নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বনসাই

বনসাই

বনসাই

বনসাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুরোনো সেই দিনের কথা (চতুর্থ বারো)

১০ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৪৪

তৃতীয় বারো

37. খুব ছোটোবেলায় মানিক মিয়া এভিনিউ এতো প্রশস্ত ছিল না; এখানে অনেক ডিভাইডার ছিল। রিকশার জন্যে ১টি, বেবিট্যাক্সির জন্যে ১টি, গাড়ির জন্যে আলাদা, বাসের জন্যে আরেকটি। পরে সবগুলো ডিভাইডার সরিয়ে ফেলা হলেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে আবার মাঝে একটি বসানো হয়েছে।

38. আমার একটি ইয়াশাকি ক্যামেরা ছিল, ফিল্ম এর ক্যামেরা। ফটো তোলার শখে বেশ খরচা হতো। ফিল্ম কিনতে হতো যা থেকে ৩৬ ছবি তোলা যেতো। এরপর নেগেটিভ ডেভেলপ-ওয়াস শেষে ফটো প্রিন্ট করার পরই আলোর মুখ দেখতে পেতো। কত দিন এমন হয়েছে ফিল্ম ঠিক মতো সেট না হওয়ায় রিল ঘুরে নি একটাও ছবি উঠে নি। আবার লেন্সের কাভার না খোলাতেও ফিল্ম নষ্ট হয়েছে।

39. আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা নামে নয় আমাদের ছেলেবেলায় আরো ক্ষুদ্র পরিসরে হতো রপ্তানী মেলা। চন্দ্রিমা উদ্যানে হওয়া এক মেলা থেকে ফেলুদার বই কিনেছিলাম মনে আছে। অমর একুশে বইমেলায় প্রতি বছর যেতাম, শিশু একাডেমীর নানা বই কিনে আনতাম।

40. মিষ্টি আর দই এর জন্যে বিখ্যাত ছিল মরণ চাঁদ এন্ড সন্স, স্পঞ্জ রসগোল্লা প্রথম আনে আম্বালা সুইটস, এলিফ্যান্ট রোডের রুবি কনফেকশনারিতে টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম পাওয়া যেতো।

41. সেবা প্রকাশনীর রহস্য পত্রিকা, কিশোর গোয়েন্দা, কিশোর ক্লাসিক, ওয়েস্টার্ন সিরিজ, কুয়াশা, মাসুদ রানা খুব পড়তাম। নতুন ‘উন্মাদ’এর জন্যে কি অপেক্ষায় না করতাম!। ভারতীয় ইন্দ্রজাল কমিকস, আনন্দমেলা পড়তাম নিয়মিত। আনন্দমেলায় প্রসাধনীর বিজ্ঞাপনে প্রথম দেখেছিলাম কিশোরী ঐশ্বরিয়া রাই-কে।

42. ঘরে বসেই মুভি দেখার জন্যে ভিসিআর ও ভিসিপি’র কদর ছিল বেশ। রঙ্গিন টিভিসহ এগুলো ভাড়া নেয়া যেতো ঘন্টা হিসেবে। হিন্দি সিনেমা ছোটোবেলায় দেখার সুযোগ ছিল কম; বাঙ্গালী বলে মিঠুন চক্রবর্তীকে ভালো লাগতো। ডিস্কো ড্যান্সার আর ড্রিম গার্ল দেখেছিলাম সে সময়।

43. ছেলেবেলায় খুব কম বাসায় টিভি ছিল, সেটাও ছিল সাদাকালো। বহু বাসায় কাঠের বক্স-টেবিলে টিভিসেট তালাবদ্ধ করা রাখা হতো।

44. একদম ছেলেবেলায় খুব প্রিয় কার্টুন ছবি ছিল ক্যাসপার, কুমকুম। দেখতে ভালো লাগতো হাওয়াই ফাইভ’ও, সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান, বায়োনিক ওমেন, হার্ট টু হার্ট, টারজান, স্পেস নাইনটি নাইন, স্টার ট্রেক সিরিয়াল; সেটারডে নাইট সিনেমা আর ওয়েজনেজডে নাইট সিনেমায় ইংলিশ মুভি দেখানো হতো। পরে এসেছিল কার্টুন স্পাইডার ম্যান, ব্যাড ম্যান, স্কুবিডু, থান্ডার ক্যাটস, নিনজা টার্টলস, মগলি, ইংরেজি সাপ্তাহিকে দেখানো হতো দি লিটল হাউজ অন দি প্রেইরী, সুইস ফ্যামিলী রবিন্সন, দি ওয়াটসন, ওয়ান্ডার ওমেন, দি পাওয়ার অব ম্যাথুস্টার, ম্যাকগাইভার, নাইট রাইডার, রবোকপ, ডার্ক জাস্টিস, দি এ টিম, সুপার ম্যান আর বড়দের জন্যে ছিল ডালাস, ডাইনেস্টি সিরিজ। ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়ার সময় বিটিভি রঙ্গিন পোশাক পড়ে।

