![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানবদেহ প্রতিনিয়ত স্ব-নবায়ন (Self renewal) প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত আছে। জীবনের প্রতিটি দিন ৩০,০০০,০০০,০০০ টি নতুন কোষ (Anabolism) তৈরি হয়। আবার হোমিওস্ট্যাসিস বজায় রাখার জন্য একইসংখ্যাক পুরনো কোষ ধ্বংস হতে হয়। মৃত, ক্ষয়ে যাওয়া কোষগুলো ভেঙেচুরে গিয়ে Cellular Debris তৈরি হয় যা লিম্ফেটিক সিস্টেম ত্বরিত সাফ করে। বর্জ্য কেবল তখনি দূরীভূত হতে পারে যখন সেখানে পর্যাপ্ত জল উপস্থিত থাকে এসবকে দেহের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। নিয়মিত ওভারস্টিমুলেশন, অতিভোজন, অপর্যাপ্ত ঘুম, ডিহাইড্রেশন ইত্যাদিতে দেহ দূর্বল হয়ে গেলে ক্লিনসিং প্রসেস অকর্মক্ষম হয়ে যায় এবং বিষাক্ত উপাদান লিম্ফ ভেসেলগুলোয় জমা হতে শুরু করে। টক্সিন ব্লাডস্ট্রিমে চলে গিয়ে ব্লাড পয়জনিং ঘটাতে পারে। এমন ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে এবং রক্তকে যতটা সম্ভব বিশুদ্ধ রাখতে শরীর তখন কানেক্টিভ টিস্যুতে (The fluid surrounding the cells) টক্সিনের প্রায় পুরোটা ঢুকিয়ে দিতে চেষ্টা করে। যেহেতু লিম্ফেটিক সিস্টেম ইতোমধ্যেই বাধাপ্রাপ্ত হয়ে আছে যার কাজ কোষীয় মেটাবলিক বর্জ্য পদার্থ, মৃত কোষ,এসিডিক ব্লাড প্রোটিন ইত্যাদি কানেক্টিভ টিস্যু থেকে দূর করা। এতে কোষ পরিবেশ পরিষ্কার হয়না উলটো অধিকভাবে টক্সিক হয়ে যায়। কোষ পরিবেশের পিএইচ অত্যাধিক এসিডিটির দিকে চলে যায়। কানেক্টিভ টিস্যু যখন আর টক্সিন ধরে রাখতে পারে না তারা ব্লাড ভেসেল ও অর্গানগুলোর কোষে আগ্রাসন শুরু করে। ফলাফল হচ্ছে টক্সিসিটি ক্রিসিস। টক্সিসিটি ক্রিসিস হচ্ছে অত্যন্ত বেশি এসিডিক উপাদান (Acidosis), ল্যাকটিক এসিড, ইউরিক এসিড, এমোনিয়া,ইউরিয়া, ব্লাড প্রোটিন এসব জমে যাওয়ার ফল। যদিও Acidosis এর সিম্পটম হিসেবে কোনো একটি অঙ্গ (Organ) বা দেহের কোনো একটা অংশ আক্রান্ত হয় যেমন- আলসার, অক্লুডেড ব্লাড ভেসেলস, টিউমার। কিন্তু বাস্তবে পুরো শরীরটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য সব সিস্টেম ও সব অঙ্গ একত্রে দেহের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য লড়াই শুরু করে। ডাইজেস্টিভ সিস্টেম, মাসল এবং অন্যান্য এরিয়া থেকে আক্রান্ত অংশে ইমিউন সিস্টেমের পক্ষে এনার্জি যেতে থাকে। এই ক্রিটিক্যাল সময়ে শরীরের নিজস্ব হিলিং ইফোর্টে বিঘ্ন সৃষ্টি করা বা উত্তেজিত করা মারাত্মক বিপদজনক। ড্রাগ,ফুড, টিভি,উত্তেজনা, অন্যান্য এক্টিভিটি ইত্যাদি থেকে সরে গিয়ে তাৎক্ষণিক পরিপূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন। টক্সিসিটি ক্রিসিসের সময় বেশিরভাগ লোক আতঙ্কিত হয়ে যায় এবং ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার জলদি করে সিম্পটম সাপ্রেসের ব্যবস্থা/ব্যবস্থাপত্র করে দেন। অথচ এটা ডিজিজ ছিল না, ছিল বডির হিলিং রেসপন্স। মেডিকেশনের ফলে অবস্থা একিউট থেকে ক্রনিকের দিকে যাওয়া আরম্ভ হতে পারে। ড্রাগস,সার্জারী, রেডিয়েশন ইত্যাদি ট্রিটমেন্ট ক্রনিক ডিজিজকে নাটকীয়ভাবে বাড়িয়ে দেয়। সম্পূর্ণভাবে অসুখ সারবে না যতক্ষন পর্যন্ত উপসর্গভিত্তিক ট্রিটমেন্ট এর বদলে কারণভিত্তিক ট্রিটমেন্ট করানো হচ্ছে। অসুখের উপসর্গগুলো অত্যন্ত পরিবর্তনশীল আর অনিশ্চিত। বেশিরভাগ মেডিকেল প্র্যাক্টিশনার ও রোগীদের কাছে রোগের কারণ অজানাই থেকে যায়। স্টমাক ক্যাটার বা শ্লেষ্মা ঝিল্লির ইনফ্লামেশন জ্বালা সৃষ্টি করে এবং একসময় আলসার হয়ে