নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ম্যায়াও একটি নিস্পাপ শব্দ

ম্যাঅ্যাও. একটি নিষ্পাপ শব্দ

ক্যাটম্যান

আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি চিন্তিত। ঐ বিষয়ে লেখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে সত্যকে সত্য বলার একটা চেষ্টাও করি। কারো ভাল না লাগলে কিছু করার নাই।

ক্যাটম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানবতার অবক্ষয় ( পর্ব-১ খাচার পাখি)

০৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:৩৪





সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ, নিজেদের পৃথিবীর অন্য প্রাণী থেকে আলাদা করেছে বিবেক-বুদ্ধি নিয়ে। তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন এই প্রজাতি জন্মগতভাবে পেয়েছে যুক্তি দিয়ে কোন বিষয়কে বিচার করার ক্ষমতা। এ জন্যই হয়তো আমি আজ নিজের চিন্তা- চেতনা থেকে কিছু একটা লিখছি।



প্রথমে একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করি, জয় আর সূচি স্বামী-স্ত্রী। তাদের দুই যমজ মেয়ে নীতি ও প্রীতি, এখনও হাটতে শিখে নি। খুব অভাবের জীবন তাদের। জীবিকার তাগিদে রোজ জয় আর সূচিকে যেতে হয় বাইরে। বাচ্চা গুলো থাকে তাদের ছোট্ট এক ঘরে। তারা সারাদিন নিজেদের মত করে খেলে, হামাগুড়ি দেয়। আর অপেক্ষায় থাকে জয়- সুচির জন্য । সূর্য ডোবার সাথে সাথে জয় আর সূচি ফিরে ঘরে। নিয়ে আসে সারাদিনের পরিশ্রমে আনা খাবার। সেই খাবারে আছে অন্যরকম তৃপ্তি।

জয় অনেক ঘুমকাতুরে। সকাল সকাল সুচির মিষ্টি গলার গান না শুনে হয়তো তাঁর স্বপ্ন থেকে বাস্তবে ফেরা হয়না। সেই সুর যেন জয়ের কাছে স্বপ্ন থেকেও মধুর। আবার ভোর থেকে শুরু হয় তাদের প্রতিদিনের জীবন যুদ্ধ, এই যুদ্ধ তো চলবে সারাজীবন। হাড় ভাঙ্গা কষ্ট আর দিন শেষে বাচ্চাদের মুখে হাসি ফুটানোর মধ্য দিয়েই যাচ্ছিল জয় আর সুচির ছোট্ট পরিবারের দিন।

কিন্তু একদিন নজর লেগে গেল আশরাফ খাঁর । কেড়ে নিতে চায় সে জয়ের স্বপ্নের ঘর। শহরের সবচেয়ে প্রভাবশালী এই লোক নিজেকে সকল জমির অধিকারি ভাবে। তাঁর দাবি শক্তি আছে যার অধিকার রাখে সে। জয় এখন নিরুপায়। তাঁর নেই ক্ষমতা, নেই সামর্থ্য। জয়ের দুর্বলতার সুযোগ নেয় আশরাফ খাঁ। জমি থেকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হল সমগ্র বাড়িটিকে।। জালিয়ে দিলো দুই নিষ্পাপ প্রান । আর বন্দি করে নিল জয় ও সুচিকে। বাকি সল্প সময়ের জীবন বন্দিশালায় থাকতে হল জয় আর সূচিকে। তাদের ছটফট করা দেখে তামাশা করত আশরাফ খাঁ। সন্তান হারানোর দুঃখ, প্রতিবাদ না করার ক্ষমতা আস্তে আস্তে জীবন নিয়ে নিল জয় আর সুচির। মৃত্যুর পর কোন রকম সৎকার- নিয়ম ছাড়াই মাটিতে দাফন করলো তাদের।

আশরাফ খার সমাজ কোনদিন মনে রাখেনি জয়-সুচিকে, তাদের ভালবাসাকে, শুনতে পারিনি সুচির মিষ্টি গান বা নীতি-প্রীতির অর্থহীন হামাগরি খেলা। কিছুই দেখেনি। শুধুই হাসিল করেছে।





ঘটনাটি পড়ে অনেকেই যুক্তির রুলার টানা শুরু করবে। আমি কিছু কথা এখনও বলিনি। শুধুই সেই অনুভূতিটা আনবার জন্য। এখানে জয়-সুচি কোন মানুষ না পরিস্থিতির স্বীকার দুটি নিস্পাপ পায়রা মাত্র। এখন পুরো গল্পটি আবার পড়লে খুব সহজ লাগবে। আমাকে বুঝাতে হবে না এখানে মানুষ আসলে কে ?



আমি চাইলে হাজারটা যুক্তি দিতে পারতাম পাখিদের খাচায় বন্দি করার বিরোধীটা করে। তাতে কি লাভ? সবাই বুঝত যে এমন করলে পাখিদের অনেক ক্ষতি হয়, পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা আর কত কি? দরকার জানা। অবশ্যই দরকার। তবে সবচেয়ে বেশি দরকার অনুভব করা।

একটা রোগীর সঠিক চিকিৎসা করতে না পারলে M.B.B.S. ডিগ্রি যেমন অনর্থক, তেমনি হাজার যুক্তি জেনেও সত্যকে উপলব্ধি করতে না পারাও ব্যর্থতা।



আমরা মানুষরা মানুষের কষ্ট বুঝতে পারি সহজে। পাখি বা অন্য প্রাণীদের সেভাবে পারি না। আশা করবো এই ঘটনা আমাদের মাঝে প্রাণীদের প্রতি কিছুটা হলেও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.