![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্যর্থ আমি.. ব্যর্থ জাতির অপবাদ আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। কেউকি নেই ..... যে আমাকে পথ দেখিয়ে নিবে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ায়।।
১লা মে দিনটি পৃথিবীর অনেক দেশে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয় যা মে দিবস নামেও পরিচিত। বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই এ দিনটি সরকারীভাবে ছুটির দিন। ১৮৮৬ সালের মে মাসে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের ঐতিহাসিক আন্দোলন ও আত্মাহুতিকে এদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরন করা হয়। বিশ্বের প্রায় সব দেশে পালিত হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় এইদিনটি পালিত হয় না।
'শ্রমিক' - সভ্যতার প্রতিটি ইট,বালু, পাথরে যাদের ফোটা ফোটা ঘাম জড়িয়ে আছে তারা কিন্তু কখনোই সভ্যতার আশীর্বাদধন্য শ্রেনী ছিলনা, এখনো নয়। আজকের এই পোস্টে ১৮৮৬ সালের শ্রমিকদের অধিকার
আদায়ের ঐতিহাসিক সেই আন্দোলন নিয়েই লিখব বলে ঠিক করেছি।
ঊনিশ শতকের গোড়ার দিককার কথা। শ্রমিকরা তখনো শোষিত, সপ্তাহে ৬ দিনের প্রতিদিনই গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘন্টার অমানবিক পরিশ্রম করতো কিন্তু তার বিপরীতে মিলত নগন্য মজুরী। অনিরাপদ পরিবেশে রোগ-ব্যধি, আঘাত, ম্রত্যুই ছিল তাদের নির্মম সাথী। তাদের পক্ষ হয়ে বলার মত কেউ ছিলনা তখন। ১৮৬০ সালে শ্রমিকরাই মজুরি না কেটে দৈনিক ৮ ঘন্টা শ্রম নির্ধারনের প্রথম দাবি জানায়। কিন্তু কোন শ্রমিক সংগঠন ছিলনা বলে এই দাবী জোরালো করা সম্ভব হয়নি। এই সময় সমাজতন্ত্র শ্রমজীবি মানুষের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে থাকে। শ্রমিকরা বুঝতে পারে বনিক ও মালিক শ্রেণীর এই রক্ত শোষণ নীতির বিরুদ্ধে তাদের সংগঠিত হত হবে। ১৮৮০-৮১ সালের দিকে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠা করে Federation of Organized Trades and Labor Unions of the United States and Canada [১৮৮৬ সালে নাম পরিবর্তন করে করা হয় American Federation of Labor]। এই সংঘের মাধ্যমে শ্রমিকরা সংগঠিত হয়ে শক্তি অর্জন করতে থাকে। ১৮৮৪ সালে সংঘটি '৮ ঘন্টা দৈনিক মজুরি' নির্ধারনের প্রস্তাব পাশ করে এবং মালিকও বনিক শ্রেণীকে এই প্রস্তাব কার্যকরের জন্য ১৮৮৬ সালের ১লা মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। তারা এই সময়ের মধ্যে সংঘের আওতাধীন সকল শ্রমিক সংগঠনকে এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে সংগঠিত হওয়ার পুনঃ পুনঃ আহবান জানায়। প্রথম দিকে অনেকেই একে অবাস্তব অভিলাষ, অতি সংস্কারের উচ্চাকাংখা বলে আশংকা প্রকাশ করে। কিন্তু বনিক-মালিক শ্রেণীর কোন ধরনের সাড়া না পেয়ে শ্রমিকরা ধীরে ধীরে প্রতিবাদি ও প্রস্তাব বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে থাকে। এ সময় এলার্ম নামক একটি পত্রিকার কলাম 'একজন শ্রমিক ৮ ঘন্টা কাজ করুক কিংবা ১০ ঘন্টাই করুক, সে দাসই' যেন জ্বলন্ত আগুনে ঘি ঢালে। শ্রমিক সংগঠনদের সাথে বিভিন্ন সমাজতন্ত্রপন্থী দলও একাত্মতা জানায়। ১লা মে কে ঘিরে প্রতিবাদ, প্রতিরোধের আয়োজন চলতে থাকে। আর শিকাগো হয়ে উঠে এই প্রতিবাদ প্রতিরোধের কেন্দ্রস্থল।
