নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"বেঁচে থাকার আদব\"

ডা: মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম

আমি একজন সাধারণ মুসলমান। ভালবাসি ইসলামী জীবনযাপন। আমার জীবনের লক্ষ্য মাওলা আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি অর্জন করেই এই রংতামাশার ভুবন, মুসাফিরখানা ছেড়ে আমাদের আসল বাড়ি কবর, হাশর, পুলছেরাত হয়ে জান্নাতের পথে পাড়ি দেয়া। দীর্ঘ পথ। কিন্তু পথের রসদ কম। অবশ্য কম হলেও দামী। এর নাম নবীজী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত। আমি চাই আমার জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে আমার পরিবার, বন্ধুমহল, পাড়া-প্রতিবেশি, সমাজ, রাষ্ট্র, অতঃপর দেশ থেকে দেশান্তরে, যুগ থেকে যুগান্তরে, কাল থেকে কালান্তরে, কিয়ামত পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে। কারণ ইসলাম পেয়ে আমি খুশি। আমার মনে আনন্দ। আমার স্ত্রীর মনে, আমার বাচ্চার মনেও আনন্দ। আমার সুখ, আমার আনন্দ আমি সকল মানুষের সাথে শেয়ার করতে চাই। মানুষ কেন কষ্টে থাকবে? মানুষকে কষ্ট দেয়ার জন্যতো রব্বুল য়ালামীন মানুষ সৃষ্টি করেন নাই। তুমি আল্লাহর হুকুম মান, নবীজী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পথে চল তাহলে শান্তি পাবে, সম্মান পাবে, সব পাবে। আর যদি না মান তাহলে আমি তোমাদের জন্য এক মহাশাস্তির আশংকা করতেছি। সিম্পল এ কথাটাই আমি মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাই। যাহোক আমি আমার জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্যকে খুঁজে পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ। তবে সত্যি বলতে কি আমি কোন বুদ্ধিজীবীর কাছ থেকে, আমার স্কুল কলেজ মেডিকেল কলেজের কোন শিক্ষক অথবা বন্ধু, শার্ট পেণ্ট পরা আধা ইংরেজ আধা বাংলা কোন লোকের কাছ থেকে আমি আমার জীবনের ভালো কিছুই শিখিনি। যাকিছু আমার জীবনে কল্যাণকর ও সুন্দর আমি পেয়েছি, অন্তরের প্রশংসা মানুষের কাছ থেকে যতটুকু পেয়েছি সবকিছু আমি মসজিদ থেকে, দ্বীনী প্রতিষ্ঠান থেকে, হুজুরদের থেকে, নায়েবে রসূল আলেম ওলামা ও চার আনার মোল্লাদের কাছ থেকে শিখেছি। জাহান্নামের পথ থেকে তারা আমাকে জান্নাতের পথ চিনিয়েছে। আলেমতো হতে পারবনা। কিন্তু সারাজীবন আল্লাহ, আল্লাহর রসূল ও নায়েবে রসূলদের গোলাম হয়ে থাকতে চাই। আর এর বরকতে যদি রব্বুল য়ালামীন কুরআন শরীফের নূরওয়ালা একটু জ্ঞান আমাকে দান করেন তবে আর কিছুই চাইনা।

ডা: মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্ণে বর্ণে জ্ঞান শিক্ষা

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৯

(১) বেশ অনেক বছর আগের কথা। আমরা একটা ছোট কুঁড়েঘড়ের মত একতলা বাসায় থাকতাম। ও বাসায় আরো দুটি পরিবার থাকত। ওরকম বাড়ীতে দু-চারটি শিশু সবসময়ই পাওয়া যায়। চার-পাঁচ বৎসর বয়স্ক এক শিশু ছিল তার মাকে দেখতাম তাকে পড়াতে। আমার মনে হত পড়ানোর ব্যাপারে শিশুটির ওপর অধিক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। শিশুটির ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার আওয়াজ কানে আসত। আমি লক্ষ্য করতাম কি এমন পড়ত যে বাচ্চার এমন জানবাজি রেখে রাত জেগে পড়াতে হবে! আসলে পড়া তেমন কিছুই না। আমাদের সবারই পরিচিত পড়া। তবে সে পরিচিত পড়াগুলোই আমাকে একটা বিষয়ে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করল।



