![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন অতি সাধারন বাংলাদেশী। আমি আমার দেশ ও দেশের মানুষকে খুব ভালবাসী। আগ্রহী যে কেউ আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে পারেন।
বাংলাদেশের অনেক আলোচিত বিষয়ের মধ্যে সর্বাধীক আলোচিত ও অমিমাংসীত সমস্যা হল রোহিঙ্গা বিষয়টি। কিন্তু এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন হলো রোহিঙ্গা কারা এরা কোথা থেকে এলো এবং এদেশে এরা কি করছে??
রোহিঙ্গা হচ্ছে তৎকালীন বার্মা বর্তমানে মায়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যের উত্তররাংশের বসবাসকারী একটি প্রাচীন সম্প্রদায়। যাদের অধীকাংশই হল মুসলিম, রাজ্যের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা।
ইতিহাস অনুসারে রোহিঙ্গা গোত্রের উৎপত্তি নিয়ে ২টি মতবাদ প্রচলিত আছে, প্রথমটি হলো, ৮ম শতকের শুরুর দিকে কয়েকটি আরব মুসলিম ব্যবসায়ী বানিজ্য জাহাজ আরাকান রাজ্যের তীরবর্তী রামরি দ্বিপের কাছে কোন কারণ বসত ডুবে যেতে থাকলে জাহাজের যাত্রীরা সাহায্যের জন্য ”রহম রহম” বা দয়া কর বা বাচাঁও বলে চিৎকার করতে থাকে, এরপর তীরে উঠে আশ্রয় নিলে আরাকানের তৎকালিন রাজা তাদের হত্যার আদেশ দিলে তারা আবার ”রহম রহম” দয়া কর বা বাচাঁও বলে চিৎকার করতে থাকে। রাজা তাদের বসবাসের অনুমতি দিলে পরে বেচে যাওয়া যাত্রীরা ওখানেই তাদের স্থায়ী বসতী স্থাপন করে। ”রহম রহম” বলে চিৎকারের কারনে তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে রহম গোত্রের মানুষ হিসাবে পরিচিত হয়। সময়ের সাথে সাথে তা বিবর্তীত হয়ে রোয়াই থেকে রোহিঙ্গা তে পরবির্তীত হয়। আর অপর মতবাদটি হল বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বোখতিয়ার খিলজী আরাকানে ইসলাম প্রচারের জন্য আফগানিস্তানের রোহা জেলা থেকে কিছু সংখ্যক লোককে পাঠান সে সকল লোকের বংশধরাই সময়ের আবর্তনে ধীরে ধীরে রোহান--রোহাইন--এবং শেষে রোহিঙ্গা নামে পরিবর্তীত হয়। রোহিঙ্গারা আসলে আদি বা একক কোন জাতি না তার একটি শংকর বা মিশ্র সুন্নি মুসলিম জাতি।
রোহিঙ্গারা কথা বলে রোহিঙ্গা ভাষায়। এটি ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত একটি ভাষা যার সাথে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষার যথেষ্ট মিল। রোহিঙ্গা গবেষকগণ আরবি, হানিফি, উর্দু, রোমান এবং বার্মিজ স্ক্রীপ্ট ব্যবহার করে সফলতার সাথে রোহিঙ্গা ভাষা লিখতে স¶ম হয়েছেন। হানিফি হচ্ছে নতুন তৈরি করা স্ক্রীপ্ট যা আরবি এবং তার সাথে চারটি বর্ণ (ল্যাটিন এবং বার্মিজ) সংযোগে সৃষ্ট। স¤প্রতি একটি ল্যাটিন স্ক্রীপ্টের উদ্ভাবন হয়েছে যা ২৬টি ইংরেজি বর্ণ এবং অতিরিক্ত ২টি ল্যাটিন বর্ণ, ড্ড (তাড়নজাত জ -এর জন্য) এবং Ñ (নাসিকা ধ্বনি-র জন্য) সংযোগে সৃষ্ট। রোহিঙ্গা ধ্বনি সঠিকভাবে বোঝার জন্য ৫টি ¯^রধ্বনি (প্সল্কল্পষ্টú) ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি আই.এস.ও দ্বারা ¯^ীকৃত।
