![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রথম আসর
কবরের নিকট সালাত পড়া, কবরবাসীর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা এবং তার উপর প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বালানোর অবৈধতা বর্ণনা প্রসঙ্গে
কবর পূজারীদের জন্য অভিশাপ এবং কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لعنة الله على اليهود والنصارى اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد » (أخرجه البخاري ومسلم).“ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানদের উপর আল্লাহর লানত (অভিশাপ), তারা তাদের নবীদের কবরসমূহকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করেছে।”[1]
এই হাদিসটি ‘মাসাবীহ’ ( المصابيح ) গ্রন্থের বিশুদ্ধ হাদিসসমূহের অন্তর্ভুক্ত, যা উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বর্ণনা করেছেন; নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানদের উপর লা‘নত করার কারণ হল, তারা ঐসব স্থানে সালাত আদায় করত, যেখানে তাদের নবীদেরকে দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে হয়তো তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এমন যে, তাদের নবীদের কবরসমূহের উদ্দেশ্যে সিজদা করার অর্থ হচ্ছে তাদের নবীদের সম্মান করা; বস্তুত এটা হচ্ছে প্রকাশ্য শির্ক, এ জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
« اللَّهُمَّ لَا تَجْعَلْ قَبْرِي وَثَنًا يُعبد » (أخرجه مالك وأحمد).“হে আল্লাহ! তুমি আমার কবরকে মূর্তি বানিও না, যার পূজা করা হবে।”[2]
অথবা তাদের ধারণা ছিল যে, তাদের নবীদের কবরের দিকে মুখ করে সালাত আদায়ের দ্বারা তারা আল্লাহ তা‘আলা’র নিকট মহান মর্যাদা লাভ করবে; কেননা তা দু’টি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে: একদিকে আল্লাহ তা‘আলা’র ইবাদত করা এবং অপরদিকে তাদের নবীদেরকে সম্মান করা। বস্তুত তাদের এ জাতীয় ধারণাও গোপন শির্ক (شرك خفي)। আর এ জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে তাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়া থেকে বেঁচে থাকার জন্য সমাধিস্থলে সালাত আদায় করা থেকে নিষেধ করেছেন, যদিও উদ্দেশ্য দু’টি ভিন্ন।
তিনি আরও বলেছেন:
« ... أَلاَ وَإِنَّ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ كَانُوا يَتَّخِذُونَ قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ وَصَالِحِيهِمْ مَسَاجِدَ أَلاَ فَلاَ تَتَّخِذُوا الْقُبُورَ مَسَاجِدَ إِنِّى أَنْهَاكُمْ عَنْ ذَلِكَ » . (أخرجه مسلم) .“ ... সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নবী ও পুণ্যবান লোকদের কবরসমূহকে মসজিদ বানিয়েছে। সাবধান! তোমরা কবরকে মসজিদ বানিও না। আমি তোমাদের তা থেকে নিষেধ করছি।”[3]
কোন কোন বিশ্লেষক বলেন: পুণ্যবান ব্যক্তিগণের সমাধিস্থলের মত স্থানসমূহে সালাত আদায় করা এই নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত; বিশেষ করে যখন এই ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য হবে কবরবাসীকে সম্মান করা; কেননা, এর মধ্যে শির্কে খফী (شرك خفي) রয়েছে; কারণ, মূর্তি পূজার সূচনা হয়েছিল নবী নূহ আ. -এর জাতির মধ্যে, সমাধিস্থলে তাদের অবস্থান করার কারণে; যেমন আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে বলেছেন:
