নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লোডিং

মেঘ নাকি রোদ্দুর

খাই দাই আর ঘুমাই, এর বেশি নিজের সর্ম্পকে জানি না

মেঘ নাকি রোদ্দুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

গুজব ও বাংলাদেশ

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৫৭

আসুন আমরা একটু গুজব নিয়ে পড়াশোনা করি

উইকিপিডিয়া মতে, গুজব হল আমেরিকান ইংরেজিতে rumor বা ব্রিটিশ ইংরেজিতে rumour; অর্থ হল, জনসাধারনের সম্পর্কিত যেকোন বিষয়, ঘটনা বা ব্যক্তি নিয়ে মুখে মুখে প্রচারিত কোন বর্ণনা বা গল্প।

গুজব অনেক ক্ষেত্রে "ভুল তথ্য" এবং "অসঙ্গত তথ্য” এই দুই বোঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। "ভুল তথ্য" বলতে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যকে বুঝায় এবং "অসঙ্গতি তথ্য” বলতে বুঝায় ইচছাকৃতভাবে ভ্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করা।

কেন এই বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও তথ্য প্রবাহের সহজলভ্যতার যুগেও মানুষ গুজবে বিশ্বাস করছে। কেন নিজে যাচাই করার সুযোগ থাকতেও কিছুই যাচাই না করে ঝাপিয়ে পড়ছে গুজবের মিছিলে।

মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, পৃথিবীতে বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে মানুষ যতগুলো নির্বুদ্ধিতার কাজ করে তার মধ্যে একটি হলো গুজবে বিশ্বাস করা। বিশেষ করে গুজবের ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক শিক্ষিত ব্যাক্তিও যুক্তি তর্কের উর্ধে গিয়ে গুজবকে বিশ্বাস করছেন। যে আচরনটি আসলেই রহস্যময়।

গুজবে বিশ্বাস করার বিষয়টি শুধু বাংলাদেশেই নয়, বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুগে যুগে গুজবের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ফলে অনেক বড় সময় নিয়েই মনোবিজ্ঞানীরা এর ব্যখ্যা বিশ্লেষনের সুযোগ পেয়েছেন। যুগে যুগে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন মনোবিজ্ঞানীরা।

সময়ে সময়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়েছে। এ গুজবের খেসরতে প্রাণও হারিয়েছেন বহু মানুষ। সাম্প্রদায়িক সহিংসতারও সৃষ্টি হয়েছে নানা সময়ে। রাজনৈতিক বা বিভিন্ন গোষ্ঠী এ গুজব ছড়িয়ে ফায়দা লুটিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেছে। তবে বিভিন্ন গুজব রোধে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিতে দেখা গেছে।

পদ্মা সেতুতে লাগবে শিশুর মাথা, নিখোঁজ হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, বেসিনে হারপিক ঢাললে মরবে এডিস মশা- এমন সব গুজব ছড়িয়েছে বাংলাদেশে৷ গুজবে কান দিয়ে জামায়াত নেতা সাঈদীকে চাঁদেও দেখেছিলেন কেউ কেউ। ( ডয়চে ভেলে)

পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা:

পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে বলে যে খবর রটে যায়৷ এরপর সেতু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে জানান এটি গুজব৷ কিন্তু ততক্ষণে বিকারগ্রস্থ জনতার হাতে গণপিটুনিতে কমপক্ষে আট জন মানুষের প্রাণ শেষ হয়েছে।

চাঁদে সাঈদী:

২০১৩ সালের মার্চে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত সাঈদীকে চাঁদে দেখা যাচ্ছে বলে গুজব ছড়ানো হয়৷ এই খবর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে জামায়াত ও বিএনপির কর্মীরা দেশেজুড়ে তাণ্ডব চালায়, গুলি ছুড়তে বাধ্য হয় পুলিশ৷ এতে নিহত হয় ১৩ জন মানুষ আহত হয় কয়েক শতাধিক।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে হারপিক:

কমোডে বা বেসিনে হারপিক ও ব্লিচিং পাউডার ঢেলে এডিস মশা মারার একটি বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিশেষজ্ঞরা এটিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন। হারপিকের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানও জানায়, এই তথ্যের কোনো সত্যতা নেই।

হেফাজত:

ঢাকার শাপলা চত্বরে যৌথ বাহিনীর অপারেশনে হেফাজতে ইসলামীর কর্মীদের মৃতের সংখ্যা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, গণমাধ্যমের সামনে ঐ অপারেশন পরিচালিত হয়েছে, নিহতের ব্যাপারে যে খবর ছড়ানো হচ্ছে তা গুজব৷ তবে সরকারি ভাষ্য মতে অভিযান চলাকলে ৩ জন নিহত হয়। তবে বেসরকারি হিসাবে দেখানো হয় ৩০ থেকে ৪০ জনে প্রাণহানি।

ছেলেধরা গুজব:

