![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইউরোপে যখন ই"হুদিদের নিপীড়নের যুগ চলছিল, তখন একটু একটু করে রচিত হচ্ছিল আরেকটি বৈপ্লবিক যুগ- রেনেসাঁ (Renaissance)। এই যুগ মূলত শুরু হয় ১৪৫৩ সালে মুসলিমরা কনস্টান্টিনোপল জয়ের পর থেকে। তখন জ্ঞান-বিজ্ঞানের দিক থেকে অগ্রগামী মুসলিমদের কাজ থেকে আধুনিক শিক্ষা অর্জন করে ইউরোপ অবশেষে অন্ধকার যুগ থেকে বেড়িয়ে আসে।
কিন্তু এ সময় আরেকটি বড় সমস্যার শুরু হয়- 'সেকুলারিজম'। এর অর্থ 'ধর্ম নিরপেক্ষতা' বুঝানো হলেও আসলে এটি 'ধর্মহীনতা' নামক আরেকটি ধর্ম। এই সেকুলারিজমের অনেক গুলো শাখার মধ্যে অন্যতম আরেকটি শাখা এ সময়ে জনপ্রিয়তা পায়, আর তা হলো হিউম্যানিজম বা মানবধর্ম। ১৫ ও ১৬ শতাব্দীতে ইতালী থেকে শুরু হওয়া এই আদর্শিক আন্দোলন পুরো ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে, আর তৎকালীন গীর্জা ও রাজাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ জনগণ তা গ্রহণ করতে থাকে।
এরপর ইউরোপে আরেকটি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু হয়- মার্টিন লুথারের রিফর্মেশন (Reformation) আন্দোলন, যা ই"হুদিদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন মোড় ছিল। জার্মান পাদ্রী মার্টিন লুথার আবার মানুষকে ওল্ড টেস্টামেন্ট (তাওরাত ও যাবুর) থেকে দ্বীন শিখতে উদ্বুদ্ধ করে। তার দাবি অনুযায়ী সে ছিল ইলহাম (ঐশী জ্ঞান) প্রাপ্ত; আর অনেক ঐতিহাসিকের দাবি অনুযায়ী সে ছিল আরেক ই"হুদি প্রতারক। তবে সত্য যেটাই হোক, গীর্জার সংশোধনের জন্য শুরু হওয়া এই আন্দোলন ধীরে ধীরে খ্রিষ্টানদের মধ্যে নতুন আরেকটি দল তৈরি করে, যারা প্রোটেস্ট্যান্ট (Protestant) নামে পরিচিত। এরাই ই"হুদিদের দোসর, যারা জেরুসালেমকে তাদের প্রতিশ্রুত ভূমি মনে করে।
১৫৩২ সালে ব্রিটেনের রাজা অষ্টম হেনরির সন্তান প্রথম এলিজাবেথ সিংহাসন দাবি করে, কিন্তু রোমান ক্যাথলিক চার্চ তাকে বৈধ উত্তরসূরি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে সে প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্ম গ্রহণ করে ক্ষমতায় আসে। এরপর থেকে প্রোটেস্ট্যান্ট মতাদর্শ ব্রিটেনে প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে পরবর্তীতে ব্রিটেন ই"হুদিদের ঘাঁটিতে রূপ নেয়।
১৬ শতকে ইউরোপের দেশগুলো নিজেদের মধ্যে খ্রীষ্টধর্ম ও কর্তৃত্ব নিয়ে বহু যুদ্ধ করে, যার অবসান হয় ১৭৭৪ সালে ওয়েস্টফেলিয়া (Westphalia) চুক্তির মাধ্যমে। এর ফলে প্রোটেস্ট্যান্ট মতাদর্শ একটি আলাদা ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এরপর গোটা ইউরোপেই ই"হুদিদের অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে।
ইতিমধ্যে কলম্বাস কর্তৃক আমেরিকা আবিষ্কার হয়ে গেছে। ইউরোপের সব শাসক সেখানকার ভূমি দখল করতে মত্ত হয়। ক্যাথলিকদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে অনেক ই"হুদি ও তাদের জাত ভাই প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টানরা আমেরিকা চলে যেতে থাকে এবং সেখানে গিয়ে নিজেদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করে ফেলে।
১৭ শতকে রোমান গীর্জার অবিরাম অত্যাচারের কারণে আরেকটি আন্দোলন শুরু করে যার নাম এনলাইটেনমেন্ট (Enlightenment) আন্দোলন। এর প্রবক্তারা বিবেকের ভিত্তিতে খ্রিষ্টান ধর্মকে অস্বীকার করে। এরপর ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লব হয় এবং গীর্জা ও রাজাদের শাসনব্যবস্থা শেষ হয়ে গনতন্ত্রের সূচনা হয়। এই আন্দোলনেও ইউরোপে থেকে যাওয়া ই"হুদিদের হাত ছিল বলে অনেকে মনে করেন। কারণ এরপর থেকে তাদের না নিপীড়িত হতে হয়েছে, না পিছনে ফিরে তাকাতে হয়েছে।
১৮ শতকে ইউরোপের ই"হুদিরা তৃতীয় থেকে প্রথম শ্রেণীর নাগরিকে উন্নীত হয়। এরপর তারা মুক্ত অর্থনীতির নামে আধুনিক ব্যাংক ও কারেন্সি সিস্টেম চালু করে। ধীরে ধীরে পুরো ইউরোপের সব ব্যবসার উপর তারা দখল নিয়ে ফেলে আর রাষ্ট্রগুলোকে ঋণের মধ্যে ঠেলে দেয়। এভাবেই সুচতুর ই"হুদিরা ইসরা"ইলী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকে।
চলবে...
©somewhere in net ltd.