![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের কাছে নিজেই অচেনা রয়ে গেছি আজো । চেনার চেষ্টা করছি । মানুষ হিসেবে কেমন তা অন্যরাই ভাল বলতে পারবে । আমার কাছে আমি আমার মতোই । আশাবাদী , স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি । সুন্দর এবং শুদ্ধ অনুভূতিময় স্বপ্ন ।
সামনাসামনি সমুদ্রের বিশালত্ব আর সৌন্দর্য দেখার সৌভাগ্য এখনও হয় নি, আমার এখনও বাল্যকালের সঙ্গী শীতলক্ষ্যাই ভরসা ।
অনেকেই কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে জাহাজের রেলিঙ ঘেঁসে পেছনে সমুদ্র কে পট বানিয়ে অনেক চমৎকার চমৎকার ছবি দেয় । আমিও লঞ্চের রেলিঙ থেকে মুখ বের করে অমন একটা ছবি তোলার জন্য চেষ্টা নিলাম । ছবিটা আমার ধারণা অবশ্যই সুন্দর হবে । তোলা শেষে এক বুক আশা নিয়ে ফটোগ্রাফার বন্ধু আহাদকে জিজ্ঞেস করলাম,
- কিরে ব্যাটা, ছবি কেমন হইছে ?
প্রশ্নের জবাব সে সাথে সাথে দেয় না । মাথা বাঁ পাশে দুলিয়ে বেশ মনোযোগের সাথে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে প্রথমে । তারপর জবাব দেয়,
- দেখে মনে হইতাছে লঞ্চের রেলিঙের ফাঁক দিয়ে একটা চশমা পড়া কুরবানির গরু নদীর দিকে গলা বাইর কইরা রাখছে ।
- অ্যা?
- হুম, ক্ষুধাও লাগছে মনে হয় । মুখটা কেমন শুকনা শুকনা ......
এমন বিটলা বন্ধু – বান্ধব থাকলে জীবনে শত্রুর কোন দরকার আছে? আপনারাই বলেন
........ একটানা একই দৃশ্য, ছবি, চেহারা দেখতে চোখ দুটো ইদানীং খুব বেশী বৈচিত্র্য খুঁজে । বহুদিন যাবত সেই একই ঘর, পড়ার টেবিল, খাটের সাথে লাগোয়া জানলায় এক চিলতে আকাশ, প্রিয় বইয়ের শেলফ, প্রিয় লেখক, ডাইরি, কলমদানি, প্রতিদিনকার সেই একই বাড়ি ফেরার রাস্তা, পরিচিত হয়ে যাওয়া রিকশাওয়ালাদের মুখ, ফেসবুকের নীল জগত, মানুষের গতানুগতিক কেমন আছো, কি করো প্রশ্ন, কাছের মানুষ, দূরের মানুষ, হলেও হতে পারতো প্রিয়মানুষদের সেই একই চেহারা দেখতে দেখতে প্রচণ্ড একঘেয়েমিতে আক্রান্ত চোখগুলো ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে দিন দিন । প্রস্তাব পেলাম স্কুল জীবনের এখন পর্যন্ত টিকে থাকা সবে ধন নীল মনি পাঁচ বন্ধু মিলে লঞ্চে ঘুরতে বের হবো । কোন নির্দিষ্ট গন্তব্য নেই । লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে প্রথম যে লঞ্চটা পাওয়া যাবে সেটাতেই চড়ে বসা হবে, এবং নামবো গিয়ে একেবারে শেষের লঞ্চ ঘাটে ।
লঞ্চে উঠার পরপরই বৃষ্টি ।
নদী জুড়ে শুরু হয়ে গেলো ব্যস্ততা তীর ফেরার । তাড়াটা ছৈ ছাড়া ট্রলার আর নৌকাগুলোরই বেশী ।
কিন্তু একটু পরেই আকাশ ভেঙ্গে যে ঝুমবৃষ্টি শুরু হল, তা আর বলার মতো না !! বৃষ্টির তোড়ে একটু সামনেই কিছু দেখা যায় না , অস্বচ্ছ এক পর্দায় ঢেকে গেলো যেন চারপাশ ।
লঞ্চটা ছিল মুন্সিগঞ্জে যাওয়ার, প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের নদীপথ । বৃষ্টি এমনিতেই অসম্ভব সুন্দর একটা বিষয়, কিন্তু নদীর মাঝখানে বৃষ্টি যে আরও কত বেশী সুন্দর দৃশ্য তৈরি করতে পারে, সে যারা দেখেছে কেবল তারাই জানে; যারা দেখে নি, তাদের বলে বুঝানো যাবে না । চারপাশে যতদূর চোখ যায় কেবল বৃষ্টির ফোটায় নদীর বুকে পানির ফিনিক । দৃষ্টি তীর খুঁজে পায় না পেছনে । জানি সমুদ্র আমার শীতলক্ষ্যার থেকে অনেক অনেক বড়, কিন্তু কতো বড় সেটা দেখারই আগ্রহ আমার .....
