নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বনসাই

বনসাই

বনসাই

বনসাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুরোনো সেই দিনের কথা (ষষ্ঠ বারো)

১২ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:১৭

সময়ে বদলে যাওয়া কিছু বিষয় নিয়েই স্মৃতিকণা লিখছি এখানে কালের ধারাবাহিকতা সচেতনভাবে এড়িয়ে। এ লেখা একান্তই নিজেকে খুঁজে পাওয়ারই এক প্রয়াস বলা যায়-
প্রথম বারো
দ্বিতীয় বারো
তৃতীয় বারো
চতুর্থ বারো
পঞ্চম বারো


61. বিশ্ববিদ্যালয় কর্মসংস্থান প্রকল্প সংক্ষেপে বিকল্প নামে ইউনিভার্সিটি পাস ছাত্রদের স্ব-কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন তৎকালীন জনতা ব্যাংকের এমডি লুৎফর রহমান সরকার। পরে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও হয়েছিলেন। প্রথম প্রকল্প হিসেবে বাস নামানো হয়, প্রথম দিকে চালক হিসেবে ছাত্ররাই ছিল। বিকল্প সার্ভিস নামে সেই বাসের রুট ছিল মিরপুর ১২-মিরপুর ১-নিউমার্কেট-গুলিস্থান-সায়েদাবাদ।

62. বাসা-বাড়ির গৃহস্থালী আবর্জনা ঢাকার অলি-গলি-পথেই ফেলে রাখা হতো। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সেগুলো মূল ডাস্টবিনে রাখতো। তবে অধিকাংশ সময় ময়লা আবর্জনা ১/২ দিন পড়েই থাকতো। দুর্গন্ধ-জীবাণু ছড়াতো চারপাশে। এখন আমরা পাড়া-মহল্লায় ভ্যান-গাড়িতে ময়লা প্রদানের যে ব্যবস্থায় অভ্যস্ত হয়েছি সেটা প্রথম উদ্যোগী হয়ে শুরু করেছিলেন কলাবাগান এলাকার বাসিন্দারা।

63. সফট ড্রিংক একমাত্র ২৫০মিলির কাঁচের বোতলেই পাওয়া যেতো, সেই বোতল বাসায় আনতে হলে জামানত রাখতে হতো, খালি বোতল ফেরত দিলে জামানতের টাকা ফিরিয়ে দিতো দোকানী।

64. দোকানে দোকানে পাওয়া যেতো ইগলু আইসক্রিম, এরপর আসে পোলার। পোলারের চকবারের দাম প্রথমে ছিল ৭ টাকা। ঢাকায় এক সময় বিখ্যাত ছিল বেবী আইসক্রিম।

65. চিনি-দুধ-চাপাতা-তেল ইত্যাদি প্রয়োজনে প্রতিবেশীর কাছে থেকে ধার আনা যেতো কাপে করে।

66. রান্নায় সরিষার তেলই ব্যবহৃত হতো। সয়াবিন তেল আসে পরে। সাদা তেলে রান্নায় অনীহা ছিল রাধুনীর।

67. ছোটোরা পেন্সিলে লিখতো, বড়রা ব্যবহার করতো ফাউন্টেন পেন, কালি হিসেবে প্রিয় ছিল ‘ইয়ুথ’ ব্র্যান্ড। বলপেন বেশি চলতো জাপানী রেডলিফ; দাম ছিল ৮ টাকা। পরে এলো ৩ টাকায় ইকোনো বলপেন। বলপেনে লিখলে হাতের লেখা খারাপ হয়ে যায় বলে যারা এড়িয়ে চলতো তারাও ইকোনো ব্যবহার আরম্ভ করে।

68. একুয়ারিয়াম ফিসের একমাত্র দোকান ছিল আমার জানামতে এলিফ্যান্ট রোডে এখনকার মল্লিকা মার্কেটের বিপরীতে। কাঁটাবনের ফুল, পেটসপ ও মাছের দোকানের জায়গায় ছিল সারি সারি বস্তি ঘর।

69. ঢাকায় ফুলের মার্কেট ছিল হাইকোর্টের সামনে। শহরে আর কোথাও ফুল বিক্রি হতো না। বাসর ঘর আর বিয়েতে বরের গাড়ি সাধারনত সাজানো হতো কাগজের ফুল দিয়েই।

70. ঢাকাতে ট্যাক্সি সার্ভিস ছিল, কালো বডি আর রুফ টপ হলুদ রঙ নিয়ে গাড়িগুলো চলতো। গাড়ির জন্যে যেতে হতো সোনারগাঁও হোটেলের পূর্বের স্টান্ডে। সিএনজি অটোরিক্সার আগে রাজপথ দাপিয়ে বেড়াতো বেবিট্যাক্সি নামে ত্রিচক্রযান।