45. নতুন কুঁড়ি বিটিভির জনপ্রিয় প্রোগ্রাম ছিল, শুরুতেই আমরা নতুন আমরা কুঁড়ি গানের সাথে কিছু শিশুকে দেখানো হতো সেখানে কয়েক বন্ধু থাকায় আরো ভালো লাগতো। ‘এসো গান শিখি’ ছিল আমাদের আরেকটি প্রিয় অনুষ্ঠান।

46. প্রথম দিকে বিটিভিতে রাত আটটায় ইংলিশ নিউজ প্রচার হতো; রাত ন’টায় বাংলা সংবাদ। ব্যাপ্তি ছিল ২৫-৩০মিনিট।

47. বিটিভির ধারাবাহিক সকালসন্ধ্যা দর্শকপ্রিয় ছিল, খালেদ খান যুবরাজ অভিনয় করেন রায়হান চরিত্রে ও এনাম আহমেদ তার বাবার ভূমিকায়। দু’জনই ছিলেন খলচরিত্রে। স্ত্রী সাকেরা (রিনা সুলতানা)র সাথে বাজে ব্যবহার শিশুমনে নাড়া দিয়েছিল বেশ।

48. ১৯৮৫ এর অক্টোবরের ১৫ তারিখ বৃষ্টির রাতে ধারাবাহিক নাটক শুকতারা দেখতে যেয়ে ঢাবি’র জগন্নাথ হলের টিভি রুমের জরাজীর্ণ ছাদ ধসে ছাত্রসহ ৩৯ জন মারা যায়, পরের দিন দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে এখন অক্টোবর স্মৃতি হল।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি বুদ্ধিমান। সে সময়ের কথা লিখে রেখেছিলেন।
আগের পর্ব গুলোও আমি পড়েছি। ভালো লেগেছে।

১০ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৩৭

বনসাই বলেছেন: সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ।
না না এখন পর্যন্ত যতটুকু এসেছে এবং পরে যা আসবে কিছুই আগে লিখে রাখা নয়; সময় কত বদলে দেয়; বদলে ফেলে সেটাই স্মৃতি থেকে তুলে আনার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।

২| ১০ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:৫১

আকিব হাসান জাভেদ বলেছেন: শুকতারার খবর টা মর্মান্তিক ছিলো । শোকে এক মিনটি নিরবতা পালন করলাম । সময়ের সাথে অনেক কিছুই বদলেছে । যে গুলো বদলায় নি সেগুলো স্মৃতির পাতায় নেই। পরবর্তি Episode এ আশায় আছি । চালিয়ে যান স্মৃতির এলো মেলো আত্মকহন।

১০ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৩২

বনসাই বলেছেন: চালিয়ে যান স্মৃতির এলো মেলো আত্মকহন। বেশ ভালো বলেছেন।

৩| ১০ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২০

কালীদাস বলেছেন: আহঃ

ইয়াশিকার একটা সেমি অটোমেটিক ক্যামেরা ইউজ করতাম, কাজেই লেন্সের ঢাকনার সমস্যাটা ছিল না। তবে ঠিকই বলেছেন, ডেভেলপ করার সময় দেখা যেত অনেক ছবিই জ্বলে গেছে :(

অনেক বাসাতেই আলাদা টিভি বক্স নামে এক অদ্ভুত ফার্নিচারের ভেতরে টিভি রাখা হত। সত্যি। সাদাকালোই ছিল বেশিরভাগ বাসাতেই। ৯৭/৯৮ পর্যন্ত ২১ ইঞ্চি কালার টিভির যে দাম ছিল, ইনফ্লেশন হিসাব করলে সেই টাকায় এখন ইজিলি ৫০ ইঞ্চি কার্ভড স্মার্ট টিভি কেনা সম্ভব সবচেয়ে ভাল ব্রান্ডের। ভিসিআরের চেয়ে ভিসিপি বেশি চলত কম্পারেটিভলি সস্তা হওয়ায় :|

কার্টুন: আমি আপনার উল্লেখ করাগুলোর পরেরগুলো দেখেছি। দুপুরে টিভি খুলত তিনটায়, কার্টুন দেখাত সাধারণত সাড়ে তিনটায় বা চারটায়, তাও মাঝে মাঝে দেখাত না। কি যে খারাপ লাগত না দেখালে :(