পদ্মাসেতুতে মানুষের মাথা লাগবে এমন গুজব ছড়িয়ে শিশুদের ধরে নেওয়া হচ্ছে বলে ‘ছেলেধরা’ গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছেলেধরা সন্দেহে কয়েকজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে এ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করে সরকার। এই গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নত করে তাদের গ্রেপ্তার করে।

ধর্ম অবমানার গুজব:

ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে কক্সবাজারের রামু উপজেলায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা হয়।যেখানে কয়েটি বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা করা হয়।ধ্বংস করা হয় কয়েকশত বাড়ি।রংপুরের গঙ্গাচড়ায় একই ভাবে গুজব ছড়ানো হয় আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিয়ত হয় এক জন।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগরেও একই ভাবে গুজব ছড়িয়ে হিন্দুদের উপর হামলা করা হয়। বাংলাদেশের আরো বেশ কয়েকটি জায়গায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন নিয়ে গুজব:
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের সফল একটি আন্দোলন। তবে আন্দোলনের শেষ দিকে আন্দোলনকারীরা হামলার শিকার হয়। আর এই হামলার সুযোগ নিয়ে শতশত শিক্ষার্থী নিহত হচ্ছে, ধর্ষিত হচ্ছে, লাশ গুম করা হচ্ছে বলে গুজব ছড়ানো হয়।

লবণ নিয়ে গুজব:
সর্বশেষ যে গুজব উঠেছে সেটা হল লবণ নিয়ে গুজব। পেয়াজের সংকটের কারণে পেয়াজের মূল্য অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পায় যদিও মূল্য বৃদ্ধির পেছনে ব্যবসায়ী দের ভূমিকা সবচেয় বেশি ছিল। পেয়াজের মূল্য কমতে শুরু করলে হঠাৎ করেই গুজব ছড়ানো হয় লবণের সংকট দেখা দিয়েছে সেটা শুনে মানুষ অধিকহারে লবণ কিনতে শুরু করে ফলে ব্যবসায়ীরা অধিক মূল্যে লবণ বিক্রি শুরু করে।

আরও এরকম অনেক গুজব রটানো হয়েছিল। গুজব কখনই কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসে না। গুজবের ফলে মানুষের জীবনহানী, সম্পদহানী সামাজিক সম্পর্কের অবনতি, অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিচ্ছে। তারপরেও নিত্যনতুন গুজব রটছে।
আমরা প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষিত হচ্ছি কিন্তু প্রকৃত শিক্ষিত হতে পারছি না তাই কোন কিছু যাচাই না করে বিশ্বাস করছি। কান কি আসলেই চিলে নিয়ে গেছে সেটা পরীক্ষা না করেই চিলের পিছু ছুটছি।

এভাবে আর কত দিন???? :)

তথ্যসূত্র : ডয়েচে ভেলে, প্রথম আলো, একুশে টিভি, উইকিপিডিয়া।
ছবি: গুগল

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫৯

রূপম রিজওয়ান বলেছেন: গুজব বানাতে এবং ছড়াতে আমাদের দক্ষতা সত্যিই অনবদ্য।আসলে আমাদের যুক্তিবোধ যে একেবারেই বিলুপ্ত তাও কিন্তু না;অনেক সময় নিজে মন থেকে বিশ্বাস না করা সত্ত্বেও কেবল তামাশার লোভে গুজবের এই চেইন এক্সপ্লোশনে অংশ নেই।

২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৯

মেঘ নাকি রোদ্দুর বলেছেন: তামাশার লোভে আমরা নিজেদেরই যে কত বড় ক্ষতি করছি সেটা আমরা সাথে সাথে বুঝতে না পারলেও পরে ঠিকই বুঝতে পারি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:২২

আখ্যাত বলেছেন:
যে রাজ্যে সত্য খবরকে “গুজব” বলার প্রবণতা বেশি
সে রাজ্যে গুজব বিশ্বাস করার প্রবণতা ভয়াবহ রকম বেশি।

আপনার পোস্টটি সময়োপযোগী এবং দরকারী

৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
রাজনীতি ফেল
গুপ্তহত্যা গ্রেনেডবাজি ফেইল
জামাতি লেজুড়বৃত্তি ফেইল
হরতাল হাংগামা অনেক বছর আগেই বর্জন করছে পাবলিক।
বিদেশি হত্যা ব্লগার হত্যা জংলী হামলা গোটা দশেক
ক্রসফায়ার দেয়ার এখন সব ঠান্ডা।
এরপর কোটাআন্দোলন মোটান্দোলন নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে অনিরাপদ করে লাঠিয়াল বাহিনীও ফেল।
অবশ্য ম্যাথর ঝাড়ুদার দ্বারা পিটুনির পর।

এখন ভরসা গুজবে।

৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: গুজব বিশ্বাস করে শিক্ষিত লোকেরা বেশি।
আর যারা গুজব ছড়ায় তারা দেশের শত্রু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.