বাচ্চাটি পড়তঃ



অ-তে অজগরঃ ঐ অজগর আসছে তেড়ে।



আ-তে আমঃ আমটি আমি খাব পেড়ে।



ই-তে ইঁদুরছানাঃ ইঁদুরছানা ভয়ে মরে।



ঈ-তে ঈগলঃ ঈগল কেমন ছোঁ মারে।



(২) বাচ্চাদের দৈহিক ইনজুরী প্রতিরোধ এবং শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের ওপর একটি গবেষণা সংস্থায় কিছুদিন প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালন করেছিলাম। তখন মানুষের পরিণত বয়সে তার শিশুবেলার শিক্ষা-দীক্ষার প্রতিফলন বিষয়ে কিছু বাস্তবধর্মী জ্ঞান অর্জন করি। একজন পরিণত ব্যক্তির মানবিকতা, তার সেন্সিটিভিটি গড়ে ওঠে তার শিশুবেলার পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশ ও তার সে-সময়কার শিক্ষা-দীক্ষার ওপর। আপনি যদি কোন শিশুকে সততা শিক্ষা দিতে পারেন তবে সে বড় হয়ে কখনো অসততামূলক কাজ করবে না। তাকে যদি দুঃখী মানুষের প্রতি সহমর্মিতা শিক্ষা দিতে পারেন তবে সে পরবর্তী জীবনে দুঃখী মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হবে।



একজন শিশু হচ্ছে কাদামাটির মত। আপনি তাকে যেভাবে গড়ে তুলবেন সে সেরূপ হবে।



ইসলাম ধর্ম মানুষের এ বৈশিষ্ট্যকে স্বীকৃতি দিয়ে এভাবেঃ



"ইসলাম মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম। প্রত্যেক মানুষ মুসলমান হয়ে জন্মলাভ করে। অভিভাবক, সমাজব্যবস্থা ও পরিবেশ তাকে অমুসলমান বানায়।"

(বিস্তারিত দেখুনঃ

জানাযা অধ্যায় ::

সহিহ বুখারী :: খন্ড ২ :: অধ্যায় ২৩ :: হাদিস ৪৪১

রিয়াযুস স্বা-লিহীন :: হাদিস ১৩৯৩)



অর্থাৎ একজন শিশুর বড়বেলার বৈশিষ্ট্য নির্ভর করে তার ছোটবেলার শিক্ষার ওপর। মানুষ স্বভাবতঃই বড়দের অনুসরণ করে। এজন্য ভুল শিক্ষা দেয়ার অভিযোগে বড়দের পাকড়াও করা হবে বলে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে বড়দের সতর্ক করেছেন।



যদি মা বাবার ভুল শিক্ষা দেয়ার কারণে সন্তান দ্বীনের ওপর না চলে গোমরাহীতে পতিত হয় তাদের বিষয়ে কুরআনের বক্তব্যঃ



وَقَالُواْ رَبَّنَآ إِنَّآ أَطَعۡنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَآءَنَا فَأَضَلُّونَا ٱلسَّبِيلَا۠

رَبَّنَآ ءَاتِهِمۡ ضِعۡفَيۡنِ مِنَ ٱلۡعَذَابِ وَٱلۡعَنۡهُمۡ لَعۡنٗا كَبِيرٗا



"সেদিন তারা বলবে, হে আমাদের রব, দুনিয়ার জীবনেতো আমরা আমাদের নেতা ও গুরুজনদের কথামতোই চলেছিলাম, তারাইতো তোমার পথ থেকে আমাদের গোমরাহ করেছে। হে আমাদের রব, আজ তাদের শাস্তিকে তুমি দ্বিগুণ করে দাও এবং তাদের প্রতি বড় ধরনের অভিশাপ দাও।" (সূরা আল আহযাব, আয়াতঃ ৬৭-৬৮)



(৩) গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে শিশুদের ঐ অজগর আসছে তেড়ে বা আমটি আমি খাব পেড়ে শেখানোর কোন গ্রহণযোগ্য কারণ খুঁজে পেলাম না। অজগর তেড়ে আসছে অথবা ইঁদুরছানা ভয়ে মরছে এ শিক্ষা সম্পূর্ণ বাস্তবতা বিবর্জিত। আজ পর্যন্ত কোনদিন কোন অজগরকে তেড়ে আসতে দেখলাম না বা ইঁদুরছানা ভয়ে মরে কিনা জানতে পারলাম না। আম পেড়ে খাওয়ার কথা বাদই দিলাম। ফরমালিনমুক্ত আম কিনে খেতে পারলেই যথেষ্ট, আলহামদুলিল্লাহ।



অথবা ধরুন হাট্টিমা টিম টিম, তারা মাঠে পাড়ে ডিম, তাদের খাড়া দুটো শিঙ, তারা হাট্টিমা টিম টিম। আচ্ছা এ ছড়াটা কতখানি বাস্তবতা বিবর্জিত চিন্তা করুন একবার। খাড়া শিঙওয়ালা কোন জন্তু কি কখনো ডিম পাড়ে!



এবার আপনি আগডুম বাগডুম ছড়াটা বাস্তবতার নিরিখে পর্যালোচনা করুন। একটা কমলাফুলির এতটুকু টিয়ের সাথে কি এতবড় সূর্য্যিমামার বিয়ে হওয়া সম্ভব!!



বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কর্মকান্ড, তৎপরতা ও নৈতিক বোধ যদি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করি এবং এর সাথে তাদের শিশু বয়সের এসব অর্থহীন লেখাপড়ার সম্পর্ক খুঁজি তাহলে একজন সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন মানুষের পক্ষেও উপলব্ধি করা কঠিন হবে না বলে মনে করি। এসব লেখাপড়া আমাদেরকে একটা নৈতিক চেতনা শূন্য, ভোগবাদী, আরামপ্রিয় ও স্বার্থপর শিক্ষিতগোষ্ঠী উপহার দিয়েছে মাত্র। কোন আগ্রহী সমাজবিজ্ঞানী বা পরিসংখ্যানবিদ এ বিষয়ে গবেষণা করলে নিশ্চয়ই অনেক চিত্তাকর্ষক বিষয় উন্মোচিত হবে ইনশাআল্লাহ।



(৪) অতঃপর আমি লিখলামঃ



অ-তে অযুঃ অযু করে নামায পড়।



আ-তে আল্লাহঃ আল্লাহর হুকুম মেনে চল।



ই-তে ইসলামঃ ইসলাম কবুল কর।



ঈ-তে ঈমানঃ ঈমানের মেহনত কর।



উ-তে উপদেশঃ কুরআনের উপদেশ গ্রহণ কর।



ঊ-ঊষাঃ বিছানা ছাড় ঊষার আগে।



ঋ-তে ঋণঃ ঋণ থাকলে পরিশোধ কর।



এ-তে এহরামঃ এহরাম বেঁধে হজ্জ্বে চল।



ঐ-তে ঐঃ ঐ দেখ কাবা ঘর।



ও-তে ওজনঃ ওজন কর সঠিক ভাবে।



ঔ-তে ঔষধঃ ঔষধ খাও আল্লাহর নামে।




পুরো বর্ণমালার পিডিএফ লিঙ্ক

দিয়ে দিলাম। আগ্রহীরা ডাউনলোড করে লেমিনেটিং করে নিজের সন্তানের জন্য, ভাই-ভাতিজার জন্য, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের বাচ্চার জন্য ব্যবহার করবেন। ফী-সাবিলিল্লাহ। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য। আল্লাহ রব্বুল য়ালামীন সদকায়ে জারীয়া হিসেবে কবুল করুন। আমীন।



(৫) যে শিশু শিখবে ই-তে ইঁদুরঃ ইঁদুরছানা ভয়ে মরে অথবা যে শিশু শিখবে ই-তে ইক্ষুঃ ইক্ষুরস অতি মিষ্ট;

অন্যদিকে যে শিশু শিখবে ই-তে ইসলামঃ ইসলাম কবুল কর - এতদুভয়ের আউটকাম বা পরিণতি কি সমান হবে?



যে শিশু শিখল হাট্টিমা টিম টিম, তারা মাঠে পাড়ে ডিম; অন্যদিকে যে শিশু শিখল ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ

"সকল প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার জন্য" - তাদের উভয়ের মধ্যে কার মানসিক বিকাশ ভাল হবে? যে অর্থহীন মূর্খামী শিখল তার নাকি যে জগতসমূহের কথা এবং তার প্রতিপালকের কথা শিখল তার?



হয়ত আধুনিক শিক্ষার ধ্বজাধারীরা আমার এ কথাগুলোতে কোনদিনই কর্ণপাত করবে না বা বুঝতে চাইবে না, পাছে তাদের সন্তানদের দুনিয়াবী স্বার্থ সঙ্কুচিত হয়ে পরে এই ভয়ে। ইউনিসেফও এসব শিক্ষা বাচ্চাদের শেখানোর জন্য কোনদিনই অর্থায়ন করবে না। কারণ এতে করে তারা তাদের অনুগত বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী দাস তৈরী করতে পারবে না। আমার মেহনত শুধু তাদেরই উপকারে দেবে যারা আল্লাহ তায়ালাকে না দেখেও ভয় করে এবং আখিরাতের প্রতি দৃঢ় ঈমান রাখে।



[বিঃদ্রঃ এ লেখার সাথে আমার যেসব বন্ধুরা একমত নন তাদের প্রতি আমার কোন প্রত্যাশা নেই। সবাই একমত হবেন না এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু যারা আমার এ লেখাটিকে পছন্দ করছেন তাদের প্রতি অনুরোধ তারা যেন লেখাটিকে বেশী বেশী শেয়ার করেন। নিজের সন্তানের জন্য, ভাই-ভাতিজার জন্য, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের বাচ্চার জন্য ব্যবহার করবেন। ফী-সাবিলিল্লাহ। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য। আল্লাহ রব্বুল য়ালামীন সদকায়ে জারীয়া হিসেবে কবুল করুন। আমীন।]





পড়ুনঃ



বর্ণে বর্ণে জ্ঞান শিক্ষা - পিডিএফ



বর্ণে বর্ণে জ্ঞান শিক্ষা - পিডিএফ



বর্ণে বর্ণে জ্ঞান শিক্ষা - পিডিএফ



আরেকটি লিঙ্কঃ



আমার পরিচয়



আমার পরিচয়



আমার পরিচয়

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১২

আলম দীপ্র বলেছেন: চমৎকার পোস্ট !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.