নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগে পাবেন বিভিন্ন আর্টিকল, রিভিউ, টিপস ও টিউটোরিয়াল ।

বি এম খালিদ হোসেন

আমি বিএম খালিদ হাসান, ইংরেজিতে অনার্স, প্রফেশনাল সিনেমাটোগ্রাফার-ডিরেক্টর, ইভেন্ট ম্যানেজার, স্টেজ ও রেডিও শো প্রেজেন্টার ।

বি এম খালিদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিচার ফিল্মের গল্পে কি কি এলিমেন্ট থাকা জরুরি

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৫৭

একটা ফিল্মকে রুচিশীল ভাবে আকৃষ্ট করার জন্য সুন্দর সিনেমাটোগ্রাফি ও সাইন্ড ডিজাইন প্রয়োজন । কিন্তু এটা টেকনিক্যাল দিক । বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফি দিলেও সেটা ফিল্ম হবে না যদি গল্পে নোটেবল কিছু না পাওয়া যায়, গল্পে এমোশন না থাকে ।

ফিল্মে মানবজীবনের বিভিন্ন সময়ের মুহূর্তগুলো তুলে ধরা হয় । এই মুহূর্তগুলো ছাড়া ফিল্ম শুধু একটা ল্যান্ডস্কেপ স্লাইডশো ছাড়া আর কিছু না । আজকের পোস্টে থাকবে বেগিনার হিসেবে আমাদের ফিল্মে কি কি বিষয় তুলে ধরলে মানুষ মনে রাখতে পারবে ।

১. ক্যারেক্টারের পরিচিতি

বর্তমানে ফিল্ম গুলো শুরু হয় কোনো একটা রেন্ডম ঘটনা দিয়ে । দর্শক বুঝতে পারবে না কে কি করছে, কার সাথে কি সম্পর্ক । এসট্যাবলিশসেন্ট শটে একটা প্লেস দেখানো হয় । এরপর দুটো জিনিস হতে পারে ।

সেখানে রহস্যজনক কিছু ঘটবে । এরপর ইনট্রো দিয়ে নতুন সেটিংয়ে মূল ক্যারেক্টারের পরিচিতি শুরু হয়। কাহিনী এগোতে থাকলে এক পর‌্যায় থেকে প্রথম সেটিংয়ের অমীমাংসিত ব্যাপারটা চলে আসবে ও টা বাকি ফিল্মে সলভ করা হবে ।

অথবা প্রথম সেটিংয়ে কিছু ঘটমান অবস্থায় লীড ক্যারেক্টারের আবির্ভাব হবে । দর্শক তাকে চিনলে ও সে কি ভূমিকায় আছে জানলে এরপর ইনট্রো দিয়ে মেইন ফিল্মের কাহিনী শুরু হবে ।

২. হ্যামারশিয়া

ফিল্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হলো হ্যামারশিয়া । হলিউড সহ সব মুভি ইন্ডাস্ট্রি প্রটাগনিস্ট কে হ্যামারশিয়াতে ফেলে সকল সিনেমা তৈরি করে । হ্যামারশিয়া হচ্ছে প্রটাগনিস্টের মিসটেক, ব্যাডলাক, ওভার কনফিডেন্ট, ইগো বা ইগনোরান্সের ফলে তৈরি হওয়া হওয়া পরিণতি । ইগনোরান্সের একটা উদাহরণ দেওয়া যাক ।

আপনার একটা গ্রামের বন্ধু আছে । তার কথা ও কাজ একটু ফানি হওয়াতে সবার সামনে নিতে লজ্জা পান । একসময় তার কোনো কাজে বিব্রত হয়ে নিজের প্রেস্টিজ রাখতে তাকে দূরে সরিয়ে দিলেন ও শহরেরবন্ধুদের সাথে থাকলেন । অথচ এই স্মার্ট বন্ধু গুলো ড্রাগ এডিক্টেড, তাদের হেল্প না করায় তারা আপনাকে ড্রাগ ডিলার বলে পুলিশে দিলো। এটাই হ্যামারশিয়া । আপনার জন্য ভাল হবে মনে করে শহরের বন্ধুদের চুজ করলেন, কিন্তু তারা খারাপ আর যাকে ভাল হবে না ভেবেছেন সে আসলে ভাল ছিল ।

২. কনফ্লিক্ট ও ডিমোটিভেশন

কনফ্লিক্ট হচ্ছে একটা ক্যারেক্টারের দ্বিধা বা কনফিউসন । একটা পর‌্যায়ে প্রটাগনিস্ট বুঝতে পারে সে ভূল করেছে । এসময় সে কনফিউসনে পড়ে ।

পুলিশে ধরার পর আপনি বুঝলেন ভূল করেছেন । তখন গ্রামের বন্ধুর কথা আপনার মনে হবে । বুঝবেন যে সে যেমন ই হোক প্রকৃত শুভাকাংখী ছিল । কিন্তু এখন ফিরে গেলে কি সে আপনাকে গ্রহণ করবে ? নাকি অপমান করে ফিরিয়ে দেবে ? এই ভাবনা টাই কনফ্লিক্ট । এটা আপনাকে ডিমোটিভেটেড করে ফেলবে ও সবকিছু ছেড়ে আপনি লুকাতে চাইবেন ।

