![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের কাছে নিজেই অচেনা রয়ে গেছি আজো । চেনার চেষ্টা করছি । মানুষ হিসেবে কেমন তা অন্যরাই ভাল বলতে পারবে । আমার কাছে আমি আমার মতোই । আশাবাদী , স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি । সুন্দর এবং শুদ্ধ অনুভূতিময় স্বপ্ন ।
ঘটনার বিবরণ যা শুনলাম ব্যাপার আসলেই সঙ্গীন । পাশের এলাকার দুর্দান্ত প্রতাপশালী, প্রেমিকপুরুষ বড় ভাইয়ের মুখ চিমশা মেরে যাওয়া অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত । ঘটনা হলো, ভাইয়ের হলেও হতে পারে শ্বাশুড়ি, অর্থাৎ ভাইয়ের প্রেমিকার মা আজ তাকে ফোন দিয়েছিলেন । সাড়ে তিন মিনিটের কথোপকথনের সারমর্ম এই যে তারা আমাদের হলেও হতে পারে ভাবী, মানে ভাইয়ের "তাহার" বিয়ের জন্য আন্টি পাত্র খুঁজছেন । ব্যাপারটা এতোটুকু পর্যন্ত শোনাই যথেষ্ট মর্মন্তুদ! কিন্তু এরপরের অংশে যা বলা হলো তা আরো ভয়াবহ । আন্টি তারপর বললেন - "ওর বড় ভাই হিসেবে তোমারও তো একটা দায়িত্ব আছে । ভালো ছেলের খোঁজ - টোজ পেলে জানিও । "
অত্যন্ত হৃদয়হীন কাজ । সব জেনেও জামাই হতে বিশেষভাবে আগ্রহী ভাইকে সম্ভাব্য বউয়ের ভাই বানিয়ে দিয়ে, তাকে দিয়েই আবার নতুন জামাই খোঁজাতে ঘটকের কাজ করাতে চাওয়ার মতো কথা আন্টি কিভাবে বললেন ভেবে পেলাম না । বড় ভাই ভালো মেন্টাল শকে আছেন, একটু পরপর ডান হাতটা উপরে তুলে কি যেন বলতে গিয়েও বলছেন না । গালিই বোধহয় । তিনি যা করেছেন তা সবদিক দিয়েই অমার্জনীয় অপরাধ হলেও ছোট ভাইয়ের সামনে হলেও হতে পারে শ্বাশুড়ির চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করে গালি দেওয়া যায় না । মাঝেমাঝে করছেন বিড়বিড় । তার অবস্থা দেখে মায়াই লাগলো
। শান্ত্বনা দেওয়ার জন্যে বললাম, "নাহ্, আন্টি তো ভাই কাজটা একদমই ঠিক করেন নাই । অন্য কাউকে বলতে পারতেন আপুর জন্যে জামাই খুঁজতে । আপনারে কেন? যাউকগা, এতো মন খারাপ কইরেন না । There are plenty of other fishes in sea. ধরতে জানলেই হলো । আপনার জন্যে দরকার হলে আমার ফেসবুক একাউন্টে ছবি সহ বিজ্ঞাপন দিমু । কাউকে না কাউকে পাওয়া যাইবোই । এতো চিন্তার কিছু নাই । "
( ইংলিশ ডায়লগটা প্রিয়তম 500 Days of Summer মুভি থেকে মেরে দেওয়া )
আগের যুগের মুণী - ঋষিদের চোখ দিয়ে নাকি আগুন - টাগুন বের হওয়ার একটা ব্যাপার ছিলো । কপাল ভালো আগের যুগও এখন নাই আর আমার এলাকার ভাইও মুণী , ঋষি গোত্রীয় কেউ না । না হয় উনি আমার কথা শুনে যে দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালের তাতে আমি শিওর একেবারে পুড়ে ছাই ভস্ম হয়ে বাতাসে উড়ে যেতাম ।
....... যাই হোক, সে যাত্রায় ভাইয়ের চোখের আগুনে ছাই হয়ে উড়ে যাওয়ার থেকে বেঁচে গেলেও ভাইয়ার হাত থেকে বাঁচা গেলো না । কয়েকদিন পর হঠাৎ রাত আড়াইটার দিকে ফোন । এতো রাতে কে ফোন দিলো তা খুব আগ্রহ নিয়ে ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে রিসিভ করতে গিয়ে দেখি তিনি । মেজাজটা এমন খারাপ হইলো না!! স্বাভাবিক । আপনি খেতে বসে ভাবলেন ঢাকনার নিচে মুরগির রোস্ট, ঝাল ঝাল গরুর মাংস, পেঁয়াজ দিয়ে কই মাছ ভূনা, বিশাল সাইজের গলদা চিংড়ি আর রুই মাছের মাথা দিয়ে ঘন মুগের ডাল আছে , আর যদি ঢাকনা তুলে দেখেন আইটেম করলা ভাজি কচুর দিয়ে আইড় মাছ কেমন লাগবে? ভালো লাগার কথা না!