১লা মে এগিয়ে আসতে লাগল। মালিক-বনিক শ্রেণী অবধারিতভাবে ঐ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল। ১৮৭৭ সালে শ্রমিকরা একবার রেলপথ অবরোধ করলে পুলিশ ও ইয়ুনাইটেড স্টেটস আর্মি তাদের উপর বর্বর আক্রমন চালায়। ঠিক একইভাবে ১লা মে কে মোকাবেলায় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রস্তুতি চলতে থাকে। পুলিশ ও জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা শিকাগো সরকারকে অস্ত্র সংগ্রহে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করে। ধর্মঘট আহবানকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য শিকাগো বানিজ্যিক ক্লাব ইলিনয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ২০০০ ডলারের মেশিন গান কিনে দেয়। ১লা মে - সমগ্র যুক্ত্ররাষ্ট্রে প্রায় ৩০০,০০০ শ্রমিক তাদের কাজ ফেলে এদিন রাস্তায় নেমে আসে। শিকাগোতে শ্রমিক ধর্মঘট আহবান করা হয়, প্রায় ৪০,০০০ শ্রমিক কাজ ফেলে শহরের কেন্দ্রস্থলে সমবেত হয়। অগ্নি গর্ভ বক্তৃতা, মিছিলে, মিটিং, ধর্মঘট, বিপ্লবী আন্দোলনের হুমকি সবকিছুই মিলে ১লা মে উত্তাল হয়ে উঠে। পার্সন্স, জোয়ান মোস্ট, আগস্ট স্পীজ, লুই লিং সহ আরো অনেকেই শ্রমিকদের মাঝে পথিকৃত হয়ে উঠেন। ধীরে ধীর আরো শ্রমিক কাজ ফেলে আন্দোলনে যোগ দেয়। আন্দোলনকারি শ্রমিকদের সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ১লক্ষ। আন্দোলন চলতে থাকে। ৩ মে (কারো কারো মতে ৪মে)১৮৮৬ সালে সন্ধ্যাবেলা হালকা বৃষ্টির মধ্যে শিকাগোর হে-মার্কেট বাণিজ্যিক এলাকায় শ্রমিকগণ মিছিলের উদ্দেশ্যে জড়ো হন। আগস্ট স্পীজ জড়ো হওয়া শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলছিলেন। হঠাত দূরে দাড়ানো পুলিশ দলের কাছে এক বোমার বিস্ফোরন ঘটে, এতে এক পুলিশ নিহত হয় এবং ১১ জন আহত হয়, পরে আরো ৬জন মারা যায়। পুলিশবাহিনীও শ্রমিকদের উপর অতর্কিতে হামলা শুরু করে যা সাথে সাথেই রায়টের রূপ নেয়। রায়টে ১১ জন শ্রমিক শহীদ হন। পুলিশ হত্যা মামলায় আগস্ট স্পীজ সহ আটজনকে অভিযুক্ত করা হয়। এক প্রহসনমূলক বিচারের পর ১৮৮৭ সালের ১১ই নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে ৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। লুই লিং একদিন পূর্বেই কারাভ্যন্তরে আত্মহত্যা করেন, অন্যএকজনের পনের বছরের কারাদন্ড হয়। ফাঁসির মঞ্চে আরোহনের পূর্বে আগস্ট স্পীজ বলেছিলেন, "আজ আমাদের এই নি:শব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে"।
২৬শে জুন, ১৮৯৩ ইলিনয়ের গভর্ণর অভিযুক্ত আটজনকেই নিরপরাধ বলে ঘোষণা দেন, এবং রায়টের হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কমান্ডারকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। আর অজ্ঞাত সেই বোমা বিস্ফোরণকারীর পরিচয় কখনোই প্রকাশ পায়নি।
শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের "দৈনিক আট ঘন্টা কাজ করার" দাবী অফিসিয়াল স্বীকৃতি পায়। আর পহেলা মে বা মে দিবস প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের দাবী আদায়ের দিন হিসেবে, পৃথিবীব্যাপী আজও তা পালিত হয়।
সূত্রঃ
Click This Link
http://www.powertech.no/anarchy/mayday.html
Click This Link
লেখাটি একইসাথে ‘আমার ব্লগ ‘ এ ও প্রকাশিত।
০১ লা মে, ২০০৮ রাত ১:৩৩
ব্লুজ বলেছেন: ছবিটা বড় হইয়া গেল নাকি?
২| ০১ লা মে, ২০০৮ রাত ১:৪২
দূরন্ত বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়ে ভাল লাগলো। +
উনিশ শতকের গোড়ার কথা নয়, আজও বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকরা অনেকেই ১০-১২ ঘণ্টার অমানবিক পরিশ্রম করে। কোথাও কোথাও সপ্তাহে সাত দিন। মজুরী? ধরুন গড়ে মাসে ১৫০০ টাকা। মানে দিনে ৫০ টাকা। বিশ্বাস না হলে নিজে খবর নিতে পারেন।
যাই হোক আমি আশাবাদী। এখানেও দিন পরিবর্তন হবে।
০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ৮:৪৮
ব্লুজ বলেছেন: আমিও আশাবাদী। এখানেও দিন পরিবর্তন হবে। আপনাকে ধন্যবাদ।
৩| ০১ লা মে, ২০০৮ রাত ২:৩১
নেমেসিস বলেছেন: ++++
এটা কি পড়ছেন ?? Click This Link
০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ৮:৫৫
ব্লুজ বলেছেন: ধন্যবাদ নেমেসিস। আমি আপনার আগের এভাটারের ছবিটার ভক্ত। পিস্তল ওয়ালা মানুষ আতকা বাচ্চা পুলা পান হইয়া গেল কেমতে?
