নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকের দিনই শেষ দিন মনে করতে হবে..কারন হঠাৎ করেই একদিন মরতে হবে.. কেয়ামত পর্যন্ত কবরে থাকতে হবে.. হাশরের মাঠে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে হবে.. জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত কর্মকান্ডের হিসাব দিতে হবে.. পুলসিরাত পার হতে হবে.. তারপর....... জান্নাত অথবা জাহান্নামই হবে আসল ঠিকানা....
বাবা, ও বাবা! তুমি এখনো ঘুমাচ্ছো? এখন সময় সকাল ৭.৩০ মিনিট। আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে। প্লিজ বাবা, তাড়াতাড়ি ওঠে নাস্তা করে আমাকে স্কুলে দিয়ে এসো।
আরিফকে প্রতিদিন সকালে এভাবে তার কন্যা ডাকতে থাকে। আজও ব্যতিক্রম হয়নি। কন্যার ডাক শুনেই আরিফ ঘুম থেকে উঠে। কন্যার কথামত তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠেই নাস্তা করে স্কুলের দিকে রওয়ানা হয়। কন্যাকে স্কুলের গেইটে নামিয়ে দিয়ে আরিফ অফিসে যায়।
অফিসে এসে আরিফ এক কাপ চা খেতে খেতে দৈনিক পত্রিকায় চোখ রাখে। দৈনিক দ্বিতীয় আলো পত্রিকার প্রথম পাতার একটি রিপোট দেখে আরিফের মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। "তৃতীয় শ্রেনীর এক ছাত্রীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ না পেয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে অপরাধীরা।" শেষের পৃষ্টায় আছে "কলেজ ছাত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষণ, মুমুর্য অবস্থায় ঐ ছাত্রীকে হাসপাতালে প্রেরণ।"
আরিফ নিউজ দুটি পড়ে তার এক পুলিশ বন্ধুকে ফোন করে বলে, "কিরে দোস্ত তোরা থানায় বসে বসে কি করিস? প্রতিদিন পত্রিকায় অপহরণ-হত্যা-ধর্ষণের খবর দেখছি। তোরা অপরাধীকে ধরে শাস্তি দিস না কেন? নাকি গ্রেফতার করেই টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিস?"
অপরপ্রান্ত থেকে আরিফের পুলিশ দোস্ত দীর্ঘ একটা ভাষণ দিল এই ভাবেই..দেখ আরিফ! আমাদের করার কিছুই নাই। অপরাধীদেরকে ধরে থানায় নিয়ে আসা মাত্র উপর মহল থেকে একের পর কল আসতে থাকে। অমুক নেতার ছেলে, অমুক মন্ত্রীর আত্বীয়, অমুক দলের কর্মী বলে ছেড়ে দেবার জন্য আমাদেরকে ছাপ সৃষ্টি করে। আমরাও বাধ্য হয়ে ছেড়ে দিই। আমাদের কাজ হচ্ছে শুধুমাত্র বিরোধী দলকে দমন করা দোস্ত। যে দল ক্ষমতায় আসবে সেই দলের পক্ষ হয়ে আমাদেরকে কাজ করতে হয়। এটাই মনে হয় পুলিশের প্রধান কাজ।
এবার আরিফ কিছুটা রাগাম্বিত হয়ে বলে, "তাই বলে সকল প্রকার অন্যায় তোরা মেনে নিবি? অপরাধীরা অপহরণ করে শিশুদেরকে হত্যা করছে, কলেজ ছাত্রীদেরকে ধর্ষণ করছে। সন্তান হারিয়ে মা-বাবা বিলাপ করছে। সম্ভ্রম হারিয়ে এই মেয়েরা আত্মহত্যা করছে। আর তোরা? আইনের লোক হয়ে........
আরিফ আর কিছু বলতে পারল না। অপরপ্রান্ত থেকে তার দোস্ত লাইনটা কেটে দিল।
আরিফ দুপুর ঠিক বারোটায় বাসায় ফোন করে স্ত্রীকে বলল, জাহরার মা, স্কুলে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে এসো। ও তোমার জন্য অপেক্ষা করবে।
অফিস থেকে আরিফ রাতে বাসায় এসে খাবার টেবিলে বসে আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত অপহরণ ও ধর্ষনের খবরগুলো নিয়ে স্ত্রীর সাথে আলোচনা করে। আরিফ তার স্ত্রীকে বলে, দেখ ইয়াছমিন, অপহরণ-ধর্ষণ-হত্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশে আইনের সু-শাষন না থাকার কারণে আমরা কেউ শান্তিতে ঘুমাতে পারব বলে মনে হয় না। দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রধান নারী। বিরোধী দলের প্রধান নারী। স্পিকারও নারী। সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্টানে বড় বড় পদে নারীরা বসে আছে। তারা কি এই নিউজগুলো দেখে না? তারা কি এই নিউজগুলো পড়ে না? তারা কি আরো কঠোর আইন তৈরী করতে পারে না? আরিফের স্ত্রী মনযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনার পর বলে, ওদের ছেলে-মেয়েরা কি দেশে আছে? ওরা কি বুঝবে? যত টেনশন আমাদের। সন্তান জন্ম দিয়ে মনে হয় আমরা ভুলই করেছি।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৫৪
মহাকাল333 বলেছেন: ভাল লাগলো।