নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিভিবিপ্লব

সাধারন মানুষ

বিভিবিপ্লব › বিস্তারিত পোস্টঃ

সোনার বাংলা লুটো!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩৫

‘লুটো সোনার বাংলা, স্বাধীনতার মজাতো এটাই’- ইংরেজি বর্ণে লেখা বাংলা ফেইসবুক স্ট্যাটাস। এ ভাবনা এসেছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি মোহাম্মদ সাদাকাতের মাথায়। বারবার আশা ভঙ্গে হতাশ হবেন যে কেউ। দেশপ্রমিক মানুষের অনেকেই হতাশ, স্বপ্ন আর বাস্তবতার দূরত্ব দেখে। সাদাকাতের মত কেউ কেউ নিজেকে সামলানোর অথবা ক্ষোভ প্রকাশের জন্য আশ্রয় নেন ফেইসবুকের।



জিএফআই নামে পরিচিত ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান (গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি) প্রতিবেদন দিয়েছে, এক বছরে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার বেড়েছে তিনগুণ! নতুন হিসাব অনুযায়ী, ২০১২ সালে দেশ থেকে অন্তত ১৭৮ কোটি ডলার বা প্রায় ১৩ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা বিভিন্ন দেশে চলে গেছে, কৃতিসন্তানদের(!) মাধ্যমে। একটি বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, এই অঙ্ক ২০১৪- ২০১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বাজেট ১১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকার চেয়ে বেশি। জিএফআই’র তথ্য মতে, ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে অন্তত এক হাজার ৩১৬ কোটি ডলার বা প্রায় এক লাখ চার হাজার কোটি টাকা। প্রতিবছর পাচারের গড় হার ১৩১ কোটি ৬০ লাখ ডলার।



সংখ্যা তত্ত্বে অনেক কিছু অনেক সহজ। এক লাখ কোটি টাকা বললে মনে হতে পারে, এটি কেবলই একটি সংখ্যা। শুধু কাগজে-কলমে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু এক দুই করে হিসাব শুরু করলে, সাদাকাতের মত যে কারোই চক্ষু চড়কগাছ অবস্থা হতে পারে। ১,০৪,০০০,০০০০০০০ এক লাখ চার হাজার কোটি টাকাকে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ভাগ করে দিলে জনের ভাগে পড়ে ছয় হাজার ৫০০ টাকা। দেশে এমন হাজার হাজার কর্মক্ষম মানুষ আছে, যারা সারা মাসেও ছয় হাজার ৫০০ টাকা চোখে দেখেনা। পরিসংখ্যান ঘেটে দেখা যায়, এখনও দেশের ১৭ ভাগেরও বেশি মানুষ হতদরিদ্র; সংখ্যায় প্রায় দুই কোটি। তারা ঠিক মত খেতে পায় না।



যেদেশের দুই কোটি মানুষ খাদ্য চাহিদা মেটাতে পারে না, সেদেশ থেকে চলে গেছে লাখ কোটি টাকা। প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী জিএফআই’র মতে, এই হিসাব রক্ষণশীল (কনজারভেটিভ)। পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ আরও বেশি হবে। নরম মাটির দেশের বিত্তবানদের বেশির ভাগেরই হৃদয় বড় শক্ত। তারা ভরসা পান না দেশের ওপর, শাসকদের ওপর। তাই অনেকটা পরকালের সম্বলের মতো সুইজারল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স কিংবা মার্কিন মুলুকে পাঠিয়ে দেন অর্থ। টাকা পাচারের মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয় আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। ইনভয়েসিং এ অসত্য তথ্য দিয়ে বোকা (!) বানান ব্যাংকারদের; সম্মান (!) জানান দেশকে। ব্যাংকের দায়িত্ব শেষ হয় লেনদেন লিখিত চুক্তি অনুযায়ী সমাধা হলে, আর শুল্ক বিভাগের দায়িত্ব পালন হয়, নির্ধারিত হারে শুল্ক আদায়ে। সংখ্যার হিসাবে, কম গুণে রাখলে, বেশিটুকু কেউ খেয়ে ফেললেও দায়িত্বশীলের কিছু যায় আসে না। কাজীর গরু কাগজে থাকাই বড় কথা।



দেশ থেকে এত বিপুল অঙ্কের টাকা পাচারের খবর হলো, তবু কারও যেন কোন মাথাব্যাথা নেই। যেন কিছুই হয়নি। সরকার আছে ক্ষমতায়, বিএনপি আছে আন্দোলনের হুমকিতে ব্যস্ত। বিচ্ছিন্নভাবে দু’চার জন কথা বললেও তা কানে নেয়ার সময় নেই। স্ট্যাটাস দিয়ে সাদাকাতেরও দায়িত্ব শেষ। প্রশ্ন হচ্ছে, বিড়ালের গলায় ঘণ্টা পড়াবে কে? নাকি সবাই, সাদাকাতের মতো ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে পাড়ি জমাবে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্য কোন প্রাচুর্যের দেশে। রেকর্ডে বাজবে, ধনধান্যে পুষ্পে ভরা…। সোনার বাংলা লুটো!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.