![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শাহেদ। শাহেদ আমান। একজন তরুন সাংবাদিক। আজ তার অনেক তাড়া। আর তাড়া থাকবেই না বা কেন? এতো বড় একজন আর্টিস্ট এর ইন্টার্ভিউ নিতে জাচ্ছে সে, লেট হলে ইম্প্রেশনটাই খারাপ হয়ে যাবে।
লোকটা শুধু একজন বড় আর্টিস্ট হলে হতো, কিন্তু বলতে গেলে বর্তমান মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির লিজেন্ড। ফারহান কবির, দ্যা লিজেন্ডারি লিড গিটারিস্ট। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে গত দুই দশক ধরে তারি রাজত্ব ছিল, আছে এবং সামনেও থাকবে তার কোন সন্দেহ নেই।
শাহেদ মাত্র চাকরিতে জয়েন করা একজন ছেলে। এর আগে কোথাউ কাজ করেনি। আর এরকম একজন লিজেন্ড এর ইন্টার্ভিউ নেওয়ার অভিজ্ঞতাও তার নেই। কিন্তু মেধাবি ছেলে, সমস্যা হবার কথা না এতটুকু বিশ্বাস তার নিজের আছে।
-শাহেদ! তুমি এখনো এখানে? আজকে কি লেট করার ইনটেনশন আছে নাকি তোমার?
-না স্যার, যাচ্ছি এখনি।
-যাও যাও। রাস্তার যা অবস্থা আর তুমি এখনো অফিসে বসে আছো। লেট করে গেলে ফারহান কবিরের দেখা পাবে নাকি কে জানে!
বসের এসব কথা শুনে শাহেদের মাথা আরো খারাপ হয়ে গেলো। ছেলেটা টেনশনে পরে গেছে বুঝতে পারলো বস।
-গুড লাক ইয়াং ম্যান।
-থ্যাংক ইউ স্যার।
- আর শুনো শাহেদ। ডোন্ট স্ক্রু ইউর চান্স ওকে?
-ওকে।
শাহেদ রওনা দিয়ে দিলো ফারহান এর বাসার উদ্দেশ্যে। বাইক থাকায় সমস্যা হয়নি খুব তারাতারি পৌঁছে গেছে তার বাসায়। ঠিক সময়মতই পোঁছাতে পেরেছে সে। বাসায় ঢুকে সে দেখতে পেলো ফারহান ড্রইংরুমে বসে আছে।
- You must be the reporter from that magazine. I was waiting for you. Come have a seat.
-থ্যাংক ইউ স্যার। আমি শাহেদ। শাহেদ আমান জুনিয়র রিপোর্টার।
-নাইস টু মিট ইউ শাহেদ।
-ইটস মাই প্লেজার স্যার।
-স্যার যদি আপনি অনুমুতি দেন তাহলে কি আপনার ইন্টার্ভিউটা শুরু করতে পারি??
-অফ কোর্স!
-প্রথম প্রশ্নঃ আপনার এই ফেম এই ফ্যান ফলোইং আপনার কেমন লাগে এখন?
-This is what I worked for my entire life young man. বলতেই হয় ভালো লাগে। এতো ফ্যান ফলোইং দেখে মনে হয় “হ্যাঁ আমি আমার লক্ষে পৌছাতে পেরেছি।‘’
- How does it feel to be called as the legend of this industry?
- It feels great really. আমি আমার জীবনের পুরটাই এই ইন্ডাস্ট্রির পিছনে ব্যয় করেছি, অনেকগুল বছর কঠোর পরিশ্রম করে এই মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিকে টেনে তুলেছি। আমি একা না আমার কো ওয়ার্কার রা আমার সাথে ইকুয়াল পরিশ্রম করেছে। আজ এই জন্য আমাদের জুনিয়র আর্টিস্টরা আমাদের লিজেন্ড হিসেবে মানে। ভালোই লাগে।
- To reach this fame you had to struggle a lot didn’t you?
- Yes young man. অনেক কষ্টের পর আমি আজ এই পজিসন এ আছি। you cant reach the top unless you start from the bottom. Yes I’ve started from there struggled a lot and now im here, right at the top.
- you had to make a lot of sacrifices too right?
- yes I had to. অনেক কিছুই হারিয়েছি এখানে আসার পথে। এমন অনেক কিছুই হারিয়েছি যা আর ফিরে পাওয়া যাবেনা। কিছু পেতে হলে কিছু তো হারাতেই হয়। হারিয়েছি অনেক বেশি, কিন্তু পেয়েছি তার থেকেও অনেক বেশি।
-স্যার আপনি এখনো অবিবাহিত, এর কারণটা কি জানতে পারি?
শাহেদ স্ক্রিপ্ট এর বাহিরে চলে যাচ্ছে। এতো বড় একজন আইকন এর সামনে কি ছেলেমানুষি করছে নাতো?