৯ম শতকে আরব, মোঘল, পর্তুগিজ, তুর্কিরা মায়ানমারে আসে এবং রোহিঙ্গদের নিয়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করে, নাম দেয় রাখাইন রাজ্য আর আকিয়াবকে রাজধানী করা হয়। বর্তমানে যা সিত্তে বা সিটওয়ে (ঝরঃঃবি) নামে পরিচিত। আরাকান রাজ্যটি মোঘল স¤্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল ১৭৭৫ সালে মগ জাতি আরাকানে আক্রমন করে রোহিঙ্গাদের পরাজিত করে। তখন রোহিঙ্গারা প্রাণ রক্ষার্থে পাহাড়ে, বনে ও নাফ নদীর তীরে সংলগ্ন এলাকায় পালিয়ে যায়। বৃটিশ মায়ানমারকে ১৮২৫ সালে দখল করলে আরাকান আবার ¯^াধীন হয়। ধীরে ধীরে বাঙালী ও ভারতীয়রা মায়ানমারের রেঙ্গুন কেন্দ্রিক ব্যাবসা শুরু করে। আদি বার্মীজরা এদিক দিয়ে আনেক পিছনে পরে যায়। আর জন্য তারা রোহিঙ্গাদেরকেই দায়ী মনে করতো। আর এটাই ছিল বার্মীজ ও রোহিঙ্গাদের বিরোধের প্রধান কারন। ১৯৩৯ সালে, রোহিঙ্গা মুসলিম ও রাখাইন বৌদ্ধদের মধ্যকার দীর্ঘ শত্রুতার অবসানের জন্য ব্রিটিশ প্রশাসন জেমস ইস্টার এবং তিন তুতের দ্বারা একটি বিশেষ অনুসন্ধান কমিশন গঠন করে। কমিশন অনুসন্ধান শেষে সীমান্ত বন্ধ করার সুপারিশ করে, এর মধ্যে শুরু হয় ২য় বিশ্ব যুদ্ধ এবং এর পরে ব্রিটিশরা আরাকান ছেড়ে চলে যায়।
১৯৪২ সালের ২৮শে মার্চ, মায়নমারের মিনবিয়া এবং ম্রক-ইউ শহরে রাখাইন জাতীয়তাবাদী এবং কারেইনপন্থীরা প্রায় ৫,০০০ মুসলমানকে হত্যা করে। ইতোমধ্যে, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ২০,০০০ মুসলমানকে হত্যা করা হয়। এতে উপ-কমিশনার ইউয়ু কিয়াও খায়াং-ও নিহত হন যিনি দাঙ্গা নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, জাপানীরা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনাধীন বার্মায় আক্রমণ করে। ব্রিটিশ শক্তি পরাজিত হয়ে মায়ানমার ছাড়তে বাধ্য হয়। ফলশ্রæতিতে দেশ জুড়ে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে বৌদ্ধ রাখাইন এবং মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যকার সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা উল্ল্যেখযোগ্য। জাপানীরা হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের নির্যাতন, ধর্ষণ এবং হত্যা করেছিল। এই সময়ে প্রায় ২২,০০০ রোহিঙ্গা সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলায় আশ্রয় নেয়। জাপানী এবং বার্মাদের দ্বারা বারবার গণহত্যার শিকার হওয়ার কারনে ৪০,০০০ রোহিঙ্গা স্থায়ী ভাবে চট্টগ্রামে চলে আসে।
জিহাদী আন্দোলনের আদর্শের অনুকরনে রোহিঙ্গারা ১৯৪৭ সালে মুজাহিদ পার্টি গঠন করে। যার লক্ষ্য ছিল স্বাধীন আরাকানে একটি মুসলিম রাষ্ট্র সৃষ্টি করা। যারা এখনও মায়ানমারের দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় চরম ভাবে না হলেও মোটামুটি সক্রিয় আছে।
১৯৪৮ সালের ৪জানুয়ারী মায়ানমার স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর থেকেই মুলত বার্মীজদের সাথে রোহিঙ্গাদের প্রকাশ্য দাঙ্গার সুত্রপাত, যা চরম রূপ নেয় ১৯৬২ সালে সামরিক শাসন জারির পর থেকে। ১৩৫টি জাতিকে মায়ানমার সংখ্যা লঘু হিসাবে স্বীকৃতি দিলেও রোহিঙ্গাদের বিষয়ে ব্যপারটা উল্টো। রোহিঙ্গাদের অবৈধ দখলদার যারা ভারত,বাংলাদেশী ও কিছু আরবীয় এই অযুহাতে ১৯৭১ সালে তাদের নাগরীকত্ব বাতিল করে তাদের ”গরবা” বা মেহমান নাম দেয় হয়। ১৯৭৪ সালে বাতিল করা হয় তাদের ভোটাধীকারও। ১৯৭৮ সালে আদম শুমারী শুরু করার আগে অবৈধ অভিবাসী ও মুসলিম সন্ত্রাসী উচ্ছেদের নামে ৬ ফেব্রয়ারী রাখাইন রাজ্যের সিত্তে এর সিক্কাপারা-থেকে ”কিং ড্রাগন অপারেশন” এর নামে সামরিক শাসক ”নে’ উইন” গণহত্যা শুরু করেন। প্রাণ বাঁচাতে তারা যে যেদিকে পারে পালাতে থাকে। সে সময় নাফ নদী পার হয়ে প্রায় ২ থেকে আড়াই লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার এ অভিযোগ অকার করে,তারা বলে যে ’কিং ড্রাগন অপারেশন’ মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয় বরং সব অবৈধ বসতিস্থাপনকারীর বিরুদ্ধে পরিচালিত হচ্ছে এবং সাধারণত পশ্চিম (বাংলাদেশ) থেকে পূর্বদিকে (মিয়ানমার) মানুষ অবৈধভাবে গিয়েছে। অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের চিহ্নিত করতে জরিপ চালানোর সময় কিছু আরাকানি মুসলমান অনুসন্ধানী প্রক্রিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা না করে দেশত্যাগ করে অন্যত্র চলে গেছে। অতঃপর রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৮ সালে জুলাই মাসে মায়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসে। এ সময় ৩টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে সকল রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফেরত নেয়ার বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির ফলে ১৯৭৮ সালের ৩১শে আগষ্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের আগত ১ লাখ ৮৭ হাজার ২৫০ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়। এটিই ছিল বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রবেশের শুরু। ১৯৮২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি ঘোষনা দিয়ে রোহিঙ্গাদের অবৈধ বলে সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়। এমনকি তাদের ¯^াস্থ্য তথা চিকিৎসা ও শিক্ষার মত প্রয়োজনীয় মৌলিক অধীকারটিও বাতিল করা হয়। এরপর ১৯৯০ বা ১৯৯১ সালে তৎকালীন সামরিক প্রধান ”স’ মং” আরাকান প্রদেশের দুটি প্রধান শহর মংডু ও যথইং থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিতাড়িত করে সেখানে বৌদ্ধ রাখাইনদের পুর্নবাসিত করেন, আর এই উচ্ছেদ অভিযানের নাম দেয়া হয় “অপারেশন পিয়েথারা”। আবার নতুন করে উদ্বাস্তুু হয় প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ রোহিঙ্গা। আগের বারের মত এবারও তার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এরপর জাতিসংঘ, আমেরিকা ও চীনের মধ্যস্থতায় মায়ানমার সাথে ১৯৯২ সালের ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশের সাথে আর একটি চুক্তি সই হয়, এবং প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজারের মত রোহিঙ্গা মায়ানমারে ফিরে যায়।
এর পর ২০০৫ সালে, জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (United Nations High Commissioner for Refugees) সংক্ষেপে UNHCR মিস্টার এন্টোনিও গুট্যারস(যিনি বর্তমানে মহাসচিব) রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বিভিন্ন ধরণের মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে সেই উদ্যোগ আর সফল হয়নি।
এরপর ২০১২ সালে ২/৩ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ১টি রাখাইন মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যা করলে আবার রোহিঙ্গা-রাখাইন দাঙ্গা শুরু হয়। এক সময় সেনাবাহিনী ও মৌলবাদি গোড়া বৌদ্ধরাও রাখাইনদের পক্ষ নিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িয়ে পরে। সময়টা ছিল ২০১২ এর জুন মাস। এবারও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করলে সরকারের অনিচ্ছা ও সিমান্তরক্ষী বাহিনীর জন্য তা সফল হয়নি। কিন্তু মানবিক কারনে সরকার সিমান্তরক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে যথাসম্ভব সাহায্য করেছে। কিন্তু স্থানীয়দের মতে এর