তবে এই সৌন্দর্যর সাথে আবার ভয়েরও ব্যাপার আছে । আমরা সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছি বলে ভাবি , বড় ঢেউ বুঝি কেবল সমুদ্রেই উঠে । ভুল ধারণা । বৃষ্টির সময় নদীতেও বিশাল লঞ্চকে পাঁচ ফুট উপরে উঠিয়ে আবার ধপাস করে ফেলে দেওয়ার মতো ঢেউ আসে !
এগুলো বাচ্চা ঢেউ । বসদের আসার সময় ছবি তোলার অবস্থা ছিল না
পাঁচ জনের মধ্যে সাঁতার জানি কেবল আমি আর মুন্না । আহাদ , রফিক, আসিফ বে-সাঁতারুদের দলে । দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হল লঞ্চ ডুবে-ফুবে গেলে আমি আর মুন্না সাথে সাথে দুই দিকে ঝাপ দিয়ে পানিতে পড়ে যাবো
। বাকি তিন জনের কেউই যেহেতু নায়িকা না, এদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করার মতো বোকামি করা যাবে না
। তবে খুব বেশী মায়া লাগলে হালকা – পাতলা বলে রফিক আর আহাদকে বাঁচানো যেতে পারে, কিন্তু খোদার খাসী টাইপ মোটা, তিন মণি ময়দার বস্তা আসিফকে বাঁচাতে যেয়ে নিজের পটল তোলার রাস্তা ধুয়ে, মুছে পরিষ্কার করার প্রশ্নই আসে না । যাই হোক, লঞ্চ ডুবে নি ।
তবে পথে বিশাল একটা সময় কানের সামনে ভটভট করে যন্ত্রণা করলো এই ভটভটির বাচ্চা
লঞ্চ থেকে মুন্সিগঞ্জ ঘাটে নামলাম । নিচে বৃষ্টিতে জনশূন্য লঞ্চ ঘাট, পাশের বেড়ি বাঁধ আর বিকেলের অদ্ভুত আকাশ ।
ছবি তোলার ফাঁকে হঠাৎ দেখি নদীর এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত আদিগন্ত বিস্তৃত বিশাল রংধনু!
আকাশের দিকে মুখ করে, অনেক সময় নিয়ে কতদিন পর রংধনু দেখলাম আজ? ছোট থাকতে আকাশে রংধনু দেখলেই এক দৌড়ে রাস্তায় চলে যেতাম আরও ভালো মতো দেখার জন্য । যান্ত্রিক নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত আমার কাছে সে সব বিকেল কতো দিন আগে হারিয়ে গেছে তার হিসেব নেই ।
মুগ্ধতা এখানেই শেষ না । একটু পর দেখতে দেখতে নদীর বুক থেকে আকাশ ছেয়ে ফেললো একটা নয়, দুই – দুইটা রংধনু !!
একটা অটো বাইক ভাড়া করে ঘুরলাম দীর্ঘ সময়, পায়ে কাদার ছাপও লাগলো অনেক দিন পর । অটো বাইকের ড্রাইভারের সাথে সবার ভালোই খাতির হয়ে যাওয়ায় নামার সময় তিনি দাঁত বের করে হাসি দিয়ে দাওয়াত করে বসলেন তার জেলায় রাতটা থেকে যেতে । বাড়ি ফেরার রাস্তা না হয় সকালেই ধরি । " সবকিছুরই " ব্যবস্থা করে দিবেন . সবকিছুরই শব্দটার উপর তার দেওয়া মাত্রাতিরিক্ত জোরটা দেখে জিব কেটে উল্টা দিকে হাঁটা ধরলাম আমরা পাঁচ ইয়াং গুড বয়
:
চলে আসার আগে একটা নতুন সংস্কার করা হয়েছে এমন একটা মন্দিরে ঢুকার পর দেওয়ালে রবীন্দ্রনাথের বলে যাওয়া এই কথা গুলো দেখলাম । নিজেকে প্রশ্ন করে , নিজের সাথেই মিলিয়ে দেখুন তো আপনিও এর মধ্যেই পড়েন কিনা ।
ব্লগে সম্ভবত নিজের ছবি দেওয়ার চল নেই । কিন্তু চল না থাকলে যে তা করা যাবে না এমন কোন ধারা যেহেতু আই সি টি আইন ২০১৩ তে নেই, সেজন্য আমার চাঁদ বদনটা দেখার সুযোগ থেকে আপনাদের বঞ্চিত করলাম না :!> :#>
হেল্ল গাইস .... এই ৪২০ ছবি দেখার পর আপনার অনুভূতি কি??