-Well it’s a long story. আমি সিওর তোমার হাতে এতো সময় নেই এই কাহিনি শুনার। আজকালকার ছেলেমেয়েদের গল্প শোনার ধৈর্য আছে বলে আমার মনে হয়না।
-গল্প শোনার ক্ষেত্রে আমার হাতে সময়ের কোন অভাব নেই। আই ক্যান লিভ সামওয়ান এলসস লাইফ বাই লিসেনিং টু দেয়ার স্টোরি। আপনি চাইলে শুরু করতে পারেন।
কিছুক্ষনের জন্য ফারহান চিন্তা করলো বলবে কি বলবে না।
- আপনার এ গল্প কোথাউ ছাপা হবেনা। It will be off the radar. Your secret will be safe.
- You really want to know then. ওকে তাহলে বলছি, কিন্তু একটা শর্ত আছে। মাঝখানে কোন কথা বলতে পারবেনা আর আমাকে থামাতেও পারবেনা। রাজি আছো?
- রাজি। আপনি শুরু করুন।
-ওকে। “ঘটনাটা আজ থেকে প্রায় ২৮ বছর আগের। তখন মাত্র কিছু বন্ধুরা মিলে একটা ব্যান্ড খুলেছি। কলেজের ফেয়ারওয়েল থেকে শুরু আমাদের সেই যাত্রা।
আমার তখন থেকেই একটাই লক্ষ ছিল মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। I really wanted to be the icon of the music industry.
বয়স তখন বেসি না। আরলি টুয়েন্টি, একটা মেয়েকে অনেক্ ভালবাসতাম। ভালবাসতাম বল্লে ভুল হবে, এখনো বাসি। আমাদের সাথেই পড়ত, ইভেন আমাদের ব্যান্ড এই ভায়োলিন বাজাতো।
আদ্রিতা… নামটা অনেক সুন্দর না? নামের মতোই সে সুন্দর ছিল, ভায়োলিন ও খুব সুন্দর বাজাতো। আদ্রিতাও আমাকে ভালোবাসতো। সেই কলেজ লাইফের শুরু থেকেই একসাথে ছিলাম আমরা, তা সবাই জানতো।
সম্পর্কটা খুবি ভালো চলছিলো। বিশ্বাস টা অনেক বেশি করতাম আমরা একে অপরকে। তাইতো লোকভরতি ক্যাফেতে যখন একটা নরমাল রিং নিয়ে হাঁটু গেরে মেয়েটার সামনে বললাম ‘will you marry me?’ মেয়েটা সাথে সাথে বলে দিলো ‘yes!’।
এরপর কিছুদিন কেটে গেলো। বিয়ে না করেই হানিমুন হয়ে গেছে কয়েকবার। মেয়েটা বিশ্বাস করতো আমাকে, আর আমার নিয়তেও কোন খুত ছিলনা। ভালবাসতাম মেয়েটাকে অনেক।
একদিন হটাত এক মিউজিক কম্পানির অ্যাড দেখলাম একটা অডিশন এর। নিউ কিছু মিউজিসিয়ান দের নিয়ে একটা প্রজেক্ট করবে। কিন্তু তার জন্য আগে সিলেক্ট হতে হবে। অডিশন এর এন্ট্রি ফি ৫০০০ টাকা। আমি তখন বেকার একদম। একটা গোল্ডলিফ খাবার টাকাও নেই হাতে। আদ্রিতা করলো কি তার ভাইওলিন টা বেচে দিলো, আর আমার হাতে এনে দিলো ৫০০০ টাকা। টাকা কোথায় পেলে জিজ্ঞেস করলে বলল ‘পুরনো হয়ে গিয়েছিল অনেক। প্রব্লেম করছিলো, তাই ভায়োলিন টা বেচে দিলাম’
কি সুন্দর করে মিথ্যা কথাটা বলে দিলো। She really loved that violin. It was the last memory of her mother that she had.
অডিশনের আগে সে শুধু এইটুকু বলল যে “আমি জানি তুমি সিলেক্ট হবে।” তার কথার জন্যই কিনা জানিনা সেদিন আমার গিটার থামেনি, একটা কর্ডও মিস যায়নি। সিলেক্ট হলাম সেখানে…দেখতে দেখতে ফাইনাল ৬ জনের মধ্যেও এসে গেলাম। আমার ক্যারিয়ার পেয়ে গেলো একটা ব্রেকথ্রু।
এরপরের সময়টা আমাকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। আমার হার্ড ওয়ার্ক আমাকে এনে দিচ্ছিলো সেই ফেম, সেই স্টারডোম। হার্ড ওয়ার্কের পাশে আদ্রিতার সাপোর্ট টা যে কত বড় প্রভাবক ছিল তা বুঝিনি।
কিন্তু কখনো বুঝতে পারিনি এই ফেম সিকিং এর তালে কাছের মানুষগুলোর কাছ থেকে কতটা দূরে সরে যাচ্ছিলাম। আদ্রিতার কাছ থেকে কত দূরে সরে যাচ্ছি তাও বুঝতে পারিনি। প্যাড, কনসার্ট, রেকর্ডিং, টিভি শো, কত কিছু। আমি এখন স্টার আর আদ্রিতা আমার ডাইং স্টার। আদ্রিতার সাথে শেষবার কবে ঠিকমতো কথা বলেছি কে যানে...সারাদিন রেকর্ডিং স্টুডিয়োতে পরে থাকতাম। ড্রাগস এর প্রতি আমার নেশা হয়ে গিয়েছিল। না নিলে তাল ঠিক রাখতে পারতামনা। আমি এমন একটা পর্যায়ে চলে যাই যে আগের ফারহানকে আমার আশে পাশের ১০০ মাইলেও খুজে পাওয়া যাবেনা।
আমাদের সম্পর্কে আস্তে আস্তে ফাটল ধরতে শুরু করে। আমি যে শুধু আমার শারীরিক প্রয়োজন মেটাতেই আদ্রিতার কাছে যেতাম। সবসময় ওর সাথে মিসবিহেব করতাম। আমার সেই রাইট ছিল তখন, আফটার অল আই অ্যাম অ্যা স্টার নাও আর ও একটা সাধারন মেয়ে।
আস্তে আস্তে আমার এই ফেম, আমার এই অ্যাডিকশন আমাকে আদ্রিতার থেকে দূরে শরিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। আমার এতো এতো ফ্যান এখন। একজন মেয়ের পিছনে কি এতো সময় দেওয়া যায়? আই নাও হ্যাঁভ অ্যা নিউ সোসাইটি টু মেনটেইন!