পরও অনেক রোহিঙ্গা র্দুগম এলাকা দিয়ে ঠিকই বাংলাদেশে ঢুকেছে, যার সঠিক কোন হিসাব নেই। ২০১২ এর দাঙ্গায় প্রায় শতাধীক রোহিঙ্গা মারা গেছে আর ভিটামাটি হারিয়েছে প্রায় লক্ষাধীক রোহিঙ্গা। এগুলো ছিল রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের কাগজ কলমের হিসাব। কিন্তু আসল কথা হল রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার কোন ধরাবাধা সময় ছিলনা এবং এখনও নেই। তারা সিমান্তের নাফ নদী দিয়ে প্রতিদিনই কিছুনা কিছু সংখ্যক হারে এদেশে আসছে। স্থানীয়দের সাথে তাদের চেহারা ও ভাষাগত মিল থাকার জন্য সবসময় তাদের আটক করা যায় না। আর কখনও আটক হলে আটককারী কে কিছু টাকা দিলেই সমস্যা মিটে যায়। রোহিঙ্গাদের এই নিয়মিত বাংলাদেশে প্রবেশের কারন খুবই সাধারন আর তা হল যেহেতু মায়ানমার সরকার তাদের নাগরিক হিসাবে গণ্য করেনা তাই তারা সকল প্রকার নাগরিক ও মৌলিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। মায়ানমারে আইনে চিকিৎসা,শিক্ষা বা ভ্রমন এর জন্য পরিচয়পত্র থাকা আবশ্যক কিন্তু রোহিঙ্গাদের সরকার কোন পরিচয়পত্র দেয়না, তাই এসব সুযোগও তারা পায়না। মায়ানমারের ভূমি ও সম্পত্তি আইনে কোন বিদেশী ওখানের কোন সম্পত্তির বা ভূমির মালিকানা পেতে পারবেনা। রোহিঙ্গাদের যেহেতু নাগরিকত্ব নেই তাই তারা বিদেশী আর এ জন্য তাদের নিজেদের কোন সম্পদ বা সম্পত্তি নেই। তারা যেখানে থাকে সেই জমি সরকার যখন ইচ্ছা তখন অধিগ্রহন করতে পারে, কোন ক্ষতিপুরণ ছাড়াই। নাগরিক আইনের কারনে রোহিঙ্গারা কোন সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরীও করতে পারেনা এমন কি সরকারী কোন প্রতিষ্ঠনের সেবাও তারা পায়না, অর্থাৎ থানা মানে পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করার অধীকারও নেই তাদের। বাড়ীর জন্য পানি,বিদ্যুৎ বা জ্বালানী সংযোগের অধীকার থেকেও তারা বঞ্চিত। পরিচয়পত্রের জন্য কোন শিক্ষালয়ে ভর্তি হতে না পারার কারনে প্রায় শতকরা ৮০-৯০ রোহিঙ্গাই সত্যিই সত্যিই নিরক্ষর। তবে যে সকল রোহিঙ্গা গ্যাটোতে বসবাস করে তার কিছুটা হলেও নাগরিক সুবিধা পায়, কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য আর মানের তুলনায় খুবই জঘন্য। গ্যাটো হল একধরনের বস্তি যা আয়তনে খুবই ছোট এবং এই গ্যাটো থেকে অনুমতি ছাড়া বাহিরে আসা যায় না। এক কথায় জেলখানার প্রাচীন রুপ হলো গ্যাটো। রোহিঙ্গাদের প্রতি পদে পদেই নিপিড়ীত হতে হয়, কোন রোহিঙ্গাই স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করতে পারেনা এবং এজন্য তাকে সরকারকে কর দিতে হয়, কারও সন্তান হলে বা কেউ মারা গেলেও নিদৃষ্ট পরিমান কর দিতে হয় সরকারকে। যা অতি অমানবিক একটা ব্যাপার। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করলে বা দুইয়ের বেশী সন্তান হলে তাকে বিচারের মুখোমুখি করে শাস্তি দেয়া হয়। অনুমতি ছাড়া বিয়ে করা দম্পতীর সন্তান কিন্তু গ্যাটো ব্যবস্থার অন্তর্ভূক্ত না। তাই এরা ইচ্ছা থাকলেও গ্যাটোতে যেতে পারেনা আর গ্যাটোর বাহিরে থাকতে হয় অধীকার বঞ্চিত হয়ে। এরকম রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজরের মত হবে। রোহিঙ্গারা সরকারী চাকরী না পেলেও তাদের বিনা পারিশ্রমিকে সরকারী নানা নির্মাণ কাজে শ্রম দিতে হয় বাধ্যতামুলক ভাবে। আর সব সময় যখন তখন তুচ্ছ কারনে তাদের উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। আর এত সব কারনেই রোহিঙ্গারা