![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশে অভ্যন্তরীণ সম্পদের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঞ্চয়ের পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। রূপকল্প-২০২১ এর অনেক আগেই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে টেনে নেয়ার লক্ষ্যে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর ইতোমধ্যে নতুন কয়েকটি কার্যক্রম হাতে নিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। নতুন কার্যক্রমে দেশে এই প্রথম গ্রামীণ জনগোষ্ঠী কৃষক, প্রান্তিক ও বর্গাচাষী, দিনমজুর শ্রমিক, সিনিয়র নাগরিক, অবসরপ্রাপ্ত ও বয়স্ক ব্যক্তি, প্রতিবন্ধীসহ সকল স্তরের মানুষকে সঞ্চয়ের কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। এমনকি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে সঞ্চয়ের বিশেষ ব্যবস্থা। অভ্যন্তরীণ নানা উৎস থেকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে দেশ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর হতে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। এখন গ্রামের সকল মানুষকে সঞ্চয়ের ধারায় আনতে নতুন কার্যক্রম হাতে নিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের একদার অভাবী মানুষ যে ভাবে নিজেদের দরিদ্রতাকে দূর করে এগিয়ে চলেছে সেই সব মানুষকে সঞ্চয়ের আওতায় এনে দেশ থেকে অভাব চিরতরে দূর করা সম্ভব। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় একটা সময় আশ্বিন কার্তিক মাস আসত অভিশাপ হয়ে। তীব্র অভাবের বর্ণনা ও চিত্র থাকত পত্রিকার পাতায়। ওই অবস্থার নাম ছিল মঙ্গা। আজ আর কোথাও মঙ্গার চিহ্ন নেই। আবার কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না সার ও ডিজেলের জন্য লাইনের ছবি। উল্টো ফসলের উপকরণ কৃষকের দুয়ারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ভর বছর ফলনের নানা জাতের ধানের উদ্ভাবনে কৃষক এখন নিজেদের ইচ্ছামতো ধান ফলায়। ভর বছর নানা ধরনের শাক-সবজি ও হাইব্রিড আবাদ কার্যক্রম শুরু হওয়ায় কৃষকের এক মুহূর্ত ফুরসত নেই। মাল্টি কাল্টিভেশনের আওতায় গৃহস্থ, কৃষক, মজুর সকলেই খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি ফসলের অর্থ সঞ্চয়ে রাখার চেষ্টা করছে। এভাবে কৃষি খাতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বেড়েছে। এখন আর হালের গরু ও গোয়ালঘর চোখে পড়ে না। জমি চাষ থেকে শুরু করে রোপণ পরিচর্যা ও ফসল কেটে ঘরে তুলে মাড়াই ও ধান ভানা পর্যন্ত সবই এখন যন্ত্রে। গ্রামপর্যায়ে পাকা সড়ক হওয়ায় যন্ত্রচালিত যান মানুষকে ঘরের দুয়ারে পৌঁছে দেয়। জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর এসব বিষয়ে দৃষ্টি দিয়ে শ্রম বিকাশ ও শিশু বিকাশ সঞ্চয়পত্র ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সঞ্চয়ের ধারাকে আরও গতিশীল করলে জাতীয় বাজেটে অভ্যন্তরীণ খাতের আয় বাড়ানো সম্ভব। অভ্যন্তরীণ সম্পদের কোন বিকল্প নেই। যে দেশে সঞ্চয় যতবেশি সেই দেশে কর্মসংস্থান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ততবেশি এবং মুদ্রাস্ফীতির হার কম। মাঠপর্যায়ের অবকাঠামো চিত্র বলে দেয় দেশ মধ্যম আয়ের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রামে এখন বাঁশ, বেড়া, খড় বা ছনে ছাওয়া কুঁড়েঘরের সংখ্যা খুবই কম। টিনের বাড়ি, টিনশেড বিল্ডিং ও ইমারত গড়ে উঠছে দ্রুত। প্রায় প্রতিঘরে কেবল সংযোগসহ রঙিন টেলিভিশন। তথ্যপ্রযুক্তি পৌঁছে গেছে মাঠপর্যায়ে। প্রত্যন্ত গ্রামেও মেলে ইন্টারনেট। সরকারের রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের আগেই যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে তা গ্রামের এই পরিবেশ দেখলেই বোঝা যায়।
©somewhere in net ltd.