নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ক্যাপিটেল পালিসমেন্টের বিরুদ্ধে ।মানবতা মানুষের পরিচয় ।।জনগণের বাণীই ঈশ্বরের বাণী । প্রকৃতির সবচে বড় ভুল মানুষ সৃষ্টি । পৃথিবীতে যত অধিকারের আন্দোলন হয়েছে তাতে কিন্তু মানুষকে মানুষ বানাবার আন্দোলন ক্কখোনও হয়নি ৷• বিজ্ঞানে ঈশ্বর নেই । কিন্তু সৃষ্টি আছে •O lf there is no god , create one , সাহিত্য পত্রিকা ※ http://nkkh10.blogspot.com
এক
মেয়েটি নড়েচড়ে বসে । বইটার পৃষ্টা উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখতে লাগল । বেশ মনযোগী মনে হল । মেয়েদের ধর্য্য আর একাগ্রতা বেশি । আমি মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর শ্বাস নিয় । ততক্ষনে মেয়েটি একটু পড়েই বইটা বন্ধ করে আমাকে ফেরত দিয়ে মিয়ানো গলায় বলল , " বইটা পড়েছি । তারচে আপনিই পড়ুন । লেখক বই-এর এক জায়গায় লিখেছেন , ' মরতে না শিখলে পরিপূর্ন ভাবে মরা যায় না ।' একটু থেমে , যারা বুদ্ধিস্ট তারা মৃত্যুকে জীবনের কাছাকাছি রাখে । কি বলুন ! তাই না ?
আমি ঘাড় নেড়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললাম ," হ্যাঁ " । পুনর্জন্মের স্রষ্টা ঋষি যাজ্ঞবল্ক্য । হিন্দু মতে । আর অষ্টম শতাব্দীতে পদ্মসম্ভব বার-দো-থোস-গ্রোল রচনা করেন । তিনিও বুঝাতে চেয়েছেন ,বইটিতে , মৃত্যু আর পূনর্জন্মের মধ্যবর্তী অবস্থান । যা পাপ বা পূর্ণের ফলভোগ ।
• মেয়েটি হাসহাসতে বলল , ভাগ্যবাদ ও কর্মবাদ শোষণ ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করে ।
[] ঠিক বলেছ । ভাগ্যবাদ ও কর্মবাদ প্রতিবাদিকে প্রতিবাদ বিমুখ করে । তাদের ভাল-মন্দ , জীবন-যৌবন সব কিছুই মনে করেন তারদ্বারা প্ররিচালিত । অতএব তার সাথে সমস্ত অন্যায় হওয়াকে ভাগ্যবাদ বা কর্মবাদের ফলস্বরূপ ভাবেন ।
মেয়েটি মাথা নাড়লেন । সঙ্গে গভীর শ্বাস । আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল , আচ্ছা চলি ।
মেয়েটি সত্যি সত্যি চলে গেল । আমি ভোদাইস্টদের মত চেয়ে রইলাম । অবশ্য 'হ্যাঁ' ' না ' কিছুই বলতে পারলাম না । মেয়েটি আল্টামর্ডান । খাই খাই ভাব একটা শরীরে । চুলবুলে হাঁটচ্ছে ।চরিত্রে তেমন ম্যাচুরিটি নেই । কতক মেয়েরা আছে না ছেলে-ছোকড়া দেখলে একটা খাইখাই ভাব করেন । ঠিক তেমন । আমি যখন কলেজে পড়ি । বেশ কিছুদিন আগের কথা । আমাদের কলেজে নীলাশ্রী নামে এক মেয়ে পড়ত । আমাদের একক্লাস জুনিয়র । নামেও নীলাশ্রী । দেখতেও সুখশ্রী । চেহারাটা ছিল এ্যাংলো । বন্ধুদের মুখে শুনেছি , এ্যাংল মেয়েরা নাকি ইয়ে হয় । আমার সাথে পরিচয় হবার একমাসবাদে একটা ঘটণা ঘটল । আমি তখন প্রেম-ট্রেম ব্যপারে তেমন বুঝতাম না । নীলা সঙ্গে আমার পরিচয় , আমি ভাল ছাত্র হিসেবে । নীলা প্রচণ্ড দূর্বল ছিল আমার প্রতি । নীলাও মন্দছাত্রী , সে কথা বলছি না । সেও ছাত্রী হিসেবে ভাল ছিল । আমি প্রথম প্রথম বুঝতে পারিনা ।' ও ' আমাকে নিয়ে ভাবছে । আমি কলেজ গেটে আমার এক বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিলাম । পিছনে তাকিয়ে দেখি নীলা । চোখমুখে বেশ একটা উৎসুক ভাব ফুটে উঠেছে । আমার হাসি পেল । আমি হাসলাম । ওও হাসতে ভুল করল না । একদম কাছে এসে দাঁড়াল । মাইরী বলছি আমি বুঝতে পারনি আমি ওর প্রেমে পড়ছি ।
আমার নিরবতা ভাঙতেই । নীলা উচ্ছ্বাস নিয়ে বলল , " এই । আজ কি তোমার একটু সময় হবে ?