যায়। পরবর্তীতে দেখা যায় ক্যান্সার হয়ে গেছে। প্যাথলজিক্যাল সিম্পটম ব্যক্তি বিশেষে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। স্টমাক ক্যাটার এর বিভিন্ন সিম্পটম এর মধ্যে পেট খারাপ,বমিভাব,বমি করা,গ্যাস্ট্রাইটিস,পেটে খিল ধরা অন্যতম। সত্যিটা হলো গ্যাস্ট্রাইটিসে ভুগতে থাকা দুটি লোকের মধ্যে একই সিম্পটম দেখা যাবে না। একজনের মাথাব্যাথা, অনিদ্রা হতে পারে। অন্যজনের ক্ষেত্রে এপিলেপটিক এটাক দেখা যাবে। এখানে মডার্ন মেডিক্যাল সিস্টেম প্রত্যেক সেট সিম্পটমকে আলাদা আলাদা ডিজিজ হিসেবে দেখে। স্পেশালিষ্টরা সিম্পটম দেখেই সমস্যার ভিন্ন ভিন্ন ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করে দেন। এই ব্যাপারটা মেডিকেল ডায়াগনোসিস ও ট্রিটমেন্টকে এতই জটিল করে ফেলে যে ডাক্তার বুঝে সারতে পারে না কিভাবে রোগীকে সাহায্য করবে। ফিজিসিয়ান একটা এন্টাসিড বা পেইনকিলার দিয়ে পেটব্যাথা থামাতে পারে এবং যখন ক্যাটার ঘটতে থাকে তখন এন্টি ইনফ্লামেটরি ড্রাগস প্রেস্ক্রাইব করতে পারে। ক্রমেই বাড়তে থাকা আলসার যখন সাংঘাতিক হয়ে যায় তখন সার্জন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন অপারেশন করার। যখন ক্যানসার দেখা দেয় তখন কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি প্রেস্ক্রাইব করতে পারেন অনকোলজিস্ট। অথচ সমস্যাগুলো ছিল সিম্পটম, অসুখ না! লোকে মনে করে এটাই সঠিক যে তারা সিম্পটম সাপ্রেসের মাধ্যমে সাময়িকভাবে দ্রুত সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। সিম্পটম সাপ্রেসের চূড়ান্ত স্তর সার্জারি অপারেশনের পরও ফিজিসিয়ান কিন্তু অসুখটার একেবারে প্রাথমিক সিম্পটম- স্টমাক পেইনকে নিরাময় করতে পারবেনা। হয়তো আজেবাজে খাবার, তেলমশলা, বোতলজাত স্যালাড ড্রেসিং, রিফাইন্ড সল্ট, হট চিলি এসব পেইন সৃষ্টির কারণ। অন্যান্য কারণ হতে পারে হতাশা, ধুমপান, মদ্যপান, নিয়মিত কফিপান, সফট ড্রিংকস, কৃত্রিম সুইটেনার, অতিভোজন, লিভার কঞ্জেস্টশন, অপর্যাপ্ত জলপান ইত্যাদি।
পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ জলপান না করাই হলো পাকস্থলীর সমস্যা ও অন্যান্য অসুস্থতার সবচেয়ে সাধারণ অথচ অজানা কারণ। বেশিরভাগ স্টমাক পেইন-ই মিউকাস লাইনিংয়ের এডভান্সড ডিহাইড্রেশনের সিগন্যাল। মিউকাস লেয়ারের ৯৮ ভাগই জল। এই লেয়ারের নিচের কোষগুলো সোডিয়াম বাইকার্বোনেট নিঃসরণ করে। ফলে হাইড্রোক্লোরিক এসিড মিউকাস লাইনিংয়ের মধ্যে ঢুকে গেলেও প্রশমিত হয়ে যায়। এই কেমিক্যাল রিয়েকশনের ফলে লবণ উৎপন্ন হয়। লাল মাংস,মাছ,ডিম,চিজ ইত্যাদি হাই প্রোটিন ফুড বেশি খেলে হাইড্রোক্লোরিক এসিড নিঃসৃত হয় অনেক বেশি ফলে পাকস্থলীর ভেতরে লবণও বেশি তৈরি হয়। এতে মিউকাস লাইনিংয়ের জলধারণে হেরফের ঘটে। এন্টাসিড ও অন্যান্য মেডিকেশন কোনো কার্যকরী সুরক্ষা দেয়না। স্টমাক আলসার ও এবডোমিনাল বা ডিস্পেপটিক পেইন যাদের আছে তারা যদি ঠিকমতো জলপান করে তাহলেই তাৎক্ষণিকভাবে স্বস্তি অনুভব করবে। ক্যাফেইনেটেড বেভারেজেস পাকস্থলীর পক্ষে ভীষণ ক্ষতিকর। স্টমাক পেইন হচ্ছে প্রথম সিগন্যাল যখন খাদ্যাভ্যাসে ত্রুটি থাকে কিংবা পর্যাপ্ত জলপান না করা হয়। সামান্য সমস্যার কারণ নির্ণয় না করে ড্রাগ দিয়ে সাপ্রেস করা হলে ক্যান্সারে রূপ নিবে। সর্দি,পেইন,মাথাব্যাথা, ইনফেকশন এসব মাইল্ড সিম্পটমগুলো বারবার সাপ্রেস করার ফলেই একসময় ক্যান্সার দেখা দেয়। ১৯৮২ সালে মার্শাল ও ওয়ারেন উভয়ে মিলে একটি ব্যাকটেরিয়াম আবিষ্কার করেন। মনে করা হয় ৯০ ভাগের বেশি ডিওডেনাল