﴿ قَالَ نُوحٞ رَّبِّ إِنَّهُمۡ عَصَوۡنِي وَٱتَّبَعُواْ مَن لَّمۡ يَزِدۡهُ مَالُهُۥ وَوَلَدُهُۥٓ إِلَّا خَسَارٗا ٢١ وَمَكَرُواْ مَكۡرٗا كُبَّارٗا ٢٢ وَقَالُواْ لَا تَذَرُنَّ ءَالِهَتَكُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدّٗا وَلَا سُوَاعٗا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسۡرٗا ٢٣ ﴾ [نوح: ٢١، ٢٣] “নূহ্ বলেছিলেন, ‘হে আমার রব! আমার সম্প্রদায় তো আমাকে অমান্য করেছে এবং অনুসরণ করেছে এমন লোকের, যার ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তার ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করেনি; আর তারা ভয়ানক ষড়যন্ত্র করেছে এবং বলেছে, ‘তোমরা কখনো পরিত্যাগ করো না তোমাদের উপাস্যদেরকে; পরিত্যাগ করো না ওয়াদ্, সুওয়া‘আ, ইয়াগূছ, ইয়া‘ঊক ও নাসরকে।”[4]
আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রা. ও অন্যান্য পূর্ববর্তী আলেমগণ বলেন: আয়াতে উল্লেখিত ঐসব ব্যক্তিবর্গ ছিলেন নবী নূহ আ. -এর জাতির মধ্যকার সৎ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত; যখন তাঁরা মারা গেলেন, তখন জনগণ তাঁদের সমাধিস্থলে অবস্থান করতে লাগল, অতঃপর তারা তাঁদের প্রতিমূর্তি বানাল, অতঃপর তাদের এই অবস্থার উপর দিয়ে দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হল, অতঃপর তারা তাঁদের উপাসনা করা শুরু করল।[5] এটাই হল মূর্তিপূজার গোড়ার কথা; আর ইবনুল কায়্যিম র. তাঁর ইগাসাতুল লাহফান গ্রন্থে এর সমর্থনের তার শাইখের পক্ষ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন: নিশ্চয় এটিই হচ্ছে মূল ইল্লত বা কারণ, যার ফলে শরী‘য়ত প্রবর্তক কবরকে মসজিদ বা সালাত আদায়ের স্থান হিসেবে গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। ঠিক সেই কারণটিই অনেক মানুষের জীবনে বাস্তবে ঘটছে; হয় সে শির্কে আকবার বা বড় শির্কের মধ্যে লিপ্ত হচ্ছে, অথবা এর কাছাকাছি পর্যায়ের শির্কে জড়িয়ে পড়ছে; কারণ, যিনি সৎ ও আস্থাবান, এমন ব্যক্তির কবরের মাধ্যমে শির্ক করাটা গাছ অথবা পাথরের মাধ্যমে শির্ক করার চেয়ে মনের দিক থেকে অধিক কাছাকাছি। আর এ জন্যই আপনি অনেক মানুষকে কবরের নিকট অনুনয় ও বিনয় প্রকাশ করতে দেখতে পাবেন; সেখানে তারা বিনীতভাবে আন্তরিকতা সহকারে এমনভাবে ইবাদত করে, যেমন ইবাদতের কাজটি তারা আল্লাহ তা‘আলার ঘরসমূহের মধ্যেও করে না এবং রাতের শেষ প্রহরেও না। আর তারা সেখানে সালাত আদায়ের দ্বারা এমন বরকত প্রত্যাশা ও প্রার্থনা করে, যে প্রত্যাশা তারা মসজিদসমূহের মধ্যে করে না। সুতরাং এই ধ্বংসাত্মক বিষয়টির মূলোৎপাটন করার জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণভাবে সমাধিস্থলে সালাত আদায় করা থেকে নিষেধ করেছেন[6]; যদিও মুসল্লী সেখানে সালাত আদায় করা দ্বারা সে স্থান থেকে বরকত গ্রহণ করার উদ্দেশ্য না থাকে; যেমনিভাবে তিনি সূর্য উদয়ের সময়, অস্ত যাওয়ার সময় এবং স্থির মধ্য আকাশে অবস্থানের সময় সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন; কারণ, এ সময়গুলোতে মুশরিকগণ সূর্যের পূজা করে, তাই তিনি তাঁর উম্মতকে এ সময়গুলোতে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন, যদিও (সে সময়গুলোতে সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে) তাদের উদ্দেশ্য মুশরিকদের উদ্দেশ্যের মত নয়।
আর যখন কবরস্থানে সালাত আদায়ের দ্বারা ব্যক্তির উদ্দেশ্য হয় ঐ ভূমির বরকত হাসিল করা, তখন এটা হবে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের সাথে প্রকৃত শত্রুতা করা, তাঁর দীনের বিরুদ্ধাচরণ করা এবং এমন দীন তথা নতুন বিধিবিধান প্রবর্তন করা, যার অনুমতি আল্লাহ তা‘আলা দেননি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২০
যান্ত্রিক বলেছেন: copy paste from below link
Click This Link
কপি পেসট করলে লেখকের নাম দেয়া উচিত।