উনাকে নিয়ে ব্লগার মাহি ফ্লোরা আপুর একটা পোষ্ট আছে।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৩৯

বিপ্লবের সাগর বলেছেন: ইলা মিত্রকে নিয়ে যে সিনেমা নির্মিত হয়েছে, সেই সিনেমার নামটা জানালে উপকৃত হতাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.