আলসার এবং ৮০ ভাগ গ্যাস্ট্রিক আলসারের জন্য দায়ী এই ব্যাকটেরিয়াম। মাইক্রোবটি স্পাইরাল আকৃতির গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াম যার নাম Helicobacter pylori. মানুষ স্বেচ্ছাসেবকদের স্টাডি,এন্টিবায়োটিক ট্রিটমেন্ট স্টাডি এবং এপিডেমিওলজিকাল স্টাডি থেকে H. pylori ইনফেকশন, গ্যাস্ট্রাইটিস এবং পেপ্টিক আলসার -এই তিনটির মধ্যে পারস্পরিক সংযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু সুস্পষ্ট কিছু জানান দেয় না এসব। খুব সম্ভবত পাকস্থলীর এই জীবাণুটি আলসারেশন এর বাইপ্রোডাক্ট; আলসারেশন এর কারণ নয়। কথাটির স্বপক্ষে যুক্তি— যেহেতু ব্যাকটেরিয়া যেখানেই মৃত পদার্থের উপস্থিতি থাকে সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাজির হয়। তাই আলসারেটেড টিস্যু ব্যাকটেরিয়াদের উপস্থিতির কারণ। এন্টিবায়োটিক ড্রাগ Omeprazole এবং Amoxycillin জীবাণু ধ্বংস করে আলসার সারিয়ে তুলে। কিন্তু এন্টিবায়োটিক নেয়া বন্ধ করলেই জীবাণু ও আলসার একসাথে ফিরে আসতে পারে। ধরা যাক, উঁচু আর্থসামাজিক স্টান্ডার্ডের দেশগুলোতে ইনফেকশন কেস উন্নয়নশীল স্বল্পোন্নত দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম থাকবে। H. pylori স্টমাক আলসার ঘটায়। তাহলে অনুন্নত দেশের মানুষ বেশি আক্রান্ত হবে। অথচ বাস্তবে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড ওয়ার্ল্ডেই স্টমাক আলসার খুব বেশি। আর এর উপশমে প্রেস্ক্রিপশন ড্রাগসের কোনো কার্যকারিতা নেই। ড্রাগগুলো অন্ত্রের সবরকম ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে। যেকোনো হেলথ কন্ডিশনেই সিম্পটম সাপ্রেস সিরিয়াস সমস্যা সৃষ্টি করে নয়ত সমস্যার বীজ বপন করে। প্রমাণস্বরূপ কেউ পেপ্টিক আলসারের ইস্যুতে ড্রাগস নিলে H. pylori ঘটিত জটিলতা অদৃশ্য হয় বটে কিন্তু দেখা যাবে অতিরিক্ত মেদবৃদ্ধি ঘটছে। H. pylori দেহে leptin ও ghrelin উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। প্রোটিন হরমোন- লেপ্টিন ক্ষুধা, ওজন, মেটাবলিজম এবং প্রজনন ক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। পাকস্থলীর সার্কুলেটিং গ্রোথ হরমোন রিলিজিং পেপ্টাইড- ঘ্রেলিন ক্ষুধা ও খাদ্যগ্রহণ উদ্দীপিত করে। ড্রাগ নেয়া হলে এসব হরমোন ব্যালান্স বিপর্যস্ত হয় এবং দেহের সব অর্গান ও সিস্টেমের ইঞ্জুরি হয়ে অস্বাভাবিক ওয়েট গেইন শুরু হয়। ডিজিজের সিম্পটমগুলো ডিজিজের কারণ নয়। সিম্পটমগুলো ডিজিজের ইফেক্ট। তাই সিম্পটম সাপ্রেস করে ডিজিজ সারাতে পারা যায় না। অতিভোজন, অপুষ্টি, অপর্যাপ্ত ঘুম, অপর্যাপ্ত জলপান,ফার্মাসিউটিক্যাল ড্রাগ কনজিউম ইত্যাদি কারণে ব্যাকটেরিয়াল,ভাইরাল,ফাঙ্গাল ইনফেকশন ও টক্সিসিটি ক্রিসিস ঘটে।
আপনার দেহের নিজস্ব গতিপ্রকৃতি, কার্যক্রম ও সিস্টেমগুলোর প্রতি ইতিবাচক বিশ্বাস থাকতে হবে। প্রায় সকল তথাকথিত ডিজিজ হচ্ছে টক্সিসিটি ক্রিসিস যা অসহনীয় পর্যায়ে (Intolerance level) টক্সিন জমে যাওয়ার ফলাফল। টক্সিন বের করার একটা আউটলেট খুঁজে বের করা ব্যতীত দেহের কোনো গত্যন্তর থাকে না। একটি টক্সিসিটি ক্রিসিসের সহযাত্রী হয় বিভিন্ন সিম্পটম যেমন– মাথাব্যাথা, সর্দি, জয়েন্ট পেইন,স্কিন র্যাশ, ব্রংকাইটিস, ইনফেকশন এসব। এদের মধ্যে যেকোনো একটা সিম্পটম দেখা দেওয়াটাই নির্দেশ করে যে বডি টক্সিক পদার্থ থেকে মুক্তি পাবার চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা ডিজিজ ফেজ। ইমিউন সিস্টেম যখন বডি টক্সিসিটি সহন পর্যায়ের (Tolerance level) নীচে নামিয়ে