![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের কাছে নিজেই অচেনা রয়ে গেছি আজো । চেনার চেষ্টা করছি । মানুষ হিসেবে কেমন তা অন্যরাই ভাল বলতে পারবে । আমার কাছে আমি আমার মতোই । আশাবাদী , স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি । সুন্দর এবং শুদ্ধ অনুভূতিময় স্বপ্ন ।
সেদিন ভুল করে টিভিতে চোখ চলে গেলো । নাটকে মা আর মেয়ের মধ্যে ঠান্ডা ঝগড়া হচ্ছে । কোন এক রহস্যময় কারণে মা ঘরের মধ্যেই কয়েক ইঞ্চি মেকাপ দিয়ে ভূত হয়ে আছেন, কপালে সন্ন্যাসীদের ত্রিশূল টাইপ বিকটকায় টিপ, পড়নে বিয়ের কনেদের একদিন পড়তে হওয়া উন্নতমানের বস্তা টাইপ জোব্বা শাড়ি এবং কমপক্ষে এক-দেড় কেজি ওজনের অলংকার । আমার মনে হয় না মানসিকভাবে কোন সুস্থ মানুষ ( বিশেষ করে মা গোত্রীয় কেউ ) বাসায় এমন ভয়ংকর সাজে থাকেন । মেয়ে আরেক কাঠি সরস । তার সাজগোজের অবস্থা আরও ভয়াবহ । হাতাকাটা ফতুয়া বা শর্ট পাঞ্জাবি জাতীয় টাইট কিছু তার পড়নে এবং আধুনিকাদের মতোই তার ওড়নাতে অ্যালার্জি আছে । যাই হোক, ও বিষয়ে কিছু বলবা না । তনয়ারা আবার আপত্তি জানাতে পারেন আমার তাদের প্রগতিশীল হওয়ার চেষ্টা নিয়ে এতো কথা বলা কেন বলে । এ জাতীয় প্রশ্ন কেউ করে বসলে ঠিক শালীনভাবে জবাব দেওয়া যাবে না বলে আমি মা, মেয়ের ঝগড়াতেই ফিরে যাই । মা চিবিয়ে চিবিয়ে বলছেন -
- নাতাশা, তুমি এ মাসে কত টাকা খরচ করেছো তার কোন হিসেব আছে?
- তোমার তা নিয়ে এতো মাথাব্যথা কেন? ক্রেডিট কার্ডের পেমেন্ট তো বাবাই করবে ( মেয়ে এক নম্বারের বেদ্দপ এবং গাধী । গাধী এজন্যে যে তার বিনয়ের সাথে বলা উচিত ছিলো, আম্মিজান খরচটা কি তোমার মেকাপ বিলের চেয়েও বেশী? )
যাই হোক, আধুনিক মা - মেয়েদের ব্যাপারে আমার ধারণা কম । তাদের সাথে নিশ্চয়ই সন্তানেরা এভাবেই কথা বলেন । কারণ মেয়ের ঐ কথা শুনে মা চুল ধরে দুইটা থাপ্পড় দেয়ার বদলে বললেন,
- নাহ, তুমি তো আমাকে পথে বসাবে দেখছি । ক্রেডিট কার্ড এখন কয়টা তোমার?
- আশ্চর্য! এটাও কি তোমার জানতে হবে? আমি কি জানতে চেয়েছি গত রাতে তুমি কেন সামাদ কাকুর সাথে বেড়িয়ে গিয়ে আর ফেরো নি?
