নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরবেশ১

দরবেশ১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সফলতার কথা বিবেচনা করে র্যা বের বিলুপ্তি নয়, বরং দেশ ও জননিরাপত্তার স্বার্থে র্যা বকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন

২৬ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৭

র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যা ব) সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি প্রভাবশালী মহল এই এলিট ফোর্সের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন র্যা ব ও সরকারকে ঘায়েল করার চেষ্টা করছে। গুটিকয়েক দুষ্ট লোকের জন্য পুরো সংস্থাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। অথচ শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ অপরাধীদের কাছে র্যাসব মূর্তিমান আতঙ্ক। এই চৌকস সংস্থার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর অপরাধের মাত্রা প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ অনেকটা দূর হয়েছে। র্যা ব কাজ করে জনগণের জন্য। জনগণের নিরাপত্তার জন্যই র্যা বের সৃষ্টি। র্যা ব মাত্র ১০ বছরে স্বল্পসংখ্যক সদস্য নিয়ে ১৬ কোটি মানুষের কাছে যেভাবে পরিচিতি পেয়েছে তা এক কথায় অভাবনীয়। তাদের কাজ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। তার কতটুকু সত্য-মিথ্যা সেটি খতিয়ে দেখা বস্তুনিষ্ঠতার অংশ। কতিপয় মুখচেনা মানুষ আছেন, কিছু একটা পেলেই র্যা বকে তুলাধোনা করেন। কিন্তু তারাই আবার নিজেদের ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে পুলিশের কাছে না গিয়ে র্যা বের কাছে যেতে পছন্দ করেন। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত র্যারবের অফিস ত্যাগ করতে চান না। কাজ করতে গেলে যেমন সাফল্য থাকে, তেমনি থাকে ভুলত্রুটি, ব্যর্থতা। র্যা বকে বাহ্যিকভাবে স্বতন্ত্র বাহিনী হিসেবে দেখলেও অফিসিয়ালি র্যানব বাংলাদেশ পুলিশের অংশ এবং চেইন অব কমান্ড অনুসারে পুলিশের আইজিপির অধীনস্থ। তবে বিগত ১০ বছরে তাদের কার্যক্রম দ্বারা পুলিশ থেকে ভিন্ন এক ভাবমূর্তি র্যাবব প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। যৌক্তিকতার খাতিরে একটি ফোর্সের কাজের সার্বিক মূল্যায়ন করতে হলে সম্পূর্ণ কাজের পরিসংখ্যান নিয়ে বসতে হয় এবং তা খতিয়ে দেখতে হয়। সেখানে সাফল্য-ব্যর্থতার একটা সঠিক হার নির্ণয় করা প্রয়োজন হয়, আবার সাফল্যের বিপরীতে অভিযোগের হারটিও মিলিয়ে দেখতে হবে। নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া উচ্চকণ্ঠে র্যা ব বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরে জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তার বিরুদ্ধে যে হুমকি রয়েছে, তা কিভাবে মোকাবিলা করা যাবে বা সংকট থেকে উত্তরণের বিকল্প কোনো পথের কথা তিনি উল্লেখ করেননি। খুন, গুম ও বড় বড় অপরাধের ঘটনা বিগত সব সরকারের সময়ই ঘটেছে। একটি সম্পূর্ণ বাহিনী প্রসঙ্গে তার অস্তিত্ব নিয়ে কথা তোলার আগে সেই বাহিনীর সার্বিক কাজের মূল্যায়ন করা জরুরি। রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে শক্তভাবে ধরে রাখার জন্য সেই বাহিনীর গুরুত্ব ও ভূমিকাকে মূল্য দিতে হবে। র্যা বের অস্তিত্ব নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠেছে তখন র্যা বের সাফল্যের খতিয়ানটিও যৌক্তিকতার খাতিরে উল্লেখ করা প্রয়োজন। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মেয়াদে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ধর্মান্ধ আদর্শে উদ্বুদ্ধ শতেকের উপরে সশস্ত্র জঙ্গিবাহিনীর উত্থান আমরা দেখেছি। এই জঙ্গি সংগঠনগুলো ওই সময়ে বিএনপি-জামায়াত সরকারের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার আড়ালে বিচারালয় থেকে শুরু করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ও বিদেশি কূটনীতিকের ওপর ভয়াবহ আক্রমণ চালিয়েছে। ওই সময় এই জঙ্গিরা রাষ্ট্রের কাঠামোকে প্রায় ভেঙে ফেলেছিল। ২০০৯ সালে নতুন সরকার এলে র্যা ব মাত্র দুই বছরের মাথায় ওই সব জঙ্গিবাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে। এই জঙ্গিদের উত্থানের ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অবস্থান পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও আজকের নাইজেরিয়া থেকে কম কিছু হতো না। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই র্যা ব জঙ্গি নিধনে কাজ করে আসছে। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের এক হাজার ১০১ জনকে গ্রেপ্তার এবং ২৩২টি গ্রেনেড, ৮১টি অস্ত্র, চার হাজার ১৪৭ রাউন্ড গুলি, ৯ হাজার ১৮টি ডেটোনেটর উদ্ধার করা হয়। এ পর্যন্ত ৪১৫ জন চরমপন্থী গ্রেপ্তার হয়েছে। দুর্ধর্ষ অপরাধী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে প্রতিনিয়ত বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে। র্যা ব আতঙ্কে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী দেশছাড়া হয়েছে। আবার অনেকে কারাগার থেকে বের হচ্ছে না। এই সন্ত্রাসী জঙ্গি গ্রেপ্তার না হলে এবং উল্লিখিত অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার না হলে ঐ অস্ত্র সন্ত্রাসীরা একবার ব্যবহার করলেই হাজার হাজার নিরীহ মানুষের জীবনপ্রদীপ নিভে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। এ ছাড়া ইভ টিজিং, ইয়াবা, ফেনসিডিল, অশ্লীল ছবি, মাদক ইত্যাদি দমন ও নারী পাচার বন্ধে র্যা ব যে ভূমিকা রেখেছে, তা না হলে আমরা কেউ আজ রাস্তায় ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারতাম না। এতসব সাফল্য থাকার পর শুধু কতিপয় সদস্যের পদস্খলনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি বা কোনো পক্ষ থেকে অনবরত যদি সম্পূর্ণ বাহিনীকে নিয়ে বিতর্ক করা হয় এবং বিলুপ্তির দাবি তোলা হয়, তাহলে বাহিনীর মনোবল ও আত্মবিশ্বাসের ওপর তা প্রচণ্ড আঘাত হানে। জননিরাপত্তার জন্য তা কাম্য হতে পারে না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য র্যাকব নিজেরাও কম চেষ্টা করছে না। র্যা বের মতো একটি বাহিনীকে বিলুপ্তি করে কোনো সমাধান পাওয়া যাবে না, বরং তাতে সমস্যা আরও গুণিতক হারে বাড়বে। র্যা ব এখন বাংলাদেশের বাস্তবতা। তাই কোনো সংকীর্ণ স্বার্থে র্যামবের বিলুপ্তি নয়, বরং দেশ ও জননিরাপত্তার স্বার্থে কীভাবে র্যাোবকে আরও সময়োপযোগী ও কার্যকর করা যায় তা নিয়ে সবার ভাবা উচিত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.