আনে তখন সিম্পটমস অদৃশ্য হতে শুরু করে। এটা হচ্ছে হিলিং ফেজ। রিসার্চ দ্বারা প্রমাণিত যে, ৮০ ভাগ রোগই সম্পূর্ণভাবে নিজে থেকেই সেরে যায়। মেডিকেল ট্রিটমেন্টের সবচেয়ে মারাত্মক সাইড ইফেক্ট হলো এটা ডিজিজ ফেজ ও হিলিং ফেজ এর ন্যাচারাল সাইকেল সম্পূর্ণ হওয়াতে বাধা দেয়। ফিজিসিয়ান হেনরী লিন্ডলার সংক্ষেপে চরম সত্য একটা কথা বলেছেন– প্রায় সমস্ত ক্রনিক ডিজিজ ড্রাগ পয়জনিং দ্বারা একিউট ডিজিজ সাপ্রেস করার ফলে সৃষ্টি হয়। যদি সাধারণ সর্দির ন্যাচারাল গতিধারায় বাধা দিয়ে সাপ্রেস করা হয় তবে এটা ক্রনিক ক্যাটার এ রুপান্তরিত হবে পরবর্তীতে। পুনরায় দেহের হিলিং ইফোর্ট বাধাগ্রস্ত হলে ক্যাটার থেকে নিউমোনিয়া হয়ে যেতে পারে। একইভাবে মাইগ্রেন থেকে মেন্টাল ব্রেকডাউন, উচ্চ রক্তচাপ থেকে হার্ট এটাক, স্টমাক ক্যাটার থেকে ক্যান্সার এভাবেই হয়।
ডিজিজের চারটি সবচেয়ে সাধারণ কারণ:
১। পিত্তথলি ও লিভারে পাথর: অনেকে জানে পাথর শুধু পিত্তকোষেই পাওয়া যায়। আসলে বেশিরভাগ গলস্টোন লিভারে গঠিত হয়। তুলনামূলক অল্প পরিমাণ পিত্তকোষে তৈরি হয়। লিভারের গলস্টোন প্রকৃতপক্ষে অসুস্থতার অন্যতম প্রধান কারণ। সুস্থ, পরিস্কার একটা লিভার থাকার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি কেননা •প্রায় সমস্ত অসুখ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লিভার বাইল ডাক্ট এবং পিত্তকোষের কঞ্জেস্টশন এর কারণে হয় •আটকে পড়া টক্সিক বাইল বেশিরভাগ হজমসংক্রান্ত সমস্যার উৎস •কনজেস্টেড বাইল ডাক্ট নিরীহ ক্যামিক্যালকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থে রুপান্তরিত করে সারাদেহে ছড়িয়ে দেয় •ত্রুটিপূর্ণ লিভার ৭০ ভাগ পর্যন্ত রক্তপ্রবাহ ব্লক করে ফেলে •মানসিক স্বচ্ছতা ও অনুভূতির স্থিরতার জন্য লিভার দায়ী। লিভারে গন্ডগোল মনেও গন্ডগোল তৈরি করে •লিভার লিম্ফেটিক সিস্টেমে প্রোটিন ঢুকিয়ে দিতে পারে। ফলে অনেক বেশি ইমিউন সিস্টেম রিয়েকশন যেমন– এলার্জি,অটোইমিউন ডিজিজ,সর্দি,ক্যান্সার এসব দেখা দিবে •লিভারের এঞ্জাইমগুলো দেহের নিজস্ব স্টেরয়েড হরমোনগুলোকে উপকারী অথবা বিপজ্জনক হরমোনে বদলে দিতে পারে। বিপজ্জনক হরমোন প্রজনন অঙ্গে ক্যান্সার তৈরি করতে সক্ষম।
লিভার সবচেয়ে বড় গ্রন্থি। লিভারে কোলেস্টেরল ম্যানুফ্যাকচার হয়। প্রোটিন, হরমোন,বাইল উৎপাদন হয়। গলস্টোন এসব গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের জন্য হুমকি। বাইল নিঃসরণ ঠিকঠাকভাবে না হলে ফ্যাট হজম হয় না এবং ক্যালসিয়াম ঘাটতি দেখা দেয়। বেশিরভাগ মেডিকেল প্র্যাক্টিশনার এব্যাপারে না জেনেই বা শনাক্ত না করেই ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট প্রেস্ক্রাইব করে রোগীদের। অস্বাস্থ্যকর ডায়েট ও লাইফস্টাইলের ফলেই সরাসরি গলস্টোন সৃষ্টি হয়। লিভারের বাইল ডাক্টসে গলস্টোন ব্লকেজের ফলেই কমন স্বাস্থ্যসমস্যাগুলো ঘটে। যদি আপনি নিচের কোনো একটা সিম্পটমে ভোগেন তাহলে খুব সম্ভবত আপনার লিভার ও পিত্তকোষে অসংখ্য গলস্টোন সৃষ্টি হয়ে আছে।
