নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৌরভ আহমেদ

সৌরভ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাগদুব সিরিজ ♦️ ▪️পর্ব ৩: পবিত্র ভূমির দখল-বেদখল…

৩০ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:১৮

মূসা (আ:) এর দেখে যাওয়া সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় ইউশা (আ:) এর হাত ধরে, আল্লাহর সাহায্যে আমালিকাদের হারিয়ে পবিত্র ভূমি জেরুসালেম জয় করে বনী ইসরা"ইল।
আল্লাহ এ সময়ে তাদের একটি সুবর্ণ সুযোগ দিয়েছিলেন। তারা ক্ষমা চাইতে চাইতে এবং সিজদাবনত হয়ে শহরটিতে প্রবেশ করলেই আল্লাহ সব অপরাধ মার্জনা করতেন। শুধু তাই না, ভবিষ্যতে আরো অনেক নিয়ামতও দিতেন।
কিন্তু অল্প কয়জন বাদে সবাই প্রবেশ করে উল্লাস করতে করতে এবং আল্লাহর শিখিয়ে দেয়া বুলি বিকৃত ভাবে আওরাতে আওরাতে ('হিত্ত্বাহ' এর পরিবর্তে বলে 'হিনত্বাহ', যার অর্থ শীষে গম)। সেই উদ্ধত পূর্বসূরিদের রক্ত তাদের শরীরেও কিছু বইছিল কিনা! (আরো দেখুন সূরা বাকারা এর ৫৮,৫৯ নং আয়াতের তাফসীর)
নবী ইউশা (আ:) সাথে করে একটি কাঠের সিন্দুক এনেছিলেন, যাতে ছিল তাওরাত, মুসার লাঠি ও আরো কিছু সামগ্রী। এর নাম 'তাবুতে সকিনা' বা 'Ark of the Covenant'। মানবজাতির জন্য নিদর্শন হিসেবে আল্লাহ একে সংরক্ষন করার দায়িত্ব নিয়েছেন। বনী ইসরা"ইলের জন্য এটি খুব গুরত্বপূর্ণ ছিল এবং আজও আছে।
কিছুদিন আল্লাহর বিধান মেনে চললেও আবার বনী ইসরা"ইল অবাধ্যতা শুরু করে। নিজেদের মধ্যে বিভক্তি আনে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে। ফলে আবার আল্লাহ তাদের উপর অন্যদের শক্তিশালী করে দিলেন এবং তারা পবিত্র ভূমি ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে গেলো। একটা সময় তাবুতে সাকিনাও তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়।
অন্য ভূমিতে গিয়েও তারা আল্লাহর শাস্তি থেকে রেহাই পায়নি। একবার এক মহামারী ছড়িয়ে পড়ে পুরো বনী ইসরা"ইলে। তারা ঘর ছেড়ে পালাতে চায়, কিন্তু পথেই মারা যায় ও তাদের লা"শ পড়ে থাকে যত্রতত্র। এসময় নবী হিজকিল (আ:) সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দুআ করেন এবং সকলকে আবার জীবিত করার মাধ্যমে আল্লাহ তাকে পুনরুত্থানের নিদর্শন দেখান। (আরো দেখুন সূরা বাকারা এর ২৪৩ নং আয়াতের তাফসীর)
এভাবে উদ্ভ্রান্ত ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে বনী ইসরা"ইল একদিন বুঝতে পারলো, তাদের একজন বাদশাহ দরকার, যে তাদের নেতৃত্ব দিবে। তৎকালীন নবী স্যামুয়েল (আ:) কে তারা এ বিষয়ে অনুরোধ করে। তার দুআর ফলে আল্লাহ তালুতকে নেতা নিযুক্ত করেন এবং আবারও জেরুসালেম জয়ের নির্দেশ দেন।
কিন্তু তালুতকে বনী ইসরা"ইলের সরদাররা মেনে নিতে পারেনি। কেন পারেনি তা বুঝতে আমাদের আবার একটু হাজার বছর পেছনে ফিরতে হবে…
ইয়াকুব (আ:) ১২ সন্তান থেকে তৈরি হয় বনী ইসরা"ইলের ১২ গোত্র। তার ছেলে ইউসুফ (আ:) এর প্রতি সৎ ভাইদের ঈর্ষা ও বিদ্বেষ ছিল যেজন্য তাকে, যা আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। পরবর্তীতে তাদের বংশধররা সেই রেষারেষি জারি রাখে। নবী ইউসুফের বংশের কিছু করতে না পারলেও তার আপন সহোদর বিন ইয়ামিনের বংশকে হেয় করতে থাকে।
তাদের দৃষ্টিতে এই নিচু বংশের একজন ছিলেন তালুত, তার উপর তার কোন অর্থ বিভবও ছিল না। কিন্তু আল্লাহ স্পষ্ট করে দেন তার মূল যোগ্যতা ছিল অগাধ জ্ঞান এবং শারীরিক শক্তি, যা আর কারো ছিল না। কিন্তু বনী ইসরা"ইল কি এত সহজে মানে? তারা স্যামুয়েল (আ:) এর কাছে আরো প্রমাণ দাবি করে। তখন আল্লাহ ফেরেশতাদের মাধ্যমে তাবুতে সাকিনা ফিরিয়ে দেন তাদের কাছে। (আরো দেখুন সূরা বাকারা এর ২৪৭-৪৮ নং আয়াত)
অতঃপর সব প্রস্তুতি শেষে তালুত ও তার বাহিনী জেরুসালেমের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়, যেখানে তখন অত্যাচারী জালুতের শাসন চলছিল। পথিমধ্যে তারা একটি পরীক্ষায় পড়ে। তাদের বলা হয়, কোন নদী সামনে আসলে সেই পানি না খেতে, খেলেও বড়জোর এক আজলা। কিন্তু ৩১৩ জন বাদে বাকিরা তা পান করে এবং তাদের সাহস নষ্ট হয়ে যায়, ফলে আর আগাতে পারে না। কিন্তু আল্লাহ ৩১৩ জনের এই ছোট্ট বাহিনীকে বিজয়ী করেন, যেভাবে করেছিলেন বদর প্রান্তরে একই সংখ্যক মুসলিমকে। (সহীহ বুখারীর হাদীস)
এদিন জালুত কে হত্যা করেছিলেন দাউদ, যাকে তালুতের পর বাদশাহী এবং নবুয়্যত দান করা হয়। তার চল্লিশ বছরের শাসনকালে তিনি জেরুসালেম সহ অনেকটা অঞ্চল জয় করেছিলেন এবং সর্বত্র সুবিচার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। মৃত্যুর পর তার স্থান নেন তার সুযোগ্য পুত্র- সুলাইমান (আ:)
সুলাইমান (আ:) কে আল্লাহ দিয়েছিলেন সুবিশাল রাজত্ব এবং বহু আশ্চর্যজনক নিয়ামত, যা পৃথিবীর আর কাউকে দেয়া হয়নি। তার শাসনামলেই বনী ইসরা"ইল দেখেছিল তাদের স্বর্ণযুগ, যেকথা চিন্তা করে ইহুদীরা আজও সারা দুনিয়া রাজত্বের স্বপ্ন দেখে।
চলবে…
Collected

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.