নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তবু আজও স্বপ্ন দেখার নেই মানা ........

শহুরে আগন্তুক

নিজের কাছে নিজেই অচেনা রয়ে গেছি আজো । চেনার চেষ্টা করছি । মানুষ হিসেবে কেমন তা অন্যরাই ভাল বলতে পারবে । আমার কাছে আমি আমার মতোই । আশাবাদী , স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি । সুন্দর এবং শুদ্ধ অনুভূতিময় স্বপ্ন ।

শহুরে আগন্তুক › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন অপরিচিত মাঝবয়সী মহিলার বৈশাখ পূর্ব একটা দিন : আপনার সাথে কতটুকু মিলছে?

১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:১৪

মাঝবয়সী একজন মহিলা , বেশ ভীড়ের রাস্তার মাঝ দিয়ে হেটে যাচ্ছেন । গায়ে পোশাক বলতে কোমড় থেকে হাটুর উপর পর্যন্ত জড়ানো এমন একটা ন্যাকঁড়া যা দিয়ে আমরা জুতোও পরিষ্কার করবো না । হাত দুটো বুকের উপর ভাঁজ করে রাখা । তিনি হাঁটছেন মাথা নিচু করে, আস্তে আস্তে , অনেকটা যেন রাস্তার ইট গুনতে গুনতে ।



সন্ধ্যার চিরাচরিত তাড়াহুড়ায় গন্তব্যে যাওয়ার পথে বেশ অস্বস্তিকর একটা দৃশ্য ।



এর চেয়েও বেশী অস্বস্তিকর তিনি মাথা নিচু করে অস্পষ্ট স্বরে যা বারবার বলে চলেছেন । - " ও বাই, একটা জামা দেন না ....ও বাই একটা জামা দেন না। " রাস্তার ভিক্ষুক শ্রেনীর মানূষরা সাধারনত টাকা - পয়সা বা খাবার চায় । ওসব শুনতে শুনতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি, সহজেই এড়িয়ে যাওয়া যায় । কিন্তু একজন মহিলার মুখে এমন চাওয়া শুনে না শোনার ভান করে পাশ দিয়ে হেঁটে চলে যাওয়া তুলনামূলকভাবে একটু কঠিনই । তবে দেখলাম, মানুষ বেশ পারছে । অস্বাভাবিক কিছুই না । দুই - এক টাকা ভিক্ষা দেয়া যায়, কিন্তু জামা কিনে দেওয়া খরচান্ত ব্যাপার । অতোখানি অপচয়ে না যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ । হঠাৎ দেখা গেলো আমার বয়সী একটা ছেলে ফুটপাতের দোকান থেকে বেশ সুন্দর একটা টি - শার্ট কিনে মহিলার হাতে ধরিয়ে দিয়ে হনহন করে সামনে চলে গেলো । যাওয়ার পথে ছেলেটা একবার পেছন ফিরিয়ে দেখে মহিলাটি ছেলেদের টি - শার্টটা গায়ে দিয়েছেন , তখন তার মুখে অন্যরকম আনন্দের একটা আভা খেলে যায় ।



জামা জোগাড়ের পর ভিক্ষুক মহিলা এরপর নামলেন খাবার জোগাড়ের চেষ্টায় । প্রচন্ড ক্ষুধার কারনেই এতোক্ষন তাকে পা টেনেটেনে, আস্তে আস্তে হাঁটতে হয়েছে । আবার শুরু হয় মানুষের কাছে হাত পাতা । এবার অন্য চাওয়া - " দুইডা টেকা দেন, ভাত খামু ।" এই জাতীয় ডাক শুনে শুনে মানুষের কান অনেক আগেই পঁচে গেছে ,কেউ এবার যেন তাকে দেখছেই না । কিছুক্ষণ পর দেখা গেলো ভিক্ষা তেমন কিছুই আসে নি আর ক্ষুধায় চোখে অন্ধকার দেখা শুরু হয়ে গেছে ।



পেটের ক্ষুধায় মানুষ নিজের সন্তানও বিক্রি করে দেয়, লজ্জার আবরন তো তার কাছে কিছুই না । ছেলেটা যে দোকান থেকে টি - শার্টটা কিনে দিয়েছিলো সে দোকানেই সে সেটা ত্রিশ - চল্লিশ টাকায় বিক্রি করে দিয়ে টাকাটা নিয়ে সে চলে যায় রাস্তার ওপাশের ভ্যানগাড়ির ওপরের এক ভাতের দোকানে । ভাত খেতে বসে ইলেকট্রিসিটির আলো নেই এমন অন্ধকার এক কোনায় ।



আবার একদিন চোখে পড়লো তাকে । গায়ে ঝকঝকে নতুন একটা শাড়ি । কোন নিতান্তই ভালো মানুষ হয়তো তাকে কিনে দিয়েছেন । বেচারি এখন এতো সুন্দর শাড়ি নিয়ে ভিক্ষা চাইতে পাচ্ছে লজ্জা । হাটছে লাজুক লাজুক মুখে , গুটিগুটি পায়ে । আমার সামনে দিয়ে হেঁটে চলে গেলো, ভিক্ষা আর চাইলো না আজ । আমি কেন যেন তার চলে যাওয়ার রাস্তায় মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে থাকি । কিছুদূর গিয়ে সে মাথায় ঘোমটা টেনে দেয় । হালকা গোলাপি শাড়িতে পেছন থেকে তাকে দেখায় বিয়ের পর বাপের বাড়িতে নায়র আসা একদম নতুন বউয়ের মতো ।



চোখের আড়ালে চলে যাওয়ার পর হঠাৎ মনে হলো, নতুন বউ সেজে থাকার সুন্দর সময়টা তার আরেকবার ক্ষুধা লাগার পরপরই হয়তো ফুরিয়ে যাবে ।



( গতকাল মার্কেটে ইন্ডিয়ান সিল্কের সবুজ একটা পাঞ্জাবীতে চোখ একদম আটকে গেছে । দেখতে এতোই সুন্দর! দাম যদিও একটু বেশী, বলা যায় না কিনে ফেলে বৈশাখে ওটা গায়েই হয়তো বেড়িয়ে পড়বো । আপনার বৈশাখের প্ল্যান কি? শপিং করেছেন তো? )



(( অবাস্তব নয় ))

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:২০

মিনহাজুল হক শাওন বলেছেন: প্লাস

২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৩০

কালোপরী বলেছেন: শপিং করি না অনেকদিন


প্রয়োজন না হওয়া পর্যন্ত হয়তো


পোস্টে প্লাস

৩| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৪৭

মোঃ ইয়াহিয়া বারী বলেছেন: বস আমার একটা ঘটনা শেয়ার করি। same জিনিস আমার সাথে ও হইছে।highcourt মোড়ে এক মহিলা জামা চাইতেছিল।আমরা রিক্সাতে ছিলাম । আমার ফুফাত ভাই রিক্সা থেকে নেমে অর গায়ের গাঞ্জি খুলে দিয়ে দেয়।পরে পুলিশ আমার ভাই খালি গায় দেখে রাস্তায় আটকায়। ভাই অনেক যামেলা সইতে হইছিল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.