•অরুচি •হজমে গন্ডগোল •ডায়রিয়া •কোষ্ঠকাঠিন্য •কাদা বর্ণের মলত্যাগ •হার্নিয়া •পেটফাঁপা •অর্শ •মূত্র সংক্রান্ত সমস্যা •হরমোন ইমব্যালান্স •মেনস্ট্রুয়াল ও মেনোপজাল ডিজওর্ডার •দৃষ্টিশক্তির সমস্যা •চোখ ফোলা •যেকোনো স্কিন ডিজওর্ডার •লিভার স্পট •মাথাঘোরা •মাসল টোন লস •অতিরিক্ত ওজন ও শীর্ণতা •কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যাথা •চোখের নীচে কালো ছোপ •শ্বাস নিতে কষ্ট •লিভার সিরোসিস •হেপাটাইটিস •বেশিরভাগ ইনফেকশন •হাই কোলেস্টেরল •প্যানক্রিয়াটাইটিস •হার্ট ডিজিজ •ব্রেইন ডিজওর্ডার •ডুয়োডেনাল আলসার •বমিভাব ও বমি হওয়া •বদমেজাজ •হতাশা •ধ্বজভঙ্গ •সেক্সুয়াল প্রবলেম •প্রস্টেট ডিজিজ •মনমরা ভাব •স্কোলিওসিস •গেঁটেবাত •ফ্রোজেন শোল্ডার •শক্ত নাক •নিতম্ব বাত •মাথাব্যাথা •মাইগ্রেন •টুথ ও গাম প্রব্লেম •ত্বক ও চোখের হলদেভাব •এজমা •পায়ের প্যারালাইসিস •জয়েন্ট ডিজিজ •হাঁটুর সমস্যা •অস্টিওপরোসিস •আলঝেইমার্স ডিজিজ •স্থূলতা •ক্রনিক অবসাদ •কিডনি ডিজিজ •ক্যান্সার •ক্লেরোসিস •ফাইব্রোমিয়ালজিয়া •অতি বাড়বাড়ন্ত সর্দি •শরীরের উপর অংশে অতিরিক্ত উত্তাপ ও ঘাম •খুব তৈলাক্ত চুল ও হেয়ার লস •ক্ষতে রক্তক্ষরণ ও দেরিতে শুকানো •ইনসমনিয়া •দুঃস্বপ্ন •জয়েন্ট ও মাসলের শক্ত অবস্থা।
প্রায়ই ক্রনিক অসুখে লিভারের বাইল ডাক্টগুলোয় কয়েক হাজার গলস্টোন থাকে। কিছু স্টোন পিত্তকোষেও বেড়ে উঠেছে হয়ত। কয়েকবার লিভার ফ্লাশের মাধ্যমে এই অর্গানগুলো থেকে স্টোন দূর করে ব্যালান্সড ডায়েট ও লাইফস্টাইল বজায় রেখে চললে লিভার ও পিত্তকোষের আসল কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা যাবে। তখন ডিজিজের বেশিরভাগ সিম্পটম সেরে উঠতে থাকবে। লিভারের গলস্টোনগুলো তরল বাইলের মধ্যে থাকা উপাদান দিয়েই গঠিত হয়। যাদের মধ্যে কোলেস্টেরল প্রধান। কিছুসংখ্যক স্টোন ফ্যাটি এসিড ও অন্যান্য অর্গানিক পদার্থ দিয়ে গঠিত হয়। বাইল বা অর্গানিক ম্যাটারের জমাট ডেলাগুলো এক্সরে, আল্ট্রাসনিক টেকনোলজি, সিটি স্ক্যান ইত্যাদিতে ধরা পড়ে না সহজে। আর পিত্তকোষের প্রায় ২০ ভাগ স্টোনই সম্পূর্ণভাবে মিনারেলস,ক্যালসিয়াম সল্ট,বাইল পিগমেন্ট এসব দিয়ে তৈরি হয়। তাই ডায়াগনস্টিক টেস্টে শনাক্ত করা যায়। কিন্তু লিভারের নরম নন ক্যালসিফায়েড স্টোনগুলো অদৃশ্য রয়ে যায়। যখন অতিরিক্ত পরিমাণ স্টোন বা ফ্যাটের পিন্ড লিভারের বাইল ডাক্ট ব্লক করে ফেলে তখন আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট এই অবস্থা ধরতে পারে। মেডিক্যাল পরিভাষায় একে বলে ফ্যাটি লিভার। একটা ফ্যাটি লিভারে ২০,০০০ টা পর্যন্ত স্টোন জমতে পারে। লিভারে গলস্টোন হয় অতিভোজন, অস্বাস্থ্যকর ডায়েট, লাইফস্টাইল, মানসিক চাপ, চেপে রাখা ক্রোধ ইত্যাদি থেকে। প্রধান বাইল ডাক্টগুলো যখন ব্লক হয়ে থাকে তখন বাইল টক্সিক হয়ে যায়। গলস্টোনের কারণে যন্ত্রণাদায়ক গলব্লাডার এটাক হয়। কেউ তীব্র যন্ত্রণাময় এটাক থেকে রেহাই পেতে সার্জিক্যালি পিত্তকোষ কেটে ফেলতে পারে। যেহেতু লিভারে স্টোন রয়েই গেছে তাই ডাইজেস্টিভ প্রবলেম আরো তীব্র হবার সম্ভাবনা অত্যাধিক। পিত্তকোষ কেটে ফেললে ইন্টেস্টিনাল ওয়ালে ইঞ্জুরি হয়। লিভার ও গলব্লাডার ফ্ল্যাশ এর মাধ্যমে সহজে ও নিরাপদে গলস্টোন সম্পূর্ণভাবে দূর করা যায়। এখন মেডিক্যাল ফ্যাসিলিটিতে এর কোনো ট্রিটমেন্ট নেই।
২। ডিহাইড্রেশন: মানবদেহ ৭৫ ভাগ জল ও ২৫ ভাগ কঠিন পদার্থ দিয়ে গঠিত। দেহে পুষ্টি সরবরাহ, বর্জ্য অপসারণ করা এবং ট্রিলিয়নসংখ্যক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জল প্রয়োজন। আধুনিক সমাজে জলপানের প্রতি যথেষ্ট অবহেলা করা হচ্ছে। সব লোকেই জলের বদলে চা,কফি,এলকোহল,ম্যানুফ্যাকচারড বেভারেজ ইত্যাদি পান করে। এসব পানীয় জলের অভাব পূরণ করে না।