দিন মজুরের পোস্টটা দারুন হইছে।
৪| ০১ লা মে, ২০০৮ ভোর ৪:৪৪
রাশেদ বলেছেন: থ্যাঙ্কস।
০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ৮:৫৭
ব্লুজ বলেছেন: ওয়েল কাম টুইটরিয়াল ভাই। আইজকা টুইটরিয়াল লেখা বোধহয় হইতাছেনা।
৫| ০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ৮:১২
লাল সালু বলেছেন: পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
মে দিবসের ইতিহাস আরও বিস্তারিত দিতে পারতেন। মজার বিষয় হল অনেকেই জানে না এবং আপনার পোস্টেও নাই যে মে দিবস টা কে/কারা ঘোষণা করেছিল যা আজ দুনিয়াজুড়ে পালিত হয় (আমেরিকা, কানাডা, জাপানে সংগত কারনেই সরকারী ভাবে পালিত হয় না)।
১৮৮৬ এর ১ লা মে সংঘঠিত স্ট্রাইক এবং পরবর্তী পাশবিক হত্যাযগ্ঞ ও প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণীর যে আপাত বিজয় (৮ ঘন্টা শ্রমের অধিকার) তাকে চুড়ান্ত রুপ দেওয়ার জন্য ১৮৮৯ সনে দ্বিতীয় মার্কিস্ট ইন্টারন্যাশনাল এর উদ্বোধনী কংগ্রেসে প্রতি বছর মে মাসের প্রথম দিন মে ডে হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৮৮৬ থেকে ১৮৮৯ পর্যন্ত দিনটি হে মার্কেট দিবস হিসেবে পরিচিত ছিল।
০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ৯:০০
ব্লুজ বলেছেন: ধন্যবাদ লালসালু। তথ্যটি যোগ করে দেয়ার জন্য। আমি আসলে শুধু ঐ মে দিবসের ঘটনাটাকে তুলে আনতে চেয়েছিলাম। কারন আমি অনেককে দেখেছি তারা এ দিবস টি সম্বন্ধে জানে কিন্তু জানেনা এই দিন কি ঘটেছিল। এখন সবাই আশা করি আপনার মন্তব্য থেকে বাকিটূকূ জানবে।
৬| ০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ৮:২৭
নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
ভালো পোস্ট, তবে সেদিনটিকে কিভাবে দুনিয়া জুড়ে মে দিবস হিসাবে পালন করা শুরু হলো- এই দিকটাও যদি আলোকপাত করতেন তবে পোস্ট খানি পরিপূর্ণ হতে পারতো.....
আপনাকে ধন্যবাদ।
০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ৯:০৩
ব্লুজ বলেছেন: নাস্তিকের ধর্মকথা ধন্যবাদ আপনাকেও। হ্যাঁ লালসালু ও এই কথাটা বলল। আমি আসলে শুধু মে দিবসের ঘটনাটাকে তুলে আনতে চেয়েছিলাম। পরবর্তিতে এ ধরনের পোস্ট দিলে আরো বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করব।
৭| ০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ১০:২৪
লাল সালু বলেছেন: ব্লুজ, কিছু মনে করবেন না। আপনার লিংক কিন্তু সুবিধার না। খেয়াল করবেন ওখানে মে ঘটনাকে নৈরাজ্য (?) হিসেবে ক্যাটাগরী করা হয়েছে।
০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ১১:২৩
ব্লুজ বলেছেন: আমি কিন্তু অনেক সাইট থেকে এ তথ্য সংগ্রহ করেছি। তথ্য সবই একরকম। আপনি দেখতে পারেন। এমনকি উইকিতেও।
৮| ০১ লা মে, ২০০৮ সকাল ১০:৫৮
মুকুল বলেছেন: ভালো পোস্ট। *****
০১ লা মে, ২০০৮ দুপুর ১:২৬
ব্লুজ বলেছেন: ধন্যবাদ মুকুল ভাই। এখানেও অভিনন্দন আপনাকে।
৯| ০১ লা মে, ২০০৮ দুপুর ১:০৭
একরামুল হক শামীম বলেছেন: দারুন লিখেছেন ভাইজান। শুভেচ্ছা।
০১ লা মে, ২০০৮ দুপুর ১:৩১
ব্লুজ বলেছেন: ধন্যবাদ শামীম ভাই। আপ্নাকেও শুভেচ্ছা।
১০| ০১ লা মে, ২০০৮ দুপুর ১:১০
অনিশ্চিত বলেছেন: এটা তো স্টিকি হওয়া উচিত ছিলো!
তবে জানেন, ইংল্যান্ডে নাকি ১লা মে-র ছুটি নেই। ছুটি নেই যেখান থেকে এর উৎপত্তি সেই শিকাগোতেও।
১১| ০১ লা মে, ২০০৮ দুপুর ২:০৭
ব্লুজ বলেছেন: চীনে আগে ৭ দিন ছুটি ছিল।এটাকে তারা বলে গোল্ডেন উইক। কিন্তু এ বছর থেকে মাত্র ৩ দিন ছুটি এখানে। আপনাকে ধন্যবাদ অনিশ্চিত।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা মে, ২০০৮ রাত ১:২৯
রাতমজুর বলেছেন: