![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হায় চিল, সোনালি ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরেতুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিড়ি নদীটির পাশে!
সৃষ্টির মাহাত্ম্য কখনও কখনও কি সৃষ্টিকর্তাকেও আড়াল করে দাঁড়ায় না?
স্বীয় ঔজ্জ্বল্যে কি ঢেকে দেয় না সৃষ্টির দিন-ক্ষণ, বিবরণ?
টিকাটুলী থেকে রিকশা নিয়ে প্রেসক্লাব অতিক্রম করতে করতে ভাবতে থাকি আমরা। ভাবতে ভাবতে হাইকোর্ট পার হই। দোয়েল চত্বর অতিক্রম করে একসময় পৌঁছে যাই বাঙালির প্রাণের মিনার শহীদ মিনারে।
রিকশা থেকে নেমে পা রাখি শহীদ মিনার চত্বরে। অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশ মিনারের চারপাশ জুড়ে। ধীরে ধীরে হাঁটতে থাকি। হাঁটার ফাঁকে ফাঁকে চোখ রাখি ভূমিপৃষ্ঠ থেকে বেশ খানিকটা উঁচুতে অবস্থিত মিনারের মনোমুগ্ধকর কাঠামোয়। তিনটি দূর্বাঘাসভরা লন বিশিষ্ট এই চত্বরে মিনারের যে কাঠামোটি দৃশ্যমান বর্তমানে, তার অন্তর্তলে কিন্তু ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মৃতিই কেবল নয়, বেশ কয়েকবার ভাঙচুরের বেদনাও বিদ্যমান।
আজকের এই মিনারটি গড়ে উঠেছে বাঙালির তৃতীয় নির্মাণ প্রয়াসে।
ঢাকায় প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয় এ স্থানেই, ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে।
ঘটনাবহুল ২১ এবং ২২ ফেব্রুয়ারির রেশ ধরে সে রাতেও কারফিউ বলবৎ ছিল ঢাকায়। পথে পথে ছিল সেনা প্রহরাও, তবু এরই মাঝে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে অবস্থানরত রাজনীতি সচেতন ছাত্ররা আকস্মিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয় ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে একটি মিনার নির্মাণের।
সর্বসম্মত সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র বদরুল আলম এই কলেজেরই আরেকজন ছাত্র সাইদ হায়দারের সহায়তায় প্রণয়ন করেন একটি মিনারের নকশা।
সেই নকশা অনুযায়ী সেখানে উপস্থিত সর্বসাধারণের যৌথ শ্রমে একরাতেই নির্মিত হয় প্রায় সাড়ে দশ ফুট উঁচু এবং ছয় ফুট চওড়া প্রথম শহীদ মিনারটি।
পরদিন ২৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার, অনানুষ্ঠানিকভাবে মিনারটি উদ্ধোধন করলেন ভাষা শহীদ শফিউর রহমানের পিতা।
২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে মিনারটি উদ্ধোধন হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। উদ্ধোধন করেন আজাদ সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দীন।
কিন্তু সেই উদ্ধোধনের পর মিনারের সুদূরপ্রসারী গুরুত্ব এবং এর চেতনাবিকাশী শক্তির কথা দ্রুত অনুধাবন করে বিকেলেই শাসকগোষ্ঠী গুড়িয়ে দেয় বাঙালির প্রাণের আবেগজড়িত মিনারটি।
তবে মিনারের ভৌত কাঠামো ভেঙে দিয়ে খুব একটা সুবিধা অর্জন করতে পারলো না তারা, কারণ, মাত্র আড়াই দিন পরমায়ুর মধ্যেই মিনারটি তাঁর মমতার শেকড় প্রোথিত করতে সক্ষম হয়েছিল হাজার বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ বাঙালি জাতির চেতনার ভিত্তিভূমিতে।
১৯৫৫ সাল পর্যন্ত মানুষ কালো কাপড়ে ঘিরে রাখে স্মৃতির মিনারের বিদীর্ণ স্থানটি।
১৯৫৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি খানিকটা অনুকূল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভাষা শহীদ আবদুল আউয়ালের কন্যা বসিরনকে দিয়ে বর্তমান মিনারের স্থানে স্থাপন করা হয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর অনানুষ্ঠানিকভাবে।
পরদিন অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পূর্ব বাংলার তৎকালীন মূখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার।
তারপর ১৯৫৭ সালের নভেম্বরে ভাস্কর হামিদুর রহমান এবং ভাস্কর নভেরা আহমদের প্রাথমিক পরিকল্পিত নকশায় শুরু হয় মিনারের নির্মাণকাজ। অনেক ঘাত প্রতিঘাত অতিক্রম করে এই কাজ শেষ হয় ১৯৬৩ সালে। সেই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারিতেই সদ্যসমাপ্ত মিনারটি উদ্বোাধন করেন ভাষা শহীদ আবুল বরকতের মা হাসিনা বেগম।
১৯৬৩ থেকে ১৯৭১- সুদীর্ঘ নয় বছর এই শহীদ মিনারই ছিল এদেশের প্রতিটি আন্দেলন-সংগ্রামের সূচনার প্রাণকেন্দ্র, বিজয়ের অনুপ্রেরণার অকৃত্রিম উৎস। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের চরম পরিণতির প্রকাশোন্মূখ দিনগুলোয় পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমনের অন্যতম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় এই মিনারটি।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যার শুরুতেই ভেঙে গুড়িয়ে দেয় তারা মিনারটি আবার।
কিন্তু যে মিনারের স্থান এ জাতির চিন্তা-চেতনায়, স্মৃতির মণিকোঠায়, সে মিনার ধ্বংস করার সাধ্য কার!