ক্যাফেইন,সুগার,সুইটেনার,কেমিক্যালস ইত্যাদি হচ্ছে কড়া ডিহাইড্রেটর। জল না খেয়ে এসব পানীয় খেলে মূত্রত্যাগের পরিমাণ বাড়ে। ক্রনিক ডিহাইড্রেশন প্রত্যেক টক্সিসিটি ক্রিসিসের জন্য অনেকাংশে দায়ী। ন্যাচারাল মেডিকেশন অথবা সিন্থেটিক ড্রাগ যেটাই হোক দেহের হাইড্রেশনের ব্যবস্থা না করে চিকিৎসার চেষ্টা করা বাস্তবসম্মত নয়। অধিকাংশ রোগী আজকাল থার্স্ট ডিজিজে ভুগছে। ক্রনিক ডিজিজ ডিহাইড্রেশনের হাত ধরেই আবির্ভূত হয়। হার্ট ডিজিজ,স্থূলতা,ডায়াবেটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস,স্টমাক আলসার,হাইপার টেনসন,ক্যান্সার, আলঝেইমার্স সহ আরো অনেক ক্রনিক ডিজিজ দৈহিক শুষ্কতা (Body drought) এর ফলে দেহে বাসা বাঁধে। সংক্রামক এজেন্ট যেমন– ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক এরা হাইড্রেটেড অক্সিজেনেটেড বডিতে বাঁচতে পারে না। দেহে পেইন হওয়া ডিহাইড্রেশনের আরেকটি নির্দেশক। কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দেহের ন্যাচারাল পেইন সিগন্যাল একেবারেই স্বাভাবিক রেসপন্স। অধিকাংশ লোকের কোনো জ্ঞান নেই পেইনের ব্যাপারে। তারা বুঝতে চায় না যে এটা দেহের হিলিং ইফোর্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ড্রাগ সাপ্রেসিং না করে ক্লিনসিং,বিশ্রাম,সঠিক পুষ্টি এগুলো ঠিকভাবে সমন্বয় করলেই পেইন ঠিক হয় কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েকদিনের মধ্যে। অবশ্য কিছু ক্ষেত্রে অসহনীয় পর্যায়ে পেইনের জন্য পেইনকিলার ড্রাগ দরকার। একইসাথে হাইড্রেশন এবং ক্লিনসিং প্রোগ্রাম ঠিক রাখতে হবে। মস্তিষ্কে দেহের অন্যান্য অংশের চেয়ে অধিক পরিমাণ জল দরকার। ব্রেইন সেলের ৮৫ ভাগই জল। ওয়াটার ডেফিসিয়েন্সির কারণেই মানুষ ডিপ্রেশনে ভুগে। দেহে জলাভাবের ফলে অকালে কিডনি ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে। ক্যাফেইনেটেড বেভারেজেস, চা, কফি,ড্রিংক্স ইত্যাদি সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম ও ইমিউন সিস্টেমে উত্তেজনা ও চাপ সৃষ্টি করে। এগুলো শক্তিশালী মূত্রবর্ধক (মূত্রত্যাগের পরিমাণ বাড়ায়)। এক কাপ চা, কফি বা ড্রিংক্স পান করলে শরীর থেকে তিন কাপ পর্যন্ত জল বেরিয়ে যাবে। ক্যাফেইন হচ্ছে ইনসেক্টিসিড; নার্ভ টক্সিন যা এডরেনাল গ্রন্থিকে স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ ও ইমিউন রেসপন্স ট্রিগার করতে উদ্দীপিত করে। একারণেই এসব পান করলে খুব সতেজ বোধ হয়। আর্টিফিশিয়াল ড্রিংক্স মারাত্মক সেল ড্যামেজ ঘটায়। কোকাকোলা,ফান্টা,পেপসি ব্র্যান্ড তাদের ড্রিংকসে যেসব প্রিজারভেটিভস ব্যবহার করে তা ডিএনএ এর গুরুত্বপূর্ণ অংশসমূহ নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ফুড এডিটিভ বাচ্চাদের মাঝে হাইপার অ্যাক্টিভিটি সৃষ্টি করে। সোডা নিয়মিত পান করলে স্থূলতা, হাই ব্লাড সুগার,হাই ব্লাড প্রেশার, লো লেভেল গুড কোলেস্টেরল ইত্যাদির ঝুঁকি সাংঘাতিকভাবে বাড়ে। ১২ আউন্স কোলা বা সোডা থেকে যতখানি এসিড দেহে ঢুকে তা প্রশমিত করতে হলে ৩২ গ্লাস ৯ মাত্রার ক্ষারীয় পিএইচের জল পান করতে হবে! যাইহোক সুস্থ থাকার জন্য স্বচ্ছ বিশুদ্ধ জলপান করা অত্যাবশ্যক। জলের নিরাপদ উৎস না থাকলে ফিল্টার সিস্টেম ব্যবহার করা জরুরি। জলের বাষ্প ঘনীভূত করে পাওয়া তরল প্রাকৃতিক বৃষ্টিজলের মতোই যাকে বলে ডিস্টিলড ওয়াটার। তবে ডিস্টিলড ওয়াটার হচ্ছে বোবা জল এতে লাইফ ফোর্স থাকে না। ডিস্টিলড ওয়াটারে দ্রবীভূত মিনারেলস না থাকায় শরীরের বিষাক্ত পদার্থ শোষণ ও অপসারণ করার বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে। কিন্তু দীর্ঘ সময় যাবৎ খেলে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ও ট্রেস মিনারেলস এর ঘাটতি দেখা দেবে।
