![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিধাতার মতো নির্ভয়, প্রকৃতির মতো সচ্ছল, বন্ধন-হীন, জন্ম-স্বাধীন, চিত্ত মুক্ত শতদল!
কিছুদিন আগে এক পরিচিত গোয়েন্দা পুলিশ অফিসার, যে আমার বিশ্ববিদ্যালয়্কার সহপাঠি ছিল, এরপর বিসিএস দিয়ে পুলিশে গিয়ে এখন ডিবিতে আছে, তার সাথে বিভিন্নরকম হচ্ছিল, নানারকম লোমহর্ষক কাহিনী শোনাচ্ছিল তার গোয়েন্দা জীবনের। এক বন্ধের দিনে বন্ধু-বান্ধবদের গেট টুগেদারে চুটিয়ে আড্ডা দেয়ার ফাঁকে ফাঁকে তার বলা গল্পগুলোই ছিল প্রধান আকর্ষণ, মাঝে মাঝে তার বাহাদুরি সাফল্যে সবাই তার পিঠ চাপড়িয়ে প্রশংসা করছিল। এর মাঝে একটি গল্প বলার শুরুটা ছিল এরকম...নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে পতিতালয়ের পাশে একবার...আরো কিছু বলে যাচ্ছিল...কিন্তু আমার কানে ঐটুকুই আটকে থাকলো, টানবাজারের পতিতালয়...গল্পের মাঝপথেই প্রশ্ন করে বসলাম, তুমি শিউর সেটি এখনো আছে? বন্ধুটি থামলো এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই জবাব দিল, হ্যা আছেই তো. বহাল তবিয়তেই আছে. সে আমার চাহনি দেখেই বুঝলো আমি কি বলতে চাইছি। খোঁচা মেরেই বললো, তোমাদের নারী অধিকার নেত্রীরাই তো, পতিতাদের সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা চায়, লাইসেন্স চায়, তো আমার দিকে এমন কইরা তাকাও ক্যান? যাও মানববন্ধন কর গিয়া পতিতাদের অধিকার চাই. আমিও তার নাম বিকৃত করে ডেকে বলে উঠলাম, ইউ আর এ ব্যাড পুলিশ! তোমার সামনে অন্যায় ঘটে, তুমি খুব স্বাভাবিকভাবে সেইটার নাম উচ্চারণ কর, তার আশেপাশে গিয়ে অপরাধী দমন করার নামে বাহাদুরি লও, অথচ সমাজের নিকৃষ্ট কিছু কীট তোমার সামনে নির্বিঘ্নে অনৈতিক ব্যবসা করে যাচ্ছে, সেখানে তুমি মিঁয়াও ক্যান। বিল্লী কা আওয়াজ ছেড়ে শের কো হুঙ্কার কবে দেখাইবে বল?
আহহারে তুমি চেত ক্যান, বহুত হোমরাচোমড়া এর সাথে জড়িত, এলাকার এমপিও, থানার বড় পুলিশও, বখরা খায় সবাই, আমি শের কা হুন্কার তুইলা চাকরিখান হারায় আর কি! বিসিএস পড়ার কষ্ট কি, হেইডা তুমি বুঝবা কি? তুমি পেঁয়াজদি লইয়াই মর!
সবাই মিলে এবার তার পিঠে দুমদুম কিল দিয়ে, তুমি একটা মিঁয়াও পুলিশ, তুমি একটা মিঁয়াও পুলিশ। হইছে আর বাহাদুরি গপ্প মারা লাগিবে না, এইবার আমরা অন্য টপিকে যাই. বেচারা খুবই চুপসে গেল, নানাভাবে নিজেকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করলো, এরপর আরেক বান্ধবীর দয়ায় সে মার খাওয়ার হাত থেকে বাঁচলো, চল সবাই আইসক্রিম খাই.
