নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৌরভ আহমেদ

সৌরভ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

খলীফা কি আপনি না ওমর?

২৫ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৮:৪০

একটি হাদীস উপস্থাপন করবো। কিন্তু অনেক্ষণ থেকে ভাবছি, কিভাবে উপস্থাপন করা যায়! কারণ হাদীসটির মধ্যে এমন কিছু শব্দ ও বাক্য আছে, যেগুলোর সামনে হতবুদ্ধি হয়ে থেমে থাকতে হয়। শেষ পর্যন্ত মনে হলো, পাঠক সমীপে সরাসরিই হাদীসটিকে উপস্থাপন করা সঙ্গত হবে।
উবায়দাহ্ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উয়াইনা ইবনে হিসন ও আকরা ইবনে হাবিস একবার হযরত আবু বকরের কাছে এসে বললেন, হে রাসূলুল্লাহর খলীফা! আমাদের এলাকায় এমন কিছু ভূমি রয়েছে, যেগুলো অনাবাদ ও চাষাবাদহীন পড়ে আছে। আপনি ভালো মনে করলে আমাদেরকে সেগুলো লিখে দিতে পারেন। আমরা সেগুলো চাষাবাদ করার আগ্রহ করছি।
আবু বকর রাযি. তাদের প্রস্তাবে সম্মত হলেন এবং প্রমাণস্বরূপ তাদেরকে একটি পত্র লিখে দিলেন। তবে তিনি তাঁর সিদ্ধান্তকে হযরত ওমরের অভিমত ও সাক্ষ্যদানের উপর শর্তযুক্ত করে দিলেন। ওমর রা. তখন মজলিসে উপস্থিত ছিলেন না।
তারা উভয়ে ওমরের ‘সাক্ষ্য’ নেওয়ার জন্য তাঁর কাছে উপস্থিত হলেন। ওমর রা. পত্রের ভাষ্য শুনে তাদের থেকে পত্রটি কেড়ে নিলেন। মুখের লালা দিয়ে লেখাগুলো মুছে ফেললেন। এ কাণ্ড দেখে তারা উভয়ে বিড় বিড় করে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং ওমরকে কিছু মন্দ কথা বলে ফেলে।
ওমর রাযি. বললেন, শোনো! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তোমাদের ইসলাম গ্রহণের পূর্বে এসব ভূমি দিয়ে) তোমাদের মন জয় করেছেন। আর তখন ইসলাম ছিলো দুর্বল। এখন তো আল্লাহ ইসলামকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন, শক্তিশালী করেছেন। (তাই তোমাদের সেই ‘পূর্বসূত্র' দেখিয়ে লাভ নেই।) এখান থেকে চলে যাও। আমার বিরুদ্ধে কিছু পারলে করো। তোমরা আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা চাইলেও আল্লাহ যেন তোমাদেরকে নিরাপত্তা না দেন।
তাঁরা উভয়ে রাগান্বিত অবস্থায় আবু বকরের কাছে এসে অভিযোগ দায়ের করলেন- হে আমীরুল মু'মিনীন! আমরা বুঝতে পারছি না, খলীফা কি আপনি না ওমর?! -আবু বকর বললেন, হ্যাঁ, তিনি চাইলে হতে পারতেন।
ওদিকে ওমর রা.ও রাগান্বিত অবস্থায় আবু বকরের সামনে এসে উপস্থিত!
ওমর বললেন— শুনতে পেলাম ঐ জমিনগুলো এ দু’জনের জন্য লিখে দিয়েছেন? এগুলো কি আপনার মালিকানাধীন জমি, না সাধারণ মুসলামানদের যৌথ সম্পদ?
আবু বকর- হ্যাঁ, তা তো সাধারণ মুসলমানদেরই সম্পদ!
ওমর- তাহলে সবাইকে বাদ দিয়ে দু'জনকে মালিক বানিয়ে দেওয়াটা কেমন হচ্ছে?
আবু বকর- আমি অবশ্য আমার আশপাশের লোকদের সঙ্গে পরামর্শ করেছি, তারা আমাকে এতে সম্মতি দিয়েছে।
ওমর- আপনার পরামর্শে কি সকল মুসলমান উপস্থিত ছিলো? থাকলেও সবাই কি ‘সন্তুষ্ট’ বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে?
আবু বকর- আমি তো আপনাকে বলেছিলাম যে, খেলাফতের এসব ব্যাপারে আপনি আমার চেয়ে অধিক সচেতন ও শক্তিশালী। কিন্তু আপনি আমার উপর জয়ী হয়েছেন। (অর্থাৎ আমাকে জোরপূর্বক খলীফা বানিয়ে দিয়েছেন) [কানযুল উম্মাল ৩/৯১৪, হাদীস নং ১৯৫১, তারীখে বুখারী, ইবনে আসাকির]
প্রিয় পাঠক! হাদীসটিতে রয়েছে প্রচুর শিক্ষা ও উপদেশ।
প্রথমত: আবু বকর রাযি. তাঁর পত্রে কেনই বা ওমরকে সাক্ষী রাখতে গেলেন? অথচ তিনি অনুপস্থিত! তখন কি তার মজলিসে বিষয়টাতে সাক্ষী হওয়ার উপযুক্ত কোন লোক ছিলো না? অবশ্যই ছিলো। তবে আবু বকর রাযি. সাধারণত যে কোন বিষয়ে ওমরের পরামর্শ গ্রহণ ও তাঁকে অবহিত করাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন। তাঁর পরামর্শ ছাড়া কোন সিদ্ধান্ত নিতেন না। এ জন্যই তাঁর অনুপস্থিতি সত্ত্বেও তাঁর ‘সাক্ষ্যপ্রদান’কে শর্তযুক্ত করে দিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত: লোকদু’টি আবু বকর রাযি.কে এভাবে প্রশ্ন করা যে, খলীফা কি আপনি না ওমর? এখানে আবু বকর রাযি. খুব সহজ-সরলভাবে জবাব দিয়ে তাদের পরবর্তী অভিযোগের পথ বন্ধ করে দিলেন। অবশ্য ওমর রাযি. যদিও বিষয়টিতে আবু বকরের উপর কর্তৃত্ব করার সমকক্ষ ছিলেন না, তথাপি আবু বকরের সাদামাটা উত্তর-‘তিনি চাইলে খলীফা হতেও পারতেন’-এর মাধ্যমে সব হিসাবনিকাশ এখানেই চুকে গেলো।
এরপর ওমরের রাগান্বিত হওয়া। তা তো শুধু আল্লাহর জন্যই। ব্যক্তিস্বার্থ বলতে কিছুই ছিলো না। আবু বকর রাযি.-এর সেই সাদামাটা কথাই তার প্রমাণ‘আমি তো আপনাকে বলেছিলাম, এসব ব্যাপারে আপনি আমার চেয়ে বেশি সচেতন ও শক্তিশালী।'
কী অপূর্ব! এমন একটি ইতিহাসের রচনা শুধু ইসলামের ছায়াতেই সম্ভব হয়েছে। বস্তুত মানুষ যখন নিজস্বার্থকে পদদলিত করতে পারবে, সকল কাজকে আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ করতে পারবে, তাদের মাঝেও এমন ইতিহাস রচিত হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।
দায়িত্ব আদায়ে এবং কর্তব্য পালনে হযরত ওমরের এই যে ব্যাকুলতা, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা। নিশ্চিত তা ঈমানী কর্মতৎপরতারই ফল ও ফসল এবং দান ও অবদান।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:০১

নূর আলম হিরণ বলেছেন: হাদিস থেকে বুঝা যায় আবু বক্কর ছিলেন দুর্বল খলিফা সব সময় ওমরের ভয়ে থাকতেন। অবশ্য এসব হাদিসের সত্যতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। আল্লাহ ভালো জানেন।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫

সৌরভ আহমেদ বলেছেন: vaia eta kintu amra choto bela te onek sunesi. tobe onek khetre umar abu bakar theke
ar onek khetre abu bakar umar theke onek egiye chilo

২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:২০

শেরজা তপন বলেছেন: সবে চারখানা হয়েছে। আজকে আপনি পোস্ট দিয়ে ব্লগে ইতিহাস সৃষ্টি করবেন!!!

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১০

সৌরভ আহমেদ বলেছেন: kno amon mone holo? ei ghotona chotobela te amra onek poreci tai share kora

৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৪:০৪

অধীতি বলেছেন: এই ধরনের লেখাগুলো ছোটবেলায় পড়তাম।

২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:০৫

সৌরভ আহমেদ বলেছেন: right

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.