৩। কিডনি স্টোন: কিডনি মূত্রের মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল দেহ থেকে বের করে দেয় এবং লবণ ও এসিডের ভারসাম্য ঠিক রাখে। এখানে উৎপাদিত EPO হরমোন রেড ব্লাড সেল উৎপাদন প্রক্রিয়া সক্রিয় করে। আরো কিছু কিডনি হরমোন ব্লাড প্রেশার ও ক্যালসিয়াম মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ করে। কিডনিদ্বয় সর্বক্ষণ রক্তের পরিমাণ পর্যবেক্ষণে রেখে সঠিক পরিমাণ মূত্র নিষ্কাশন করে। অনেক ফ্যাক্টর এই মেকানিজমে বিঘ্ন সৃষ্টি করে কিডনিতে কনজেস্টশন ঘটাতে পারে। অতি উত্তেজনা, ডিহাইড্রেশন,অবসাদ,অতিভোজন, প্রচুর প্রসেসড ফুড খাওয়া, গলস্টোন, রক্তচাপে উত্তেজনা, ডাইজেস্টিভ ডিজওর্ডার(বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্য), চেতনানাশক ড্রাগস, ভিটামিন সাপ্লিমেন্টস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। যখন কিডনি রক্ত থেকে সঠিক পরিমাণ মূত্র আলাদা করতে সক্ষম হয়না মূত্রের একটা অংশ দেহজুড়ে পরিবাহিত হতে থাকে। চূড়ান্ত ফলাফল হচ্ছে দেহস্ফীতি (Swelling) এবং ইউরিমিয়ার সিম্পটমস বা কিডনি বিকল। অনেক স্কিন ডিজিজ,গায়ে উৎকট গন্ধ, হাতপায়ের তালু ঘামা,জল ধারণ, লিম্ফ কনজেস্টশন,পেট ফোলা, দ্রুত ওজন বৃদ্ধি, দূর্বলতা, হাই ব্লাড প্রেশার ইত্যাদি রক্ত বিষিয়ে যাওয়ার লক্ষণ যা মূলত কিডনিতে অবস্ট্রাকটিভ ইউরিনারি ডিপোজিটরের (যেমন– স্যান্ড ক্রিস্টাল,স্টোন) উপস্থিতির ফলে হচ্ছে। অধিক অক্সালিক এসিডযুক্ত খাদ্যপানীয় দেহে অক্সালেট স্টোন তৈরি করে। চা,চকোলেট, কোকোয়া বেভারেজ,আইসক্রিম এগুলোতে প্রচুর অক্সালিক এসিড ও অক্সালেট থাকে। অধিক অক্সালিক এসিড প্রশমিত করতে দেহ ক্যালসিয়াম কে ব্যবহার করে ফলে ক্যালসিয়াম অক্সালেট তৈরি হয়। ক্যালসিয়াম অক্সালেটের ক্ষুদ্র ক্রিস্টাল কিডনিতে জমতে পারে। ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন সি গ্রহন করলেও একই ব্যাপার ঘটতে পারে। এসিড সৃষ্টিকারক খাবার যেমন– মাংস, মাছ,ডেইরি,সেঁকাপোড়া খাবার,ক্যান্ডি,সুগার ইত্যাদি শরীর থেকে মূল্যবান মিনারেলস বের করে ফেলে। অতিরিক্ত টেবিল সল্ট (সোডিয়াম ক্লোরাইড) কিডনি স্টোন ত্তৈরিতে ভূমিকা রাখে। যদি নীচের সিম্পটমগুলো আপনার থাকে তাহলে আপনার কিডনিতে স্টোনের উপস্থিতি আছে–
•চোখের নিচে সাদাটে বা কালো রঙ •ফোলা চোখ বিশেষত সকালে •চোখের নিচে গভীর বলিরেখা এবং চোখের চারদিকে ক্ষুদ্র সাদাটে, তামাটে বর্ণ বা কালো পিন্ড যা বুঝা যায় যখন হাঁ করা হয় •উপরের চোখের পাতার অভারল্যাপিং •নীচের পিঠে ক্রনিক পেইন •পা ও হাঁটু ফোলা •ভয় বা দুশ্চিন্তা
কিছুসংখ্যক হার্বস ৩-৬ সপ্তাহের মধ্যে কিডনি স্টোন গলিয়ে ফেলতে পারে। কিডনি স্টোন থাকুক বা না থাকুক কিডনি ক্লিনজ বছরে একবার বা দুবার করা সামগ্রিক শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
৪। যা কিছু শরীরকে নিস্তেজ করে সেসবই অসুখ সৃষ্টি করে: ফ্লু মহামারী ১০০ বছর আগে সহজে সংঘটিত হত না। যখন মহামারী আসত তখন খুব জরাগ্রস্ত দূর্বল মানুষগুলোই মারাত্মকভাবে অসুস্থ হত অথবা মারা পড়ত। এখন মহামারী প্রতিবছর আসে এবং কিছু মহামারী সারাবছর ধরে স্থায়ী হয়। ১৯১৮ সালের মহামারী সরাসরি ১ম বিশ্বযুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত। ইনফ্লুয়েঞ্জা A ভাইরাস স্ট্রেইন সাবটাইপ- H1N1অস্বাভাবিকভাবে তীব্র ও ভয়ংকর ছিল। ফিউম ও স্মোকের ২৪ ঘন্টাব্যাপী দূষণ প্রচুর বোমাবর্ষণ, এক্সপ্লোসিভ, গ্রেনেড বিস্ফোরণ, মাস্টার্ড গ্যাস,বায়োলজিকাল ওয়েপন ইত্যাদি থেকে সৃষ্টি হয়েছে। আজকে ইরাকে যদি যুদ্ধের ফলে দূষণ সৃষ্টি হয় তবে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা বিশ্বজুড়ে কুপ্রভাব ফেলবে। পৃথিবী স্থির নয়; বাতাস সর্বদা বিচরণশীল। ১০০ বছর আগেকার একজন মানুষের চেয়ে বর্তমান মানুষের ইমিউনিটি অনেকগুণ কম। এখন মানুষের সারাদিন ওভারস্টিমুলেশনে কাটে ফলে শক্তিশালী ফিজিক্যাল এনার্জি নিঃশেষকরণ প্রভাব পড়ে দেহের উপর। এরকম কিছু ওভারস্টিমুলেটিং ফ্যাক্টর হচ্ছে–