যাই হোক ফোন ধরলাম । কাল তিনি তার হলেও হতে পারে শ্বশুড় বাড়িতে শ্বাশুড়ির সাথে দেখা করতে যাবেন এবং আমার সাথে যাওয়া লাগবে । আজব! আমি কেন? বিয়ে করার জন্যে একেবারে উপোস দিয়ে বসে আছেন তিনি, ছোট কোন শালীও নাই ... তারপরও আমাকে নিয়ে টানাটানি করার কারণ কি? কারণটা হলো তিনি একা যেতে লজ্জা পাচ্ছেন, আমি সাথে থাকলে ভালো হয় । আমার যা মনে হলো পুরো পরিকল্পনাটা একটু আগে আপুর সাথে ফোনে আলাপ আলোচনা করে ঠিক করা এবং তিনি অন্য কাউকে সাথে যেতে বলার সাহস পাচ্ছেন না বলে শান্ত - শিষ্ট ছোট ভাই হিসেবে আমাকে বাগাচ্ছেন । গ্রাম্য সব খেলায় দুধ ভাত বলে একজন থাকে সবসময় । আসল খেলায় এর কোন ভূমিকা নেই । এর কাজ বল - টল পানিতে পড়ে গেলে ঝাপ দিয়ে তুলে নিয়ে আসা, ব্যাটিং বা বোলিং করতে চাওয়ার ধৃষ্টতা না দেখিয়ে কেবল একনিষ্ঠভাবে ফিল্ডিং করে যাওয়া । আমি হলাম এই ব্যাপারে দুধ ভাত । একবার ভেবেছিলাম না করে দেই, কিন্তু ভাইয়ের চিমশে যাওয়া চেহারাটার কথা মনে পড়ায় গজগজ করতে করতে রাজি হতেই হলো ।
গেলাম আন্টিদের বাসায় পরের দিন সকাল দশটার দিকে । আমি চলে এসেছি রাতে যে গেঞ্জি পড়ে ঘুমিয়েছিলাম সেটা গায়েই আর ভাই শেভ - টেভ সেরে নতুন জামা পড়ে একেবারে নতুন পয়সার মতো চকচক করছেন । করি নি নাস্তা । ক্ষুধায় পেটের ভেতর তখন গুড়গুড় শব্দ হচ্ছে । মনে মনে কি কি খেতে দেবে তা চিন্তা করতে করতেই আন্টি চলে আসলেন । বেশ অনেকদিন পরে দেখা । এলাকায় এমনিতেই তার অতি সু-স্বাস্থ্যের কথা সর্বজনবিদিত ও আলোচনার মুখরোচক বিষয়বস্তু, এই কদিন পর দেখে মনে হলো তিনি মাশআল্লাহ্ আরো একটু মোটা হয়েছেন । সালাম দেয়ার পর নানা রুটিন কুশল বিনিময়ের সেরেই আন্টি জিজ্ঞেস করে বসলেন ভাইয়ার হঠাৎ আসার কারণ কি? কোন ভালো পাত্রের খোঁজ পেয়েছেন কিনা?
