![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হায় চিল, সোনালি ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরেতুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিড়ি নদীটির পাশে!
মানুষের ইচ্ছেমাফিক কিছু কিছু ঘটনা হয়তো ঘটে, কিন্তু অনেক ঘটনাই ঘটে তার হিসেবের বাইরে!
হিসেবের খাতায় যে অংকটা কষে রওনা হয়েছিলাম আমরা, শেষ পর্যন্ত সেই অংকটায় খুঁজে পাওয়া গেল গরমিল! যাত্রাপথের বিড়ম্বনায় অনেক দেরি হলো কিশোরগঞ্জ পৌঁছতে।
ছোটখাটো কাজ যা ছিল হাতে, সেরে নিতে নিতে চরাচরে নেমে এল অন্ধকার!
সেই অন্ধকার গাঢ় থেকে গাঢ়তর হলো ক্রমে ক্রমে!
ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও কিশোরগঞ্জেই করতে হলো রাত কাটাবার আয়োজন!
পরদিন যখন পথে নামলাম আবার, বেশ সকাল তখন! তখনো কর্মচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে ওঠেনি কিশোরগঞ্জ সদর।
রিকশা নিলাম আমরা। এগোলাম ঈশা খান রোড ধরে।
নিউ মার্কেট পেছনে ফেলে স্টেশন রোড পৌঁছলাম। শহিদি মসজিদ পার হবার পর ঈদগাহ সড়ক। এই সড়ক ধরে কিছুক্ষণ চলার পর স্তম্ভাকৃতি তোরণের নীরব সম্ভাষণ!
পবিত্র কোরআনের বাণী খচিত সেই তোরণ অতিক্রম করলেই ঈদ জামাতের জন্য দেশখ্যাত শোলাকিয়া ময়দান!
বিখ্যাত এই ঈদগাহ ময়দানের অবস্থান কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে, বর্তমানে মৃতপ্রায় নরসুন্দা নদীর অববাহিকায়। এলাকাটিকে মানুষ শোলাকিয়া নামেই চেনে।
ঐতিহাসিক তথ্যমতে, মোগল আমলে এই পরগনার রাজস্বের পরিমাণ ছিল সোয়া লাখ টাকা। মোগল প্রশাসকরা সেই সূত্রে এর নাম দিয়েছিলেন ‘সোয়ালাখিয়া’।
পরবর্তী সময়ে এই সোয়ালাখিয়াই মানুষের মুখে মুখে পরিবর্তিত হয় শোলাকিয়ায়।
কিন্তু শোলাকিয়া নামকরণের জনপ্রিয় তথ্যটি ভিন্ন, জানালেন হায়াত উল্লাহ মেহেদী। ময়দানের পশ্চিম পাশেই বাড়ি তার।
জনপ্রিয় সেই তথ্যটি কি? ময়দানের ভেতরে প্রবেশ করতে করতে জানতে চাইলাম আমরা।
মেহেদী জানালেন, বারো ভূঁইয়ার অন্যতম দেওয়ান ঈশা খাঁর বংশের একটি শাখা এখনো বসবাসরত এই কিশোরগঞ্জে। ১৮২৭ সালে ঈশা খাঁর বংশের সেই শাখার ১২তম পুরুষ দেওয়ান আজিম দাঁদ খান এবং দেওয়ান রেহমান দাঁদ খান প্রতিষ্ঠা করেন এই ঈদগাহ ময়দান।
তারপর সেই ময়দানে প্রথম বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয় ১৮২৮ সালে। সেই জামাতে ঈমামতি করেন সূফী সৈয়দ আহমদ (র.)। এরপর থেকে প্রতিটি ঈদ জামাতেই বাড়তে থাকে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা।
কয়েক বছরের মধ্যেই এই সংখ্যা অতিক্রম করে লাখের ঘর। তৎকালীন ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হিসেবে এই ময়দানে একসময় এক ঈদ জামাতে একযোগে অংশ নেন সোয়া লাখ মুসুল্লি। সেই সময় থেকেই মানুষের মুখে মুখে এই ময়দানের নাম হয় সোয়ালাখিয়া, অপভ্রংশে শোলাকিয়া!