[] ক্যানো গো । 'গো ' বলায় জিহ্ব কাটলাম । এ এক আমার মুদ্রাদোষ ।
¤ বলো না পারবে কি না ?
[] আমি ভনিতা না করে বললাম , পারবো ।
¤ পশ্চিমপাড়ার বকুল গাছটার ওখানে এসো ।
[] সময় ?
¤ বিকেল পাঁচটায় ।
বুকের মধ্যে একটা গভীর উদ্বেগ শুরু হলো । নীজেকে ধরে রাখতে পারছি না । বারবার ঘড়ি আর চোখ চঞ্চল করে তুলছিল । আস্তে আস্তে সময় গড়িয়ে এল । বিকেল পাঁচটা ।
আমি যতটা সম্ভব শরীরটাকে মেজে-ঘষে নিয়ে পথ চলা শুরু হল । ভাবছিলাম । আবল-তাবল ভাবছিলাম । শুরু শেষ নেই । কেন ডাকল ? বকুল তলায় কেন ? কলেজেই তো বলতে পারত ? এমন কি কথা , যা কলেজে বলা যায় না । বুকুল তলায় বলা যায় । নাঃ ! ভাবতে পারছি না । আমি কি তালগোল পাকিয়ে ফেলছি ! বিশ্রী লাগছে । হু । যাকে বলে বয়েসের দোষ । এই বয়সে বহুগামী দোষ থাকে , শেষ নেই । অনন্ত মুখী । নিজেকে সামলে নিয়ে হাঁটছি । সঙ্গে ঘনঘন হাতঘড়ি দেখছি । আর কিছু সময় । তারপর বুকুলতলা । দূর থেকেই দেখলাম নীলাশ্রী'কে । দাঁড়িয়ে আছে । নীলাশ্রীকে দেখে ভিতরে আলোরণ খেলে গেল । নতূন যৌবন । নতূন গোঁফ । শরীরের যত আলোরণ সব নতুন । তাই সেই আলোরণকে চিনতে পারলাম না । আমাকে দেখে স্বভাব সুলোভে হেঁসে দিল নীলা । আমিও হাসলাম । অকৃপণ হাসি । হাসির রেশ অদৃশ্য হয়ে রয়ে গেল ।
বকুলতলা থেকে সোঁজা আমরা পার্কে গিয়ে ঢুলাম । পার্কের উত্তরকোণে গিয়ে বসলাম । পাশাপাশি । মাঝেমাঝে চোখে চোখ । সে এক নতুন চেনা জীবন । আর অপেক্ষা করতে পারলাম না । শরীর , মন , ঠোঁট ভারি হয়ে উঠেছে । কি বলব ভাবতে পারছি না । তালগোল পাকতে শুরু করেছে চিন্তা-চেতনায় । সামলে নিয়ে বললাম , -তোমায় কিন্তু বেশ লাগছে ।
নীলাশ্রী উত্তর না দিয়ে হাসল । আমার চোখের দিকে তাকাল । আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম । নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না । বোধিদীপ্ত নির্জনতা আমাদের কে আরও ঘন করে তুলল ।
আমি ছোট্ট করে বললাম ,-কিছু বলছো না যে … । কেন ডেকেছো বলো…?
নীলাশ্রীর চোখে মুখে রহস্য খেলছে । নিরাকার অজানা গভীর সে রহস্য নেতিয়ে ছড়াচ্ছে আমার বুকে । এত অপেক্ষার ধর্য্য আমাকে বাঁধন হারা করে তুলল । নীলাশ্রীর মোহ ভঙ্গটার নাম যে প্রেম ছিল । বুঝতে না পারলেও আন্দাজ করেছিলাম ।
নীলাশ্রী বিশ্রীভাবে ওর জামার ভিতর থেকে একটি কাগজ বের করে আমার দিকে তাকল ।
©somewhere in net ltd.