নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিব, ছেড়ে দেব না.....

দিমিত্রি

ফ্রম রাশিয়া উইথ লাভ...

দিমিত্রি › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবি মলয় রায়চৌধুরীর প্রয়াণ

২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:১৮

কবি মলয় রায় চৌধুরী আজ সকালে মৃত্যুবরন করেছেন। তিনি এই ব্লগের ব্লগার ছিলেন। এই ব্লগেই তার কিছু লেখা পড়েছি আমি। পরে অবশ্য তিনি সব লেখা মুছে দিয়েছেন বা ড্রাফট করেছেন।



কবি মলয় রায়চৌধুরী বহুগুনের অধিকারী ছিলেন। সাহিত্যিক, অনুবাদক, সংবাদিক, প্রবন্ধকার সহ নানা রুপে তাকে দেখা গেছে। তার লেখা কবিতার উপরে গবেষনা করে দেশ-বিদেশে বহু গবেষক পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তবে তিনি সবচেয়ে পরিচিত "প্রচন্ড বৈদ্যুতিক ছুতার" কবিতার জন্য। এই কবিতা লেখার জন্য তার বিরুদ্ধে ৩৫ সপ্তাহ মামলা চলে, কবিতা লেখার কারনে তাকে হাতকরা পরিয়ে কোমড়ে দড়ি বেধে জনসম্মুখে হাটিয়ে নেয়া হয়। এবং মামলায় কারাদন্ড দেয়া হয়। কবিতা লেখার অপরাধে কারাবাস করে তার খ্যাতি দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পরে।

তিনি হাংরি আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। হাংরি আন্দোলন সম্ভবত বাংলা সাহিত্যে একমাত্র আন্দোলন। এই আন্দোলনে মলয় রায়চৌধুরীর সাথে ছিলেন সমীর রায়চৌধুরী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, দেবী রায়, বিনয় মজুমদার, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, উৎপলকুমার বসু, ফালগুনী রায়, সুভাষ ঘোষ, প্রদীপ চৌধুরী, বাসুদেব দাশগুপ্ত সহ আরো অনেকে।

হাংরি আন্দোলনের ম্যানিফেস্টো ছিলো, "মানুষ, ঈশ্বর, গণতন্ত্র ও বিজ্ঞান পরাজিত হয়ে গেছে। কবিতা এখন একমাত্র আশ্রয়। এখন কবিতা রচিত হয় অর্গ্যাজমের মতো স্বতঃস্ফূর্তিতে।"

এই আন্দোলনে শুধু কবিতার মাধ্যমেই প্রতিবাদ হয়নি, বরং কিছু এক্সট্রিম কাজও করেছেন মলয়বাবুগণ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, এমএলএ, সচিব, লেখক- সবাইকে পাঠানো হল মুখোশ। প্রতিটি মুখোশে লেখা ছিলো, "দয়া করে মুখোশটা খুলে ফেলুন।"

কবি সাহিত্যিকদের পাঠানো হল বিয়ের কার্ড। তাতে লেখা "F*ck the Bastard of Gungshalik School of Poetry"

শক্তি চট্টোপাধ্যায় লিখলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল সেনকে উদ্দেশ্য করে,
কবিতা ভাতের মতো কেন লোকে নিতেই পারছে না
যুদ্ধ বন্ধ হলে নেবে? ভিখারিও কবিতা বুঝেছে
তুমি কেন বুঝবে না হে অধ্যাপক মুখ্যমন্ত্রী সেন?


তবে এই আন্দোলনের কবিগনদের ভেতর একতা ছিলো না, তাই আন্দোলন মাঝপথে ভেঙে যায়। শক্তি চট্টোপাধ্যায় সাক্ষী দেন মলয় রায়চৌধুরীর বিপক্ষে। যার কারনে মলয় রায়চৌধুরীর কারাদন্ড হয়।

তারপরেও এই আন্দোলন ছিল প্রচলিত সাহিত্যে এক বড় ধাক্কা। শালীনতার চাদরে মোড়া উচ্চবর্গের সাহিত্যের বদলে সমাজের নিচুস্তরের মানুষের কথা, বিপ্লবী চেতনা আর আদিম চাহিদা উঠে আসে সাহিত্যে।

মলয় রায়চৌধুরীর জন্য শ্রদ্ধা।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:২২

রাজীব নুর বলেছেন: দেখুন অবস্থা তাকে আজই প্রথম চিনলাম। এটা আমারই ব্যর্থতা।
শ্রদ্ধা জানাই তাকে।

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:২৫

সোনাগাজী বলেছেন:


মৃত্যু নিয়ে লিখতে হলে, জন্মসন, মৃত্যসন, জন্মস্হান, কোথায় মৃতয়ু হলো, এসব দিতে হয়।

৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩১

সোনাগাজী বলেছেন:


উনার জন্য শ্রদ্ধা রলো; উনি কোন নিকে, কখন ব্লগে ছিলেন?

৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৪৫

কামাল১৮ বলেছেন: গুনি জনের মৃত্যুতে গভীর শোক জানাই।

৫| ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৩ ভোর ৪:০৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কবি মলয়রায় চৌধুরীর প্রতি রইল শ্রদ্ধাঞ্জলী ।
তাঁকে নিয় পোষ্ট দেয়ায় কবিকে আরো বিষধভাবে জানার প্রয়াসী হয়েছি ।
এ জন্য আপনাকে জানাই ধন্যবাদ ।

উইকিপিডিয়া অনুসরণ করে এই গুণী কবি ও তাঁর সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে কিছু কথামালা এখানে
সংযোজিত করে গেলাম । যে কেও এই মন্তব্যের যথাস্থানে দেয়া লীংক ফলো করে তাঁকে নিয়ে
আরো বিষদ তথ্য জানতে পারবেন ।

মলয় রায়চৌধুরী (২৯ অক্টোবর, ১৯৩৯ — ২৬ অক্টোবর, ২০২৩ ) একজন বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক,
অনুবাদক , সাংবাদিক, গণবুদ্ধিজীবী এবং সর্বোপরি ১৯৬০-এর দশকের হাংরি আন্দোলন—হাংরিয়ালিজম—তথা
বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার জনক[১] এবং এ কারণে ১৯৬০-এর দশক থেকেই ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর
দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। আধুনিক বাংলা কবিতার ইতিহাসে তিনি বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান উল্লেখ করেছেন, 'সাহিত্যের সনাতন অনুশাসনগুলির বিরুদ্ধে
মলয় রায়চৌধুরীর বিদ্রোহ তার রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতের অধিক। তার ১০টি কাব্যগ্রন্থ, ১০টি উপন্যাস, দুটি ডিটেকটিভ উপন্যাস,
একটি ইরটিক নভেলা, ১২টি সমালোচনা গ্রন্থ, চারটি জীবনী এবং বহু অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
তাঁর কবিতা নিয়ে পিএইচডি করেছেন হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্যানিয়েলা ক্যাপেলো, আসাম
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিষ্ণুচন্দ্র দে এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদয়শঙ্কর বর্মা ।

২০০৩ সালে অনুবাদ সাহিত্যে তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার এবং পরবর্তীকালে বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিন
পুরস্কার তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।

দীর্ঘদিন তিনি মুম্বইতে সস্ত্রীক বাস করছিলেন। ২৬ অক্টোবর ২০২৩ -এ তিনি মুম্বাই-এ শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।[

মলয় রায়চৌধুরী তৎকালীন ব্রিটিশ রাজ (বর্তমানে ভারত) বিহারের পাটনা শহরে জন্মগ্রহণ করেছেন।

মলয় রায়চৌধুরী সমগ্র জীবন ভারতের চাষি, তাঁতি, জেলে ও হস্তশিল্পীদের মাঝে কাটিয়ে প্রভূত অভিজ্ঞতা লাভ
করেন, এবং তা তার সাহিত্যকর্মে গভীর প্রভাব ফেলেছে।

১৯৬৪ সালে হাংরি বুলেটিনে প্রকাশিত প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার কবিতাটির জন্য মলয় অশ্লীলতার অভিযোগে গ্রেপ্তার
হন এবং ৩৫ মাসব্যাপী কোর্ট কেস চলে । কলকাতার নিম্ন আদালতে সাজা ঘোষণা হলেও, ১৯৬৭ সালে উচ্চ
আদালতে অভিযোগমুক্ত হন।

মলয় রায়চৌধুরীর 'প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার' কবিতাটিকে অধ্যাপক শীতল চৌধুরী বলেছেন এটি বাংলা সাহিত্যে
একটি সার্থক ও গুরুত্বপূর্ণ কবিতা।কবিতাটি ভারতের এবং ইউরোপের বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে।

তথ্যসুত্র : উইকিপিডিয়া Click This Link

প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার মুল কবিতার কিছু অংশ বিশেষ নীচে তুলে দেয়া হল
নীচে দেয়া লীংক অনুসরন করে সম্পুর্ণ কবিতাটি পাঠ করা যাবে ।

ওঃ মরে যাব মরে যাব মরে যাব
আমার চামড়ার লহমা জ্বলে যাচ্ছে অকাট্য তুরুপে
আমি কী কোর্বো কোথায় যাব ওঃ কিছুই ভাল্লাগছে না
সাহিত্য-ফাহিত্য লাথি মেরে চলে যাব শুভা
…………………………………….
আমার স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে
আমাকে মৃত্যুর দিকে যেতে দাও একা
আমাকে ধর্ষণ ও মরে যাওয়া শিখে নিতে হয়নি
…………………………….
শিল্পের জন্যে সক্কোলকে ভেঙে খান-খান করে দোব
কবিতার জন্য আত্মহত্যা ছাড়া স্বাভাবিকতা নেই
………………………………………..
………………………………………..

২০১৪ সালে এই কবিতা অবলম্বনে মৃগাঙ্কশেখর গঙ্গোপাধ্যায় এবং হ্যাশ তন্ময় একটি নির্বাক স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
তৈরি করেছেন। প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার চলচ্চিত্রটি ব্রিটেনের নো গ্লস লিডস্‌ ইণ্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল,
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল সহ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, প্যারিস, বার্সেলোনা,
জার্মানি, স্পেনসহ মোট ১২টি দেশের ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অফিসিয়াল সিলেকশন এবং স্পেনের
ম্যাডাটাক ইণ্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভেলে সবচেয়ে আশাপ্রদ ভিডিও শিল্পীর (Most Promising Video
Artist) পুরস্কার পেয়েছে।
তথ্য সুত্র : উইকিপিডিয়া Click This Link

শুভেচ্ছা রইল

৬| ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৩:০৪

মারুফ তারেক বলেছেন: বহুদিন আগে উনার কবিতা পড়েছি, আজ কবি নেই!

৭| ২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:৩৫

কল্পদ্রুম বলেছেন: ওনার লেখা 'প্রচন্ড বৈদ্যুতিক ছুতার' পড়েছিলাম। বুঝতে পারার ব্যর্থতা থেকে অথবা অন্য কোন কারণেই হোক, তাঁর লেখা আর কোন কবিতা আমার পড়া হয়নি। উনি এই কবিতা লিখে জেল খেটেছিলেন এটা জানা ছিলো না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.