আর এই সেই বিটলা বন্ধু আহাদ । তার সাথের জন কে, সেটা তো এতক্ষণে চিনেই ফেলছেন
বিঃদ্রঃ - এদের দুজনের কেউই অন্ধ না । কিঞ্চিৎ " পাং " ধরেছেন কেবল
দুপুর থেকে ঘুরলাম রাত পর্যন্ত । তারপর ফিরলাম বাসায় । সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে ঘুরে ফিরে ঐ একটাই তো ঠিকানা আমাদের । কখনো এই ঠিকানায় ফিরি আকণ্ঠ অবসাদ নিয়ে , কখনও অদ্ভুত এক ভালো লাগায় মনকে ছাপিয়ে; এই-ই তো যা পার্থক্য আমাদের সবার প্রতিদিনের ঘরে ফেরার ।
ভালো থাকবেন সবাই । অপটু হাতের ছবি ও লিখা এতক্ষণ কষ্ট করে হজম করার জন্য ধন্যবাদ
( ছবি গুলো বন্ধু মুন্না , আহাদ আর আমার তোলা )
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:২৬
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: হে হে হে ... শিল্পগুণ নাইক্কা
২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:২৮
ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
হাহাহ ! নাইস !!
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৭
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ ইমতিয়াজ ভাই
৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৭
মামুন রশিদ বলেছেন: চমৎকার ছবিব্লগ । রঙধনুর ছবি অসাধারণ!
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৮
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: সামনা সামনি দেখতে আরও সুন্দর ছিল ভাই । নদীর একপাশ থেকে আরেক পাশ পর্যন্ত নিখুঁত এক সাত রঙ্গা বৃত্ত ! অসাধারণ বললেও কম বলা হয়ে যায় ।
৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
দারুণ মজা করে লিখেছেন এবং ছবিগুলো সুন্দর
+++++++++++++++++ রইল।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ কাণ্ডারী । ভালো থাকবেন
৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:১৩
আমিনুর রহমান বলেছেন:
৪২০ এর চেহারা ৪২০ এর মত মনে হয় না তো। আপনার বাড়ি কি নারায়ণগঞ্জ ?
পোস্টে প্লাস।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৫
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: হা হা হা .... কেমন মনে হল তাহলে বলেন দেখি
নারায়ণগঞ্জেই বাসা । স্থানীয় ।
৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১৬
এম মশিউর বলেছেন: অস্থির পোস্ট।।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৭
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।
৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯
শীলা শিপা বলেছেন: চমৎকার ছবিব্লগ ।
রঙধনুর ছবি অসাধারণ।
চাদ বদন দেখে ধন্য হয়ে গেলাম।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২০
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: এই প্রথম দেখলেন মনে হয় ? :!>
৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৯
সাবরিনা সিরাজী তিতির বলেছেন: সমুদ্র না দেখলেও হবে , অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখে ফেলেছেন !
দেখে মনে হইতাছে লঞ্চের রেলিঙের ফাঁক দিয়ে একটা চশমা পড়া কুরবানির গরু নদীর দিকে গলা বাইর কইরা রাখছে ।
বাকি তিন জনের কেউই যেহেতু নায়িকা না, এদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করার মতো বোকামি করা যাবে না :!>
মজা পেলাম লেখা পড়ে । ++++++++++++++++++++++++++++++
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২২
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: অবশ্যই অমন বোকামী করা যাবে না । নায়িকা হলে একেবারে লাফ দিয়ে পানিতে পরে উদ্ধার করে নিয়ে আসতাম । পানিতে পরতে না চাইলে দরকার হলে আগে ধাক্কা দিয়ে ফেলে নিতাম
৯| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাস্যকৌতুকে ভরপুর আপনার ছবিব্লগ খুব ভালো লাগলো। আপনার বর্ণনা খুব মজার, তা আগেও বলেছি
শুভেচ্ছা।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৩
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা ভাই । আশা করি ভালো আছেন এবং ভালো থাকবেন
১০| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৩৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: রঙধনুটা এত সুন্দর! দেখার পরপরই আপনার উচিত ছিলো আনন্দে নদীতে ঝাঁপ দেয়া।
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৬
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: সাথে জামা কাপড় বেশী থাকলে আমি সম্ভবত তাই করতাম .... ছিল না বলে করা যায় নি ।
১১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৫০
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খুব ভালো লাগলো। বৃষ্টিতে মাঝ নদীর ছবি, রঙধনু। বর্ণনা, সবই । অনেকদিন শীতলক্ষ্যায় যাওয়া হয় না!
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৮
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: আমিও বেশ কিছু দিন পরে গেলাম । আগে নিয়মিতই যাওয়া পড়তো । এখন নানা ব্যাস্ততায় আর সময় হয়ে উঠে না
১২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:০২
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: কি অসাধারণ দৃশ্য! কি সুন্দর! ইচ্ছা হচ্ছে চলে যেতে সেখানে।
অনেক অনেক ভাল লাগল। প্রত্যেকটা ছবিই।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৮
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: চলে আসুন সবাই মিলে ঘুরতে , নিশ্চয়ই ভালো লাগবে
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:২০
নওরোজ নূর সাকিব বলেছেন: অস্থির ছবিগুলার লাইগা আনলিমিটেড পিলাচ। আর লেখার শিল্পগুণ বিচার করার দায়িত্ব আমি তোমারেই দিলাম