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ভগ্ন মিনারেই জাতি তাঁদের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করলেও ১৯৭৩ সালেই আবার গড়ে ওঠে বাঙালি প্রাণের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠা শহীদ মিনারটি।
মিনারটিতে সর্বমোট পাঁচটি স্তম্ভ।
মাঝখানের বড় স্তম্ভটি শিল্পী হামিদুর রহমানের মূল নকশার অন্তর্নিহিত ভাব অনুযায়ীই বাংলা মায়ের প্রতীকি প্রকাশ। মায়ের দুই পাশে অর্ধবৃত্তাকারে দুটি করে অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের আরো চারটি স্তম্ভ তাঁর সন্তান হিসেবেই বিবেচিত।
সন্তান পাশে নিয়ে দাঁড়ানো মা খানিকটা ঝুঁকে আছেন ভাষা আন্দোলনে শহীদ সন্তানদের আত্মত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে। আত্মত্যাগের এই যে মহিমা, তার কথা কি না ছড়িয়ে পারে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে?
ভাবতে ভাবতে আমরা এগিয়ে যাই তানফিজের কাছে। বাবা খোরশেদ আলমের সাথে বাসাবো থেকে শহীদ মিনার দেখতে এসেছে তিন বছরের ছোট্ট তানফিজ। আমাদের দেখে সলাজ ভঙ্গীতে মাথা নাড়ায় সে এবং আনন্দে আন্দোলিত করে ছোট্ট হাতের মুঠোয় ধরে থাকা বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকাটিকে।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৯
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। অনেক। অনেক।
কৃতজ্ঞতা উপস্থিতিতে।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।
ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক ভালো।
২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫১
প্রামানিক বলেছেন: তথ্যবহুল পোষ্ট পড়ে ভাল লাগল। ধন্যবাদ দীপংকর দা।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪১
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই। অনেক।
কৃতজ্ঞতা এবং কৃতজ্ঞতা।
অনিঃশেষ শুভকামনা জানবেন।
অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক ভালো।
৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫২
যুগল শব্দ বলেছেন:
তবে মিনারের ভৌত কাঠামো ভেঙে দিয়ে খুব একটা সুবিধা অর্জন করতে পারলো না তারা, কারণ, মাত্র আড়াই দিন পরমায়ুর মধ্যেই মিনারটি তাঁর মমতার শেকড় প্রোথিত করতে সক্ষম হয়েছিল হাজার বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ বাঙালি জাতির চেতনার ভিত্তিভূমিতে।
কিছুটা জানতাম, আপনার লেখাটি থেকে আরও ভালোভাবে জানতে পারলাম। ধন্যবাদ দাদা।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৪
দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ যুগল শব্দ।
এই লেখাটি 'প্রথম শহীদ মিনারের গল্প' শিরোনামের লেখাটির সম্পূরক বিবেচনা করতে পারেন।
আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি। কিছু তথ্য মিলিয়ে নিতে পাঠকের সুবিধা হবে হয়তো।
শুভকামনা জানবেন। অনিঃশেষ।
ভালো থাকবেন। অনেক ভালো। সবসময়।
৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০০
দ্যা রয়েল বেঙ্গল টাইগার বলেছেন: প্রিয় কবি কবিতা বাদে আজ একটা তথ্যবহুল পোস্ট করলো। আর সেটা এতটাই চমৎকার যে, প্লাস না দিয়ে পারলাম না।
চমৎকার তথ্যবহুল পোস্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!