সুন্দর লেখনি মাইক্রো ব্লগিংএ :)

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০২

বনসাই বলেছেন: আহ! মধুর সব স্মৃতি! সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ।

৪| ১০ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:০৩

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন:
সংরক্ষিত তথ্যবহুল ইতিহাস ভালই লাগলো।

এখানকার প্রত্যেকটি দিয়ে এক একটি দীর্ঘ লেখা তৈরিকরত প্রকাশ করতে পারেন।

ধন্যবার

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০৩

বনসাই বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

৫| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:১৯

পদ্মপুকুর বলেছেন: এক একটা লিংক ধরে সবগুলোই পড়লাম। কি জানি হয়তো নস্টালজিয়া ভালোই লাগে তাই।

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০৭

বনসাই বলেছেন: আমরা আসলে ভাগ্যবান, এনালগ থেকে ডিজিটালে উন্নীত হওয়ার ধাপগুলো প্রাক্টিক্যালি পেয়েছিলাম।

৬| ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২১

আরাফআহনাফ বলেছেন: পুরোই নস্টালজিক করে দিলেন!!!

বইয়ের কথা বলতে গিয়ে অনেকগুলো নাম বললেন - আমি কিছু যোগ করছি - দেখুনতো মিলে কিনা?

রোমেনা আফাজের দস্যু বনহুর সিরিজ
দস্যু পান্জা সিরিজ
নন্টে-ফন্টে সিরিজ


টিভি সিরিজে - ইনক্রাডিবল হাল্ক যোগ করতে হয়!

ইকনো বলপেন ছিলো লেখার পাশাপাশি খেলারও অনুষঙ্গ। একজোড়া বলপেন একত্র করে টেবিলে আঘাত করলেই জোড়া লেগে যেত -
সেসময় নতুন টুথপেস্ট "স্পার্কেল" দিয়েছিল একটি টুথপেস্টের সাথে দুটো বলপেন ফ্রি!!!! :D এটা আনকোরা আর অভিনব মার্কেটিং পলিসি ছিলো সেসময়।

আসলে অসাধারন একটা সময় পেরিয়ে এসেছি আমরা, যাদের শৈশব/কৈশোর কালের ব্যাপ্তি ছিল ৮০/৯০এর দশক।

পুরো লেখায় পুরনো স্মৃতি উসকে দিলেন চমৎকারভাবে - ধন্যবাদ।

১৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৫০

বনসাই বলেছেন: নন্টে-ফন্টে সিরিজ তো অসাধারণ, কিছুদিন আগে ভারতীয় একটি টিভি চ্যানেলে দেখেছিলাম, ফিরে গিয়েছিলাম আমাদের সেই দিনগুলিতে।
ইঙ্ক্রেডিবল হাল্ক নামটি যোগ করায় খুশী হলাম, মিস করেছিলাম। ঈদের আনন্দমেলায় কৌতুক অভিনেতা রবিউল আর ইঙ্ক্রেডিবল হাল্ক-কে নিয়ে মজার একটি পর্ব হয়েছিল। টিভি সিরিজ আরো ছিল কোজাক, ইনভিজিবল ম্যান, ওশিন।

ইকোনো বলপেনের কালি শেষ হলে দু'টো দিয়ে আমরা গুলতি বানাতাম, গলিয়ে বল, পেপার ওয়েট ইত্যাদি তৈরি করতাম।

ঠিক, স্পার্কেল টুথপেস্ট কিনে কলম উপহার পেয়েছিলাম।

৭| ১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৩:৫৪

হাসান রাজু বলেছেন: এভারেস্ট জয় হত ৩৬ এর জায়গায় ৩৭ কখনো ৩৮ টা ছবি তুলতে পারলে । আমি ফিল্ম/রিল লোডের উস্তাদ ছিলাম। ৩৭/৩৮ ছবি পেতে লোডইং এ কারিশমা ছিল ।

১৭ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৭:০৮

বনসাই বলেছেন: ইস! আপনাকেই তখন আমার প্রয়োজন ছিল; ৩৭/৩৮টা পেতে যেয়েই ৩৬টা আর স্মৃতিগুলো হারিয়ে ফেলেছিলাম।

৮| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:০৬

মনিরুল ইসলাম বাবু বলেছেন: এত্ত কিছু তো মনেই নাই ।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৩০

বনসাই বলেছেন: এ কারণেই কিছু স্মৃতি থেকে এখানে তুলে আনা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.