![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের কাছে নিজেই অচেনা রয়ে গেছি আজো । চেনার চেষ্টা করছি । মানুষ হিসেবে কেমন তা অন্যরাই ভাল বলতে পারবে । আমার কাছে আমি আমার মতোই । আশাবাদী , স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি । সুন্দর এবং শুদ্ধ অনুভূতিময় স্বপ্ন ।
লিলিয়ান,
চলো দেশান্তরী হই ।
মানুষ হয়ে জন্ম আমাদের, গাছ তো নই যে এক জায়গায় শিঁকড় গেঁথে বসে কাটিয়ে দিতে হবে চিরটা কাল । চলে যাই এমন কোথাও যেখানে পত্রিকার পাতা খুললেই হায়নার মতো আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়বে না একগাদা দুঃসহ বিভৎস খবর, পড়ন্ত বিকেলের রোদ গায়ে মেখে রাস্তায় হাঁটতে বেরোলে চাপা দিতে ছুটে আসবে না দৈত্যের মতো কোন শকট, সন্ধ্যায় উড়াল সড়কের নিচে বসে গল্প করার সময় মাথার উপর তা ভেঙ্গে পড়া নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে না, কিংবা মধ্যরাতে মৃদুপায়ে বাড়ি ফেরার সময় অনিশ্চয়তায় ভুগতে হবে না আজ নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবো তো!
চলো, আমরা দুজন একসাথে পৃথিবীর মানচিত্রের সামনে দাড়াই; খুঁজে বের করি লিথুনিয়া, কেপ ভার্দ, সুরিনাম বা স্লোভাকিয়ার চেয়েও অপরিচিত কোন দেশ যেখানে কেউ কখনও যায় বলে আমরা শুনি না, যে দেশটার সম্বন্ধে তেমন কিছু আমরা জানিও না । নিজের স্বদেশ ছাড়ার সময় আমরা তার থেকে বিদায় নিয়ে যাবো, জানিয়ে যাবো এ জীবনে আর হয়তো কখনো দেখা হচ্ছে না । শুনেছি নিজের বাড়ির উঠোন পেরোলে নাকি সারা পৃথিবী ঘুরে আসা যায় । ঘরের বাইরে ঘর খুঁজতে আমরা দুজন নিজেদের উঠোন পেরোবোই ।
মার্কো পোলোর পায়ের ছাপের উপর পা ফেলে ভেনিস, সমরকন্দ, লানজহু হয়ে আমরা হেঁটে হেঁটে চলে আসতে পারি চীনের ইউনান প্রদেশে । তারপর সেখান থেকে আবার পাড়ি জমাবো অন্য কোথাও । কোথাও একটানা দীর্ঘদিন আমরা থাকবো না, একে অপরকে নিয়ে যাযাবরের মতো ছুটে বেড়াবো পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে । বহু বছর হাঁটার পর আমরা হয়তো পৌঁছবো কোন উপত্যকায় যার দিগন্তে চোখ রাখলে চোখে পড়বে তুষারে ঢাকা পাহাড়ের জ্বলজ্বলে শুভ্র মুকুট । সে উপত্যকায় ফলে থাকবে আঙুর, চেরি, আপেলের মতো অসংখ্য ফল গাছ, পাহাড়ের পাদদেশ ঢেকে রাখবে লাইলাক, ডেইজি আর শিউলির দল । পাহাড়ের ঢালে একটু সমতল জায়গা খুঁজে নিয়ে কাঠের এক কামরার ঘর বানিয়ে নেবো নিজেদের জন্যে, সামনে থাকবে প্রেইরি, যাতে চড়ে বেড়াবে আমাদের পোষা মেষ আর পেঁজা তুলোর মতো পশম দেয়া ভেঁড়ার পাল । দুটো কেশর দোলানো স্ট্যালিয়ন থাকবে আমাদের, যাদের নাম হবে বুসিফেলাস আর পেগাসাস ; আর থাকবে নেঁকড়ে তাড়ানোর জন্যে রাইফেল, কার্তুজ । আমরা দুজন প্রেইরি আর পাহাড়ি উপত্যকায় রাখাল হয়েই না হয় জীবন কাটিয়ে দিলাম ।
