![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৪ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের একটা জাতীয় দিবস। জানেন কি?
না স্মরণে থাকলে আবার চোখ বুলিয়ে নিন। ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের পিছনের কারণটা মনে হয় মনে পড়ছে এবার?
ঐযে নিশ্চিত পরাজয় জেনে লম্পটদের দোসর, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে যারা ৯ মাস দিনাতিপাত করেছে, ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়ে নিজেদের গোপনাঙ্গে শান দিয়েছে, সেই অসভ্য বর্বর পাকিস্তানি সেনারা এদেশকে মেধাশুন্য করার শেষ প্রয়াসে দেশের প্রখ্যাত শিক্ষক, গীতিকার, শি্ল্পী.... প্রভৃতি গুণী মানুষগুলোরে হত্যা করার নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। দেশের এক বিরাট ক্ষতি করতে তারা অনেকটাই সক্ষম হয়েছিল। ব্রিটিশ কালপ্রিটদের কাছ থেকে এইসব লম্পট বাহিনী আর যাই হোক এসব কুটিল বুদ্ধি বেশ আরোপ করতে শিখেছিল। একটা পরাধীন দেশের উপর ৯ মাস ব্যাপী যুদ্ধ, লাম্পাট্য, লুটতরাজ চালিয়ে এরপর স্বাধীন করার মানসে যারা অন্যতম ভুমিকা রেখেছিল তাদেরকে হত্যা করে দেশকে আরো ২০-৩০ বছর পিছিয়ে দিতে তারা বেশ ভাল রকমের নীল নকশা পেতেছিল। সফলও হয়েছিল বলা যায়।
মেরুদন্ডী প্রাণীদের জন্য মেরুদন্ডের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। মেরুদন্ড এই সকল প্রাণীদেরকে সোজা হয়ে চলতে সাহায্য করে। আলাদা বল পায় এসকল প্রাণীগুলো। এদের পেশীশক্তির অনেকাংশ এই মেরুদন্ডের কারণে প্রায়োগিক। সাপে নেউলে লড়াই হলে নেউলের প্রধান টার্গেট হয় সাপের কোমরের উপর দিয়ে লাফ দিয়ে সাপের কোমর ভেঙ্গে দিয়ে তার চলার শক্তিকে শুণ্যের কোঠায় নিয়ে আসা। তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর অভিপ্রায় ছিল তেমনি। এদেশের প্রধানতম শিক্ষিত মানুষগুলোরে হত্যা করে জাতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে। আজ প্রায় ৪৪ বছর পরেও কথিত বা তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বা বিপক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধানেরা চুপিসারে এই কাজটা করে চলেছে।
এবছরের জে এস সির পরীক্ষায় আমার ছোট ভাই আর এক ভাগ্নী অংশ নিচ্ছে। পরীক্ষা শেষে ফোন দিয়ে জানতে চাই কেমন হল? ওপাশ থেকে উত্তর আসে
>ভালো হয়েছে।
< কেমন ভালো?
> অনেক ভালো। স্যারেরা গার্ড দেবার সময় ৪০ নম্বরের অবজেক্টিভ বা গ্রামার সাইড বা অংকের সমাধান বলে দিয়েছে।
< কেন?
>জানিনে।
পাশ থেকে আম্মা বলে উঠলেন, হাসিনার সরকার চায় ১০০ ভাগ পাস, সেজন্য নাকি স্যারেরা এসব করছে।
পরীক্ষা শুরু হবার পর থেকে শুনছি, বরাবরের মত প্রশ্ন ফাস হচ্ছে। আমার ছেটাভাই ভাগ্নী পরীক্ষার্থী হওয়া সত্বেও আমি কোনদিন এসব প্রশ্ন খুজিনাই। আমি এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর ছোটবেলা থেকেই বীতশ্রদ্ধ। তারপরও গরীব অথবা মধ্যবিত্তের জন্য প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে যাওয়া সম্ভব নয় বলে এখনও পড়ে রয়েছি এই ব্যবস্থার উপর। ইচ্ছা ছিল ওরা যেটুকু শিখেছে সেটুকু লিখেই পাশ করুক। কারণ আমি সার্টিফিকেটের পিছনে নিজে দৌড়াইনি আর চাইনা আমার অনুজও সেই সার্টিফিকেটের পিছনে দৌড়াক।যেহেতু কোচিংয়ের সাথে জড়িত সেহেতু খুব খেয়াল করি এসব জে এস সি বা পি এস সির পরীক্ষার্থীর অভিভাবকদের কি প্রাণান্ত চেষ্টা সন্তান এ প্লাস পাবে বলে। তাতে সেই সন্তানের সেই যোগ্যতা থাকুক আর নাই থাকুক। দিন নেই রাত নেই পড়া আর পড়া। আর পরীক্ষার রাতে তো ফোন আর পিসির সামনে বসে থাকে, প্রশ্ন ফাসের সংবাদ পেলেই হয়। ব্যস উত্তর মুখস্থ করিয়ে হলে পাঠিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত। নিশ্চিন্ত ঠিক নয় কারণ বের হবার পর সন্তান ঠিকঠাক লিখেছে কিনা সেটাও বড় চিন্তার।
একটা পরিসংখ্যান দিব আপনাদের। তাতে একটা বিষয়ের উপর কিছুটা হলেও কাছাকাছি ধারণা জন্মাবে আপনাদের...