ভাইয়া কি বলবেন কথা খুঁজে পান না । আমতা আমতা করতে শুরু করলেন । তাকিয়ে দেখলাম ক্ষনে ক্ষনে চেহারার রং বদলে যাচ্ছে । আহা রে বেচারা! তবে কপাল ভালো বলতে হবে । কারণ তখনই কাজের মেয়ে খাবারের ট্রে নিয়ে হাজির । পানি, নুডুলস, ফিরনী আর কুলি পিঠা । আন্টি বেফাঁস প্রশ্নের মিসাইল ছোড়া থামিয়ে বললেন খাও বাবারা । সবই তোমাদের বোনের বানানো । .... ভাইয়ার মধ্যে তার হলেও হতে পারে বউয়ের হাতের বানানো খাবার খাওয়ার আগ্রহ দেখা গেলো না । তিনি হামলে পড়ে পানির গ্লাসটা তুলে একনিঃশ্বাসে পুরো গ্লাস খালি করে ফেললেন । আমি মনে মনে চিন্তা করছি কোনটা খাওয়া যায় । কেন যেন কুলি পিঠাটাই পছন্দ হলো । প্লেট থেকে একটা তুলে নিয়ে কামড় বসালাম ।
কুলি পিঠা তো জীবনে বহু খাওয়া হয়েছে । কিন্তু এমন কিছু তো খাইনি । মনে হলো রবারের কোন টিউবে কামড় দিয়েছি
। মুখে দেওয়ার সময় পিঠা যেমন ছিলো কামড় দেওয়ার পরও তা একেবারে আগের মতোই অক্ষত অবস্থায় । ততক্ষনে ভাই আর আন্টি আবার কথা শুরু করেছেন । আমি তার ধানাই পানাইয়ে কান না দিয়ে আবার পিঠায় কামড় দেই । একই অবস্থা । মনে হলো স্পঞ্জ চাবাচ্ছি । সোজা বাংলায় " টাশকি " খেয়ে যেতে হলো । এই বস্তু আপু কি দিয়ে বানালেন? আর কুলি পিঠার মতো তার বানানো সব খাবারই যদি এমন হয় ভাইয়ের তো তার সাথে বিয়ে হলে একমাসের মাথায় আত্নহত্যা করতে হবে!! ..... ভাই তখনো বারবার নিজের প্রসঙ্গ আনতে গিয়েও আটকে যাচ্ছেন ..... আমি যা থাকে কপালে মনে করে আবার সেই কুলী পিঠা দাঁতে কামড়ে ধরে এবার দুই হাত ধরে দিলাম টান ।
পিঠা ছেড়ার জন্যে টানাটানি চলছে । একটু ছিঁড়ছে বলেও মনে হলো । হঠাৎ খেয়াল করলাম সবাই চুপচাপ, কোন সাড়াশব্দ নেই । কি ব্যাপার দেখতে গিয়ে দেখি দুজনই চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন
। এমন ক্রিটিকাল কূটনীতিক সময়ে পিঠার সাথে আমার যুদ্ধের মতো স্থুল একটা ব্যাপার দেখে ভাইয়া তাকিয়ে আছেন " দাড়া! আইজকা তোরে বাইরে নিয়া লই!! " টাইপ দৃষ্টিতে আর আন্টি একেবারে নিখাঁদ বিস্ময়ে । অত্যন্ত অস্বস্তিকর অবস্থা । ঝড়ের বেগে চিন্তা করতে থাকলাম কি করা যায় ,কি করা যায় .... জরুরী ফোন চলে এসেছে এমন ভাব ধরে মোবাইল কানে ঠেকিয়ে কথা বলতে শুরু করলাম ( আসলে কোন ফোনই আসে নাই ) , " হ্যালো! হ্যা বল ..কস কি? আজ কে ক্লাস? কখন?? কয়টা বাজে?? .... আচ্ছা, আচ্ছা আমি এখনই রওনা হইতেছি । বাই বাই । " ... এমন ভুজুং ভাজুং ছেড়ে দুজনের থেকে বিদায় নিয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে প্রায় দৌড় দিয়ে আমি মেইন রাস্তায় । সামনের এক মাস ভাই আর আন্টি কারো সামনে ভুলেও পড়া যাবে না ।
এবং রাস্তায় নামা মাত্রই মনে পড়লো সেদিন শুক্রবার ।
( পুনশ্চঃ ভাই আর আপু মিলে আন্টিকে কি জাদু - টোনা করেছেন জানি না, রোজার পর তাদের বিয়েটা কিভাবে কিভাবে যেন হয়ে যাচ্চ্ছে । কিন্তু সমস্যা হলো ভাইয়া এখন আমাকে রাস্তা ঘাটে দেখলে চেনেন না, বত্রিশ পাটি দাঁত বের করে হাসি দিলেও না
। কাজেই বিয়ের দাওয়াত আমি পাবো কিনা তা নিয়ে দুঃচিন্তায় আছি ।...... অবশ্য না দিলেও সমস্যা নাই । ঠিক করেছি অনুষ্ঠানের দিন ঠিকই হাসতে হাসতে খালি হাতে চলে যাবো .আমার একটা দায়িত্ব আছে না?