- যা জানতে চেয়েছি তার জবাব দাও!! আমার কাছে কৈফিয়ত চাইবে না ।
- চারটা । ( খাইছে আমারে!! )
- তুমি তোমার ক্রেডিট কার্ডগুলো আজই ম্যানেজারের কাছে জমা রেখে যাবে । আমি এই ব্যাপারে আর কিছু শুনতে চাই না । দিস টপিক ইজ ক্লোজড ।
এই কথা শুনে মেয়ের মাথায় বিনা মেঘে বজ্রপাত । মিনিট দুই ড্রিম ড্রিম টাইপ মিউজিকের সাথে মিনিট খানেক ডান, বাম, ঝাক্কি মেরে, মাথার উপর থেকে সহ সম্ভাব্য আরো অনেক ভাবে দেখানো হলো ফেস এক্সপ্রেশন । যতক্ষনে ক্যামেরা থামলো ততক্ষনে আমার মাথার ভেতরে টিশটিশ ব্যথা শুরু হয়ে গেছে । পালিয়ে নিজের রুমে চলে এলাম । আর দেখার সাহস ছিলো না ।
আমার বোনকেও কিন্তু আমি মা'র সাথে ঝগড়া করতে দেখেছি । আপা প্রতি পনের দিনে একটা করে ড্রেস বানাতেন যার ডিজাইনার সে নিজে এবং কাটিং মাস্টার ও টেইলার মা । মা যতো সুন্দর করেই বানাননা কেন, আপা কোন একটা খুঁত ঠিকই বের করে মিনিট ত্রিশেক চিল্লা - ফাল্লা করতেন । প্রতিটা ঝগড়ার লাস্ট সিন একই ; আপা ক্লিয়ার ঘোষনা করছেন মা'কে দিয়ে সে আর এই জীবনে কোন ড্রেস বানাবে না, মরে গেলেও না আর মা'ও ওয়ার্নি দিচ্ছেন এরপর আবার তার কাছে ড্রেস বানানোর জন্যে কাপড় নিয়ে আসলে তা দিয়ে ঘর মোছার ন্যাঁকড়া বানানো হবে । অতঃপর একদিনের জন্যে কথা - বার্তা, মুখ দেখাদেখি বন্ধ এবং অবস্থা বেশী গুরুতর হলে খাবার দাবারও । পরের দিন কিন্তু ঠিকই দেখা যেতো আপু সেই ড্রেস পড়েই হাসিহাসি মুখে বাসা থেকে বেরোচ্ছেন আর মা বাসায় বেড়াতে আসা কারো ড্রেসের ডিজাইন খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছেন, খবর নিচ্ছেন কোথা থেকে ঐ ডিজাইনের লেইস পাওয়া যাবে কিংবা কাপড়ের গজ কত ।
আমার মা, বোন দুজনের একজনও চলতি হাওয়ার আধুনিকা নন । তাদের ঝগড়ার বিষয় কখনোই ক্রেডিট কার্ড বা মেয়ের লেট নাইট পার্টি থেকে বাসায় না ফেরা বা ছেলের বহুগামিতা টাইপ কিছু না । তাদের কথা - বার্তা, জীবন প্রনালী চিন্তা ভাবনা সবই স্বাভাবিক, সহজ - সরল এবং আমি নিশ্চিত তারা বাংলাদেশের প্রায় সব পরিবারের বাস্তব প্রতিফলন । নাটক, সিনেমার মতো গনমাধ্যম গুলো কিন্তু মানুষকে খুবই প্রভাবিত করতে পারে । কারণ মানুষ যা দেখে তাই শেখে । টুকটাক হিন্দি সিরিয়াল যা চোখে পড়েছে আমার ধারণা তার থেকেও এসব সিরিয়ালের " মান " খারাপ ( মান শব্দটার অপমানই করলাম বোধহয়!) । নকল, হাই সোসাইটি টাইপ জিনিস, উদ্ভট ড্রেস আপ, ডায়লগ, ক্যামেরা ওয়ার্ক সব মিলিয়ে বিদঘুটে যে বস্তু নির্মাতারা দর্শকদের গিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তা আমার মতো আরো অনেকের কাছেই হজমযোগ্য হওয়ার কথা না । আমরা দেখছি এবং ব্যাপারটাকে গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছি অথচ এখানে কি দেখানো হচ্ছে, না হচ্ছে তার দিকে নজর রাখা খুবই জরুরী । খুব সুক্ষ্ণ ভাবে ক্ষুদ্র একদল লোক ভীনদেশীদের অনুকরণ করে আমাদের প্রতিটা পরিবারের মধ্যে সফলভাবে বিষ ঢুকিয়ে দিয়ে চলেছে আর আমরা তা বিনা বাক্যে গিলে চলেছি । তারা যা দেখাচ্ছে তা কখনোই আমাদের সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না । কিন্তু তাদের প্রভাবে এখন ঠিকই দ্রুত বদলে যাচ্ছে আমাদের চিন্তা করার ধরণ, পোশাক - আষাক, আচরনপ্রনালী । এমনভাবে চলতে থাকলে কিন্তু পরিবার ব্যবস্থাটাই ভেঙ্গে পড়বে সামনে, প্রকাশ্যে চালু হয়ে যাবে লিভ টুগেদার, সমকামিতা, বাচ্চার বাবা কে বোঝার একমাত্র উপায় হয়ে দাড়াবে ডিএনএ টোস্ট, বাড়বে ডিভোর্স, পারকিয়া, সিঙ্গেল মাদার, বৃদ্ধাশ্রমে বয়স্ক বাবা - মায়েদের ভীড়, আত্নহত্যা সহ আরো হাজারো সামাজিক অপরাধ এবং এইডস । মৌনতাই সম্মতির লক্ষন । চুপ করে থেকে আর নিজেদের পরিবারে এসবের উপস্থিতিকে মেনে নিয়ে আমরা কিন্তু ওসবের আগমনের প্রতি সমর্থন দিচ্ছি । পরে আবার এসব নিজের ঘরের ভেতর ঘাটি গাড়লে তার জন্যে যথারীতি আল্লাহকে দোষারোপ করতে যাবেন না । কারণ আমরা পরোক্ষভাবে নিষ্ঠার সাথে তাই চেয়ে চলেছি ।
২| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৪৮
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: এবং ভালো নির্মাতার অভাবেরও ।
৩| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:০৪
হুমায়রা হারুন বলেছেন: + + + + + +
৪| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:০৫
খাটাস বলেছেন: চ্যানেল ও তো বিজনেস ভাই, এত চ্যানেলের মধ্যে বিজনেস টিকায়ে রাখতে তারা এসব প্রচার করে, তাই নির্মাতারা ও এই টাইপ নাটক বানায়। ভাল জিনিস পাবলিক এখন কম খায়। ইন্ডিয়ান আউল ফাউল জিনিস দেখে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। শঙ্কার বিষয়। পারিবারিক সচেতনতা দরকার।
৫| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:০৫
ছািব্বর বলেছেন: কুফল তো দেশ পাইতেছে
৬| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:০৭
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: বলার কিছু নাই!