•টেলিভিশন বা ইলেকট্রনিক স্ক্রিনে বারবার কিংবা বহুক্ষণ সময় কাটানো •ইমোশনাল স্ট্রেস ও আঘাত •কাজের চাপ (অনেক কাজ কিন্তু সময় কম এরূপ অবস্থা) •অতিরিক্ত শব্দ,বাতাস,জল,মাটি দূষণ •কৃত্রিম আলোতে সারাক্ষণ থাকা •ফার্মাসিউটিক্যাল ড্রাগস •চা,কফি,এলকোহল এবং সোডা বেভারেজ •সুগার,সুইট এবং চকোলেট •মাংস •জাংকফুড •অতিভোজন •অপর্যাপ্ত ঘুম •অনিয়মিত অগোছালো লাইফস্টাইল বা রুটিন •অতিরিক্ত যৌনমিলন •খুব কম জলপান
এই তালিকা এখনো অসম্পূর্ণ। কিন্তু এটা আপনাকে ধারণা দিচ্ছে মডার্ন ওয়ার্ল্ডের কোন ব্যাপারগুলো আপনার স্বাস্থ্যের উপর কুপ্রভাব ফেলে। আপনার বডিকে টক্সিন-বর্জ্য-দূষিত পদার্থমুক্ত রাখতে হলে দেহের লাইফ ফোর্স বা এনার্জিকে সক্রিয় ও কার্যকর থাকতে হবে।
দেহের ভারসাম্য নষ্ট হলে এবং টক্সিন জমলে ইনফেকশন দেখা দেয়। ইনফেকশন এরপর এন্টিবায়োটিক আবার ইনফেকশন আবার এন্টিবায়োটিক এই মারাত্মক চক্রে যে রোগী আটকে পড়েছে সে ক্লিনসিং ও রেস্টিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে মুক্তি পেতে পারে। অসুখবিসুখ হচ্ছে অন্ধকারের মত। এদের সত্যিকার অর্থে অস্তিত্ব নেই। অন্ধকার নিজে থেকে দূর হয়না; বাতি জ্বালতে হয়। আলোর অভাবই অন্ধকার। তেমনি স্বাস্থ্যের অনুপস্থিতিই রোগ। তাই দেহকে পরিস্কার,পরিপুষ্ট, রিল্যাক্সড এবং কর্মশক্তিময় রাখার জন্য যা দরকার তাই শুধু করতে হবে। ৪০,০০০ এর উপরে ফুড আইটেম রয়েছে যেগুলো মডার্ন গ্রোসারি স্টোরগুলোর শেলফে শোভা পায়। এসব খাবারের ৯৮ ভাগই প্রকৃতির নিয়মের বাইরে দেহের কোনো কাজে আসেনা। প্রোডাক্ট লেবেলে যা-ই লেখা থাকুক। যদি ল্যাবরেটরিতে উদ্ভাবিত কোনো খাবার কারখানায় প্রস্তুত করা হয় আপনি সেটাকে আর যা ইচ্ছা বলতে থাকুন কিন্তু 'খাবার' বলবেন না। এমনকি হতে পারে যে সেটা বিষ প্রস্তুত করা হয়েছে। এখনকার তরুণ ও শিশু প্রজন্ম সবচেয়ে বেশি অসুস্থ। শিশুদের স্বাস্থ্যহানি শুরু হয় বুকের দুধের বদলে ল্যাবরেটরি ফর্মুলায় বানানো ফুড প্রোডাক্ট খাওয়ানোর মাধ্যমে। মায়ের দুধের সবচেয়ে কাছাকাছি বিকল্প হচ্ছে প্রাকৃতিক নারকেল দুধ। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে অনেক সময়ই কোকোনাট মিল্ক খাইয়ে স্বাস্থ্যবান বাচ্চা প্রতিপালন করা হয় যখন মায়ের দুধের যোগান থাকে না। ব্রেস্ট মিল্ক কিংবা কোকোনাট মিল্ক ব্যতীত বাচ্চাদের পুষ্টির অভাব ও অসুখ দেখা দিবে। সাম্প্রতিক স্টাডি থেকে দেখা গেছে ছোট বাচ্চারা টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে যা দেখে বাস্তবে ঐ খাবারগুলোই শুধু বেছে নেয় খাওয়ার জন্য। ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের রিসার্চ বলছে হেটেরোসাইক্লিক এমাইনস নামক ক্যান্সার সৃষ্টিকারক কেমিকেল উচ্চ তাপে রান্না করা মাংসে (Muscle meat) তৈরি হয়। যে শিশুকে প্রচুর মাংস,ডিম,ডেইরি প্রোডাক্ট,দুধ এবং জাংকফুড খাওয়ানো হয় তার ডাইজেস্টিভ প্রবলেম ও অন্যান্য ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
উৎস: টাইমলেস সিক্রেটস অব হেলথ & রেজুভেনেশন,এন্ড্রিয়াস মরিজ।
©somewhere in net ltd.