![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যন্ত্র কৃষিতে এগিয়ে যাওয়া উত্তরাঞ্চলে বোরো মাড়াই-কাটাই পুরোদমে শুরু হয়েছে। এবারের সেচ মৌসুমে আবাদের ফলন খুবই ভাল। মাঠে ব্যস্ত কৃষক। গ্রীষ্মের ঝড় বাদলের পালায় ক্ষতি সামলাতে ধান তোলার শোরগোল গ্রামের প্রতিটি ঘরে। এর মধ্যেই কয়েক পশলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ক্ষতি একেবারেই হয়নি তাও নয়। তবে শিলাপাত না হওয়ায় এই ক্ষতি কৃষকের গায়ে লাগেনি। উত্তরের গ্রামের পথে পা বাড়ালে চোখে পড়বে ফসলের মাঠে কাস্তে হাতে ধানকাটা মজুরের সারি। একটা সময় উত্তরের কয়েক জেলা থেকে মজুররা মাড়াই কাটাইয়ের মৌসুমে আবাদ উদ্বৃত্ত জেলাগুলোতে জড়ো হতো। গৃহস্থ বাড়িতে কিছুটা সময় পরবাসী থেকে মৌসুমের মজুরি নিয়ে নিজ ভিটায় ফিরত। এখন আর সেই দিন নেই। দারিদ্র্য মোচনের পালা শুরু হওয়ায় প্রতিটি এলাকায় এখন প্রান্তিক কৃষক ও ক্ষুদ্র কৃষক নিজেদের যতটুকু ভিটা আছে তাতেই আবাদ করে। যন্ত্রকৃষি এই সূযোগ করে দিয়েছে। এখন উত্তরের গ্রামগুলোতে কৃষকের বাড়িতে গোয়াল ঘর খুঁজে পাওয়া যায় না। হালের বলদের বদলে পাওয়ার টিলারের চাষ শুরু হয়েছে। এতে খরচও কম ও সময়ও বেশি লাগে না। জোড়া বলদ পালার যে খরচ তা থেকে রেহাই পেয়েছে কৃষক। চুরিরও ভয় নেই। যন্ত্রকৃষিতে জমি চাষ, সেচের পানি পরিচর্যা ও শেষের বেলায় ধান কেটে আঁটি টিলারের সঙ্গে এটে ট্রলিতে করে একেবারে কৃষকের উঠানে পৌঁছান যায়। ধান মাড়াই করতে গরু দিয়ে আঁটি খুঁচিয়ে নিতে হয় না। ঢোলের আকৃতির ধান মাড়াই যন্ত্র দ্রুত সেই কাজ করে দেয়। অনেক গ্রামে রোপণ যন্ত্র দিয়ে ধান বোনা এবং হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকের ঘরের দুয়ারে সার ডিজেল পৌঁছেছে। শুকনো মৌসুমের বোরো আবাদের সময়টি এখন এমনই যে কখন এসে কখন চলে যায় তা টেরই পাওয়া যায় না। কৃষকও হাফ ছেড়ে আবাদটি স্বাচ্ছন্দে করে। এই সময়টায় বোরো আবাদের মাড়াই কাটাইয়ের সঙ্গেই কৃষকরা ভাবছে পরবর্তী ফসলের আগে আর কোন আবাদ করা যায় কি না। প্রতিটি ফসল ঘরে তোলার পর মধ্যবর্তী সময়ে বাড়তি অনেক ফসলই ফলছে। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের নানা জাতের ধান উদ্ভাবনে এখন ভরবছর কোন না কোন ধানের আবাদ হচ্ছেই। একটি থেকে আরেকটি আবাদে যাওয়ার আগে কৃষক সময় উপযোগী কোন একটি আবাদ করে নিচ্ছে। মোট কথা কোন ভাবেই আর জমি পড়ে থাকছে না। উত্তরাঞ্চলে সবজির এতটাই আবাদ হচ্ছে যে শীত গ্রীষ্ম বলে কোন কথা নেই। এভাবে খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে উদ্বৃত্ত আবাদ এলাকা বেড়ে গিয়েছে। কৃষিযন্ত্র এদের জীবন ধারা পাল্টে দিয়ে দ্রুত সময়ে সব কিছু সমাধান করে দিয়ে এত কাজের মধ্যেও এরা সময় বের করে নিতে পারছে অনাবিল সুখ ও আনন্দ। কৃষক জীবনে দুঃখের পালা দিনে দিনে শেষ হয়ে আনন্দ, বেদনা, হাসি, কান্না নিয়ে মানব জীবনের যে সত্তা তাই তারা ভাগাভাগি করে নিয়ে উপভোগ করছে। এভাবেই দ্রুততম সময়ে দূর হয়ে যাচ্ছে দারিদ্র্য। সত্যিই ভাবতে ভালো লাগছে আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে মধ্যম আয়ের দেশে।
©somewhere in net ltd.