![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক দিন হলো বাড়ি খুঁজছি। পার্ক স্ট্রীটে হোটেলে থেকে আর কুলোতে পারছি না।দিন গেলে ৭০০ টাকা ভাড়া। সকালের ব্রেকফাস্টে চা, লুচি আর আলুর দম। দুপুরের আর রাতের খাবার নিজের পকেট ভাঙ্গিয়ে খেতে হয়। ম্যাকলিওড স্ট্রীটে সস্তায় বেশ কিছু হোটেল পেয়ে যেতাম। কিন্তু সমস্যা একটাই। শ্বাস কষ্টের সমস্যা, প্রায়ই হাঁপানি শুরু হয়। শীতের দিন গরম পানি ছাড়া গোছল করতে পারি না। সস্তা হোটেলে গিজার নেই। এই কনকনে শীতে ঠান্ডা পানিতে ডেইলি গোছল করলে এ যাত্রায় আর বাঁচতে পারব না।
অনেক খুঁজে অবশেষে একটা মন মত বাড়ি পেয়েছি। যোধপুর, আলিপুর চিরিয়াখানার কাছেই। ডুপ্লেক্স বাড়ি, ওয়েল ফার্নিসড। বাড়ির মালিক দিল্লীতে সেটেল। এখানে কেয়ারটেকার আর তার স্ত্রী থাকে। নিচতলায় থাকে কেয়ারটেকার আর এক ভাড়াটিয়া। দোতলার দুটো রুম ভাড়া হবে। রুমের সামনে এক বড় বারান্দা। বারান্দায় দাঁড়ালে রাস্তার সব দেখা যায়। বাড়িটা পছন্দ হলো, ভাড়াও মোটামোটি কম- ৮০০০ টাকা।তাই দেড়ি না করে দুই মাসের এডভান্স দিয়ে বাড়িতে উঠেও পড়েছি। হোটেলের বিল মিটিয়ে মালপত্র সব নিয়ে চলে এসেছি। মাল পত্র বলতে তেমন কিছু নেই। একটা বড় ট্রাভেল ব্যাগ আর একটা হ্যান্ড ব্যাগ।
রাত নেমে এসেছে। নতুন জায়গা, তবু বেশ ভালোই লাগছে। নিজেকে অভিজাত মনে হচ্ছে। বেডরুমে শৌখিন বিছানা, ফুলদানি, দেয়ালে টাঙ্গানো নানা ছবি সব মিলিয়ে এক অনন্য পরিবেশ। রাতের খাবার পর ইদানীং হুইস্কি খাওয়াটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। প্রথম প্রথম ভালো লাগত না, এখন না খেলে ভাল লাগে না। এমনিতেই নতুন পরিবেশ তার উপর একটু হুইস্কি হলে খারাপ হয় না। ট্রাভেল ব্যাগ থেকে হুইস্কির বোতল বের করতে গিয়ে মনে পড়ল গতরাতেই বোতল শেষ হয়ে গেছে। কি আর করার ! অগত্যা কেয়ারটেকার কে ডাকলাম। বললাম আশেপাশে হুইস্কি পাওয়া যাবে কিনা। ও বলল যে সমস্যা নেই, ওর মালিকের ঘরে এক বোতল হুইস্কি আছে। পরে দাম দিয়ে দিলেই হবে। একথা বলেই হুইস্কি আনতে গেল। ও যেতে না যেতেই লোডশেডিং। ঘরটা পুরো অন্ধকার । আমার কাছে চার্জার লাইট ও নেই। পকেট থেকে দেশলাই বের করে জ্বালালাম। পা টিপে টিপে বিছানায় গিয়ে বসলাম। এর মধ্যে কেয়ারটেকার চলে এসেছে। সাথে একটা মোমবাতিও নিয়ে এসেছে। আবছা আলোয় আরেক হাতে হুইস্কির বোতল দেখলাম। বিছানার পাশের টেবিলে হুইস্কির বোতল আর একটা গ্লাশ রেখে মোমবাতিটা একটু দূরে ড্রেসিং টেবিলের উপর রেখে চলে গেল।
ইলেক্ট্রিসিটি আসবার কোন খবর নেই। মোমবাতিটাও প্রায় নিভে আসছে। মোমের আবছা আলোয় চারপাশ টা ভৌতিক মনে হচ্ছে। হুইস্কি তে চুমুক দিচ্ছি। হুইস্কির স্বাদ টা একটু অন্য রকম লাগছে। একটু নোনতা, আর কেমন যেন।মনে হলো অনেক দিনের পুরনো বোতল। হুইস্কি পেটে পড়তেই বমি আসছে। নাহ! আর পারছি না, বমি হয়েই যাবে। কেয়ারটেকার কে ডাকছি, কোন সাড়া নেই। মোমবাতিটাও নিভে গেছে। বিছানা থেকে নামতেই অন্ধকারে পড়ে গেলাম। বমি আটকাতে পারলাম না। সব বমি করে দিলাম। আর কিছু মনে নেই। মাঝরাতে সজাগ পেয়ে দেখি , মেঝেতে পড়ে আছি। চারপাশে রক্ত গড়িয়ে পরে জমাট বেধে গেছে। দাঁড়াবার চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না। মাথা টা ভীষণ ঘোরাচ্ছে। মনে পড়ল রাতে ইলেক্ট্রিসিটি চলে গিয়েছিলো। তারপর কখন ইলেক্ট্রিসিটি এসেছে জানি না। অনেক কষ্ট করে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়ালাম। মাথাটা চক্কর দিয়ে ঊঠলো , আয়নায় আমাকে দেখতে পাচ্ছি না। পিছন ঘুরতেই টেবিলের উপর রাখা হুইস্কির বোতলের দিকে চোখ পড়ল। এগিয়ে গেলাম। বোতলটা মুখে নিয়ে চুমুক দিলাম। আহ! সেই নোনতা স্বাদ। স্বাদ টা খুব চেনা চেনা লাগলো। মনে পড়লো কয়েকদিন আগে আখ খেতে গিয়ে দাঁত পড়ে গিয়েছিলো। তখন এই স্বাদ টা পেয়েছিলাম। হ্যা, রক্তের স্বাদ ........
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: গল্পের ফোকাসটা কোথায়, হুইস্কিতে নাকি রক্তের স্বাদে, বুঝতে পারলাম না।