৭| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:১৫
গৃহ বন্দিনী বলেছেন: এই সব আজাইরা সিরিয়াল দেখনের সময় নাই ।
৮| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:১৫
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: পুরোপুরি একমত হতে পারলাম না ভাই । আমার ধারনা ভালো সৃষ্টির কদর এখনো খুব ভালো মতোই আছে ।
@খাটাশ ( এইটা কি বিদঘুটে নামে নিক খুললেন ?? লিখতেও তো জঘন্য লাগে !)
৯| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:১৮
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: যাদের পৃথিবীটা খুব ছোট তাদের কিন্তু এসব নিয়েই সময় কাটে । যেমন বাড়ির মায়েদের @বন্দিনী
১০| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:৫০
দুরছবি বলেছেন: শুধু কী টিভ বা চ্যানেলে অনলাইন পত্রিকাতেও এমন হচ্ছে। নিচে দুটি লিংক দিচ্ছি পড়ে দেখেন এবং ছিব দেখেন। কী অবস্থা। অবশ্যও পাঠক তাই চায়।
সািহেত্যর অবস্থাো েদেখন
http://dhakajournal.com/?p=7836
http://dhakajournal.com/?p=7944
১১| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:৫০
খাটাস বলেছেন: ভাই শোনেন, ভাল জিনিস বানাইতে টাকা খরচ করার রিস্ক নিতে হয়, না চললে লস। যেখানে স্বাভাবিক লাভ হয়, সেখানে কেউ রিস্ক নিতে চায় না। হাজার হইলে ও আমরা পেটে হাতে বাঙালি।
আর জঘন্য নাম না থাকলে ভাল্ নামের মর্ম বুঝবেন না।
১২| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:০৫
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: তসলিমা নাসরিনের সাক্ষাৎকার!!!! @দূরছবি
১৩| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:৫২
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: ভারতীয় সিরিয়ালের ঝকমকে দুনিয়ার পাশে আমাদের দরিদ্র মিডিয়া , অসম প্রতিযোগীতার ফলাফল দর্শকের ভারতীয় সিরিয়ালপ্রীতি।
২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৭
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ঠিক বলেছেন ।
১৪| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ৩:০৭
অনন্ত আরেফিন বলেছেন: এইসব ও দেখানো হচ্ছে নাকি আজকাল!! তবে কেউ দেখে বলে মনে হয়না। এক একটা প্রোগ্রামে টিভি চ্যানেল্গুলো যে পরিমাণ অ্যাাড দেখায় তা দেখার চাইতে না দেখা ভালো। বাংলা চ্যানেল গুলোতে এখন কেউ খবর আর টক শো বাদে অন্য কিছু দেখে বলে মনে হয় না।
১৫| ২৮ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৭:৪৭
আতা2010 বলেছেন: Click This Link
মেয়েরা নিজেরা টাইট ফিটিং বোরকা পড়লেও সে চায় না তার স্বামী দাড়ি , টুপী ওয়ালা হুজুর হোক।
১৬| ২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৯
বিভ্রান্ত মানুষ বলেছেন: kaku
২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৮
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ? !
১৭| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:৪৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: এইসব বালছাল প্রোগ্রাম বর্জন করিতে হইবে।
১৮| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:০৯
নষ্ট ছেলে বলেছেন: এগুলো বাংলাদেশের সো কলড আধুনিক মেয়েদের সুখাদ্য!
১৯| ২৯ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৪
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: একদম ঠিক! @ছেলে
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৪৫
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: এটা ইন্ডিয়ান সিরিয়ালের প্রভাব!!!