![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সব সময় নিজের ইচ্ছা কে প্রাধান্য দেই। আমি স্বাধীনতা চাই, স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চাই। স্বাধীন ভাবে উড়তে চাই, স্বাধীন ভাবে ঘুরতে চাই। হোঁচট খেয়ে পড়তে চাই, সেখান থেকে শিখতে চাই।
এমন একটা সময় ছিল যখন শিক্ষকদের সর্বাধিক মর্যাদার চোখে দেখা হতো। শিক্ষক ছিলেন সমাজের অন্য দশজন থেকে আলাদা।
সম্রাট আলমগীর তার ছেলেকে লেখাপড়া শেখার জন্য শিক্ষকের বাড়িতে পাঠান। তখনকার দিনে লেখাপড়া শেখাতে সন্তানকে গুরু গৃহে পাঠাতে হতো। একদিন সন্তানের খোঁজ নিতে গুরু গৃহে গিয়ে সম্রাট দেখতে পান, তার ছেলে শিক্ষকের পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছে, আর শিক্ষক নিজ হাতে পা ধুয়ে নিচ্ছেন। সন্তান নিজ হাতে শিক্ষকের পা ধুয়ে না দেয়ায় সম্রাট ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সম্রাটের মনোভাব বুঝতে পেরে শিক্ষকের আনন্দ কবির ভাষায় এভাবে ফুটে উঠে,
"আজি হতে চির উন্নত হলো শিক্ষা গুরুর শির,
সত্যি তুমি মহান উদার বাদশাহ আলমগীর।"
মহামতি আলেকজান্ডার তার শিক্ষক প্লেটোর প্রতি সম্মান জানান এ বলে, 'To my parents I owe to life, to my teacher how to live worthily.' মধ্যযুগের কবি আব্দুল হাকিম শিক্ষককে 'দ্বিতীয় জন্মদাতা' হিসেবে তার কবিতায় তুলে ধরেন। আমাদের চিরায়ত গ্রাম বাংলায় মুরুব্বিদের মুখে অনেক শুনেছি, ''মা-বাপে বানায় (তৈরি করে) ভূত, ওস্তাদে বানায় পুত (পুত্র সন্তান/মানুষ)।"
এ ভাবেই যুগে যুগে শিক্ষকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যে জাতি যেটুকু অর্জন করেছে, তা সবই শিক্ষকদের হাত ধরে পেয়েছে।
আজও পৃথিবীর বহু দেশে শিক্ষকদের এভাবেই দেখা হয়। কিন্তু আমাদের দেশের চিত্রটা যেন দিনে দিনে ভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের জাতিটার পচন ধরার এ কোনো পূর্ব লক্ষণ কী না, কে জানে? তা না হলে মসজিদের মাইকে গুজব রটিয়ে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের পিয়ার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্চিত করে কান ধরে উঠ-বস করায় স্থানীয় এমপি।
তাই কবি দিজেন্দ্রলাল রায়ের ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে “সত্যিই সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ!”
©somewhere in net ltd.