একদিন সেই দিনটি এল...একদিন তো এটা হবারই ছিল
-ফারহান তোমার সাথে কিছু কথা আছে।
- বলো।
- আমি প্রেগন্যান্ট।
-কি?
- Im pregnant Farhan. Im carrying your child in my womb. You have to do something.
- কি করবো আমি?
- কি করবে মানে? আমাকে বিয়ে করবে।
- বিয়ে?
-হ্যাঁ বিয়ে। আর কোন রাস্তা নেই।
- আমি এখনো রেডি না এই রেস্পপন্সিবিলিটি নেওয়ার জন্য।
-কি?
- আমি এখন তোমাকে বিয়ে করতে পারবনা।
-কেন??
- আমার ক্যারিয়ার আছে। মানুষ যখন জানবে আমি একজন প্রেগন্যান্ট মেয়েকে বিয়ে করসি আমার ক্যারিয়ারয়ে দাগ লাগবে। and I don’t want this to happen. I still have a long way to go.
-একটা মেয়েকে প্রেগন্যান্ট বানাতে পারবা আর তাকে বিয়ে করতে পারবানা? আজ আমার থেকে তোমার ক্যারিয়ার বেশি বড় হয়ে গেলো? Don’t you love me anymore?
- I do love you, but I cant marry you now. You have to understand! You have to do abortion. That’s the only way left for you now.
- Abortion?? Farhan are you out of your mind?? তুমি কি বলছো তা কি তুমি বুঝতে পারছো??
-আমার কিছু বুঝার নেই আদ্রিতা…তোমাকে এখন বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না।
-তাহলে আমার কি হবে ফারহান?? কি করবো আমি?
-যা বলেছি তা কর…নাহনে তাই কর যা অন্যরা করে…ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পর সিলং এর সাথে…
-ফারহান…!
- সরি আমার সময় নেই। যেতে হবে।
আদ্রিতার সাথে আর কখনো দেখা হয়নি আমার…মেয়েটা হারিয়ে গেলো...আমার জন্যই হারিয়ে গেলো।
পুরটা সময় শাহেদ চুপ ছিলো…একটি কথাও সে বলেনি।
- মেয়েটির কি হয়েছিলো শেষ পর্যন্ত?
- সে সুইসাইড করে…আমার কথাগুলো সে সহ্য করতে পারেনি। পারবেই বা কিভাবে? যে মানুষটাকে এতো বিশ্বাস করতো সে যদি তাকে এভাবে ধোঁকা দেয়, কিভাবে কেউ সহ্য করবে?
- মেয়েটি সেদিন সুইসাইড করেনি।
- মানে?
- মানে আপনার আদ্রিতা সেদিন সুইসাইড করেনি।
- কিন্তু আমি তো জানতাম…
- আপনি কি আদ্রিতার লাশ দেখতে গিয়েছিলেন?
- না…
- আদ্রিতা মরেনি ফারহান স্যার। মরার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু মরেনি। আদ্রিতার বাবা তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যজায়…এ যাত্রায় বেচে যায় আদ্রিতা…
- তুমি কিভাবে জানো এসব?
- আদ্রিতা এখন একজন সিঙ্গেল মাদার…একাই তার সন্তানকে নিয়ে সুখি জীবন জাপন করছে…আপনাকে সে ভুলতে পারেনি স্যার।
- তুমি কিভাবে জানো এতকিছু?? How do you know all these things??
- Because im her son…
কথাগুলো বলেই শাহেদ উঠে চলে গেলো...ফারহান শুন্য চোখে চেয়ে রইলো সেদিকে। মনে হচ্ছে জীবনে দ্বিতীয়বারের মতো খুব কাছের কাউকে হারালো সে।
To get something we have to lose something…but sometimes its just not worth it….
©somewhere in net ltd.