নিচু দেয়াল ঘেরা ময়দানটির চারপাশে অনেকগুলো প্রবেশপথ।
বেশ কিছু গাছ বিচ্ছিন্নভাবে দণ্ডায়মান এই ময়দানের চতুষ্কৌণিক বিস্তারে। সামনেই একটি প্রাচীন শিরীষ গাছ। সেই গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে হায়াত উল্লাহ মেহেদীর সঙ্গে আলাপচারিতা জমে উঠল আরও।
কথা বলতে বলতে আরও জানা গেল, ঈশা খাঁর বংশের একটি শাখার ১৪তম প্রজন্ম, দেওয়ান মান্নান দাঁদ খান আনুমানিক ১৯৪৪ সালের দিকে ২.৭ একর জমি প্রথমবারের মতো শোলাকিয়া ঈদগাহকে ওয়াকফ করেন। দানের সেই জমিতেই ঈদগাহের মিনারটির অবস্থান।
১৯৫০ সালে দেওয়ান মান্নান দাঁদ খান আরও কিছু জমি ঈদগাহকে দান করলে শোলাকিয়া ময়দানের মোট জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪.৩৫ একর। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য সূত্রে প্রাপ্ত জমি মিলিয়ে এই ঈদগাহের অধীনস্থ জমির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭ একরের কাছাকাছি।
মেহেদীর সঙ্গে কথা বলতে বলতে মাঠের এমাথা-ওমাথায় হাঁটলাম খানিকক্ষণ।
ঈদ জামাতের জন্য দেশখ্যাত শোলাকিয়া ঈদগাহ নিয়ে কিশোরগঞ্জের প্রতিটি অধিবাসীর মতোই হায়াত উল্লাহ মেহেদীরও গর্ব অনেক।
তবে কিছু কারণে এই ঈদগাহকে কেন্দ্র করেই দুঃখও যে নেই তার তা-ও নয়!
দুঃখের কথা জানতে চাইতেই মেহেদী জানান, কেবল ঈদের সময় ব্যতীত শোলাকিয়া ঈদগাহের পবিত্রতা রক্ষার দিকে নজর থাকে না কারো!
ঈদগাহ কমিটির নিষেধ সত্ত্বেও মাঠের ভেতর গরু-ছাগলের বিচরণ যেমন যত্রতত্র, তেমনই নানা ধরনের খেলাধুলা কিংবা রিকশা, সাইকেল, ভ্যানের মতো যানবাহনের চলাচল এখানে চোখে পড়ে সারা বছরই!
অথচ এসব অনিয়ম প্রতিরোধ করে ঈদগাহের যথাযথ পবিত্রতা রক্ষা করা কঠিন কোনো কাজ নয় মোটেই!
কিন্তু এ ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধের দায়িত্ব কি শুধুই ঈদগাহ কমিটির?
আমাদের পাল্টা প্রশ্নে মেহেদীর দৃঢ়কণ্ঠের উত্তর, না! কারণ, অনিয়ম প্রতিরোধের দায়িত্ব কখনোই এককভাবে কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের নয়! এর জন্য প্রয়োজন সর্বসাধারণের সদিচ্ছা এবং সুপরিকল্পিত সম্মিলিত প্রয়াস।
১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:১৬
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। অনেক। অনেক।
শুভকামনা জানবেন। অনিঃশেষ।
অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।
এবং ঈদের শুভেচ্ছা।
২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৩
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: গিয়েছিলেন কেন
১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:২৫
দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
কাজ ছিলো অবশ্যই।
এবং শোলাকিয়া ময়দান নিয়ে লেখাটাও কাজের একটা অংশই, আমার বিবেচনায়!
তবে কিশোরগঞ্জে রাত কাটানোর পরিকল্পনা ছিলো না সে যাত্রায়- এই আর কি!
অনিঃশেষ শুভকামনা জানবেন।
ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।
৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৫৬
কস্কি বলেছেন: মাঠের পাশেই এক আত্বীয়ের বাসা ,সেই সুবাদে ৪-৫ বার যাওয়া হয়েছে শোলাকিয়াতে ,কিন্তু ঈদের নামাযের দাওয়াত থাকার পরেও আলসেমির কারনে কখনও যাওয়া হইলও না
২০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫৮
দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই উপস্থিতিতে।
কৃতজ্ঞতা।
শুভকামনা থাকছে। অনিঃশেষ।
অনেক অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।
৪| ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৩
এহসান সাবির বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা রইল। ভালো থাকুন সব সময়।
শুভ কামনা।
২০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:০২
দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনেকটা দেরি হলো যদিও, তবু শুভেচ্ছা জানবেন।
ঈদের আনন্দের রেশ থাকুক ঈদ-পরবর্তী প্রতিটি দিনেই।
শুভকামনা ভাই। অনিঃশেষ।
ভালো থাকবেন। অনেক ভালো। সবসময়।
৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫
নীলপরি বলেছেন: তথ্য সম্বৃদ্ধ লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো ।
২০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:০৩
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ। অনেক। অনেক।
কৃতজ্ঞতা উপস্থিতিতে।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।
অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।
৬| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৫৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: নতুন কিছু জানা হলো। আপনার অনুসন্ধিৎসু মনকে সাধুবাদ জানাই।
২৪ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৪০
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় কথাসাহিত্যিক। অনেক।
কৃতজ্ঞতা আপনার উপস্থিতিতে।
শুভকামনা থাকছেই। অনিঃশেষ। সবসময়।
অনেক ভালো থাকবেন। অনেক ভালো।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৩৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লাগল্ ।