শুভ কামনা রইলো!
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৬
দীপংকর চন্দ বলেছেন: লেখাটিকে 'প্রথম শহীদ মিনারের গল্প' লেখাটির সম্পূরক হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন সুপ্রিয়।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা উপস্থিতিতে।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।
ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক ভালো।
৫| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০২
নীলপরি বলেছেন: বাহ , খুব ভাল লাগল তথ্যবহুল পোস্টটি ।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫০
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ নীলপরি। অনেক।
কৃতজ্ঞতা উপস্থিতিতে।
এবং শুভকামনা। অনিঃশেষ।
ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।
৬| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৩
কল্লোল পথিক বলেছেন: চমৎকার তথ্যমূলক পোস্ট।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫২
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন কবি।
কৃতজ্ঞতা এবং কৃতজ্ঞতা।
শুভকামনা এবং শুভকামনা।
অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক ভালো।
৭| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৩
আব্দুল্লাহ তুহিন বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল পোস্ট, অনেক কিছুই নতুন করে জানলাম,
ভালো লাগা রেখে গেলাম, ভ্রাতা।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৪
দীপংকর চন্দ বলেছেন: আপনার উপস্থিতিতেও ভালো লাগা অনেক ভাই।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
এবং শুভকামনা। অনিঃশেষ।
ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক ভালো।
৮| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২১
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল পোষ্ট। ধন্যবাদ দাদা
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৯
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক ভাই।
কৃতজ্ঞতা উপস্থিতিতে।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।
ভালো থাকবেন। অনেক ভালো। সবসময়।
৯| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৭
হামিদ আহসান বলেছেন: প্রথম শহীদ মিনারের গল্প অামাদের হৃদয়ে চির অম্লান থাকবে......
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৩
দীপংকর চন্দ বলেছেন: এবং অদ্ভুত সুন্দর এর নির্মাণশৈলী। সরল, বিষাদময় এবং মনোমুগ্ধকর।
ধন্যবাদ হামিদ ভাই। অনেক।
কৃতজ্ঞতা জানবেন।
জানবেন শুভকামনা। অনিঃশেষ।
অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।
১০| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: চমৎকার লেখাটির জন্যে ধন্যবাদ জানবেন দীপংকর।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৫
দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রোফেসর।
আপনার নতুন গল্প পড়ার জন্য পড়ে গিয়েছি কেবল।
ভিন্নস্বাদ প্রথম পাঠে।
আরেকবার পড়বো।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।
ভালো থাকবেন। সবসময়।
১১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: শহীদ মিনার, আমাদের হৃৎপকেটে গচ্ছিত চেতনার গুপ্তধন। কোটি কোটি বাঙ্গালি যখের মত আগলে ধরে আছে এটিকে। এই মিনার ভাঙবে সাধ্য কার?
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৮
দীপংকর চন্দ বলেছেন: //শহীদ মিনার, আমাদের হৃৎপকেটে গচ্ছিত চেতনার গুপ্তধন। কোটি কোটি বাঙ্গালি যখের মত আগলে ধরে আছে এটিকে। এই মিনার ভাঙবে সাধ্য কার?//
প্রত্যয়ী এই উচ্চারণে শ্রদ্ধা অনিঃশেষ প্রিয় কথাসাহিত্যিক।
মন স্পর্শ করা উপস্থিতিতে কৃতজ্ঞতা।
শুভকামনা। অনেক।
ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক ভালো।
১২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪০
ঢাকাবাসী বলেছেন: জানা ছিল আবার নতুন করে জানলুম, ভাল লাগল্ ।
০১ লা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৯
দীপংকর চন্দ বলেছেন: বিষয়গুণে ভালো লাগা মূলত।
জানা বিষয়ই তো ঘুরে ফিরে বলার চেষ্টা সবসময়।
নতুন কিছু বলার সাধ্য নেই, তবে সাধ আছে আপনাদের আন্তরিক ভালোবাসা পাবার।
কৃতজ্ঞতা। অনেক।
অনিঃশেষ শুভকামনা শ্রদ্ধেয়।
ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২১
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: ভাল লাগল তথ্যবহুল পোস্ট।