71. এরশাদের আমলে প্রতিটি বাসের ছাদেও লেগেছিল হলুদের ছোঁয়া; বাস রুটের ভিন্নতা অনুযায়ী বডির রঙ ছিল ভিন্ন। সহজেই জানা যাতো কোন বাসের গন্তব্য কোথায়।

72. দেশকে বিদেশী অতিথিদের কাছে ইসলামী লেবাস দেয়ার জন্যে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সরকারী ও ব্যক্তিগত বাড়ির সীমানা প্রাচীরের ডিজাইনে গম্বুজ আকৃতি আনা হয়েছিল এরশাদের সময়।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: অতীতে ফিরে গেলাম।

১৩ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:০০

বনসাই বলেছেন: সেই অতীত অনেক আন্তরিক ছিল। সেখানে মমতা ছিল বেশী।

২| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:১৭

আসিফামি বলেছেন: ভাই ফাটাফাটি একটা কাজ হচ্ছে , আমিও ৮০-৯০ দশকের লোক। আসলেই এগুলো লিখা দরকার ছিলো। ফলো দিলাম

১৪ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৫৩

বনসাই বলেছেন: আপনার পছন্দ হয়েছে জেনে লিখতে আরো আগ্রহী হলাম; ভালো থাকুন।

৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:৫৯

পদ্মপুকুর বলেছেন: এই পোস্টে মন্তব্য করার কোনো দরকার নেই। শুধু প্রিয়তে থাকবে। কোন কথা হবে না বস্।

১৪ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২১

বনসাই বলেছেন: তারপরও কত কথা টোকা দিয়ে গেল মনে!

৪| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:১৭

খাঁজা বাবা বলেছেন: কোন আওয়াজ হবে না, শুধু কল্পনা

১৪ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:০০

বনসাই বলেছেন: সাথেই থাকুন; আসুন ভাগাভাগি করি সেই দিনগুলো।

৫| ১৪ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: বাহ।

১৪ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:২১

বনসাই বলেছেন: ব্লগে আপনাকে আন্তরিক স্বাগতম।

৬| ১৭ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৮

কালীদাস বলেছেন: ঢাকায় প্রথম পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ইউজ করা এই বিকল্প বাসে চড়ে। এবং প্রথমবার চড়ার পর জানতে পারি "বাম আগে দিয়েন"- এর মাজেজা ;) না শুনে ডান পা দিয়ে নামায় অল্পের জন্য চাকার তলে পড়িনি :(

মল্লিকা মার্কেট আসলে ছিল মল্লিকা সিনামা হল, ঢাকার সবচেয়ে পুরান সিনামা হলগুলোর একটা। ২০০০ সালের দিকে সিনামা হল ভেঙে আরেকটা ফালতু মার্কেট বাড়ানো হয় =p~

কিন্ডারগার্টেনে পড়ার সময় ক্লাস থ্রির আগে কলম দেয়া হত না। ইকোনো আর রাইটার ছিল সবচেয়ে সস্তা (তিন টাকা করে), পরে এদের ডিএক্স ভার্সন বের হয় সাড়ে তিনটাকা করে। রেডলিফ মনে হয় এখনও আছে, তবে এটার একটা সিরিয়াস সমস্যা আছে: লেখা লাল হয়ে খানিকটা ছড়িয়ে যেত একমাসের মধ্যেই :( আরেকটা ভাল কলম ছিল, স্টেডলার। জার্মান; দাম খানিকটা বেশি হলেও চমৎকার ছিল :)

পোলারের চকবার.... :``>>

১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:৪৪

বনসাই বলেছেন: বাস থেকে নামার সময় 'বাম পা আগে ফেলবেন' কথাটি আজো যাত্রীরা সহজভাবে নিতে পারে নি; নিয়মিত যাত্রীরা ঠেকে শিখেছে কিন্তু অনিয়মিত যাত্রীরা বিশেষভাবে মহিলারা ধর্মীয় সংস্কার 'ডান' বাড়ানোর প্যাঁচে পড়ে প্রায়ই পড়ে যান।

মল্লিকা সিনেমা হল খুব পুরোনো ছিল বলে মনে হয় না। এটা এক বিচারপতির জায়গা ছিল বলে শুনেছি। তিনি এলিফ্যান্ট রোড প্রশস্ত করার জন্যে সরকারকে জায়গা ছাড়তে রাজি হন নি। কেস হয় এবং সরকার হেরে যায়। এ কারণে আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে সিনেমা হল চালু থাকার সময় সামনের রাস্তা সংকীর্ণ ছিল ও বিপরীত পাশেই কেবল পিচ ঢালাই ছিল। ইস্টার্ন হাউজিং কে জমি ক্রয়ের সময় অর্ধেক রাস্তার মূল্য দিতে হয়েছিল। আর এই বিল্ডিং এ এজাক্স হকি ক্লাব ছিল।