৩. অ্যাপলজি ও

পুলিশে ধরার পর আপনি জব, বাসা, রেপুটেশন সব হারিয়েছেন । মনোঃকষ্টে জর্জরিত হয়ে নিজেকে নিঃশেষ করে দিতে যাচ্ছেন । আপনি কান্না করবেন । ব্যাড ক্যারেক্টার থেকে গুড ক্যারেক্টারে পরিণত হবেন ।

আয়রন ম্যান মুভিতে টনি স্টার্ক উচ্চবিলাসী, প্রমিস ব্রেকার ও প্লেবয় থাকে । সে মিলিটারি উয়িপন সেল করে । যখন টেররিস্ট রা তাকে কিডন্যাপ করে, হার্টে তার নিজের তৈরি করা মিসাইলের শার্পনেইল ঢুকে যায় । সে দেখে তার বানানো অস্ত্র দিয়ে সারা পৃথিবীতে টেররিজম করা হচ্ছে, এই বাস্তবতা দেখে সে অ্যান্টি হিরো থেকে হিরোতে পরিণত হয় ।

৪. অ্যাকশন ও ক্লাইম্যাক্স

ক্লাইম্যাক্স হচ্ছে একটার পর একটা টুইস্ট এসে এক্সাইটমেন্ট আর টেনশন এর মাত্রা বাড়িয়ে দিতে থাকবে । এটা মইয়ের মত ।
সবকিছু যখন আগের মত হলো তখন নতুন করে সমস্যা হবে । আপনি কোনোভাবে শহরের বন্ধুরা ড্রাগ এডিক্টেড ও নিজে নির্দোষ প্রমাণ দিয়ে জেলের বাইরে বের হয়ে এসেছেন । এটার পর দেখে ড্রাগ এডিক্টেড রা বদলা নিতে আসবে । ফাইটে আপনি জিতলেন এরপর তারা আপনার প্রিয় কাউকে কিডন্যাপ করলো । আবার ফাইট হলো । একসময় আপনি জানলেন যে এরাই ছোটবেলায় আপনার প্রিয় কাউকে মেরেছিল । এভাবে ক্লাইম্যাক্স বাড়তে থাকে বা কমতে থাকে ।

৫. হোপ অ্যান্ড মোটিভেশন

ফাইনাল ফাইটে আপনি যখন পেরে উঠছেন না, ভিলেন আপনাকে পরস্থ করে ফেলছে তখন গ্রামের বন্ধুর আবির্ভাব হলো, সে আপনাকে বাচালো । আপনি অবাক হলেন তাকে দেখে । এতকিছুর পর ও সে আপনার দুরাবস্থায় চলে এসেছে দেখে এমোশনাল হবেন আপনি । সব ফিরে পাওয়ার নতুন আশা পাবেন । আবারো এক হবেন দুজন ।

৬. পোয়েটিক জাস্টিস

ফিল্মের কাহিনী দেখে দর্শকের বিচারে যে নীতিগত প্রতিফলন দেখা দেয় তাই পোয়েটিক জাস্টিস । দর্শক চাইবে হিরো ভাল কাজ করে তাই সে জিতবে এবং ভিলেন খারাপ কাজ করে তাই তার হারা উচিত । মুভিতে অ্যান্টিক্লাইম্যাক্স তৈরি করে অনেকসময় ভিলেনকে বেশি পাওয়ার দেওয়া হয় যাতে পরে ক্লাইম্যাক্স বাড়ানো যায় ।

যেমন ইনফিনিটি ওয়ারের শেষে থানোস তুড়ি মেরে হাফ পপুলেশন ভ্যানিশ করে দেয় । দর্শক এটা চায়নি তাই অ্যাভেঞ্জার্সের হাতে থানোসের ডিফিট হবে এই আশায় এন্ডগেম এ বাকি টা দেখার অপেক্ষা করবে ।

৭. ল্যামেন্টিং অ্যান্ড পিউরোগেশন

ভিলেনদের পরাস্থ করলেন আপনারা । কিন্তু আপনাকে বাঁচাতে গিয়ে আপনার বন্ধু মারা গেলো । এটা দর্শকের মনে পেউরোগেশন আনবে । কারণ প্রথমে আপনার একটা ভূল সিদ্ধান্তে এই পরিণতি হলো । আপনি নিজের রেপুটেশন, বাড়িঘর, বন্ধু সব হারালেন । দর্শকের মনে এই রিয়েলাইজেশন আনাটাই ফিল্মের একমাত্র গোল ।

আপনি অ্যাকশন, অ্যাডভেঞ্চার, ড্রামা, কমেডি, সাইফাই যে ধরনের মুভি ই করেন না কেন বিভিন্ন ঘটনায় এই কয়টা স্টেপস এ কাজ হলে আপনার ফিচার ফিল্ম পূর্ণতা পাবে । প্রত্যেকটা মুভিতে আপনি এই জিনিস গুলো দেখবেন । তাই গল্প লেখার সময়ে এগুলো বারবার চেক করে নিতে হবে ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.