জীবিকার তাগিদে একটু ভালভাবে বাঁচার আশায় নিজের মাতৃভূমি ছেড়ে সিমান্ত দিয়ে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও পাকিস্তান বা আমাদের দেশে চলে আসে। রোহিঙ্গাদের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৪,২৪,০০০। এর মধ্যে মায়নমারে-৮,০০০০০, বাংলাদেশে ৫ লক্ষাধীক, সৌদী আরবে প্রায় ৫,০০০০০ থাইল্যান্ডে- ১,০০০০০, মালয়েশিয়াতে-২৪,০০০ জন। বাংলাদেশে তারা মূলত থাকে টেকনাফের দমদমিয়া,মছুয়ি, লেদা ও নয়াপাড়া আর উখিয়ার কুতুপালং এবং ঘুমধুম এলাকার শরনার্থী শিবিরে বসবাস শুরু করে। কিন্তু টেকনাফের নয়াপাড়া আর উখিয়ার কুতুপালং সরকারী ভাবে স্বীকৃত। নয়াপাড়ায় সাড়ে ১৪ হাজার, কুতুপালং এ- ১০হাজার ২শত ৬ জন নিবন্ধিত হয়। রোহিঙ্গাদের একাধীক বিয়ে এবং গড়ে প্রত্যেকের ৬/৭ জন সন্তান থাকায় ২০ বছরে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৩৬ হাজারে। কিন্তু সরকারী হিসাব আছে সেই একই। রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প থেকে বাহিরে বের হওয়া নিষেধ থাকলেও তা তারা কখনই মানে না। তারা তাদের প্রয়োজনমত স্বীকৃত ক্যাম্পের আশপাশ দিয়ে আরও অনেক অবৈধ ক্যাম্প বানিয়েছে। যার সংখ্যা ৫টির মতো। কুতুপালং বাজারে রোহিঙ্গাদের নিজেদের সবরকম দোকান রয়েছে। এছাড়াও বান্দরবনের লামা, চট্টগ্রামেও এরা বসবাস করে। এককথায় এরা সারা বাংলাদেশেই ছড়িয়ে আছে। স্থানীয় লোকজনের সাহায্যে তারা মিথ্যা পরিচয়ে ঘএঙ থেকে লোন নিচ্ছে, ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশ যাচ্ছে এবং সেখানে নানা প্রকার অপরাধের সাথে জড়িয়ে সে দেশে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করছে। এতে বাংলাদেশের শ্রম বাজার নষ্ট ও আন্তর্জাতিক ভাবে ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। রাজনৈতিক সুবিধা ও জন সমর্থন বৃদ্ধির জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধীরা তাদের সকল প্রকার সনদ দিয়ে দিচ্ছে। আর এ কারনে কোন কোন রোহিঙ্গা নিজেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধী হয়ে যাচেছ। রেহিঙ্গাদের বাংলাদেশী নাগরিক বিবাহে বাধা থাকলেও তারা তা না মেনে এখানে একাধীক বিয়ে করে এদেশের স্থায়ী নাগরিক হয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গারা অভাবের কারনে দিনে দিনে বিভিন্ন অপরপাধের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে, তার মধ্যে মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা প্রধান, এ টাকা দিয়ে তারা বাংলাদেশ ও মায়ানমারে বিশৃক্সখলা সৃষ্টি করছে। প্রায়ই তারা পুলিশের কাছে ধরা পড়ছে শাস্তি হচ্ছে ছাড়া পেয়ে আবার তারা ঐ একই কাজ করছে। তাই শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বে রোহিঙ্গা রা একটি অমিমাংসিত চরম সমস্যা। বর্তমানে রোহিঙ্গা নিধন অতীতের সকল রেকর্ডকে অতিক্রম করেছে। বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক সংস্থার মতে বর্তমানে এরই মধ্যে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লক্ষাধীক। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত-
পোলিও > ১৭ জন
এইচআইভি +ve screening suspected patient প্রতি ১০ জন এ ৪জন
হেপাটাইটিস বি
হেপাটাইটিস সি
যক্ষা
ম্যালেরিয়া
হাম
অগিনত
গর্ভবতী মহিলা > ৭০ হাজার
Dr. Zahidul Mostafa
MODC
Upazila health & F P O
Sadar, Cox's Bazar.