কাজের বাজারের চাহিদার সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থা সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিবছরই উচ্চশিক্ষা নিয়ে শ্রমবাজারে আসা শিক্ষার্থীদের প্রায় অর্ধেক বেকার থাকছেন অথবা যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছেন না।
বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্ট-এর ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতকই বেকার। দক্ষিণ এশিয়ায় এর চেয়ে বেশি উচ্চশিক্ষিত বেকার আছেন কেবল আফগানিস্তানে, ৬৫ শতাংশ। এর বাইরে ভারতে এর হার ৩৩ শতাংশ, নেপালে ২০ শতাংশের বেশি, পাকিস্তানে ২৮ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ ২০১০ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে শ্রমশক্তির পরিমাণ পাঁচ কোটি ৬৭ লাখ। এর মধ্যে পাঁচ কোটি ৪১ লাখ মানুষের কাজ আছে। এর অর্থ মাত্র ২৬ লাখ মানুষ বেকার। তবে জরিপেই বলা আছে, পরিবারের মধ্যে কাজ করে কিন্তু কোনো মজুরি পান না, এমন মানুষের সংখ্যা এক কোটি ১১ লাখ। এ ছাড়া আছে আরও এক কোটি ছয় লাখ দিনমজুর, যাঁদের কাজের কোনো নিশ্চয়তা নেই।
বিশ্বব্যাংক মনে করে, সরকার কম দেখালেও প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে বেকারত্বের হার ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। এর ওপর এখন প্রতিবছর নতুন করে ১৩ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে যোগ হচ্ছেন। সুতরাং নতুন কর্মসংস্থান তৈরির চাপ রয়েছে অর্থনীতির ওপর। সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের হার ২ শতাংশ বাড়ানো গেলে প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশে উন্নীত হবে। আর তাহলেই ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ হওয়া সম্ভব।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (আইএলও) তথ্যমতে, বর্তমানে বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। বেকারত্বের এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০১৫ সালে মোট বেকারের সংখ্যা ছয় কোটিতে দাঁড়াবে। সংস্থাটির মতে, বেকারত্ব বাড়ছে এমন ২০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান ১২তম।
এ ছাড়া জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্যমতে, দেশে বেকার যুবকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯০ থেকে ৯৫ সালে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী বেকার যুবকের সংখ্যা ছিল ২৯ লাখ। কিন্তু ২০০৫ থেকে ১০ সালের মধ্যে তা প্রায় পাঁচ গুণ বেড়ে দাঁড়ায় এক কোটি ৩২ লাখে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২০১২ সালের এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২২ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। কিন্তু কাজ পায় মাত্র সাত লাখ। এর মধ্যে উচ্চশিক্ষিত অর্থাৎ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে যাঁরা শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন, তাঁরাও আছেন। সামগ্রিকভাবে পরিসংখ্যানগুলো বলছে, এঁদের মধ্যে কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে কিছু করার চেষ্টা করেন। আবার অনেকে নিজের যোগ্যতার চেয়ে কম মানের কাজ করতে বাধ্য হন।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক, অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত মনে করেন, প্রতিবছরই শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। তাই শিক্ষার ভিত্তিতে অর্থনৈতিক নীতি এবং অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির আলোকে শিক্ষাব্যবস্থার সমন্বয় না করলে এ সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তেই থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ২০১২ সালের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তরসহ উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেছেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ। তাঁদের মধ্যে ৯২ হাজার ৭৪৭ জন স্নাতক পাস, এক লাখ ২৮ হাজার ৪৮১ জন স্নাতক সম্মান এবং ২১ হাজার ৩৮০ জন কারিগরি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া এক লাখ ১৯ হাজার ৮৯৪ জন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি, দুই হাজার ৩৮৫ জন স্নাতকোত্তর (কারিগরি) এবং এক হাজার ৭৬৩ জন এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। অন্যদিকে বিভিন্ন বিষয়ে ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট অর্জন করেন দুই হাজার ৩৩৫ জন।
তবে কারিগরি ও বিশেষায়িত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের চাকরির বাজারে ভালো চাহিদা আছে। আবার অনেক স্নাতকের যোগ্যতা ও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। খোদ ইউজিসির ২০১২ সালের প্রতিবেদনেই এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘যদিও সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচলিত কারিকুলাম উন্নত মানের, কিন্তু কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, বিশেষ করে কতিপয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ থেকে পাস করা স্নাতকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। অর্থাৎ যদিও উচ্চশিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, তবু শিক্ষার মান নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।’
উপরের পরিসংখ্যান থেকে দুটো লাইন আলাদাভাবে কোট করলাম>>
১। বর্তমানে বাংলাদেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতকই বেকার,
২। যদিও উচ্চশিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, তবু শিক্ষার মান নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।’
২নং লাইনটা নিয়ে আলাদাভাবে কিছু বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে ১নং লাইনের উপর একটু বলতে চাই। যেদেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতকই বেকার সেদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় জে এস সি বা পি এস সির সার্টিফিকেট কি কাজে আসবে?? আমি অনেকের কাছে শুনেছি লাখ লাখ টাকা দিয়ে অনেক অনার্স ডিগ্রীধারীগণ পিয়নের চাকরির জন্য প্রতিযোগীতা করেন। এস এস সি সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয় যেসব চাকুরীর জন্য সেখানে মাস্টার্স সার্টিফিকেট ধারীর সংখ্যা নেহাত কম না। এত এত উচ্চ ডিগ্রীধারীর যেখানে বেইল নাই সেখানে এসব জে এস সি বা পি এস সির গুরত্ব নিয়ে কি দায়িত্ব প্রাপ্তদের কোন মাথা ব্যাথা নাই? আর এরপরও যদি এসব পরীক্ষার পাশাপাশি এস এস সি, এইচ এস সি বা চাকুরীর পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাস হতে থাকে তাহলে অদুর ভবিষ্যতে আমরা কি মেধাশূন্য একটা জাতি হতে যাচ্ছি না?
আবারও সেই যুদ্ধের কথা বলি। ৭১ এ বুদ্ধিজীবী হত্যা ছিল ঝড়ে বক মারার ঘটনার মত। তবুও আমাদের প্রধান সারির শিক্ষিত মানুষগুলোর অভাব আমরা ঠিকই বুঝে একটা দিবস হিসেবে ১৪ ই ডিসেম্বরকে দাড় করাতে পেরেছি। দিবসটিতে পাকিস্তানিদের প্রতি ঘৃণা দেখাতে বিভিন্ন আর্টিকেল বিভিন্ন পত্রিকায় দেখতে পাব, কোন কোন দল লোক দেখানো সহমর্মীতা দেখানোর জন্য পোস্টার, প্লাকার্ড, ব্যানার নিয়ে রাস্তায় নামবে। কিন্তু বিগত বছরগুলো থেকে শুরু করে যেভাবে প্রশ্নপত্র ফাসের পাশাপাশি অযোগ্য মানুষ (?) দিয়ে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে নিয়োগ দিয়ে দেশটাকে যে ভাগাড়ে পরিণত করছি তাতে তো ২০-৩০ বছর পরে ১৪ই ডিসেম্বর প্রতিটি দিনকে অর্থ্যাৎ ৩৬৫ দিনকে ভ্রুকুটি করবে। সারা বছরই বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করতে হবে। এভাবে ১০০% পাশের অযুহাতে দেশটাকে গোপনে গোপনে আর কতদিন ধরে মেধাশূন্য করার পায়তারার সুযোগ দিবেন শুনি
সুত্রঃ Click This Link
©somewhere in net ltd.