আপনার সংযোজন লেখাটিকে নিঃসন্দেহে সমৃদ্ধ করছে, আমাকেও অনুপ্রাণিত করছে। ভালো থাকুন।

৭| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৪০

লিযেন বলেছেন: আগে জন্মদিনের অনুষ্ঠান হতো বিকেল বেলা....। কেক কাটা শেষ হলে নাস্তা হিসেবে জন্মদিনের কেক, বম্বে চানাচুর,বিস্কিট ইত্যাদি থাকতো।

১৯ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩

বনসাই বলেছেন: ভালো একটি বিষয় মনে করিয়ে দিলেন, বিকালে বার্থডে পার্টি বাসাতেই হতো। কেক, মিষ্টি, পেটিস, ফল ইত্যাদি থাকতো। রাতের খাবারের আয়োজন সব সময় থাকতো না। ১৯৮৫/৮৬ সালের ঘটনা, ছোটোবোনের জন্মদিন, স্কুলের সহপাঠী, বান্ধবী আর কিছু আত্মীয় এসেছেন। বাবা নিউ এলিফ্যান্ট রোডের রিনা কনফেকশনারী থেকে অর্ডার দিয়ে বার্থ ডে নিয়ে এসেছেন।
ডাইনিং টেবিল ঘিরে কেক কাটার প্রস্তুতি চলছে। বক্স খুলে দেখি সেখানে অন্য এক ছেলের নাম লেখা; বাবা বললেন সাইজটাও বড় লাগছে। এখন উপায়? প্যাকেট করে আবার দোকানে নিতে যেয়ে দেখি ক্যাম্পাসের মেইন গেটে দাঁড়িয়ে আছে ওই দোকানের দুই কর্মচারী। তারা বাসার নম্বর না জানাতে কী করবে সেটাই নিয়েই কথা বলছিল; হাতে ছিল আমাদেরটা। আমাকে আর দোকান পর্যন্ত যেতে হলো না। ওখানেই বদলাবদলি করে নিলাম। তারাও হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
আমাদের সময়ে জন্মদিনে উপহার পাওয়া যেতো পোষাক, গল্পের বই, খেলনা, খেলার সামগ্রী, রঙ পেন্সিল, কলম, জ্যামিতি বক্স। মেয়েদের জন্যে বাড়তি থাকতো সাজগোছের উপকরণ।

৮| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:১৯

লিযেন বলেছেন: নতুন পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম....................। !:#P

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৮

বনসাই বলেছেন: সপ্তম, অষ্টম ও নবম পোস্ট তো ইতোমধ্যে চলে এসেছে।

৯| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: ৬৯ নং প্রসঙ্গেঃ
সে সময় কাগজের ফুল দিয়ে শুধু বাসর ঘর আর বরের গাড়ীই সাজানো হতো তা নয়; বর ও কনের গলায়ও ঝুলতো কাগজের ফুলের আর চকমকি কাগজ বসানো লম্বা মালা, নীচে একটা লাভ সাইনের প্রতিকৃতি। এগুলো পড়িয়ে বর কনেকে দাঁড় করিয়ে ছবি তোলা হতো, এখন যেমন কুরবানীর ঈদের সময়ে গরুকে পড়ানো হয়। :)

৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৯

বনসাই বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে, ঠিক কথা। তখন বর-কনের গলায় সাদা বা সোনালী জরির মালা পরানো হতো, একটু দামী মালাতে কাগজের ফুল থাকতো। মালাটির শেষ প্রান্তে একটু ফুলানো কাগজের হার্টশেপ থাকতো যার চারদিকে জরি জুড়ানো থাকতো। আর সেই ছবি ফ্রেমে বাঁধিয়ে ঘরে ঝুলিয়ে রাখতে দেখেছি। বিয়ের পরেও মালাটিও তখন যত্নে সংরক্ষণ করা হতো।

১০| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, আমার মন্তব্যে যেটুকু অপূর্ণতা ছিল, আপনি সেটুকু পুরো করে দিয়েছেন।
জীবনের ধন কিছুই যায় না ফেলা,
হোক না তা শুধুই কাগজের মালা।
আমি দেখেছি, বিয়ের পর বধূরা দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই কাগজের মালাগুলোকেই সযত্নে সংরক্ষণ করে রাখতেন। একজন কাপলকে দেখেছি তাদের বিয়ের সিলভার জুবিলী এ্যানিভার্সারীতে সেগুলো পুনরায় গলায় ঝুলিয়ে ছবি তুলতে। :)

৩১ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৪৫

বনসাই বলেছেন: সেই সময় এই মালা অনেক আবেগের ছিল, ভালোবাসার ছিল। ২৫ বছর পূর্তিতে মালার ব্যবহার আমার জন্যে নতুন তথ্য। চমৎকার একটি স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়ায় আপনাকে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.