বন্ধুদের আড্ডা তো একসময়ে ফুরিয়ে আসলো, কিন্তু মনের ভিতরে সেই খচখচানি থেকেই গেল, টানবাজারের পতিতালয়-এর ব্যবসা নিরাপদেই চলে... ভিতরে ভিতরে মনটা দমেই রইলো। এই ভার্চুয়াল জগতে, বা বাস্তবের আশেপাশে বিভিন্ন অসহায় নারীদের জীবন দেখি, রঙিন মোড়কেই হোক, বা পেটের দায়েই হোক, এরকম নারীত্বের অবমাননামূলক পেশার বিলুপ্তি হবে কিভাবে? যেখানে আইনের প্রয়োগও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতায় চলে? পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা কেবল পুরুষ নয়, নারীরাও ধারণ করেন। অনেক নারী নিজস্ব স্বার্থ উদ্ধারের এরকম অমানবিক পেশায় পুরুষের সহযোগী হন, কোন মধ্যবিত্ত পরিবারের নারী এরকম কোন প্রতারণার শিকার হলে মান ওয় সম্মান হারানোর ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বলেন, আবার ভিতরে ভিতরে অত্যন্ত গোপনে পুরুষগুলোরই সহায়ক হিসেবে কাজ করেন। যাতে অপেক্ষাকৃত সামাজিকভাবে দুর্বল নারীদের এ পেশায় আনা যায়. এর মাঝে তারা অবিবাহিত তরুণী যুবতী নারী ছাড়াও ডিভোর্সী বা বিধবা নারীদেরকেও টেনে আনার চেষ্টা করেন এ পেশায়। নানারকম ফন্দিফিকির করে, ছলচাতুরী করে একা নারীদের সাথে খাতির জমিয়ে শুভাকাংখী সাজার চেষ্টা করেন, তারপরই কোলে ধীরে ধীরে টোপ দেয়া। প্রথমে ছল সফল না হলে নানারকম হুমকি ধমকি দিয়ে বলপ্রয়োগ করে, ভয় ভীতি দেখিয়ে এ পেশায় আনার চেষ্টা করেন। আমি দেখেছি বাইরের উল্লেখ করার মত কিছু দেশে এ পেশাটিকে সরকারীভাবেই ঘৃণিত পেশা হিসেবে দেখা হয়, পুলিশ জানা মাত্রই এ পেশার সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসে. তারা কোন মুসলিম দেশ নয়. অথচ আমাদের এই দেশে 'বিসমিল্লাহ' দিয়ে শুরু হওয়া সংবিধানের আওতায়, পুলিশেরা এবং আইনসভার লোকেরাই এসব পেশাকে গোপনে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। এ দেশে বহু আইন আছে, কিন্তু সবই লোকদেখানো, আইনের লোকেরাই হয় সবচেয়ে অনির্ভরযোগ্য। খুবই দু:খজনক সেটি।
নারীর অধিকার নিয়ে টিভিতে, পত্রিকায় নানান কথা হয়, গার্মেন্টস কর্মীদের, গৃহকর্মীদের নানান অধিকারের বিষয়ে কথা হয়, এরকম মানবেতর পেশাজীবিদের বা এর সাথে সংশ্লিস্ট সবাইকে কঠোর আইনের আওতায় আনা হয় খুব কম, তাদেরকে পর্যাপ্ত কাউন্সেলিং, বিকল্প পেশায় পুনর্বাসন -এসব উদ্যোগ চলে খুবই যত্সামান্য।মাঝে মাঝে অতি উত্সাহী কেউ কেউ এসব এলাকা পুড়িয়ে দেন, কিন্তু এতে করে পতিতারা আরো ভাসমান হয়ে পড়ে, তাদের সুস্থ জীবন ধারণের কোন ব্যবস্থা হয় না. এরপর হয়তো তারা বিনে পয়সাতেই বিক্রি হয়ে চলে যান আরো ক্ষমতাধর কারো পতিতালয়ে। যাদের বাহ্যিক পরিচয় খুব চটকদার, ভেতরতা ঘুণে ধরা. টুপাইস উপরি কমানোর জন্যে এদের চারপাশে নানান মেকি সততার বা আইনি ভয় দেখিয়ে চলেন আরো কিছু বাচ্চা মিঁয়াও পুলিশ, যারা টাকার বিনিময়ে হোমড়াদের রক্ষা করে চলেন, নানারকম বুদ্ধি-পরামর্শ দেন কেমন করে দিনের আলোতে ভদ্রলোকের মতো মানবকল্যাণমুখী জীবন যাপন করা যায়.
১১ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:২৯
বিষের বাঁশী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:২৯
মূর্খ রুমেল বলেছেন: এরকম নারীত্বের অবমাননামূলক পেশার বিলুপ্তি হবে কিভাবে? প্রশ্ন টা আমারও
১১ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৩০
বিষের বাঁশী বলেছেন: জবাবটা আমারও জানা নেই ভাই.
৩| ১০ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৪৫
আহমেদ বিল্লাল বলেছেন: নারীদের সমাজে প্রতিষ্ঠত করতে না পারলে জাতী দায়মুক্ত হতে পারবে না।
১১ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৩১
বিষের বাঁশী বলেছেন: নারীর প্রতি মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আরো বেশি জরুরী।
১১ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৩১
বিষের বাঁশী বলেছেন: নারীর প্রতি মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আরো বেশি জরুরী।
৪| ১০ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৩
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: আমাদের দেশে আইনের রক্ষকরাই বেশি আইন ভঙ্গ করে
১১ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৩১
বিষের বাঁশী বলেছেন: এমনটা যেন না হয় আর.
৫| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৪৭
অন্ধ দাঁড়কাক বলেছেন: ভালো লিখেছেন
২২ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:০২
বিষের বাঁশী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পুনর্বাসন না করে পতিতালয় ভেঙে দিলে কি লাভ? মেয়েগুলো কোথায় যাবে? অদ্ভুত লাগে এসব কর্মকাণ্ড।
২২ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:০২
বিষের বাঁশী বলেছেন: সেটাও ঠিক!
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১৯
রাফা বলেছেন: বেশ ভালো লিখেছেন।আমাদের দেশে আইনের রক্ষকরাই বেশি আইন ভঙ্গ করে ।এটাতো দিনের আলোর মতই পরিস্কার।দূর্ণিতি হওয়ারও এটা একটা বড় কারন।পয়সা আর ক্ষমতা থাকলে বাংলাদেশে সব কিছুই করা জায়েজ হয়ে যায়।
ব্যাতিক্রম ছাড়া বাংলাদেশের পুলিশ নিয়ে গৌরব করার কিছু নেই।