সারাদিনের শ্রান্তি শেষে যখন আমি বাড়ি ফিরবো, ততক্ষনে হয়তো বইতে শুরু করেছে শীতের কনকনে উত্তুরে হাওয়া । ঘরের ফায়ারপ্লেসটায় আমি যখন নতুন পাইনের কাঠ দিয়ে আগুন উসকে দিচ্ছি, তুমি এসে গায়ে জড়িয়ে দেবে পশমের চাদর । গা ঘেঁষে বসে নিজেদের হাতে ফলানো গরম ধোঁয়া উঠা যবের রুটি, ভেঁড়ার মাংস আর ভুট্টার স্যুপ খেতে খেতে আমরা দুজন গল্প করবো অনেক কিছু নিয়ে - সামনের গ্রীষ্মে কোথায় যাবো বেড়াতে, এবছর তুষার পড়বে কিনা, আপেল - আঙুরের ফলন কেমন হয়েছে, হ্রদে ঘুরে বেড়ানোর জন্যে বানাতে শুরু করা ক্যানুটার কাজ শেষ হচ্ছে কবে? কথার এক ফাঁকে উঠে গিয়ে কপালে আলতো করে আদর করে আসবে আমাদের দেবশিশুদের, কিংবা পালে নতুন জন্মানো একটু দূর্বল ভেড়ার বাচ্চাটাকে এনে শুইয়ে রাখবে ফায়ারপ্লেসের পাশে । আগুনের উত্তাপে সে একটু সবল হলে আমরা তাকে রেখে আসবো তার মায়ের কাছে । কোন রাতে যদি ঘুম না আসে, অনেককাল আগে জিপসীদের কাছ থেকে কেনা রঙচটা বেহালাটা বের করবো, তুমি আমার গায়ে হেলান দিয়ে বসবে, বেহালার করুণ তরঙ্গ ধ্বনি ধীরে ধীরে মিশে যাবে অযুত নিযুত নক্ষত্র ছাওয়া রাতের আকাশে । তন্ময় হয়ে বেহালা বাজানো শেষে দেখবো তুমি আমাকে আঁকড়ে ধরে ঘুমিয়ে আছো পরম প্রশান্তিতে ।
সমতলের জীবনে যদি হাঁফ ধরে আসে, দুজন সবকিছু পেছনে ফেলে পাড়ি জমাবো সাত সমুদ্রের কোন এক নাম না জানা দ্বীপে । বেঁচে থাকবো মাছ ধরে, আর মুক্তো তুলে । ফিনিশিয়দের মতো দুর্দান্ত জলযান চালাতে শিখে নেবো আমরা, সমুদ্রের ঢেউ পেরিয়ে ছোট্ট একটা নৌকায় করে চলে যাবো দূর-দূরান্তে । পানি হবে স্ফটিক স্বচ্ছ, আমাদের নৌকার নিচে খেলা করে বেড়াবে হাজারও নাম না জানা রঙিন মাছ । প্রবালের রাজত্বে আমরা সাঁতরে বেড়াবো সময়ের দিকে খেয়াল না রেখে, সঙ্গ দেবে ডলফিন আর শুশুকের দল । সাদা বালিতে পাশাপাশি ছাপ ফেলে সূর্যাস্তের সময়টায় সৈকতে হেঁটে বেড়াবো নিশ্চুপ নীরবতায় । টকটকে লাল নিঃসঙ্গ সূর্যটার ডুবে যাওয়া দেখতে দেখতে তুমি যদি একটু বিষন্ন হও তাহলে দুজন একসাথে রাতের ঢেউ ভাঙ্গা শব্দের সাথে সুর করে গাইবো কোন আনন্দের গান, তোমার হাতে গুঁজে দেবো গভীর সমুদ্র থেকে তুলে আনা নীলকান্তমনি । কোন ঝড়ের রাতে যদি সমুদ্রে থেকে ফিরে না আসি, বিশ্বাস রেখো আমি পরের দিন তোমার কাছে ফিরে আসবোই ।
লিলিয়ান, ভালোবাসা নিও ।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩২
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: পূরণ হোক।
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:০৩
বাকপ্রবাস বলেছেন: ভাল, সুন্দর। অনুবাদ এর মতো লাগছে
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০৭
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ ।
৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:১৮
সনেট কবি বলেছেন: বেশ।
৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:২০
বিজন রয় বলেছেন: পড়তে ভাল লেগেছে। আমিও এমনভাবে দেশান্তরী হতে পারলে সুখি হতাম।
+++
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০৭
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: তাই হোক তবে!
৫| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২০
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর পোষ্ট।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০৮
শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:০২
স্রাঞ্জি সে বলেছেন:
বিলাসী স্বপ্ন। পূরণ হোক।