![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[পূর্বকথা - পারিজাত হরণের কথা...নারদ পারিজাতপুষ্প কৃষ্ণকে দিলে তিনি তা স্ত্রী রুক্মিণীকে পরিয়ে দেন... সে কথা শুনে সত্যভামার অভিমান হয়...তিনি আহার নিদ্রা ত্যাগ করেন, কৃষ্ণ এসে তার মানভঞ্জন করেন এবং পারিজাত বৃক্ষ উপহারের আঙ্গিকার করেন...শ্রীকৃষ্ণের সুরপুরী গমন করেন...শ্রীকৃষ্ণের সাথে ইন্দ্রের সাঙ্ঘাতিক যুদ্ধ শুরু হয়...মহাদেবের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ ইন্দ্রকে সম্মান দেখালে ইন্দ্র পারিজাত কৃষ্ণকে দান করেন ...কিন্তু শচীর হাসি সত্যভামাকে ক্রোধী করে...কৃষ্ণ পুনরায় ইন্দ্রের সাথে যুদ্ধ করতে চান... গড়ুরের ইন্দ্রকে সত্যভামার কাছে নিয়ে আসেন...]
সত্যভামার প্রতি ইন্দ্রের স্তবঃ
সতী সত্যভামার সামনে শিরে যোড়হাত করে প্রণাম করেন দেবরাজ ইন্দ্র। সুরপতি অষ্টাঙ্গ পৃথিবীতে লুটিয়ে স্তব করতে থাকেন। স্বর্গের অন্যান্য দেবতারাও তাকে অনুসরণ করেন।
সকলে স্তব করে বলতে থাকেন –হে দেবী, তুমি লক্ষ্মী- সরস্বতী-রতি-সতী-অরুন্ধতী-পার্বতী-সাবিত্রী সকল দেবের মাতা। তুমি অধঃ[পাতাল]-ক্ষিতি[পৃথিবী]-স্বর্গ। তুমিই চতুর্বর্গের[ধর্ম-অর্থ-কাম-মোক্ষ] দাতা। সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয় বিধাতা। অনাদি পুরুষ প্রিয়া, কে জানে তোমার ক্রিয়া। মায়ায় মনুষ্য দেহ ধারণ করলে। তুমি বিধাতার ধাতা, আমাদের সবার অন্নদাতা। আমি তোমার কি বর্ণনা দিব।
বেদপতি ব্রহ্মা যা করতে পারেন নই, পঞ্চানন শিবও পারলেন না-তাই তুমি করে দেখালে।
তুমিই আমায় সর্বস্ব দিয়েছ তাই আমার গর্ব হল, তোমার চরণ ভুললাম। এবার কৃপা কর।
তুমি দেবী বুদ্ধিরূপা, সুমতি –কুমতি প্রদায়িনী। তুমি শূণ্য-জল-স্থল, পৃথিবী পর্বতানল। তুমিই সব গৃহে জননী-রুপিনী।
তোমার পদে আমি শরণ নিলাম। আমার অপরাধ ক্ষমা কর। এ অজ্ঞানের দুর্মতি দুর কর। সম্পদে মত্ত হয়ে সব কথা না জেনে নিজের ঈশ্বরকেই চিনতে পারিনি।
এই বলে সুরপতি ইন্দ্র আমার ভূমিতে লুটিয়ে প্রলেন। তার কেশপাশ ধূলায় ধূসর। কিরীট(মুকুট), কুন্ডল হার, ছত্রদন্ড, অলঙ্কার সব ধুলোয় লুটাতে থাকে। ধূলিতে তনু লুটিয়ে প্রায় ইন্দ্রের চোখে ধূলি ঢুকে যায়, তিনি চখে আর দেখতে পান না। বারবার ক্ষমা চাইতে থাকেন।
এতসব দেখে সতী সত্যভামার মন আদ্র হল।
তিনি খগেশ্বরকে বলেন –ইন্দ্রকে উঠান।
মন্দাকিনীর জল দিয়ে চক্ষু ধুয়ে দিলে দেবরাজের চোখ নির্মল হবে। শুনে সতীর বাণী সকলে মন্দাকিনীর জলে শ্রীবাসব ইন্দ্রকে স্নান করালেন। সহস্রলোচনের চক্ষু নির্মল হল।
তিনি সবার আশীর্বাদ নিয়ে ঐরাবতে আরোহণ করে স্বর্গে গেলেন।
নারদের সাথে পারিজাত পুষ্প নিয়ে যদুরায় কৃষ্ণও দ্বারকায় চললেন।
মহাভারতের কথা শ্রবণ করলে সকল ব্যথার বিনাশ হয়, অধর্ম সব নাশ হয়।
কমলাকান্তের পুত্র কাশীরাম দাস যিনি সৎ সজ্জনের প্রিয়, তিনি এটি রচনা করেছেন।
...........................
সত্যভামার ব্রতারম্ভঃ
দ্বারকায় সত্যভামার গৃহের দ্বারে পুষ্পরাজ পারিজাত বৃক্ষ রোপণ করা হল। নানা মূল্যবান রত্নে তাকে সাজিয়ে তোলা হল। দেখে মনে হল শত শত রবি শশি যেন শোভা পাচ্ছে। পৃথিবী জুড়ে তার দীপ্তি আভা সৌরভ ছড়াতে লাগল। ঘরের সামনে চাঁদোয়া বেঁধে কৃষ্ণসহ সকলে পারিজাত তলে বিলাস করেন।
সে সময় নারদমুনি সেখানে উপস্থিত হলেন। সত্যভামাকে দেখে তিনি তার বিস্তর স্তব করতে লাগলেন।
নারদ বলেন –দেবী, আপনার সমান কেউ নেই, কোন দিন হবেও না। দেবের দুর্লভ যে পারিজাত পুষ্প তা স্বয়ং জগন্নাথ আপনার দুয়ারে স্থাপন করলেন। এখন দেবী এর যে কাজ তা আপনি করুন। অবহেলা করবেন না।
আপনাকে ব্রতপালন করতে হবে। এই ব্রত পালন করলে আপনিই গোবিন্দের প্রধান সোহাগিনী হবেন। জন্ম জন্ম গোবিন্দ আপনাকে নিয়ে বিহার করবেন। ব্রহ্মান্ড দানের ফল পায় এই ব্রতে। জগতে আপনার যশ হবে।
এ ব্রত করেছিলেন পুলোমাদৈত্যের কন্যা পৌলোমী(শচী)। তাই তিনি ইন্দ্রের সোহাগী, ইন্দ্রের ইন্দ্রাণী।
পর্বতের কন্যাও পূর্বে এই ব্রত করে শিবের অর্ধাঙ্গ পেয়ে মহেশ্বরী হলেন।
আর একজন এ ব্রত করেন, তিনি হলেন স্বাহা দেবী-অগ্নির গৃহিনী। যার ফলে তিনি অগ্নির সোহাগিনী।
সব শুনে সত্যভামা নারদ মুনির চরণ ধরে বলেন –প্রভু, আমাকেও এখনি এই ব্রত করান।
নারদ বলেন –তবে কৃষ্ণের অনুমতি নিন। যদিও শ্রীকৃষ্ণ কেবল আপনার স্বামী নন। আপনি যানেন না দেবী এ ব্রতের বিধান খুব কঠিন। বৃক্ষে বেঁধে স্বামীকে দান করতে হবে। এতে কি অন্য স্ত্রীরা মত দেবেন!
সত্যভামা বলেন –এমন কেন বলছেন, মুনিবর! আমার বিরোধিতা করে, কোন সতিনীর এত সাহস! আমি গোবিন্দকে দান করব। যা বিধি আছে সব পালন করব। কৃষ্ণকে অবশ্যই জিজ্ঞেস করব, এতে কোন সংশয় নেই।
নারদ বলেন –তবে আর বিলম্ব করে কি কাজ! শীঘ্রই চলুন ব্রত আরম্ভ করুন। এক লক্ষ ধেনু(গরু) ও লক্ষ পৌটি ধান্য চাই। দক্ষিণা হিসাবে স্বর্ণ দিতে হবে লক্ষ কোটি। ষোড়শ বিধানে বসনভূষণ দান করতে হবে, অশ্ব-রথ-গজ-বৃষ যত রত্ন যানে।
নারদের বাক্য মত সব আয়োজন করা হল। শুভদিন দেখে ব্রত আরম্ভ হল।
সতী সত্যভামা গোবিন্দকে একান্তে ডেকে সকল সমাচার দিলেন। হেসে কৃষ্ণ সতীকে সম্মতি জানান।
পৃথিবীর সকল মুনি ও ব্রাহ্মণদের আমন্ত্রণ করা হল। বিধি মত ব্রতের সজ্জা সাজান হল। নারস মুনি ব্রতের পুরোহিত হয়ে বসলেন। পারিজাত বৃক্ষে হৃষীকেশ কৃষ্ণকে বেঁধে সত্যভামা বসলেন হাতে তিল কুশ নিয়ে।
রুক্মিণী প্রমুখ ষোল সহস্র রমণী সকলে অভিমানে নিরবে কাঁদতে থাকেন।
সত্যভামা সকলকে সাক্ষী রেখে জগন্নাথকে ব্রতের কারণে দান করলেন।
“স্বস্তি” বলে নারদমুনিও হাতে হাত দিলেন।
মহাভারতের কথা অমৃত সমান, কাশীদাস কহেন সদা শুনেন পূণ্যবান।
..................................
উৎসর্গ: সকল ব্লগার বন্ধুকে
......................................
আগের পর্ব:
কথাচ্ছলে মহাভারত - ১০২ Click This Link
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৭
দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, জুন! ... আরেক পর্ব এলো
২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৫
থিওরি বলেছেন: অসাধারণ! আপনার ধৈর্যের প্রশংসা না করে পারছি না। সিরিজ চালিয়ে যান। শুভকামনা রইল।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬
দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, থিওরি! ... আশাকরি সাথে থাকবেন
৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪১
রিকি বলেছেন: চলতে থাকুক দিদি
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫
দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, রিকি!
৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৩
দীপংকর চন্দ বলেছেন: ভালো লিখেছেন আপনি বরাবরের মতো!!!
শুভকামনা থাকছে দীপান্বিতা। অনেক।
অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫
দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, দীপংকর চন্দ!
৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪০
সাদী মুহাম্মদ রফিক বলেছেন: আপনি এতদিন হল এই মহাভারত চালিয়ে যাচ্ছেন আর আজই আমার নজরে পড়ল প্রথম। দেখি পড়ে যেতে পারি কিনা ? পুরোটা শেষ হতে পারবে কত পর্বে ?
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৪
দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, সাদী মুহাম্মদ রফিক! ... পুরো শেষ করতে পারব কিনা জানি না, চেষ্টা করব... কত পর্বে শেষ হবে ঠিক বলতে পারব না, হাজার তো হবেই! ... আশাকরি সাথে থাকবেন ...
৬| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৬
রাজিহাপি বলেছেন: আমি আপনার লেখাগুলো copy and save form এ নেয়া শুরু করেছি।২০১০-২০১৫ অসম্ভব ধৈর্য্য।
শুভ কামনা আপনাকে।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১১
দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, রাজিহাপি! ... আশাকরি সাথে থাকবেন ...
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০২
জুন বলেছেন: এত কিছু দিয়ে ব্রত
![:)](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/css/images/emot-slices_03.gif)
চলুক সাথে আছি