তাদের দুজনের জন্যে দোয়া করবেন এবং চাইলে আপনিও চলে আসতে পারেন আমার সাথে . দৌড়ানি দেবে বলে মনে হয় না )
১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০৫
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: শুকরিয়া !
২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৩০
হাসান মাহবুব বলেছেন: নয়া পেজগি লাগান! এত সহজে কাহিনী সিন পাট হৈলে হৈব?
৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪২
অ্যামাটার বলেছেন: হাহা! মজা পাইসি!
৪| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৩
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন:
৫| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৩
মনিরা সুলতানা বলেছেন:
৬| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:১৩
১৯৭১স্বাধীনতা বলেছেন: হাইসা দিলাম-----
৭| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:২২
মো: আজিজ মোর্শেদ বলেছেন: অনেকদিন পরে নির্জলা একটা রম্য গল্প পড়লাম।
ধন্যবাদ।
৮| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৫৭
অসহায় নাগরিক বলেছেন: ভালো লাগসে... খুব মজা করে গল্প টা বলেছেন
৯| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৩১
বৃতি বলেছেন: apur rannar je bornona dilen !! biyer por apnar bhaiyar hasimukh ko'din thakbe seta vabchi
rommyo valo legeche . +++
১০| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৫
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: হাল ছেড়ে দিবেন না। এইসময় সবাই অনেক উদার মনের হয়ে যায়। ঠিকই উনি আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন আর তার বিয়েতে দাওয়াতও দিবেন। আপনি শুধু হাসি চালিয়ে যান।
১১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ ...... থাক এবারের মতো সাধারণ ক্ষমা করলাম। বেচারা এমনিতেই ঝামেলায় আছে!
( ভাই, আপনার সাথে তো আমার ফেসবুকেও এড করা আছে । আমার আইডি মোঃ খালিদ রহমান । কিন্তু আপনি তো ফেসবুকে জীবনেও দেখলেন না )
@হাসান ভাই
১২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সকল @আজিজ মোর্শেদ, স্বাধীনতা, নাগরিক
আমিও চিন্তিত কি হয় ......@বৃতি
ইনশাআল্লাহ । সেই আশাতেই আছি দোয়া রাখবেন!! @কন্যা
১৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:২১
আরমিন বলেছেন: হা হা! মজার হয়েছে লেখাটা!
১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২২
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । ভালো থাকবেন ।
১৪| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২৩
আরজু পনি বলেছেন:
হাহাহাহা
মাঝে মাঝে কথার সাথে ইমোর কম্বিনেশানটা দারুণ লাগলো ।।
১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৪০
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ফেসবুকেও তো এভাবেই লিখেছিলাম :-)
১৫| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৩৫
টুম্পা মনি বলেছেন:
১৬| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন:
১৭| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১
মুদ্রা সংগ্রাহক বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৪
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: হেব্বি , হেব্বি ! কোন কথা হবে না!