তাই এ সমস্যা সমধানে জাতিসংঘ এবং উন্নত দেশে গুলোর উচিৎ মায়নমার কে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও সকল মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করা। না হলে, বাংলাদেশ অদূর ভবিশ্যতে ভয়াবহ সমস্যায় নিমজ্জ্বিত হবে এটা নিশ্চিত।
পুনঃশ্চঃ একমাত্র সাদাকালো ছবিটি ১৯৩৬ সালে তোলা। স্থান রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রঙ্গন, বার্মা।
ছবিটিতে পা তুলে মাঝখানে বসা রোহিঙ্গা মুসলিম মানুষটির নাম, আব্দুর রশিদ। ছিলেন অল বার্মা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন এর সভাপতি। তার ডান পাশে বসা লোকটির নাম অং সান (অং সান সুচির বাবা) ছিলেন ঐ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। বাম পাশে বসা লোকটির নাম আব্দুল রাজ্জাক। ছিলেন বার্মা মুসলিম লীগ এর সভাপতি। আর এদের হাত ধরেই এসেছিল বার্মার স্বাধীনতা। ঐ রোহিঙ্গা সভাপতি আব্দুর রশিদ ছিলেন আজকের মিয়ানমারের সংবিধানের খসড়া প্রণয়নকারী। কাজেই রোহিঙ্গা মুসলমানরা বার্মার কেউ না এটা বলা ইতিহাসে চরম মিথ্যাচার ই না অমার্জনীয় ধৃষ্টতা। আর যদি উনারা দাবী করে যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশী(চট্রগ্রাম এর বাসিন্দা)
তাহলে আমাদেরও দাবী আছে,রাখাইন রাজ্যটা মায়ানমারের অংশ নয়, এটা বাংলাদেশের অংশ!
তাই আমাদের অংশটুকু আমাদেরকেই দিয়ে দিন! (লেখাটি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে লেখা তাই ভুলত্রুটি মার্জনীয়)।
(
২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:০৪
সর্ট সার্কিট বলেছেন: দারুণ তথ্য বহুল লেখা!!! ধন্যবাদ.....
তবে আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি সামনে আসছে কঠিন সময়, আমাদের বাংলাদেশীদের জন্য। এই ১০ লাখ রোহিংগাদের কিছু ত্রাণ দিয়েই কিছু মানবতাবাদী দেশ খালাস, আর কিছু দেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতির অংশ হিসেবে এই ইস্যু নিয়ে মিডিয়াতে ঝড় তুলবে, তারপর এক সময় সব শেষ, কিন্তু চিপায় পরবো আমরা!!! এদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করলে এরা ছড়িয়ে পরে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরবে..কিন্তু কর্মসংস্থান কিভাবে হবে, একে তো আমাদের নিজেদের দেশেই সব মাস্টার্স পাশ বেকার স্যান্ডেলের তলি ছিড়ে ফেলছে, তার উপর এই সব রোহিংগারা প্রায় সব অশিক্ষিত..সুতরাং মানবতাবাদী হওয়ার সাথে সাথে আমাদের এখন ধৈ্য্যশীল জাতিতে পরিণত হতে হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ভোর ৫:৩৮
স্বল্প বাঁধন বলেছেন: জন্মই যাদের আজন্ম পাপ!