নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবিক পৃথিবীর জন্যই মানুষ, নষ্ট রাজনীতি আর ধর্মান্ধতার জন্য নহে

বোবাকান্না

মানবতার জন্যই মানুষ, নষ্ট রাজনীতি আর ধর্মান্ধতার জন্য নহে

বোবাকান্না › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারেক-মামুনের মামলা; \'মূল\' আসামি করা হলো সাক্ষী

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:২৯


মানি লন্ডারিং আইনে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে সর্বপ্রথম খাদিজা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কথা। এরপর সিঙ্গাপুরে ঘুষ গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু খাদিজা ইসলামকে আসামি না করে মামলা হলো তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলাটি যেকোন দিন হাইকোর্টে আপিলের রায় ঘোষণা হওয়ার কথা।

গাজীপুরের টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দিতে ''নির্মাণ কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড' এর মালিক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে। বলা হয়-সিঙ্গাপুরের ক্যাপিটাল স্ট্রিটের সিটি ব্যাংক এনএ’তে মামুনের ব্যাংক একাউন্টে খাদিজা ইসলাম এই টাকা জমা দিয়েছেন। সে হিসেবে অবৈধপথে সিঙ্গাপুর টাকা পাঠিয়ে সর্বপ্রথম ''অপরাধ'' করেছেন খাদিজা ইসলাম। তাই মানি লন্ডারিং আইনে তার বিরুদ্ধ সবার আগে মামলা করার কথা। মামলায় বলা হয়-'ঘুষের'' অর্থ থেকে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ করেন মামুনের ঘনিষ্ট বন্ধু ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান।



প্রশ্ন হলো ''অপরাধী'' খাদিজা ইসলামকে বাদ দিয়ে তারেক-মামুনকে আসামি করা হয়েছে কেন। নিছক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, নাকি ঘুষের বিরুদ্ধে দুদকের আন্দোলন/জিহাদের অংশ হিসেবে। তারা যে দলই করুক না কেন। আইনে তো আইনের গতিতেই চলার কথা।
তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের এই মামলাতেও খাদিজা ইসলামকে আড়াল করে আসামির বদলে উল্টো সাক্ষী করা হয়। কারণ খাদিজা ইসলামকে আসামি করা হলে মামলাটি অনেক আগেই গুরুত্বহীন হয়ে পড়তো। এছাড়া তাকে আসামি করা হলে মামলার তদন্তের স্বার্থে সিঙ্গাপুর যাওয়ার প্রয়োজন পড়তো। এতে বেরিয়ে আসতো প্রকৃত সত্য।


আসামিপক্ষ বলে আসছে, ওই ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমাদানকারীদের মধ্যে জনৈক মেরিনা ও মোয়াজ্জেমও ছিল। তাদের লেনদেনের বিষয়টিই বা কেন আড়াল করা হল। আমি এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হাসিলের মামলা বলবো না। তবে বলতে চাই আইনকে আইনের পথে চলতে দিন।
ছবি: টঙ্গি পাওয়ার প্লান্ট

একইভাবে ২০১১ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থানায় গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বড় ভাই সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী মাফরুজা সুলতানার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে দুদক। ওই মামলায় অভিযোগ আনা হয়- বিএনপি জোট সরকারের আমলে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী সিমেন্স বাংলাদেশ অবৈধভাবে কাজ পাইয়ে দিতে হাফিজ ইব্রাহিম ঘুষ গ্রহণ করেন। অভিযোগে বলা হয়, সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী মাফরুজা সুলতানার সিঙ্গাপুরের এসসিবি ব্যাংকে সিমেন্সের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জুলফিকার আলী এক লাখ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার ঘুষ জমা করেন। মানি লন্ডারিং আইনে আলীকে মামলার আসামি করার কথা ছিল। কিন্তু আসামির বদলে তাকে বাদি করা হয়। এ নিয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বিস্ময় প্রকাশও করে। নতুন করে আইনি জটিলতায় পড়েছিল দুদক।

মামলার বিচার চলাকালে ২০১৪ সালের ৭ এপ্রিল তৃতীয় একক বেঞ্চের বিচারপতি এনায়েতুর রহিমের আদালত বলেছিলেন, ‘বিস্মিত হচ্ছি যে, মানি লন্ডারিং করে জুলফিকার আলী ও তার স্ত্রী রহিমা আলী তাদের যৌথ একাউন্টে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার করে। কিন্ত তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে কেন মামলা হয়নি?’ এরপর মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য দুদকের উপ-পরিচালক মো. ইব্রাহিমকে দায়িত্ব দেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশে মামলার অধিকতর তদন্ত শেষে ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা বিশেষ জজ আদালত-৩ এ একটি চিঠি পাঠানো হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়, কাজ পাইয়ে দেওয়ার সুবাদে সিমেন্সের এজেন্ট জুলফিকার আলীর হিসাব থেকে হাফিজ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী সিঙ্গাপুরের এসসিবি ব্যাংকের যৌথ হিসাবে এক লাখ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধিত হয়েছে। এ বিষয়ে জুলফিকার আলী বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। উক্ত মামলায় মো. জুলফিকার আলীকে আসামি না করে সাক্ষি তালিকাভূক্ত করা হয়।

চিঠির জবাবে দুদকের ভাষা ছিল, সিমেন্স কোম্পানির কোনও ব্যক্তি মামলার সাক্ষ্য না হওয়ায় জুলফিকার আলীকে সাক্ষ্য করা হয়েছে। জুলফিকার আলীকে আসামি করা হলে তার অর্থ লেনদেন বিষয়টি প্রমাণের জন্য সাক্ষ্য নিতে যেতে হবে সিঙ্গাপুর। যা তদন্তের ক্ষেত্রে দুস্কর।

মজার বিষয় হল সিমেন্সের মামলায় আরও বলা হয়, প্রভাব খাটিয়ে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য জুলফিকার আলী ২০০৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর এক লাখ ডলার এবং ২০০৬ সালের ২৫ জুলাই ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার সিঙ্গাপুরের ওই ব্যাংকে হাফিজ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রীর যৌথ একাউন্টে জমা দেন। কিন্তু বাংলাদেশে সিমেন্সের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিস্থ ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার তদন্তে এই দুটি তারিখ ও একলাখ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার ঘুষ দেওয়ার কোনও তথ্যই নেই। এমনকী ২০০৫ ও ২০০৬ সালের ওই দুটি মাসে অর্থ লেনদেনের বিষয়টিও নেই মার্কিন তদন্তকারী সংস্থার প্রতিবেদনে। এ নিয়ে দুদকের সম্পূরক চার্জশিটে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। তবে আরাফাত রহমান কোকোকে ইঙ্গিত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ছেলে সিমেন্সের ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত।

এর আগে গত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিমেন্সের ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৬ বছরের কারাদ- হয়। পরে একই অভিযোগে মামলা হয় সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আমিনুল হকের বিরুদ্ধে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.